''যখন আগ্নেয় যন্ত্র বাঙ্গালায় প্রথম আনীত হইল, আনন্দে ইতর লোকেরা গাইয়াছিল ;–
'কি কল বানালে সাহেব কোম্পানি;
কলেতে ধূম উঠে আপনি।'
'কি কল বানালে সাহেব কোম্পানি;
কলেতে ধূম উঠে আপনি।'
তখন তাহারা জানিত না যে সেই কলে তাহাদের কোন অপকার হইবে; এখনও অনেক ভদ্র বাঙ্গালী জানেন না যে কলের আবির্ভাবে বাঙ্গালার কোন অপকার হইয়াছে বা হইতেছে ।
বাঙ্গালার ভূমি-কর্ষণ আর বস্ত্র-বয়ন, এই দুই প্রধান কার্য্য ছিল। অধিকাংশ লোকেই এই দুই কার্য্যে লিপ্ত থাকিত। যেমন কস্মিনকালে অন্যদেশ হইতে বাঙ্গালায় চাল আমদানির প্রয়োজন হইত না, সেই রূপ কস্মিণকালের জন্য অন্য দেশ হইতে পরিধানের বস্ত্র আসিত না, এইখানেই প্রস্তুত হইত।
চল্লিশ বৎসর পূর্বে আমি স্বচক্ষে দেখিয়াছি, কি ব্রাহ্মণ কি কায়স্থ, প্রায় ঘরে ঘরেই চরকা ঘুরিত। প্রাচীনকালে একটি চলিতকথা ছিল যে 'রাজার মা সোনার পাঁনজ কাটে।' এই প্রবাদ দ্বারা এই বুঝা যায় যে সুতা-কাটা বাঙ্গালার সকল অবস্থার লোকের সম্ভব ছিল।
কেহ মৃদু স্বরে অকারণ কাদিতেছে শুনিলে আমরা এখনও রাগ করিয়া জিজ্ঞাসা করি 'কে সরু সুতা কাটিতেছে।' সূতা কাটার বড়ই প্রভাব ছিল বলিয়া এসকল কথা অদ্যাপি ঘরে ঘরে থাকিয়া গিয়াছে। অধিক কি ! সুতা কাটা দেখিয়া তৎকালে বিবাহের পাত্রী মনোনীত হইত।
পূর্বকালে বাঙ্গালায় মোট যত ধন প্রতিবৎসর বৃদ্ধি পাইত, তাহার মধ্যে স্ত্রীলোক উপার্জিত ধনাংশ পুরুষ উপর্জিত ধনাংশ অপেক্ষা নিতান্ত কম ছিল না। স্ত্রীলোক কর্তৃক এরূপ অংশে অর্থবৃদ্ধি আর কখন কোন দেশে হইয়াছে কি না সন্দেহ।''
- বঙ্গদর্শন, ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দ
বাঙ্গালার ভূমি-কর্ষণ আর বস্ত্র-বয়ন, এই দুই প্রধান কার্য্য ছিল। অধিকাংশ লোকেই এই দুই কার্য্যে লিপ্ত থাকিত। যেমন কস্মিনকালে অন্যদেশ হইতে বাঙ্গালায় চাল আমদানির প্রয়োজন হইত না, সেই রূপ কস্মিণকালের জন্য অন্য দেশ হইতে পরিধানের বস্ত্র আসিত না, এইখানেই প্রস্তুত হইত।
চল্লিশ বৎসর পূর্বে আমি স্বচক্ষে দেখিয়াছি, কি ব্রাহ্মণ কি কায়স্থ, প্রায় ঘরে ঘরেই চরকা ঘুরিত। প্রাচীনকালে একটি চলিতকথা ছিল যে 'রাজার মা সোনার পাঁনজ কাটে।' এই প্রবাদ দ্বারা এই বুঝা যায় যে সুতা-কাটা বাঙ্গালার সকল অবস্থার লোকের সম্ভব ছিল।
কেহ মৃদু স্বরে অকারণ কাদিতেছে শুনিলে আমরা এখনও রাগ করিয়া জিজ্ঞাসা করি 'কে সরু সুতা কাটিতেছে।' সূতা কাটার বড়ই প্রভাব ছিল বলিয়া এসকল কথা অদ্যাপি ঘরে ঘরে থাকিয়া গিয়াছে। অধিক কি ! সুতা কাটা দেখিয়া তৎকালে বিবাহের পাত্রী মনোনীত হইত।
পূর্বকালে বাঙ্গালায় মোট যত ধন প্রতিবৎসর বৃদ্ধি পাইত, তাহার মধ্যে স্ত্রীলোক উপার্জিত ধনাংশ পুরুষ উপর্জিত ধনাংশ অপেক্ষা নিতান্ত কম ছিল না। স্ত্রীলোক কর্তৃক এরূপ অংশে অর্থবৃদ্ধি আর কখন কোন দেশে হইয়াছে কি না সন্দেহ।''
- বঙ্গদর্শন, ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দ
কৃতজ্ঞতা Chandan Shafiqul Kabir
No comments:
Post a Comment