যতদূর সম্ভব গত বছর একটি পত্রিকায় অনুরোধে লিখেছিলাম। তারা সংখ্যা পাঠায় নি। কিন্তু সেই লেখাটি রয়ে গিয়েছে আমার কাছে। সেটি তুলে দিলাম, ন্যাটজিওর প্রতিস্পর্ধী লেখারূপে।
জয় বাঙলা!
জয় বাঙলার ফকির-বাউল!
প্রত্নতত্ত্বভূমির কাব্যতীর্থযাত্রী - জয়দেবের কেন্দুবিল্ব
বিশ্বেন্দু নন্দ
জয়দেবকৃতি
জয়দেব মিশ্র। আধুনিক বিশ্বায়িত জীবনযাত্রায় অভ্যস্ত শহুরেদের নামটা কানে কিছুটা খটমট লাগলেও উপাধি থেকে চোখ ফিরিয়ে নামের পূর্বাংশে নজর দিলে গুঞ্জরিত হয় জয়দেব, যাঁর অনুষঙ্গে জুড়ে আছে কয়েকশ বছর ধরে চলা এক মেলা - কেঁদুলির মেলা। বাংলার শ্রেষ্ঠতম কবিদের মধ্যে আজও অগ্রগণ্য তিনি। সেই মানুষটার স্মরণে আজও বাংলায় প্রায় সাড়ে আটশ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে তাঁরই গ্রাম কেন্দুবিল্ব বা চলতি লব্জে কেঁদুলিতে জয়দেবের মেলা। চাকোলতোড়, কানাইশোরএর মত প্রচুর সামাজিক মেলা কবে শুরু হয়েছে তার কুড় খুঁজতে যাওয়া মুশকিল- কিন্তু বাংলার লিখিত সংস্কৃতিতে গাজন মেলা(মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর ‘বেনের মেয়ে’ ইতিহাস-উপন্যাস দ্রষ্টব্য) ছাড়া এত পুরনো মেলা খুঁজে পাওয়া দুষ্কর বললেও অত্যুক্তি হয় না। বাংলার ধারাবাহিক স্মারক মেলারও ইতিহাসে জয়দেব-কেঁদুলি বোধহয় প্রাচীনতম। বাংলা তো বটেই চোখ বুজে বলা যায় সারা ভারতেও বিরলতমগুলির মধ্যে অগ্রগণ্য। এই মেলা বিষয়ে জানেননা এমন (গ্রাম-শহরের) বাঙ্গালী খুঁজে পাওয়া মুশকিল। মায়ের কাছে মাসির গল্প – জয়দেব মেলা প্রবন্ধে যতটুকু না করলে নয় করা যাবে; তার আগে মন দিয়ে চেষ্টা করা যাক কবিবরের হৃদয়ে প্রবেশ করার, গ্রামীনদের হৃদয়ে প্রবেশ করার – বোঝার চেষ্টা করা কেন এই মেলা আজও বাংলার কোটি কোটি মানুষের অক্ষহৃদয়ে আসীন – বাঘ পালানো শীতে কেন মানুষ মেলার গান, মানুষ, চুল্লি আর ধুনির ওম নিতে নিতে অংশ হয়ে ওঠেন বাংলার অকথিত ইতিহাসের। এই বিষয়টি না বুঝলে, বোঝা দায় হয়ে যাবে, কোন মানুষের সন্ধানে, কেন আজও এই বিশ্বায়নের যুগেও লক্ষ লক্ষ গ্রামীন প্রতিবছর ছুটে আসেন এই প্রান্ত বীরভূমের নদীর তীরে।
বাংলায় এক সময় সংস্কৃত ভাষায় জ্ঞানচর্চা হত – তার পাশাপাশি নানান ভাষাতেও পড়াশোনা হত। কিন্তু বাংলা বা পূর্ব ভারতের জ্ঞানীদের লেখ্য সেই সংস্কৃত বহু সময়েই পাণিনীর তৈরি সাংকেতিক সংস্কৃত ব্যাকরণের সূত্র মানত না। পালকাপ্যের হস্তায়ুর্বেদ(হাতিপালন বিদ্যা), ভগভট্টের রসরত্নসমুচ্চয়ঃ(বাংলার ধাতুবিদ্যা) বা পরাশরের কৃষিপরাশর(নামেই প্রকাশ কৃষিবিদ্যা) বা এই ধরণের বহু রচনা ধ্রুপদী সংস্কৃত ব্যকরণের ধার ধারত না। গ্রন্থগুলি পড়তে পড়তে মনে হয় যেন একটু কঠিন সাধু বাংলা ভাষার রচনা পড়ছি – যার বহিরাবনে সংস্কৃত ভাষার মোড়ক রয়েছেমাত্র। বিগত পশ্চিমি সহস্রাব্দের আটের দশকে বাংলা মাধ্যমে যারা ঐচ্ছিক সংস্কৃত বিষয় নিয়ে কিছুটা হলেও সংস্কৃত ভাষা-সাহিত্যের মুখ দেখেছেন, তাঁদের কাছে এই পাঠ্যগুলি কিন্তু অনুবাদে না পড়লেও চলে - সাহস ধারণ করে মূল পাঠটি পড়েন, পুরনো বাংলা পড়া স্বাদ পাওয়া যায় – প্রায়শই টিকা পড়ার প্রয়োজন হয় না। পালকাপ্য অন্তত কয়েক হাজার বছরের প্রাচীন, ভগভট্ট বা পরাশরের লেখা অন্তত তেরশ বছরের পুরনো। ফলে বলা যায় বাংলায় বাংলার মত করে সংস্কৃত ভাষাচর্চার ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। ১৮৩৬এর উইলিয়ম এডামের বাংলা-বিহারের শিক্ষা সমীক্ষায় যে একলক্ষ পাঠশালার সন্ধান পাচ্ছি, সেখানে সেই অঞ্চলের ভাষার সঙ্গে সংস্কৃত ভাষায় পাঠ্যও পড়ানো হত। ফলে বহুকাল ধরে আপামর গ্রামীন তাঁদের নিজেদের ভাষা(যখনকার বাংলা ভাষা, একবিংশ শতকের কলকাতার বালিগঞ্জীয় লব্জের মেন্সট্রিমিং হয়ে যায় নি) ছাড়াও সংস্কৃত ভাষায় রচিত সাহিত্যের স্বাদ নিয়েছেন।
সেই অনপনেয় জ্ঞানচর্চা ঐতিহ্যের অন্যতম অংশীদার ছিলেন লক্ষ্মণ সেনের সভাকবি জয়দেব মিশ্রমশাই (তাঁর সঙ্গে রাজসভায় ছিলেন গোবর্ধনশ্চ শরণ্যে জয়দেব উমাপতিঃ।/কবিরাজশ্চ রত্নানি স্মিতৌ লক্ষ্মণস্য চ।। - টিকা কি প্রয়োজন? আচ্ছা দেওয়া যাক – গোবর্ধন আচার্য, শরণ, জয়দেব, উমাপতি আর কবিরাজ আর্থাত ধোয়ী, এরা কয়েকজন ছিলেন সভারত্ন)। তিনি বাংলায় প্রচলিত সংস্কৃত পদ্ধতিতে কবিতা লিখতেন। সেই সংস্কৃত গ্রাম বাংলার মানুষ জানত বুঝত এবং তার তাঁর অনুগামী হয়েছিল সেই লক্ষণ সেনএর আমল থেকে, সেই অনুগামিতার ছেদ পড়েনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সময়েও। মেলার কলেবর আর অনুরাগীদের সমাগমের বহর দেখে হয়ত বলা যায়, সেই ভালবাসার বিস্তৃতি বেড়েছে বর্তমান সময়ে অনেক বেশি।
কেমন ছিল বাংলা জনপদে প্রচলিত সংস্কৃত ভাষায় রচিত জয়দেবের পদ? পড়া যাক –
ললিতলবঙ্গলতাপরিশীলনকোমলমলয়সমীরে
মধুকরনিকরকরম্বিতকোকিলকূজিতকুঞ্জকুটীরে।
বসন্তরাগ যতিতাল বিশিষ্ট এই পদের কি কোনো টিকা ভাষ্য প্রয়োজন? কাব্য-বক্তব্য স্পষ্ট - বসন্তের আগমনে মলয় সমীরণ সুকোমল লবঙ্গ-লতাকে বার বার সাদরে আলিঙ্গন করছে, কুঞ্জকুটীরে ভ্রমরের গুণগুণ রব ও কোকিলের সুমধুর কুহুধ্বনী শোনা যাচ্ছে। তখন হরি কি করছেন?
বিহরহি হরিরিহ সরসবসন্তে
নৃত্যতি যুবতিজনেন সমংসখি
বিরহিজনস্য দূরন্তে।।
এই মধুর সময়ে হরি কোন ভাগ্যবতী যুবতীর সঙ্গে বিহার করছেন, এবং প্রেমতসবে নৃত্য করছেন। বিরহীজনের কাছে বসন্ত সত্যই অতি দুরন্ত। কয়েক শত বছর ধরে বাংলার কোটি কোটি গ্রামীন(সাম্প্রতিককালে ‘লোকসংস্কৃতি’ ফ্যাশানধারী হুজুগে শহুরেরাও) কবি জয়দেবের এই কাব্যসুধায় স্নাত হয়ে তাঁর স্মৃতি তর্পণ করতে ছুটে আসেন কেঁদুলিতে। আসেন আউলবাউলফকিরেরা, যাঁরা তাঁর উত্তরাধিকার আজও বহন করে চলেছেন তাঁদের গেয়, গেঁও মন্ত্রে, শহুরেরা যাকে বাউল গান বলতেন ভাল বাসেন।
কেন এই গ্রাম বাংলার মানুষেরা জয়দেবকে আজও অন্তরের অক্ষহৃদয়ে স্থান দিয়েছেন? তিনি হয়ত হাতে গোণা শহুরে মনুষ্যদের মধ্যে অন্যতম, যিনি গ্রামীনদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জুড়ে থাকা ভালবাসার কলধ্বনী গীতিময় উচ্ছ্বাসটি ধরতে পেরেছিলেন। আজও গ্রাম বাংলায় গানের রসে চোবানো গ্রাম নাটকগুলিকে গানরূপে আখ্যা দেওয়া হয় – সামগ্রিক অর্থে পালাগান বা শুধুই গান - যেমন ভাত খাও বললে শুধু ভাত দেওয়া বোঝায় না, তেমনি গ্রামে গান হবে এই শব্দবন্ধ বললে মানুষ শুধু গানের কথা বোঝেন না, বোঝেন নাটকের কথা। জয়দেব এবং তাঁর স্ত্রীরত্ন পদ্মাবতী অসম্ভব পরিশীলিত নাচগান করতেন - উল্লেখ পাচ্ছি হলায়ুধ মিশ্রের চম্পুকাব্য সেকশুভোদয়ায়(সূত্রঃ হৃষিকেশ গ্রন্থমালা, ৬৯-৭১) - ততঃ পদ্মাবতী জয়দেবস্য ব্রাহ্মণী গান্ধারনামা ধ্বনিরুদ্গারিতা চ। তদুদগীরিতে সতি সমস্ত নৌকাঃ, গঙ্গায়াং-যদ বিদ্যন্তে, শ্রুত্বা ততসন্নিধানাং সমায়তা চ। তৎ স্তাং সর্বে সভাসদাঃ পূজয়ামাস তৎক্ষণাৎ। ‘ধন্যেয়ং ব্রাহ্মনী। ঈদৃশং ন দৃষ্টং ন শ্রুতমিতি দ্বয়োরপি। ধন্যোহসৌ।’ অর্থ পরিস্কার – জয়দেব-পদ্মাবতীর গান শুনে গঙ্গার বুকে যত নৌকা ছিল, তীরে সব চলে এসেছিল। সভাসদেরা (তা) শুনে ধন্য ধন্য করে বলেছিলেন, এরকম নৃত্যগীত তাঁরা কখোনো দেখেননি শোনেননি। তাঁদের এই গুণের কথাও কোচবিহারের রাজা নরনারায়ণের ভ্রাতা শুক্লধ্বজ বা চিলারায়ের সভাকবি রামসরস্বতীর ‘জয়দেব’ কাব্যে উল্লেখ করেছেন। গীতগোবিন্দে তাঁর যে আত্মপরিচয় রয়েছে তাতে নিজের সম্বন্ধে শুধু বলেছেন, শ্রীভোজদেবপ্রভবস্য বামাদেবীসুতশ্রী জয়দেবকস্য। পরাশরাদিপ্রিয়বন্ধুকণ্ঠে শ্রীগীতগোবিন্দ কবিত্বমস্তু।। অর্থাৎ পিতা ভোজদেব, মাতা বামাদেবী। প্রিয়বন্ধু পরাশর তাঁর দোহার আর গায়েন। এবারে বোঝা গেল কেন গ্রাম বাংলার মানুষ আজও তাঁর অনুগামী? সেই আটশ বছরের দোহার আর গায়েনের পরম্পরা আজও গ্রাম বাংলার সংস্কৃতিতে বিদ্যমান।
জয়দেবের কাব্য অনুকরণ যুগে যুগে ঘটেছে – বাংলায় তো বটেই। তাঁর জীবন নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে নানান উপাখ্যান। বনমালী দাসের জয়দেবচরিত্র, কৃষ্ণদাসের ভক্তমাল, জগন্নাথ দাসের ভক্তরচিতামৃত বা সেদিনের কবি অধর চক্রবর্তী লীলা ও নিত্যভাবে শ্রীজয়দেব পদ্মাবতীর উপাখ্যান নামে পুরাণ জাতীয় কাব্য রচনায় উঠে এসেছে অন্যান্য উপাখ্যানের সঙ্গে ‘দেহি পদপল্লবমুদারম’এর কাহিনী - কবি ‘স্মরগরল খণ্ডনং, মম শিরসি মণ্ডনং’ পর্যন্ত লিখে ভাবতে ভাবতে গঙ্গা স্নানে গিয়েছেন। ইত্যবসরে স্বয়ং ভগবান কবির রূপ ধরে পদ্মাবতীর অতিথি হয়ে গীতগোবিন্দের পুঁথি খুলে লিখে দিয়ে যান ‘দেহি পদপল্লবমুদারম’। অসাধারণ এই উপাখ্যানের গুণমূল্য। শুধু ভক্তিভাবের নয়, তাঁর সঙ্গে জুড়ে যায় এক কবিবরের নন্দন চেষ্টার অসামান্য অন্ত্যমিলন। এই কাহিনীর থেকে বড় রোমাঞ্চকর আর বোধহয় কিছুই নেই। এই স্মৃতিটুকুই যদি ঐতিহাসিক নাও হয়, তাহলে বাংলার গীতিকাব্যের প্রথম ও প্রধান স্রষ্টার স্মৃতি-বিজড়িত স্থানটি যে সেদিন থেকেই কাব্য, সঙ্গীতপ্রেমী গ্রামীন বাঙালীদের তীর্থস্থান হয়ে উঠেছে, ব্যাপকতম জনসমাবেশে, তা বুঝতে কোষ্ঠি বিচার করতে হয় না।
কেঁদুলিতে রয়েছে রাধাবিনোদের মন্দির। কথিত এটি কবির বাসস্থানের ভিটের ওপরে তৈরি। ১৯২৩-২৪ সালের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বাতসরিক সমীক্ষায় বলা হচ্ছে, it is an example of the nava-ratna or the nine towered type of temple, in which, one central tower is surrounded by two sets of corner towers at two different levels. The façade of the temple is richly decorated with brick tiles representing the various incarnations of Vishnu and scenes from the Ramayana, including the war between the monkeys and demons. বাংলার প্রাচীনতম মন্দিরগুলির মধ্যে রাধাবিনোদের মন্দিরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব যথেষ্ট। মন্দিরের পিছনে একটি পিতলের রথ রয়েছে, তাঁর এচিংএর কাজ দৃষ্টিনন্দন বাংলার কর্মকারদের একটি উল্লেখযোগ্য সৃষ্টিকর্ম।
মেলাকৃতি
মেলা হয় পৌষ-সংক্রান্তিতে কেঁদুলিতে বা যেমন মাঘে দধিয়াবৈরাগীতলায়। এই সময় নতুন ধান ওঠে চাষী আর গৃহস্থের ঘরে। মেলাগুলির অর্থনৈতিক বনিয়াদ তৈরি হয়েই যায়। হাজার হাজার বলা ভাল লাখে লাখে কাব্যতীর্থযাত্রী গ্রামীন অন্নসত্রগুলিতে খেয়ে যান। পৌষের শেষদিনে এই মেলার শুরু। সেদিন হলো "অধিবাস'। পরেরদিন অর্থাৎ মাঘের প্রথম শুরুতে মকর স্নান করে সাধু, সন্ন্যাসী, বৈষ্ণব ভক্ত ও অন্যান্যেরা মেলা দর্শন করেন, ঘুরে ঘুরে। এদিন হল "নাম'। মানে অস্থায়ী আশ্রমের প্যান্ডেল গুলোতে রাধা গোবিন্দের নামগান হয় সারা দিন রাত। আর বাউল ফকিরেরাও নিজেদের আনন্দমেলায় ডুবিয়ে রাখেন নেচে গেয়ে। শেষ দিন "ভোগ'। সাধু, সন্ন্যাসী, ভক্তদের মাটির মালসায় ভোগ খাইয়ে "সেবা' করা হয় নানা অস্থায়ী আখড়াগুলোতে।
জয়দেব বা কেঁদুলি—যে নামেই ডাকি না কেন, এই গ্রামের আসল বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করার মতো। এই গ্রামে শাক্ত ও বৈষ্ণব সম্প্রদায়ের মধ্যে গড়ে উঠেছে নিবিড় আত্মীয়তার সম্পর্ক। আর মেলার নাম যদিও জয়দেব মেলা, কিন্তু শেষ পর্যন্ত এটা বাউলদেরই মেলা। এখানে এই মেলা উপলক্ষে যত বাউল সমাগম হয় তত আর কোথাও হয় না। মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী থেকে সিলভ্যাঁ লেভি, কে না এসেছেন বাউলদের, বলা ভাল বাংলার ইতিহাসের শেকড়ের টানে। বাংলার সাংস্কৃতিক ইতিহাস যে লুকিয়ে আছে এই মেলার প্রকাশভঙ্গীতে। সেই শেকড়ের জাল ছাড়িয়ে খুঁজে নিতে হয় ইতিহাসের ভিত্তিপ্রস্তর। সেই ইতিহাসকে আজও ধারণ, লালনপালন করেছেন আজস্র গ্রামীণেরা তাঁদের নিজস্বতার প্রণাম দিয়ে বংশপরম্পরায়। আউল বাউলদের সঙ্গে জয়দেব-কেঁদুলিতে খুঁজে নিতে হয় সেই প্রত্নতত্ত্বের ভূমি। বাংলার বাউলেরাই জয়দেবের গীতিগঙ্গার অন্যতম প্রবাহ। অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মীদের সঙ্গে ফকিরবাউলরা ধরে রয়েছেন তাঁর উত্তরাধিকার। গীতগোবিন্দ আজও কেঁদুলির বালকেরা গান গেয়ে বেড়ায় – আর মনে মনে গেয়ে বেড়ান অজস্র গ্রামবাংগালী – যাদের জন্য আজও টিকে রয়েছে কেন্দুবিল্বের মেলা জয়দেব উপসর্গে – নিজের জোরে।
No comments:
Post a Comment