ইতালিয় শব্দ টেরাকোটা অর্থ পোড়ামাটি। এঁটেল মাটির সঙ্গে বালি, খড়কুটো, তুষ, ভূষিসহ নানান স্থানীয় দ্রব্য মিশিয়ে মাটি তৈরি করেন কারিগরেরা। ছাঁচে বা হাতের চাপে এই মাটিতে উপযুক্ত শিল্প গড়ার পর তা রোদের আঁচে বসিয়ে শক্ত হলে পোড়ান হয়। এর পর ভাটি। পোড়ানোর পর কখোনো রং করা হয়, কখোনো বা এগুলোকে পোড়ার মাটির স্বাভাবিক রংএও রাখা হয়। পোড়ানোর সময় ভাটির ধোঁয়া বেরোতে দিলে সামগ্রীগুলো স্বভাবিকভাবেই পোড়ামাটির রংএ রাঙানো হয় আর মুখ চাপা থাকলে সেগুলোর রং পুরো কালো হয়।
সারা পৃথিবীর সঙ্গে প্রায় দশ হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী লোথাল-সরস্বতী(সাধারণ লব্জে হরপ্পা-মহেঞ্জোদড়ো) সভ্যতায়ও এ ধরণের পোড়ামাটির নানান পুতুল পাওয়া গিয়েছে। তক্ষশিলা, মথুরা, ভিটা, বাক্সার, পাটনা বা বাংলার নানান উত্খননেও নানান ধরনের টেরাকোটা মুর্তির হদিশ মিলেছে। চন্দ্রকেতুগড়ে পোড়ামাটির নলবিশিষ্ট পয়ঃপ্রণালী, নাগদেবী, নানান তৈজসপত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। পাল আমলেরও নানান পোড়ামাটির দ্রব্য, অলঙ্কৃত মন্দির, বৌদ্ধবিহার আবিষ্কার হয়েছে বাংলার নানান স্থানে। অলঙ্করণে রয়েছে বৌদ্ধ ও ব্রাহ্মণ্যসহ নানান ধর্মের দেবদেবী মূর্তি, বিদ্যাধর, গন্ধর্ব, নাগ, মানুষ, পশুপাখি, জলচর জীব, ফল, বৃক্ষ, শঙ্খ, চক্র, পুঁথি, জলপাত্র প্রভৃতি। এই লোকশিল্পের শিল্পীরা ছিলেন গ্রাম জীবনে সংপৃক্তথাকা লৌকিক মানুষজন, যাঁরা দেশজ শিল্প আর প্রযুক্তির আসল ধারক-বাহক। শহুরে এই কর্মকাণ্ডে সাধারণ লোক জীবনের নানান দৃশ্যাবলীর অলঙ্করণে প্রমাণিত হয়, বৃটিশ কথিত সামাজিক বিধিনিষেধ এবং খাড়াখাড়িভাবে সামাজিক বিভাজনের যে তত্ব চারিয়ে গিয়েছিল বাংলার শহুরে পাণ্ডিতি ধারার মধ্যে এবং বাংলার জ্ঞাণীগুনীরা যে ধারা আজও বহন করে নিয়ে চলেছেন, সেই ধারাকে নতুন করে প্রশ্নের সময় এসে গিয়েছে।
মনেআছে বাংলার পোড়ামাটির কাজ শয়ে শয়ে বছর ধরে রোদজলশীত সহ্যকরে টিকে রয়েছে আথচ এ যুগের সিমেন্টএর কাজ দুদশকেই মাটি ধরে এই প্রশ্নের উত্তরে বাঁকুড়ার ছাঁদারের(শহুরে লব্জে ছান্দার) পথভাঙা সংস্থা অভিব্যক্তি প্রধান উত্পল চক্রবর্তী কলাবতী মুদ্রার এক প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছিলেন, পোড়ানোর আগে এগুলোকে প্রথমে মধু আর তার পর কোনো স্নেহদ্রব্যে(যতদৃর সম্ভব বলেছিলেন ঘি-তে) ডুবিয়ে রাখা হত।
খ্রীস্টিয় ষোড়শ শতকে শুরু হওয়া বাংলার মন্দির গাত্রে পোড়ামাটির ইটের ওপর বিষ্ময়কর টেরাকোটার কাজ দেখা যায়। এসব মন্দিরের গায়ে বিভিন্ন মাপের ছাঁচে গড়া টেরাকোটা টালি পলেস্তেরা দিয়ে ইটের গায়ে সেঁটে দেওয়া হত। মন্দিরের নানান অংশে টেরাকোটা কাজ দেখা যেত। কয়েকটি টালির সংযোগে ধারাবাহিক ভাবে দৃশ্যরচনার উত্কর্ষ দেখা যায়। নানান পৌরানিক কাহিনী ছাড়াও নৃত্যগীতরত নরনারী, নৌকা বিহার, জলকেলি, পালকি, বিবাহের শোভাযাত্রা, সমুদ্রগামী জাহাজসহ হাজারো শহুরে ভা লৌকিক জীবনের প্রতিচ্ছবি আজও দেখি।
Lokfolk লোকফোক forum of folk লোক tribal আদিবাসী culture সংস্কৃতি of West Bengal পশ্চিমবঙ্গ, বাংলা. LOKFOLK is Bengal বাংলা India's ভারতের traditional পারম্পরিক knowledge system জ্ঞানভাণ্ডার, history ইতিহাস, Indigenous technology প্রযুক্তি. We have two mass bodies গনসংগঠন Bongiyo Paromporik Kaaru O ও Bastro Shilpi Sangho; Bongiyo Paromporik Aavikaar Shilpi Sangho. Journal পত্রিকা, PARAM, পরম. Picture - KaaliKaach কালিকাচ, Dinajpur দিনাজপুর, Madhumangal মধুমঙ্গল Malakar মালাকার
Wednesday, November 24, 2010
টেরাকোটা মন্দির১
লেবেলসমূহ:
Bengal,
FolkCraft,
FolkTechnology,
Terracotta,
Terracotta Temple,
টোরাকোটা,
মন্দির
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment