তিনি ডমন মুর্মু। খেঁটো ধুতি পরা। কালো। ক্ষয়াটে চেহারা। বাজার হেমব্রম মারা যাবার পর বাংলায় পরম্পরার প্রযুক্তির ধারক এই মানুষটিই হয়ত শেষ প্রয়ুক্তিবিদ যিনি বুক বাজিয়ে পশ্চিমি প্রযুক্তির মহত্ত্বর, বৃহত্তর, পরমতম হওয়ার ঘোমটা খুলে দেন, সাধারণ কয়েকটি কাঠ আর বাঁশের কঞ্চি, বুকে মাটির দক্ষতা, মুখে জ্ঞান, হাতে বাজনা আর নিজের শেকড়ে দাঁড়িয়ে থাকার মহত্বকে সম্বল করে লুঠেরা আধুনিকতার বুকে সজোরে লাথি মেরে। আমাদের মত সাধারণে তাঁকে জানে 'লুপ্তপ্রায়' চদর বদরের বা চাদর বাঁধনির শেষ শিল্পী হিসেবে। অথচ এই মানুষটি বাংলার স্বদেশি প্রযুক্তির বিষ্ময়কর ঐতিহ্য বহন করে চলেছেন সেই তথ্য আমরা কেউ জানার চেষ্টা করিনা। কেননা পশ্চিমের জ্ঞান চর্চা বলে দিয়েছে আদিবাসী প্রয়ুক্তি খুব-ই সাধারণ, খুবই প্রাচীণ, তার সঙ্গে তথাকথিত আধুনিক উদ্ভাবনের বিন্দুমাত্র যোগ নেই। ডমন মুর্মু আর চদর বদর এই মিথ মথ্যে সজোরে ধাক্কা মারেন কিন্তু আমরা মেকলের কাচ্চা-বাচ্চারা সেই লোকসংস্কৃতির ইওরোপিয় তথ্য তত্ত্বের চর্বিত চর্বণে নিমগ্ন থাকি- ব্যাটারা আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে জুঝতে না পেরে হারিয়ে যাচ্ছে সেই হা হুতাশে দু কলম ইংরেজি প্রবন্ধ লিখেও ফেলি। সেই লুপ্তপ্রায় লোকসংস্কৃতির হদিশ দিয়ে ছুটমুট পুরষ্কার বা পিঠ চাপড়ানিও পেয়ে যাই। সেই অসম্ভব এক প্রযুক্তি ধারণ করে রয়েছেন ডমন মুর্মু। তাই তিনি আজও স্মরণীয় আজও পঠিতব্য।
আমাদের এক বন্ধু ডমন মুর্মুকে নিয়ে একটা ছবি করতে চেষ্টা করছেন। কি দাঁড়াবে জানি না। এই সব প্রযুক্তির কথা বিদেশি প্রযুক্তির দাসত্বের কথা আসবে কি না জানি না। ডমন কাল ফরে গিয়েছেন। না বোধহয় তাঁর কোনও যোগাযোগের নম্বর নেই। আরও এক জন একটা ছবি করতে গিয়েছিলেন, স্থানীয় মানুষদের ক্ষিপ্ত করে ফিরেছেন। দ্বিতীয় বার আর সেখানে যাবার মুখ নেই। সেই কলকাতার আমি লজ্জার প্রতিনিধি।
অসামান্য এই দক্ষ কিন্তু আদ্যপান্ত নিরুপদ্রব এই মানুষটি দিনাজপুরে ইটাহারের থেকে প্রায় ২৫ কিমি ভেতরে একটি গ্রামে থাকেন। আমার দেখা তিনি একমাত্র শিল্পী যিনি নিজের জন্যই গান করেন। বানামটা যখন বাজান তখন মনে হয় তার সন্তানের সঙ্গে যেন চোখ বুজে কথা বলছেন। চদর বদরের সুতোটা যখন চোখ বুজে, গান করে করে একটু ঝুঁকে, পুরো মণ্ডপটা বুকে নিয়ে যখন তন্ময় হয়ে নাড়ান তখন তাঁর কাছে জগত মিথ্যা, টাকা পয়সা, সব প্রলোভন মিথ্যা, সামনে দাঁড়ানো মুগ্ধ মানুষজন মিথ্যা, শুধু সত্য তিনি তার তার শিল্প। অসামান্য হয়ে থাকবে আমাদের কয়েক জনের কাছে ২৯ অগ্রহায়ণ।
আমাদের এক বন্ধু ডমন মুর্মুকে নিয়ে একটা ছবি করতে চেষ্টা করছেন। কি দাঁড়াবে জানি না। এই সব প্রযুক্তির কথা বিদেশি প্রযুক্তির দাসত্বের কথা আসবে কি না জানি না। ডমন কাল ফরে গিয়েছেন। না বোধহয় তাঁর কোনও যোগাযোগের নম্বর নেই। আরও এক জন একটা ছবি করতে গিয়েছিলেন, স্থানীয় মানুষদের ক্ষিপ্ত করে ফিরেছেন। দ্বিতীয় বার আর সেখানে যাবার মুখ নেই। সেই কলকাতার আমি লজ্জার প্রতিনিধি।
অসামান্য এই দক্ষ কিন্তু আদ্যপান্ত নিরুপদ্রব এই মানুষটি দিনাজপুরে ইটাহারের থেকে প্রায় ২৫ কিমি ভেতরে একটি গ্রামে থাকেন। আমার দেখা তিনি একমাত্র শিল্পী যিনি নিজের জন্যই গান করেন। বানামটা যখন বাজান তখন মনে হয় তার সন্তানের সঙ্গে যেন চোখ বুজে কথা বলছেন। চদর বদরের সুতোটা যখন চোখ বুজে, গান করে করে একটু ঝুঁকে, পুরো মণ্ডপটা বুকে নিয়ে যখন তন্ময় হয়ে নাড়ান তখন তাঁর কাছে জগত মিথ্যা, টাকা পয়সা, সব প্রলোভন মিথ্যা, সামনে দাঁড়ানো মুগ্ধ মানুষজন মিথ্যা, শুধু সত্য তিনি তার তার শিল্প। অসামান্য হয়ে থাকবে আমাদের কয়েক জনের কাছে ২৯ অগ্রহায়ণ।
আর এই জিনিসটি লক্ষ্য করুন শুধু বাঁশ আর ফাঁস দিয়ে তৈরি মোড়া যায় এমন চার পাই, এতে এক ফোঁটাও লোহা ব্যবহার হয় নি, অথচ সাঁওতাল সমাজ লোহা গলানোতে দক্ষ ছিলেন
No comments:
Post a Comment