দ্বিতীয় শ্রেণীর
তাঁতিরা, চাষী-তাঁতির মত চরম দরকারেও সহজে অন্য পেশায় চলে যেতেন না। হয়ত এই ধরণের
তাঁতিদের গরীব দাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাঁতির দারিদ্র আদতে বাস্তব কি না, তা জানা না
গেলেও এটা হতে পারত এক শ্রেণীর তাঁতি দালাল এবং পাইকারদের থেকে অগ্রিম নেওয়ার সময়
তাদের কাছে ঋণী হয়ে পড়তেন। তাদের অবস্থা ঘোরালো হয়ে যেত(Fact. Records, D~cca, vol. 3, Annex. to Consult., 17 'l':lov. 1754; 30 Nov. 1757)।
একই সময়ে বহু সময়
তাঁতিদের লভ্যাংশ মধ্যশ্রেণী ব্যবসায়ী বা অন্যান্য দালাল চুরি করে নিত। বস্ত্র
তৈরির সময় ব্যবসায়ীর পক্ষ থেকে দালাল মার্ফত তাঁতিদের সঙ্গে যে চুক্তি করা হত, সেই
চুক্তি বহু সময় দালালেরা মান্য করত না। তাঁতি যেহেতু গ্রাম্যপরিবেশে থাকে তাকে
দালালেরা অগ্রিম অথবা লভ্যাংশ দেওয়ার ব্যাপারে সহজেই বোকা বানাত। অনেক সময় আমলারাও
তার লভ্যাংশ খেয়ে নিত। জন টেলর বলছেন সরকারি কারখানাতেও প্রশাসনিক আমলারা তাঁতির
লভ্যাংশের ২৫% কেড়ে নিত, তাঁতি পেত চুক্তির মাত্র ৭৫% অর্থ (Home Misc., vol. 456F, f. i37)। তাঁতিদের দরকষাকষির শক্তিটা ততটা ছিল না, কারণ তাঁতিরা
শোষকের বিরুদ্ধে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে দরকষাকষি করত না। তবুও বলব অবস্থা সাধারণ বছরগুলোয়
খুব খারাপ ছিল না। ওরমের বয়ানেই বলা যাক his natural indolence ... is satisfied in procuring by his labour, his daily bread' (Orme, Military Transactions, vol. II, Sect. I, p. 9)। তাঁতি খারাপ দিনের ভাবনা ভেবে কাজ করত এরকম কোন নিদর্শন
পাওয়া যায় না। ডেনদের সূত্র থেকে কারিগরদের এই মনোভাব জানতে পারছি, In Bengal...the spinner and,the weaver require and expect no more than is necessary to pay for the material, procure enough to eat and to have a little leisure; when times are good they even flourish in this way(Ole Feldbaeck, 'Cloth Productiol). in Bengal', BPP,
vol. XXXVI, p. 126)।
তথ্য যাই হোক না
কেন এই তথ্য পরিষ্কার, আমাদের আলচ্য সময়ে তাঁতিদের অবস্থা পলাশী পরবর্তী অবস্থা
থেকে বেশ ভাল ছিল। স্বাধীনতার পূর্বে সে যতটুকু দরকষাকষি করার সুযোগ পেত অষ্টাদশ
শতকের দ্বিতীয়ার্ধে সে সেইটুকুও হারিয়ে ফেলে। অত্যাচারী এবং শোষক কোম্পানির আমলাদের
এই কাজে সাহায্য করত গোমস্তারা। সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণায় প্রায় ছবির মত করে দেখানো
হয়েছে অষ্টাদশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে কিভাবে তাঁতিদের ওপর অমানবিক অত্যাচার অমিত শোষণ
নামিয়ে আনা হত( N.K. Sinha, Economic History of Bengal, vol. I, pp. 157-181; D.B. Mitra, Cotton Weavers, pp. 49-87; Hameeda Hossain, Company
Weavers, pp. 108-39)। উনবিংশ শতকের অনামা এক রাজনৈতিক চটিবইএর রচয়িতার থেকে
আমরা এই চিত্রটি হুবহু পাচ্ছি The whole inland trade of the
country and the provision of the company's investment ... became one continued scene of oppression, the baneful effects of which was felt by every weaver and manufacturer in the country, every article produced being made a monopoly in which the English arbitrarily decided what quantities of goods each manufacturer should deliver, and the prices he should receive for them .... Generally a number of weavers are registered in .the books of the company's gomastahs, and not permitted
to work for any other persons, being transferred from one
gomastah to another as so many slaves, subject to the tyranny and
roguery of every succeeding gomastah. The
English with great strictness monopolized the weavers; their hardship is scarcely to be describe(Mss. Eur. D.'283. ff. 37-38. নজরটান সুশীলবাবুর)।
No comments:
Post a Comment