ভদ্রদের অমিত ধনী হওয়ার স্বপ্ন, ক্ষমতা প্রয়োগে সমাজ দখলের চূড়ান্ত লিপ্সা কোনটাই গ্রাম উৎপাদন ব্যবস্থা পূরণ করে না
ভদ্রদের পক্ষে গ্রামীন উৎপাদনের পাশে দাঁড়ানো সামগ্রিকভাবে কর্পোরেটময় ভদ্র সমাজের পিঠে বিষমাখানো ছুরিকাঘাতমাত্র
ভদ্রদের পক্ষে গ্রামীন উৎপাদনের পাশে দাঁড়ানো সামগ্রিকভাবে কর্পোরেটময় ভদ্র সমাজের পিঠে বিষমাখানো ছুরিকাঘাতমাত্র
Dinēśa-Ratna Prabhākara আন্তরিকভাবে বলেছেন 'তাঁরা(ওয়াপাগ) আন্তরিকতার সাথে গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে লড়ে যাচ্ছেন'।
প্রভাকরকে ধন্যবাদ জানিয়েও আমরা মনে করি এটা আমাদের বোঝার দিক থেকে খুব একটা সত্য ভাষণ হল না কেননা চরিত্র অনুযায়ী অকেন্দ্রিভূত গ্রামীন উৎপাদন ব্যবস্থা নিজের জোরেই টিকে ছিল আছে থাকবে - ওয়াপাগ নিমিত্ত তাত্ত্বিকমাত্র - কর্পোরেট এবং তার পোষিত ভদ্র(সব সমাজেরই) যতই তার লুঠেরা চরিত্রের মুখোশ আস্তে আস্তে খুলে ফেলে নব্য লুঠেরা দখলদারির সমাজ তৈরি দিকে এগিয়ে যাক না কেন - কোন সমাজ বা সংগঠনের যোগ্যতা নেই গ্রাম উৎপাদন ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার কাজ করে - সব থেকে বড় কথা যার কোন কেন্দ্রই নেই তাকে একলপ্তে মেরেফেলা কঠিন - যা ইওরোপ আমেরিকায় কয়েক শতে সম্ভব হয়েছিল তা বাংলার গ্রামে ঘটিয়ে ফেলা খুব কঠিন। তাই গ্রাম উৎপাদন ব্যবস্থা বুঝতে টাকা বাতিলের পরে যে লেখাটি লেখা হয়েছিল সেটি পড়তে অনুরোধ করলাম -http://www.guruchandali.com/.../12/12/1481551961685.html।
১১৬৪র পরে যেভাবে বাংলার গ্রামে কর্পোরেট দখলদারি, বিশিল্পায়ন, অত্যাচার, খুন, জ্ঞান আর সম্পদ লুঠ ইত্যাদি শুরু হয়েছিল তাতে মনে হয়েছিল যে বাংলা তথা ভারতেরে সমাজে কর্পোরেটের অগ্রগতি সময়ের অপেক্ষা - ইওরোপে পাগান সমাজ ধ্বংস করতেযে সময় লেগেছে লুঠেরা খ্রিষ্ট সাম্রাজ্যবাদিদের, বাংলায় সেই ভদ্র পরিচালিত লুঠেরা রাষ্ট্র ব্যবস্থা স্থাপনে খুব বেশি সময় লাগার কথা নয়। এই মনোভাব ছড়াতে সাহায্য করেছে ভদ্র(প্রত্যেক সমাজের)দের পশ্চিমী জীবনযাত্রা আত্তীকরণ এবং সেগুলিকেই প্রগতির মুখ্য বাহক হিসেবে ভেবে নেওয়া - এই কাজে কর্পোরেটরা ভদ্রদের পাশে দাঁড়ায় এবং তাদের একাংশকে কেন্দ্রিভূত, লুঠেরা পশ্চিমি জ্ঞানে বলীয়ান করিয়ে লুঠের একাংশ তাদের হাতে তুলে দেয়।
কর্পোরেটমুগ্ধ ভদ্ররা তার পরে আর পিছনে ফিরে তাকায় নি, তাদের জীবন, দর্শন, ভাবনা, চলন-বলন সবই কর্পোরেটময়। তাঁর বাইরে যে বিপুল ধরণী, বিপুল সমাজ আজও বাস করে সে বিশ্বাসটাই তাঁর চলে যায়। তাই কর্পোরেট রুষ্ট হওয়া তাঁর কাছে বিশ্ব কেঁপেওঠার সামিল।
টাটারা যখন বাংলা ছেড়ে চলে যাওয়ার কথা বলে ন্যানো বিরুদ্ধ লড়াইতে তাঁর ঘরদোর সব যেন ভেঙ্গে পড়তে থাকে। কেননা বিগত আড়াইশ বছরের বাংলার লুঠেরা কর্পোরেট ব্যবস্থায় সে রাষ্ট্র চালক হয়ে বসেছে - তাঁর মাইনে, তাঁর স্বচ্ছলতা, তাঁর বিশ্বদর্শন সব কিছুই কর্পোরেটদর্শনময়।
কর্পোরেট তাকে দিয়েছে দাসত্বের সামাজিক পরিচয় যাকে সে উচ্চতর জীবনযাত্রা বলতে ভাল বাসে। তাঁর ক্ষমতা দখলের ইচ্ছে, তাঁর অমিত ধনী হওয়ার ইচ্ছে সব কিছুই পূরণ করার ইঙ্গিত দিয়ে রাখে কর্পোরেট যদি ভদ্ররা তার দর্শন মত চলতে পারে। তার অমিত ধনী হওয়ার স্বপ্ন, দাসত্বে থাকা ভদ্রলোকেদের নির্লজ্জ ক্ষমতা প্রয়োগের তীব্র ইচ্ছে - যা পরের দিকে সহনশীল চাপিয়ে দেওয়া বৈপ্লবিক বামপন্থায় রূপান্তরিত হয়েছে - তাকে পূরণের সম্পূর্ণ সুযোগ করে দেয় কর্পোরেট।
সে গ্রামীন অর্থনীতি নিয়ে বিন্দুমাত্র ভাবিত নয় কারণ ওপরের বক্তব্যে নিহিত আছে, গ্রাম অর্থনীতি ভদ্রদের সামাজিকভাবে বাঁচতে সাহায্য করে ঠিকই কিন্তু তার যে অমিত ধনী হওয়ার স্বপ্ন, তার ক্ষমতা প্রয়োগের স্বপ্ন কোনটাই গ্রাম উৎপাদন ব্যবস্থা পূরণ করে না।
আসুন আমরা যারা গ্রামীন অর্থনীতি বিষয়ে একটুও চিন্তা করি, তারা নিজেদের কর্পোরেটিয় পরিবারের বাইরে একটু দৃষ্টি ফেলি - হাটে যাই - কেননা হাট হল গ্রাম অর্থনীতির সব থেকে বড় প্রকাশ ভঙ্গী - আমরা অন্তত এই বাংলার হাটগুলির উদাহরণে বলতে পারি - সর্বংসহা গ্রামীণেরা আজও তাদের জীবনশৈলীতে কর্পোরেট বিরোধী। সেই বিরোধিতা দার্শনিক, দেখানো নয়। সেই মানুষদের থেকে শিখি। তাহলেই অনেক কুয়াশা জলবৎ হয়ে পড়বে।
জয় বাংলা!
জয় বাংলার কারিগরী ব্যবস্থা!
জয় বাংলার কারিগরী ব্যবস্থা!
No comments:
Post a Comment