আবুলফজল আইনইআকবরিতে সাম্রাজ্যের খাদ্য তত্ত্ব বিষয়ে বিতর্ক তৈরি করছেন নানান সূত্র অবলম্বনে - প্রাথমিক উদ্দেশ্য ছিল সাম্রাজ্যের ক্ষমতা এবং অবস্থান বয়ান। সাম্রাজ্যের হেঁসেল তত্ত্ব উপস্থপন করতে গিয়ে তিনি লেখেন আইনিমতবাখ(āʾīn-i mat̤baḵẖ)। পাদশাহের জীবনে খাদ্যের ভূমিকা বিষয়ে তিনি বললেন,
'মহামহিমের কারুণিক দৃষ্টি হেঁসেলেও পতিত হয়েছিল এবং সেই বিষয়ে তাঁর প্রাজ্ঞ নির্দেশনাও ামাদের পাথেয় হয়। তিনি জানতেন শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে (ইতিদালিমিজাজ), শরীরের ক্ষমতা(তাওয়ানায়ি তন) তৈরি করতে, শরীরের ভেতরের এবং বাইরের মাধুর্য, ধর্মীয় কর্মকাণ্ড সঠিকভাবে বজায় রাখতে, সঠিক(মুনাসিব) খাদ্য গ্রহণ জরুরি। খাদ্য গ্রহণের জ্ঞান মানুষ আর পশুর মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। মহামহিমের উচ্চমানসিকতা, অনুগ্রহের মনোভাব, বিশ্বজনীন ক্ষমারভাব ছিল বলেই তিনি ঘুম এবং খাদ্যগ্রহণ প্রায় ত্যাগ করেছিলেন। মানব সমাজের ঐহিক এবং পারমার্থিক নেতৃত্বের ভার নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন বলেই কোনও দিন আজকে কী রান্না হয়েছে বাক্যটা শোনা যায় নি। ২৪ ঘন্টায় মহামহিম একবার খাদ্য গ্রহণ করেন, এবং মানসিক পরিতৃপ্তি পাওয়ার আগেই খাওয়া বন্ধ করেন। তার খাওয়ার গ্রহণের নির্দিষ্ট সময় ছিল না, যদিও ভৃত্যরা সব সময় তৈরি থাকত, তার নির্দেশ পাওয়ার এক ঘন্টার মধ্যে যাতে খাবার পরিবেশন করা যায়।'
রান্নাঘর নিয়ে পাদশার উৎসাহ সম্বন্ধে আবুলফজল লিখছেন '
প্রায় সব দেশের রাঁধুনি(পাজান্দাগানি হর কিশ্বর) নানান ধরণের, বিভিন্ন রঙের দাদা শস্য, তরিতরকারি, মাংস, তেল, মিষ্টি এবং শাকপাতা দিয়ে খাবার তৈরি করত। ভোজসভায় অভিজাতরা(বুজুর্গাঁ) যাতে এটা আন ওটা আন বলতে না পারেন, সে জন্যে মহামহিমের নির্দেশে সব ধরণের খাবার রোজ তৈরি করা হত... '
রান্নাঘর নিয়ে পাদশার উৎসাহ সম্বন্ধে আবুলফজল লিখছেন '
প্রায় সব দেশের রাঁধুনি(পাজান্দাগানি হর কিশ্বর) নানান ধরণের, বিভিন্ন রঙের দাদা শস্য, তরিতরকারি, মাংস, তেল, মিষ্টি এবং শাকপাতা দিয়ে খাবার তৈরি করত। ভোজসভায় অভিজাতরা(বুজুর্গাঁ) যাতে এটা আন ওটা আন বলতে না পারেন, সে জন্যে মহামহিমের নির্দেশে সব ধরণের খাবার রোজ তৈরি করা হত... '
ওপরের দীর্ঘ উক্তি থেকে পরিষ্কার পাদশার হেঁসেল নিয়ে উৎসাহের ধরণটি। মাথায় রাখতে হবে এি বর্ণনা আকবরের খাদ্যোল্লাস নয়, বরং খাদ্য কীভাবে মানুষকে পুষ্টি আহরণ করিয়ে সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে তার মুখড়া তৈরি করার বয়ান। অথচ তার নিজের খাদ্য গ্রহন বিষয়ে আকবর পাদশা কতটা উদাসীন। নিজে খুবই কম খেলেও তাঁর নির্দেশ ছিল, every day such dishes are prepared as the notables can scarcely command at their feasts।
অন্যভাষায় বলতে গেলে পাদশা ভোজসভাকে তার খাদ্য গ্রহণের জন্যে যত না ব্যবহার করতেন, তার থেকে বেশি ব্যবহার করতেন খাদ্য রাজনীতির জন্যে, তার ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্যে - যাতে কেউ না বলতে পারে এটা লাও ওটা লাও।
পরের অংশে আমরা অন্য বর্ণনায় ঢুকব।
No comments:
Post a Comment