সম্প্রতি কলাবতী মুদ্রার সদস্যরা কবি জয়া মিত্র এবং তার স্বামী স্বপন মিত্রকে নিয়ে ঘুরে এল উত্তরবঙ্গ। আদত উদ্যেশ্য ছিল কারু ভ্রমণের স্থান নির্বাচন। এর সঙ্গে উপরি পাওনা জয়াদি-স্বপনদার সান্নিধ্য, তাদের সঙ্গে অনেক্ষন সময় কাটিয়ে মত বিনিময়, জয়াদিকে নিয়ে স্থানীয় ইতিহাস বোঝা, স্থানীয় জ্ঞান সঞ্চয় এবং দলীয় নানান কাজ সম্পাদনের সুযোগ। যেহেতু আমরা জয়াদিকে আমাদের সঙ্গে পেয়েছিলাম, এবং সঙ্গে ছিলেন ভারত পর্যটক স্বপন মিত্র, তাই আমরা শিলিগুড়ি থেকে একটি গাড়ি ভাড়া করে নিয়েছিলাম, যাতে তাদের নিয়ে যত বেশি সম্ভব স্থান ভ্রমণ করা যায়। জয়াদি-স্বপনদা ২৭-২৮ নভেম্বর জলপাইগুড়িতে তাঁদের চেনা পরিবারের বাড়িতে কাটিয়েছেন। আমরা, আমি ও মধু(মঙ্গল মালাকার)দা ২৯ তারিখ সকালে, একটি ৬ আসনের চার চাকা গাড়ি নিয়ে শিলিগুড়ি হয়ে পৌঁছই জলপাইগুড়ি কালিবাড়ির কাছে, তিয়াত্তরের মোড় হয়ে।
কলকাতা ছেড়েছিলাম ২৮ সকাল ৯টা নাগাদ, কলকাতা-হলদিবাড়ি সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস করে, কলকাতা স্টেশন হয়ে। মালদায় মধুদা ওঠেন। সেদিন রাতে আমরা শিলিগুড়ির ফাঁসিদেওয়ায় কাটাই, মধুদার ভায়রার বাড়ি। পরের দিন সক্কালে তাঁর ঠিক করে দেওয়া মণিপুর আর নাগাল্যান্ডে বসবাসকারী দুই নেপালি যুবকের গাড়ি নিয়ে রওনা দিলাম জলপাইগুড়ি।
জলপাইগুড়ির আসাম মোড় থেকে মিষ্টি, লুচি নিয়ে গিয়ে সকালের খাওয়া সেরে আমরা বেরোই দুপুর সাড়ে এগারোটা নাগাদ। ঠিক হল ধরব ময়নাগুড়ি বাইপাস হয়ে চ্যাংড়াবান্ধা-জামালদা--মাথাভাঙা-নীলগঞ্জ-কোচবিহার-তুফানগঞ্জ-রসিকবিলের পথ। ভাবছিলাম জামালদা থেকে জামালদা-রানিহাটির পথে ঠুনকির ঝাড় গ্রামে বৈরাতী-সত্যনারায়ণ-বিষহরা-ভাওয়াইয়া শিল্পী জিতেন গিদালের সঙ্গে দেখা করব কিনা। জামালদায় কিছুটা সময় বার করে চা-মিষ্টি খেলাম ঠিকই কিন্তু, সময় অভাবে জিতেনদার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়া হল না। রাস্তায় দেখলাম বিশাল সব কাঁটাতারের বেড়া। তিন বছর আগেই দেখতাম ইতি উতি কামতাপুরি রাজ্যের পোস্টার। এখন সামনে অন্ততঃ কিছু নেই প্রায়।
দুপুরে কোচবিহার শহরে খুব দামি খাবার খেয়ে সাড়ে তিন্তে নাগাদ পৌঁছলাম রসিক বিল গ্রামে। দেবব্রতর পৈতৃক বাড়ি। সে শিলচর বিশ্ববিদ্যালয়ে মহিলাদের জীবনী বিষয়ে গবেষনা করছে। যদিও ওরা থাকে মাথাভাঙায়। রসিক বিল গ্রামে ওর তুতোভাইয়েরা থাকেন, কাকা জ্যাঠা থাকেন। বিশাল বাস্তু। বিশাল শালী জমি। ধান চাষ আর সুপুরির বাগান। বাগানে খুবই অযত্ন। ওরা দুপুরের রান্না করেছে। কিন্তু তাঁর কয়েক ঘণ্টা আগে দুপুরের খাবার খেয়েছি। সেদিন বিকেলে আর কিছু খাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। জোর করলেও আমরা খেলাম না। ওরা রসিক বিলের বন বাংলো ঠিক করেছিল। সেই বিকেলে অদের পরিবার গ্রামের মানুশের সঙ্গে প্রচুর কথা বলে রাতে পৌঁছলাম থাকার যায়গায় - বন বাংলো। সঙ্গে আধা ঘন জঙ্গল। এত ভাল যায়গা কল্পনাই করিনি।
নিচেরগুলো পরেরদিনের সকালে তোলা ছবি।
|
রসিক বিলের মুল বাড়ি। ওপরে বন দেখার ব্যবস্থা। নিচে দুটো ৮ + ৮ বিছানার ঘর। ভাড়া ৯০০ টাকা। বেশ আরামদায়ক। পরিস্কার। |
|
বাঁ দিকে মুল বাড়ি, ডান দিকে সাদা দু-কামরার বাংলো, ৪টি বিছানা। ৭৫০ টাকা করে |
|
বাংলোর ঘর |
|
বাংলোর ঘরের বাইরে ছোট্ট বসার ঘরে বনকর্মী সুধাংশু, মধুদা(মাঝে), কালো জামায় স্বপনদা |
|
মুল বাড়ির ভেতরের স্থাপত্য |
|
বিল দেখার ওপরের ঘর |
|
ওপর থেকে নিচের জঙ্গল |
|
ওপরের বাইরের বন আর বিল দেখার বারান্দা |
|
নিচের ৮ বিছানার ঘর১ |
|
নিচের ৮ বিছানার ঘর২ |
No comments:
Post a Comment