নাকাড়া(কেটলড্রাম) – সার্বভৌম প্রধানের অনুগ্রহ প্রকাশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন ছিল সম্রাটের সৈন্য বাহিনীর নাকাড়া। সম্রাট যখন রাস্তায় নামতেন, তখন তার বাহিনীর সর্বাগ্রে থাকত নাকাড়ার দল। তাঁবুর দরজায় প্রতি তিন ঘন্টা অন্তর সেগুলি বাজত। নাকাড়া ছাড়া আর যেসব বাদ্য বাজত তার তালিকা আইনিআকবরিতে রয়েছে(Blochmann, i, 51)। সম্রাটের অনুগ্রহ দেখানোর একটা উপায় ছিল তার কোনও অনুগ্রহীকে নাকাড়া(খুশহল চাঁদ, Berlin ms. 495, fol. 4126bএ একে বলেছেন কুরকাহ) বাজাবার অধিকার (নওবত) দেওয়া এবং সেই অধিকারের সঙ্গে বাদ্যটি বাজাবার বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দেওয়া। নাকাড়া বাজাবার অধিকার থাকত অন্তত ২০০০ সওয়ার বা তদুর্ধ মনসবদারের। তবে কঠোরভাবে শর্ত দেওয়াছিল সম্রাটের উপস্থিতিতে সেগুলি বাজানো যাবে না এমন কী তার বাসস্থান থেকে কত দূরে বাজাতে হবে সেটাও বলে দেওয়া থাকত। দিল্লির রাজপথে নাকাড়া বাজিয়ে কুচ করা, সৈয়দ হুসেইন আলি খানের কথা অনুযায়ী সাম্রাজ্যিক অধিকারকে চ্যালেঞ্জ করা, যা তিনি ১৭১৯এ দক্ষিণ থেকে ফিরে ফারুখশিয়ারকে উৎখাত করতে করেছিলেন। সাধারণত আম দরবারে অনুগ্রহপ্রাপ্তের পিছনে নাকাড়া বাজানো হত তখন বুঝতে হত সম্রাট তাকে অনুগ্রহ করছেন। লর্ড লেকের অভিজ্ঞতা, রূপোর দুটি ছোট নাকাড়া প্রত্যেকটির ওজন ৩২ পাউন্ড হবেই; এটির মুখ চামড়া দিয়ে মোড়া এবং অনুগ্রহপ্রাপ্তের গলায় ঝুলিয়ে বেশ কয়েকবার পেটানো হত, এবং কোন মাপে সেটি বানাতে হবে তাও বলে দেওয়া হত(Thorn, ''War," 356)। অনুগ্রহের প্রতীক হিসেবে ছলন নাকাড়ার নওবতএর উদাহরণ পাচ্ছি আহমদ খান(১৭৪৮-১৭৫৪) এই ধরণের নাকাড়া দাম খানকে দিয়ে অনুগ্রহ প্রকাশ করায়, যিনি ফারুখাবাদের আহমদ খানের চেলা ছিলেন(Bangash Nawabs, Journal A. S. B., 1879, p. 161)।
উইলিয়াম আরভিনের আর্মি অব দ্য ইন্ডিয়ান মুঘলস থেকে
No comments:
Post a Comment