পশ্চিম দিনাজপুরে জলদেগে জলাইশোরী নামে একটি আচার অনুষ্ঠান আজও প্রচলিত আছে। এটি আদতে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা গান আর কিছুটা নাচও। এই গান নাচে কেবল মেয়েরাই অংশগ্রহণ করেন। খরায় যখন এলাকার মাঠঘাট জ্বলে, মেঘের লেশমাত্র থাকেনা তখন গ্রামের মেয়েরা বিবস্ত্রা হয়েই একটি ঘট নিয়ে গ্রামজুড়ে প্রার্থনায় বের হন। কোনো একটি মেয়ের মাথায় থাকে ঘট তাই তার নাম হবে ঘটধরি। ঘটধরি কন্যার হাতে থাকবে পুরোনো একটি ছাতা আর তার সখির হাতে থাকবে একটি বড় ধামা। এই ধামায় থাকে নানান পুজো উপাচার। এই আচার-অনুষ্ঠানের পরিচালিকার কাছে থাকে সকলের পরিধেয় বস্ত্র। বিবস্ত্রা রমনীরা গান গাইতে গাইতে একের পর এক গৃহস্থের বাড়ি আঙিনাতে প্রবেশ করেন। এই গান চলাকালীন কোনো পুরুষের প্রবেশ নিষেধ – এবং চিরাচরিত ঐতিহ্যশালী সমাজের প্রত্যক সদস্যেরমতই এই সমাজের সদস্যরা এই সামাজিক বিধিনির্দেশ কড়ায়-গণ্ডায় মেনে চলেন। ঘট নামানো হলে চলে চাষের অভিনয়। তারপর ব্রতচারিনী আর গৃহস্থ রমনীরা সকলে মিলে গান গাইতে থাকেন – সঙ্গে চলে নাচও।
আইস মেঘা বইস কাছে
খাও বাটাং পান
তোমার জন্য বাটাং পান
সাজাইয়ে রাখিছি
বরসিয়া খাওরে
----
মোঘো ওদে নাগায় ভাইরে
মেঘে অন্ধকার
মেঘের ভিতি দেখি ভাইরে
হালি ছাড়ে হাল
জমীতে পানি নাইরে
কিসে বহিম হাল
বাসুয়া বলদিয়া বইছে হাল
ওমোর গসাই রে
তাহনে দুব্বা নোতা ওঠে
এপ পাট মই দুই পাট মই
তাহনে দুব্বা নোতা ওঠে।
No comments:
Post a Comment