তৃতীয় দিনে নতুন কিছু আর ঘটনা ঘটে নি.
শুধু মেলায় আসা মানুষের সংখ্যা আর শিল্পদ্রব্য কেনার পরিমানে এক দিন অন্যদিনকে ছাড়িয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা থেকে নতুন এক দর্শণের ভাব জন্মাল আজও ভারতে হাট অথবা মেলা কথাটার গুরুত্ব অসীম. বাঙলাদেশ, নেপাল, ভূটান এল কী না তা নিয়ো ৯৯ শতাংশ মানুষের বিন্দুমাত্র মাথাব্যথা নেই. তাঁরা সকলেই এসেছেন মেলার মিলন সাগরে. কেউ কিছু কিনবেন, কেউ আবার শুধুই দেখবেন, অধিকাংশই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পিয়াসী.
অথচ গ্রামে এধণের শিল্প মেলার আয়োজন হয় না বললেই চলে. কেন! এই প্রশ্নের সোজাসাপটা উত্তর - বিক্রি হয় না.
আদতে গ্রাম নিয়ে আমাদের শহুরেদের সব অদ্ভুত অদ্ভুত ধারনা রয়েছে. গ্রাম মানেই শুধুই কৃষি, গ্রাম মানেই কুসংস্কারের ডিপো, গ্রাম মানেই মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অতি অল্প, গ্রাম মানেই মেয়েদের মাথা নিচু করে থাকা আরও কত কী. এই মেলা এই প্রত্যেককটা প্রচারিত দর্শণের ওপরে বড় প্রশ্ন চিহ্ন ঝুলিয়ে দিল.
গ্রামেও যে ব্যাঙ্ককর্মী, শিক্ষক, ২০-২২ বিঘে ওয়ালা চাযী, কনট্রাক্টর, গাড়ির মালিক, ব্যবসায়ীরা থাকেন, গাড়ি সারানোর গ্যারেজ আছে, তেলের ডিপো আছে, ব্যাঙ্কের শাখা আছে, ইন্টারনেট কাফে আছে - এ তথ্য জানিনা. এই যে বিশাল বাজারটা ভগার নামে আমরা আঁজলা করে বহুজাতিকদের হাতে তুলে দিচ্ছি, দূরদর্শনের সংস্কৃতি ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দিচ্ছি আর আমাদের নিজেদের সংস্কৃতির ওপর কুড়ুল মারছি, এ সব দরের কথা অনেকে ভাবলেও কিছু অবাস্তব পরিকল্পনা ছাড়া কিছুই করে উঠতে পারি নি. এটুকু বলতে পারি মুখা খেইল, খন অথবা শহুরে গানের নাচ দেখার জন্য রাত একটা পর্যন্ত অন্ততঃ কয়েক হাজার মানুষ দাঁড়িয়েছিলেন. আমরা উদ্যোক্তারা জোর করে বন্ধ করে না দিলে কত রাত পর্যন্ত চলত কে জানে.
আমরা তবু বলি ভারতে হিন্দিছবি আর হিন্দি সিরিয়াল ছাড়া কিছুই বিক্রি হয় না.
মঙ্গলবার ছিল চান্দোলের হাটবার. হাটের দোকানদারেরা কতটা মেনে নেবেন এই মেলা তা নিয়ে শংশয় না থাকলেও আশংকা ছিলই.
কিন্তু অসামান্য গ্রামীণ সভ্যতায় তাঁরা মানিয়ে নিলেন, বন্ধু করে নিলেন.
কেউকেউ কুণ্ঠিত স্বরে প্রশ্ন করছেন নির্দিষ্ট স্থানে বসবেন কীনা. আমরা জানালাম এই মেলা জবরদখলকারী, তাঁরাই হাটবারের সত্যিকারের হকদার. এর উত্তর এল আপনারা কত্ত ভালকাজ করছেন, দু দিনেরআপনাদের সাহায্য করা আমাদের কর্তব্য. আমরা চালিয়ে নেব. কোনও অসুবিধে হলে বলবেন.
আমাদের পরম সৌভাগ্য ভারত এখনও ইওরোপ-আমেরিকা হয়নি, এখনও শহুরে দুর্বিনীতভাবটি গ্রামীণদের মধ্যে পুরোপুরি ঢোকে নি.
চান্দোল হাটে যবিদুরদার পানের দোকান
হাটবারে একটু আগেই মেলা বসে গিয়েছে
হাটবারের প্রস্তুতি, কুণ্ঠিতস্বরে এঅখানে বসলে আপনাদের অসুবিধা হবে কীনা প্রশ্ন
সন্ধ্যেয় জমজমাট মেলা
পবিত্রর মুখা নৃত্য দলের ব্যানার
সন্ধ্যেয় হাট
সাংবাদিক তপন চক্রবর্তী
বেশ ঠাণ্ডা, নারাণদার দোকানে উদ্যোক্তা তপন আর গণেশ
মেলায় শিল্পী টাকাগুণতেই ব্যস্ত - এ দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না
কেনাকাটা
গর্বিত ক্রেতা
No comments:
Post a Comment