এমত এক শাস্ত্রকে মহাকালের গর্ভ থেকে উদ্ধার করলেন
মহীশূরের জি আর জোসিয়ার মশাই। তাঁর লব্জে উল্লেখ করা যাক তিনি কি ভাবে এই
শাস্ত্রটি উদ্ধার করলেন।
ভগবানের অসীম কৃপায় আমি এই পুঁথিটি আমার হাতে আসে। ১৯৫১
সালের ২৮ জুন, মহীশূরের পূজ্যপাদ মহারাজা ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অন স্যাংস্কৃট রিসার্চ
স্থাপন করেন। এটি একটি খুব পূণ্য সময়ে স্থাপিত হয়েছিল সেটি স্থাপিত হওয়ার পরেই
তাঁর সৌরভ দেশে বিদেশের কোণে কোণে ছড়িয়ে যায়।
ব্যাঙ্গালোর শহর থেকে এক আমন্ত্রিত ব্যক্তি মহাঋষি
ভরদ্বাজের বৈমানিক শাস্ত্র নামক পুঁথিটির প্রথম কয়েকটি পৃষ্ঠা, একটি খাতায় নকল করে
নিয়ে এসেছিলেন। এটি দেখে আমরা বিমোহিত হয়ে পড়ি। বোঝা যায় এটি বহু পুরনো একটি খাতা,
যা কালের নানান প্রভাবে প্রায় জীর্ণ হয়ে পড়েছে। এই পুঁথিটি শ্রীমন্মহারাজা এবং
তাঁর প্রধানমন্ত্রী শ্রী কে সি রেড্ডিকে দেখিয়ে পুঁথি প্রদর্শনশালায় প্রদর্শনের
জন্য রেখে দিই।
প্রদর্শনী শেষ হলে পুঁথির স্বামীকে সেই পুঁথিটি ফেরত
দেওয়া হয়। তখন তিনি সেটি পণ্ডিত সুব্বারায়া শাস্ত্রীর পুঁথিগারের অধ্যক্ষ
ব্যবহারজীবী ভেঙ্কটরমণ শাস্ত্রীকে অর্পণ করেন। শাস্ত্রীজীকে বলি এই পুঁথিটি আমাদের
প্রকাশনা করার অনুমতি দেওয়া হোক। পরের দিকে আমরা যখন ওনাকে যোগাযোগ করি তিনি
সর্বসম্মতি প্রদান করেন এবং আরও কয়েকটি পুঁথি হস্তান্তরেরও কথা হয়।
পুঁথিটি প্রথমে সংস্কৃত
ভাষায় ছাপা শুরু করি। কিছুদূর আগ্রসর হওয়ার পর প্রায় বিনা মেঘে বজ্রাঘাত। যিনি আমাদের
পুঁথিটি দান করেছিলেন, আমাদের খুব কঠিন ভাষায় চিঠি লিখে অভিযোগ করলেন আমরা
ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্য নিয়ে এই পুঁথিটি ছাপছি। যদিও আমাদের এধরণের কোনও উদ্দেশ্য
ছিলনা, তবুও বিতশ্রদ্ধ হয়ে জানালাম, তিনি যেন সেই পুঁথিটি ফেরত নিয়ে যান। ছাপাটি
আমরা মাঝপথেই বন্ধ করে দিলাম।
ইতোমধ্যে মহীশুরের শ্রীমন্মহারাজা একদিন আমাদের চায়ের
নেমন্তন্ন করে পুঁথিটি দেখতে চেয়ে বললেন তিনি সেটি ভারতের জাতীয় বিজ্ঞানী শ্রী
থ্যাকারকে দেখাবেন। আমরা তাঁকে জানালাম পুঁথিটি সংস্কৃততে রচনা। আর শাস্ত্রে
অধিকারী-আনধিকারী ভেদ রয়েছে। সেটি উপযুক্ত পণ্ডিতকে দিয়ে অনুবাদ করাতে হবে।
বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমান করতে হবে, গবেষণা করতে হবে, তবেই সেই বিষয়টি সর্বসমক্ষে আনা যেতে
পারে।
ব্যাঙ্গালোরের চারজন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট
অব সায়েন্সএর বিদ্যুৎ প্রয়ুক্তি (পাওয়ার এঞ্জিনিয়ারিং) বিষয়ের বিভাগীয় প্রধান, ডঃ
এম এ থিরুনারায়ণের পত্র নিয়ে, এ বিষয়ে আমাদের কৈফিয়ত চেয়ে বসেন।
No comments:
Post a Comment