কয়েক দশক আগেও পূর্ব মেদিনীপুরের বহু কারিগরপরিবার বাঙলার অন্যতম প্রধান ও
পরম্পরাগত নিজস্ব শিল্প, গালার পুতুল, গালার গয়না তৈরির যুক্ত ছিলেন। বিগত
তিন-চার দশকের টালমাটাল সময়ে, বাঙলার সামগ্রিক পারম্পরিক শিল্পের ভাঁটার টানে, গালার পুতুল তৈরির অনেক পরিবার বৃত্তিচ্যুত হয়ে
দিনমজুর বনে গিয়েছেন। পূর্ব
মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে এগরা অথবা খড়্গপুর থেকে এগরা হয়ে ভাগবানপুর-বাজকুলের পথে
বাস বা ট্রেকারে খড়ুই বাজার। বাজারের পথ বেয়ে খড়ুই গ্রামের
প্রখ্যাততম বাসিন্দা-পরিবার গদাধর চন্দ, বৃন্দাবন চন্দ আর কানাই নন্দী গালার পুতুল
তৈরির অদম্য কারিগর পরিবার।
বৃন্দাবন
অগ্রজ, শ্রীবাস
দৃষ্টি খুইয়েছে চিরকালের জন্য। বাঙলার পারম্পরিক শিল্প বিকাশে তাঁর
শরীরের অমূল্যতম অঙ্গ, চক্ষুরত্নটি চিরকালের জন্য হারিয়েছেন, এ অসাধারণ অবদানময়
তথ্যটুকুও বাঙলার সমাজে স্বীকৃতি পায় নি। চোখ হারিয়ে শ্রীবাস আর তার
পরিবার আজ কর্মহীন।
ঐতিহ্যেস্থিত থেকে বৃন্দাবন চন্দের
কাজে সূক্ষ্মতম অন্তর্লীন নিজস্বতা শিল্প সংগ্রাহক-রসিকদের অন্যতম প্রধান পাওনা। আজও তার কর্মে
কলকাতার পশ্চিমি শিক্ষায় শিক্ষিত শিল্প নির্দেশকদের ছোঁয়া লাগেনি, এ তথ্য আশ্বাসজনক। এই শিল্প-নিজস্বতা
বৃন্দাবন, অদম্য বাঙলার গ্রামীণ সমাজ থেকেই অর্জন করেছেন অননুকরনীয় পারম্পরিক
অনপনেয় অনেককালের প্রাচেষ্টিক দক্ষতায় – অশিক্ষিতের পটুত্ব বাঙলার মধ্যবিত্তের প্রযোজনায়
তৈরি অশ্লীলতম বাক্যবন্ধশুধু। কলকাতার
প্রখ্যাত বিদ্যালয়ে বৃন্দাবন আজও বাঙলার ঐতিহ্য-মন্ডিত শিল্পকে নিয়মিত নতুন
প্রজন্মের সামনে তুলে ধরার কাজ করে চলেছেন, নানান বন্ধুর উদ্যমেও কর্মশাল আয়োজন করেছেন
রবীন্দ্রভারতী বিশ্বদ্যালয়েও। গালাঋদ্ধ প্রামাণ্য চেহারার মুর্তি
তৈরিতে আজও নানান প্রান্ত থেকে তিনি ডাক পান। ভারতীয় বর্ণময়
পারম্পরিক পুতুলকলার সঙ্গে খড়ুইএর গালার পুতুল গড়ার ধারার এক সরলরৈথিক পরম্পরা
রেখা অঙ্কন করা যায় স্বচ্ছন্দে। খড়ুইএর শিল্পীরা বাঙলার এই চিরাচরিত
সম্পদের ধারকবাহক। নানান পিছুটান, অভাব, বঞ্চনা, অযাচিত অপমান সত্বেও, তারা
চিরাচরিত শিল্পবিদ্যা প্রদর্শণে একাভিমানমুখী। মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজে পশ্চিমমুখীনতার
আদেখলেপনা সত্বেও সাধারণ এই তথ্যটি আজও দেশজভাবনায় উদ্বুদ্ধ শিল্পী, রসিকদের দেশের
মাটির গভীরে পা রেখে দাঁড়িয়ে থাকতে প্রাণিত করে।
অদম্য বৃন্দাবন আজও বয়ে চলেছেন কয়েক
হাজার বছরের বাঙলার প্রাচীণ শিল্পধারা, হয়ত স্বরস্বতী-মহেঞ্জোদাড়োর সভ্যতা রেশের অন্যতম
শেষ প্রতিভূ তিনি। আর কত দিন পারবেন কে জানে। যে ব্যস্তানুপাতিক
হারে অনুপানগুলির দাম বাড়ছে আর শিল্পদ্রব্যের দাম আর বাজারের ওপর শিল্পীর পকড়
কমছে গুণোত্তর প্রগতিতে, তাতে শুধু বৃন্দাবনেদেরমত শিল্পনৈপুণ্যধারী পরিবারের
বেঁচে থাকার আশংকা দৃঢ় থেকে দৃঢ়তর হচ্ছে। বাংলার ইতিহাস অথবা সংস্কৃতিতে
আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকা হাজারো পারম্পরিক কারু, বয়ন ও অভিকর শিল্পের সঙ্গে যাঁরা হাতেকলমে
যুক্ত, তাঁদের প্রত্যেক পরিবারের সম্বন্ধে একই কথা বলা যায়। পারম্পরিক
হাট-বাজারের নাগাল চলে যাচ্ছে বৃন্দাবনেদের হাত ছাড়িয়ে অভঙ্গুর প্লাস্টিকের পুতুল
ব্যবসায়ীদের হাতে, মাটির তলার তেল ব্যবসায়ী আর প্রশাসকদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অদৃশ্য
পরিকল্পনায়। বাঙলার পারম্পরিক শিল্পী আর শিল্পের উন্নয়ণ
বিষয়ে যাঁরা আগ্রহী বলে শোনা যায়, সেই মধ্যবিত্ত নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, রাষ্ট্রব্যবস্থার
সমাজপতি রাজনীতিক অথবা তাদের স্নেহধন্য সরকারি অথবা বেসরকারি অর্থদান উদ্যমে ব্যস্ত
প্রশাসকদের শুধুমাত্র চাকরি বাঁচানো, নিয়মরক্ষার হাতেগোণা চটজলদি প্রকল্প তৈরির
বাইরে, পারম্পরিক শিল্প-শিল্পীর বিলীনতার এই আশংকা, ভাবনারূপে ভাবিয়ে তুলে নতুন প্রচেষ্টায়
উদ্যমী করানো যে যাচ্ছে না, সেটাও বোধহয় বিন্দুমাত্র আশ্চর্যের নয়।
বৃন্দাবনদেরমত প্রজন্ম শেষ হয়ে যাওয়ার মধ্যে দিয়েই কী শেষ হয়ে যাবে বাঙলার আর এক
বিশ্ববরেণ্য প্রযুক্তি আর শিল্প-উদ্যম, গালার পুতুলাদি!
ইওরোপিয় ব্যবসায়ী-প্রশাসকেরা বাংলায়
জাঁকিয়ে বসার আগেই বাংলা শুধু উদ্বৃত্ত অর্থনীতির দেশ ছিল না, প্রযুক্তিতেও বাংলা
বিশ্বের অন্যতম প্রধান জনপদ ছিল, বেশকিছু প্রযুক্তি বাংলার নিজস্ব ছিল। ব্রিটিশ
আমলের পূর্বে বিশ্বের রপ্তানি বাজারে বাংলার গালা বা লাক্ষার পাশাপাশি আফিম, নীল
রং, লৌহ আকরিক, প্রশিক্ষিত হাতি, হাজার হাজারমনি নৌকো, পান, সুপুরি, তাঁত, রেশম,
মুগা, গুড় এবং গুড়জাত মদ্য- গৌড়ির চাহিদা ছিল অসীম। বিশ্বজোড়া
প্রায় একচেটিয়া বাজার, অথচ বাঙলার প্রখ্যাতসব বণিকেরা সমাজের বিধিনিষেধের আওতার
মধ্যে থেকেই বিশ্বজুড়ে ব্যবসা করতেন। ইওরোপিয় উদ্যমী এবং বণিকদেরমত, সামাজিক
গঠণ অথবা প্রযুক্তির পরিবর্তন ঘটিয়ে বিশ্ব বাজার দখল করার বিধ্বংসী পরিকল্পনা তৈরি
করে নি- বলাভাল সমাজ করতে দেয় নি। দ্বারকানাথ ঠাকুরের সময় থেকে ইওরোপিয়
আধিপত্য বিকাশের সঙ্গে পায়ে পা মিলিয়ে বাঙালির যে নিপীড়ণ আর ধংসমূলক বাণিজ্য বা
উত্পাদনের পরিকাঠামো বিকাশ প্রচেষ্টার শুরু হল, তার মাধ্যমে বাংলায় বৃন্দাবন চন্দদেরমত
স্বনির্ভর কারিগরদের স্বনির্ভরতার বিলয়, বাংলার বিশ্বজয়ী পারম্পরিক বণিকদের
পরাধীণতা, বাংলার অর্থনীতি-প্রযুক্তির ধংসের উদ্যমের যুগ শুরু। ভারত-চিন-পারস্য,
এই তিন অক্ষ ১৮০০ সন পর্যন্ত বিশ্ববাজারের ৭০ শতাংশ শিল্পদ্রব্য উত্পন্ন করত। এই
অকেন্দ্রীকৃত উত্পাদন ব্যবস্থার বড় অংশিদারিত্ব ছিল বৃন্দাবনেরমত বাঙলার শিল্পী-ব্যবসায়ীদের।
এই গালা গলানোর, গালা রাঙানোর,
ছোপানোর প্রযুক্তি বাঙলার কারিগরদের হাতে বিকশিত হয়েছে বছরের পর বছর। শুধু
শিশুদের উপযোগী রঙিন খেলনা পুতুল নয়, অসম্ভব সুন্দর রঙিন গালার চুড়ি, দুল, লকেটসহ
নানান ধরণের দৈনন্দিনতায়ঋদ্ধ ব্যবহার্যের সঙ্গে ঘর সাজানোর বহু শৌখিন দ্রব্যও তৈরি
করতেন শ্রীবাস, বৃন্দাবনেরমত কারিগরের পূর্বজ, হাজার হাজার বছরের অর্জিত অসীমতম
দক্ষতামানক ব্যবহার করে। এঁরাই একদা এবং আজও বাঙলা শিল্পের অন্যতম
ধারকবাহক ছিলেন আছেন, মধ্যবিত্ত বাঙালি মানুক ছাই না মানুক।পাঠকেরা দয়াকরে
মনে রাখুন ব্রিটিশপূর্ব বাঙলা তথা গৌড়বঙ্গের সীমা ছিল(বাঙলা সুবা নয়), পশ্চিমে
দ্বারভাঙা(দ্বারভাঙা অর্থাত দ্বারবঙ্গ, বঙ্গের দ্বার – মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ
উবাচ) পূর্বে ছিল মায়ানমার সীমান্ত, দক্ষিণে ওড়িশা।
গালার পুতুল অথবা সাজনের দ্রব্য আদতে
পোড়ামাটির ওপর রঙিন গালার কাজ। প্রথম উদ্যম
উইএর ঢিবির মাটিতে পুতুল তৈরি। এই মাটিতে কাঁকর থাকে না,
আর মাটি মসৃণ
আর আঠালো হয় - চিট ধরে। মাটির পুতুল তৈরি করে পোড়ানোর পর মসৃণতার ধর্মের জন্য
যদৃচ্ছভাবে গালা লাগানো চলে। প্রায় সারা বছর এই মাটি সংগ্রহ করা
গেলেও বছরের বর্ষার সময় এই মাটি বেশি পরিমানে সংগৃহীত হয়। বড়
পাত্রে এই মাটি নিয়ে জল মিশিয়ে দু-তিনদিন রেখে তাল তৈরি করে কাঠের পাটাতনে মাটিকে ডলে
ডলে মিহি করা হয়, রসগোল্লা অথবা সন্দেশের জন্য ছানা তৈরির কারিগরীতে। এর পর
হাত দিয়ে টিপে গণেশ, লক্ষ্মী, ত্রিনাথ,
নানান ধরনের
পশু, কচ্ছপ, ডাইনোসর, পাখি,
গলার হারের
লকেটসহ নানান ধরনের ব্যবহার্য তৈরি করা হয়।
পুতুলের বর্ধিত
অংশে সরু লোহার তার ঢোকানো হয়, তার স্থায়িত্ব দেওয়ার জন্য। শিল্পদ্রব্য
গড়ে দিন-তিনেক
ছায়ায় রেখে, বেশ দু-তিন দিন রোদ খাওয়ানো চলে। মোট
সাতদিনের
ছায়া-সূর্যের খেলা চলে। শুকনো পুতুল ভাটিতে দেওয়ার কাজ শুরু হয়। ভাটি
হয় আড়াই ফুট থেকে তিন ফুট উঁচু।
ভাটির নিচের
থেকে কিছু ওপরে লোহার রড দিয়ে ঘুঁটে সাজানোর পর আনুভূমিকস্তরে কিছু
পুতুল রেখে আবার ঘুঁটে সাজানো হয়, এরপর স্তরে স্তরে ১৫০টি পুতুল-ঘুঁটে
সজ্জার পর আগুণ
দেওয়া হয়। যতক্ষননা ওপরের স্তরের ঘুঁটে পুরো পুড়ে না যাচ্ছে,
ততক্ষণ পোড়ানো
চলে। সাধারণতঃ
সকালে আগুণ লাগালে বিকেলে পোড়া পুতুল ভাটি থেকে বার করা হয়।
শিরিষ আর কুসুম গাছের বর্জ গালা
– কিন্তু আজকাল শিল্পীরা বড়বাজার থেকেই গালা কেনেন। পুতুল
তৈরির মতই গালার সুতো আর খড়ি তৈরির পদ্ধতিও বেশ সময়-দক্ষতাসাধ্য প্রক্রিয়া। বাঁশের
দুটো কঞ্চির
দণ্ড নিয়ে সেটিকে গরম করে দুটি দণ্ডের মুণ্ড দিয়ে গরম গালা চটকে চটকে সুতো
তৈরি হয় অলঙ্করণের জন্য আর গালার খড়ি তৈরি হয় সাধারণ রং করার জন্য। হলুদ হরিতাল সর্বঘটে কাঁঠালি
কলা। পুতুলে রং
করার জন্য প্রথমে একটি পাত্রে(প্রতিবেদকের
দেখা, বাতিল আর্ধেক ভেঙে কলসির মুখ মাটিতে
বন্ধ করে, মুখটি মেঝের
দিকে রেখে, আধখোলা কলসির পেটে জ্বালানো হয় কাঠকয়লা)
কাঠকয়লা ধিকিধিকি করে জ্বেলে দুটি একটি পুতুল গরম করা হয়, এরপর
পুতুলের নিচের দিকে ফুটোতে
লোহা অথবা বাঁশের
দণ্ড আটকে দন্ডটিতে আটকানো পুতুলকে আগুনের ওপরে ধরে, ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে প্রয়োজনীয়
রং আর অলঙ্করণ
হয়। এই কাজে বড় অনুপান, গালা। দাম বাড়ছে শশীকলাপ্রায়। অথচ
পুতুলের অথবা গয়নার দাম বাড়ালে বাজার হারানোর সমস্যা।
ঠান্ডাপানীয়ের, শহুরে ছবির দাম বাড়লে সেই বাড়বাড়ন্ত নতমস্তকে গৃহীত হয় আর
পারম্পরিক শিল্পদ্রব্যের কয়েক টাকা দাম বাড়লে, ব্যাটারা লুঠে নিল, গরীব
তবু খাঁই কম নয় জাতীয় মন্তব্যও হামেশাই ভেসে আসে।
ইংরেজ আমল থেকে বাংলা তথা ভারতের পারম্পরিক
শিল্পউদ্যোগকে অবাঞ্ছিততম হস্তশিল্প বলার চল তৈরি হয়েছে, যে লব্জ গবেষক, কর্মীদের
বহুব্যবহারে চুঁইয়ে চলে গিয়েছে সমাজের নানান স্তরে। বেশ ভাল
কথা, কেননা বাংলার পারম্পরিক শিল্পী-উদ্যমীরা আজও কেন্দ্রীকৃত সমাজ-বিশ্ব ধংসকারী দৈত্যসম
শিল্পদ্যোগে আদৌ বিশ্বাসী নন, যদিও তাঁরা একদা বিশ্বজয়ী বাঙালি শিল্পী ছিলেন। শ্রীবাস অথবা বৃন্দাবনেরাই নয়, বাংলার অযুত পারম্পরিক
শিল্পী-উদ্যোগী আজ বাঙলার মানচিত্র থেকে মুছে যেতে বসেছেন। শুধু বাজার
হারানোর যন্ত্রণাই তাঁদের একমাত্র যন্ত্রণা নয়।
পশ্চিমি গণতন্ত্রের বনিয়াদ যত দৃঢ়
হচ্ছে ভারতের মাটিতে ততই বৃন্দাবনেদেরমত শিল্পী-উদ্যমীরা বিলুপ্তপ্রায় হচ্ছেন আগ্রাসী
বাজারের খাঁই আর মধ্যবিত্ত আমলাদের নিশ্ছিদ্র লুঠ-পরিকল্পনায়। ইংরেজ আমল
থেকেই এদের, গরীব, আনপড়, অজ্ঞাণী, পরনির্ভররূপে চিহ্নিত করার যে চেষ্টা চলেছে,
তার প্রভাব পড়েছে স্বাধীণতার পরের সরকারি-বেসরকারি পরিকল্পনায়। ফলে অদম্য ভারতীয়
তথা বাঙলার সভ্যতা সৃষ্টিকারী শিল্পী-উদ্যমী থেকে স্বাধীণতার পর থেকে নানান উদ্যমে,
বৃন্দাবনদেরমত শিল্পীদের পিঠে সাধারণ দিনমজুর, খেটেখাওয়া, গরীব, বিপিএল, অথবা করুনতম
হস্তশিল্পীর ছাপ পড়ে গিয়েছে। এরা সকলেই দাগি শ্রমিক, সরকারি পরিকল্পনা
আর অনুদানরাশিতে তা স্পষ্ট। শিল্পী-উদ্যমীরূপে যতটুকু অহং
অবশিষ্ট ছিল, তাও শুষে নিয়েছে মধ্যবিত্তকেন্দ্রিক ইওরোপিয় বামপন্থার সংগঠিত ভালকরার
উদ্যম। পারম্পরিক শিল্পীরা বিপিএলশ্রমকার্ডধারী,
ভারত সরকারের ন্রেগা পরিকল্পনার ১৫০ টাকার মাটিকাটার মজুরমাত্র। সামাজিক নিরাপত্তা
প্রায় শূন্য, রোজগারও তথৈবচ, সামাজিক সম্মানের কথা যত কম বলাযায় তত ভাল।
তবুও নতুন মধ্যবিত্ত প্রজন্মের একটি
অংশ নতুন করে সামাজিকভাবে আবার শেকড়ে ফিরতে চাইছেন, এটিই সব থেকে বল-ভারসার কথা –
তাই কলকাতা তথা জেলার নানান শিল্প মেলায় বিক্রি বাড়ছে। তাদের দিকে
বৃন্দাবনদের প্রজন্ম আজও তাকিয়ে রয়েছেন। এই
শেকড়ছেঁড়া উদ্দাম সময়ে শ্রীবাস, বৃন্দাবনদেরমত সামাজিক শিল্পীদের বাঁচা একান্ত
প্রয়োজন। তবেই বাঙলার শিল্প-প্রযুক্তির ইতিহাস
বাঁচবে। আশ্বাসের কথা মধ্যবিত্ত নতুন প্রজন্ম বোধ হয় সেটুকু
বুঝতে পেরেছেন।
No comments:
Post a Comment