এ পাশের ঔপনিবেশিক বাঙালি, তার সঙ্গে অভদ্রবাঙ্গালিরও পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়েছে। এক দিকে এনআরসি, অন্য দিকে পাতালে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা। বাঙালি বাঁচলে হয়।
যারা বৌবাজারে বাড়ি ধ্বসে পড়া নিয়ে ভিরমি যাচ্ছেন তারা জানেন না এই অঞ্চলে বিশাল একটা খাঁড়ি ছিল। বর্তমান কলকাতা অঞ্চলটা ছিল সুন্দরবনের অংশ। শিয়ালদা স্টেশন তৈরি করতে গিয়ে বহু সুন্দরীগাছের গুঁড়ি পাওয়া গিয়েছে। Utpal জানিয়েছিলেন তিনি কলকাতায় মাটি খুঁড়ে নৌকো পেয়েছিলেন। আলিপুরে টাঁকশালের কাছে সিরাজকে নিয়ে আলবর্দি সোঁদরবনের বাঘ শিকার করতে যেতেন। আজ যেটা ক্রিক রো বৌবাজার, মলঙ্গা লেন, অক্রুর দত্ত লেন - সেটা ছিল জেলে পাড়া। সেখানে আমতার বুজে যাওয়া দামোদরের জেলেরা বাস করতেন। সেই অঞ্চলের আজও নাম জেলে পাড়া(অক্রুর দত্ত লেন - যেখানে হিন্দুস্থ্যান রেকর্ডসেরে দোকান ছিল, বালসারা বাবুর বাড়ি ছিল প্রখ্যাত ধনীদের বাস ছিল, মেদিনীপুর থেকে আসা বিদ্যাসাগর মশাই প্রথম থাকতেন বা রমানাথ কবিরাজ লেন যেখানে আজও কলকাতা কৈবর্ত সমিতির বিশাল বাড়িটা আছে কয়েক বছর আগে প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী শঙ্কর প্রসাদ দে, তাঁর সমাজ কৈবর্ত সমাজের ওপরে বই লিখে তাঁর কর্তব্য করে গিয়েছেন) পাড়া ১৮০০ শতাব্দের প্রথম পাদে বুজিয়ে ফেলে রাস্তা ইত্যাদি করা হয়। কলকাতা যখন বাড়ছে সেই সময় লটারি কমিটি করে অর্থ তুলে এই অঞ্চলটা বাসযোগ্য করা হয় মাটি ফেলে।
ফলে যে জলাভূমি ভর্তি করে ডাঙ্গা তৈরি হয়েছে, সেই জলাভূমি চোখের সামনে অদৃশ্য হলে কী হবে মাটির তলায় তো রয়েই গিয়েছে - বিশাল ভূমিজল তো আর মিলিয়ে যেতে পারে না। পরিকল্পনাহীন ইতিহাস বোধহীন আমলাদের দিয়ে কাজ করালে যা হবার তাই হয়েছে। ঠিক যে জন্যে বিনয় ঘোষ একদা আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন যে কোনও দিন কলকাতা পাতালে ধ্বসে যাবে।
বাঙালির পাপের ঘড়া পূর্ণ হয়েছে।
No comments:
Post a Comment