২০ আক্টোবর বিকেল সাড়ে
পাঁচটায় অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেছেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয়
উপাচার্য অধ্যাপক সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরী। এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি
হিসেবে ছিলেন গায়ক-বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা, বিশেষ অতিথির আসন অলঙ্কৃত করবেন
বিশ্বভারতীর প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ কুমার সিনহা। ছিলেন রাজ্য আকাদেমির
প্রাক্তন সচিব ড শিশির মজুমদার, বর্তমান সচিব ড হৈমন্তী চট্টোপাধ্যায় এবং নাট্য
এবং সংস্কৃতি জগতের প্রথিতযশা নানান ব্যক্তিত্ব। এই দুটি সাংস্কৃতিক প্রকাশভঙ্গী
কলকাতায় যে ভাবে উপস্থাপিত হতে যাচ্ছে, সেটি যুগান্তকারী এবং আশাকরা যায় আগামী
দিনে বাংলার নানান গ্রামীণ সংস্কৃতির সঙ্গে কলকাতার মানুষ নিশ্চই আরো বেশি পরিচিত
হবেন। এই দুই শিল্পীর আশা যে সাংস্কৃতিক প্রকাশভঙ্গী নিয়ে তাঁরা কলকাতায় আসছেন,
সেগুলি আরো বেশি গৃহীত হোক, আরও বেশি প্রচারিত হোক, আরো বেশি লালিত পালিত হোক।
এক নজরে গমীরা
গমীরা একটি বোড়ো শব্দ। বোড়ো সম্প্রদায় থেকেই
রাজবংশী সম্প্রদায়ের জন্ম, এই অভিমত গবেষক শিশির মজুমদারের। উত্তরবঙ্গের দিনাজপুর
ভৌগোলিক অঞ্চলে রাজবংশী দেশি-পলি সমাজ গমীরা বা মোখা খেইলএর সঙ্গে যুক্ত।
রঙ্গাভিনয় শব্দেও খেল শব্দটি জড়িত। চামুণ্ডা, ও কালী-কেন্দ্রিক এই পালা গমীরা।
শিব, গণেশ, নরসিংহি সহ নানান ধরণের মোখা নাচ হয়ে থাকে দিনাজপুরের নানান অঞ্চলে।
সাধারণত এই নাচ হয় চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন। গমীরা ঘট বসে মোখা নাচের আগে।
নানান গ্রামের বৈশ্যদাস, কৈবর্ত, রবিদাস সম্প্রদায়ের মানুষজন এই মোখা নাচে
অংশগ্রহন করেন। কেউ সাজেন চামুণ্ডা কেউবা কালী। নরসিংহি, বুড়াবুড়ি মুখোশ পরেন
আনেকে। কেউ পরেন শিকনি ঢালের মুখোশ। শিকনি ঢাল আদতে চামুণ্ডারই এক লোকায়ত রূপ।
শিকনি আর্থে শকুন। শকুন যেমন শিকার ধরতে তার বিশাল ডানা মেলে উড়ে আসে, এখনেও বিশাল
ডানা মেলে চণ্ডীরূপী শিকনি তাঁর বিশাল ডালা মেলে নেমে আসেন অশুভ নাশে। স্থানীয়
মানুষের বিশ্বাস আজও দেবদেবীর ভর পড়ে এই মোখা পরে নাচলে। মোখা নাচিয়েদের ওপর
চামুণ্ডার ভর পড়ে আজও। গমীরা ঘটের জল ছিটিয়ে হয় সেই ভর থেকে মুক্তি।
মধুমঙ্গল মালাকার নিজের শোলা শিল্প নিয়ে
ভারতের প্রতিনিধি হয়ে গিয়েছেন বিদেশে। তাঁর শোলার মোখা বাংলায় কেউ না চিনলেও সেটি
রয়েছে স্কটল্যান্ড, সানফ্রানসিসকো, ফিলাডেলফিয়া আর্ট মিউজয়ামে। বার্সিলোনায় রয়েছে
কালিমূর্তি। মাদ্রিদে রয়েছে পীরের ঘোড়া। নিউজিল্যান্ডে পোড়ানো হয়েছে শোলার রাবণ।
পাঁচ পুরুষ ধরে শোলার মোখা তৈরি করছেন মধুমঙ্গল। সেই মোখা নিয়ে তাঁর দল ২০ আক্টোবর
পরিবেশন করবেন গমিরা খোদ রবীন্দ্রনাথের জন্মস্থানে।
No comments:
Post a Comment