বাংলার নানান ধরণের শিল্পী-উৎপাদক তাঁদের কাজে
বিপুল পরিমাণে উদ্ভাবনী শক্তির পরিচয় দিয়েছেন যদিও আজকের কেবলই বিদ্যুৎ চালিত হাতিয়ার/যন্ত্র
নির্ভর যুগে যন্ত্রের ওপরে নির্ভরতাকেই দক্ষতা রূপে গণ্য করা হয়ে থাকে। হাত, জ্ঞান
বা সায়িক দক্ষতা চলে গয়েছে পর্দার পেছনে। এ এক দীর্ঘ আলোচনার বিষয়। এই বিষয় নিয়ে
বারান্তরে কথা বলা যাবে যদি সুযোগ মেলে।
রঙ তৈরি করা হয়
ভূষোকালি, তুঁতে, মেটে সিঁদুর, হ্রিতাল, এলামাটি, গোরিমাটি, কাঠকড়ি আলতা এবং এরকম
নানান রঙ্গীন দ্রব্য দিয়ে। রঙ ভালভাবে ধরানোর জন্য তেঁতুল বিচির কাই, বেলের।নিমের আঠার
প্রলেপ দেওয়া হয়। উৎপাদকেরাই মাথায়/বাঁকে ঝাঁকায় নিয়ে নানান মেলা উতসবে এই পুতুল
ফেরি করতে যান। একাধারে এরা যেমন প্রযুক্তির ধারক বাহক, উৎপাদক আবার তেমনি এরা
নিজেদের উৎপাদন বিক্রি করাতেও দক্ষ। তারাপদ সাঁতরা তিন দশক আগের এক লেখায় বলছেন পুতুল
তৈরি করা এতই খরচ সাপেক্ষ হয়ে পড়েছে যে, শিল্পীরা আর পুতুল পোড়াচ্ছেন না। শুকনো
মাটির ওপরে রঙ করে দিচ্ছেন।
পশ্চিম মেদিনীপুরের নাড়াজোলের
পুতুল আজো তার আকর্ষণ বজায় রেখেছে, তার ঐতিহ্যমণ্ডিত গড়নশৈলী, তার রঙের ব্যবহার,
তার নিজস্বতা দিয়ে(পুতুলগুলোর ছবি দেখা যাবে http://lokfolk.blogspot.in/2012/01/blog-post_492.html ব্লগে)। এছাড়া
মেদিনীপুরের নির্ভরপুর, শিউরি, কেশববাড়, চৈতন্যপুর, নয়ঁআ, গোল্গ্রাম, হবিচক,
মুরাদপর আর মাদপুরে নানান ধরণের পুতুল পাওয়া যায়। একদা হাওড়ার চণ্ডীপুর, লিলুয়ার
পট্টুয়ারা পুতুল করতেন।
হুগ্লি জেলার পুইনান,
তালচিনান, মোড়া, দক্ষিণ চব্বিশপরগ্ণার কংকণবেড়ে, বাঁকুড়াএ বেলেতোড়, গগরা, বীরভূলের
পাকুরহাসের পটুয়ারা একদা পুতুল তৈরি করতেন।
No comments:
Post a Comment