আজ আর কেউ ৪২এর খুন নিয়ে কথা বলে না. ঐতিহাসিকরেরা বলবেন মন্বন্তর, বাঙালি বলবে খুন, গণহত্যা. ব্রিটিশরা শহুরে মধ্যউচ্চবিত্ত বাঙালির সাহায্যে প্রায় ৩০(না বেশি) নিরীহ বাঙালিকে খুন করেছিল চোখের পলক না ফেলে.
বাঙলার ঐতিহ্যের বিস্তার বিষয়টি নিয়ে ঘাঁটতে ঘাঁটতে প্রথমে ৭৬ পরে ৪২এর গণহত্যার নানান দিক নিয়ে খুঁজতে থাকে কলাবতী মুদ্রার নথিকরণ দল. বহুমানুষ লিখেছেন - বিখ্যাত হওয়া মধুশ্রীও.
যা পাওয়া গেল তার অধিকাংশ চোখের সামনে থাকলেও অনেকের অজানা.
যা পাওয়া গেল তার অধিকাংশ চোখের সামনে থাকলেও অনেকের অজানা.
এই খোঁজের মধ্যে ইন্টারনেটে পাওয়া গেল লাইফ পত্রিকার ছবিওয়ালা উইলিয়ম ভ্যান্ডিভার্টের তোলা বেশ কিছু ঐতিহাসিক ছবি. সেই সূত্র ধরেই কলাবতী মুদ্রার এই ধারাবাহিক প্রতিবেদন.
ছবিগুলো আসবে সবার শেষ অংশে.
ইন্ডিয়া শাইনিং আর এফডিআইপুষ্ট আজকের উচ্মচধ্যবিত্তবাঙালি সেদিনের সুযোগসন্ধানীদের মত আজও উদাসীন.
কাঁদো বাঙালি কাঁদো!!
ছবিগুলো আসবে সবার শেষ অংশে.
ইন্ডিয়া শাইনিং আর এফডিআইপুষ্ট আজকের উচ্মচধ্যবিত্তবাঙালি সেদিনের সুযোগসন্ধানীদের মত আজও উদাসীন.
কাঁদো বাঙালি কাঁদো!!
অনেক
ঐতিহাসিক এবং রাষ্টবিজ্ঞানীর আজও দৃঢ় বিশ্বাস, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি আর
ব্রিটিশ সরকার দুটি আলাদা সংগঠণ। এই দার্শনিক ব্যবস্থাটা তিলে তিলে তৈরি করেছে প্রথমে
এডিনবরা বিশ্বিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফার্গুসন পরে মেকলের হাতে তৈরি উপনিবেশবাদ। বিপরীতে, মার্ক্সীয় তত্ব
অনুযায়ী ভারত বহুকাল থেকেই পিছিয়ে পড়া দেশ। ভারতের সামন্ততান্ত্রিক জড়তা ভাঙতে, ব্রিটিশ শাসন
অত্যন্ত জরুরি ছিল। ঔপনিবেশিক বুদ্ধিজীবিদের পিঠেপিঠি বামপন্থী গবেষকদের
ভারত সংক্রান্ত নানান বিষয় গবেষণার কাজ শুরুই হয় এই ভাবনার কুড় থেকে। মার্ক্সীয়রা বললেন, ভারত
সামন্ত্রতান্ত্রিকতার নিগড়ে বাঁধা, ভারত ভাঙা আর ভারত গড়ার দ্বৈত কার্যের দায়
ব্রিটিশরা না নিলে ভারত, আধুনিকতার দ্বারে পৌঁছত না। তাই ক্রমাগত ঔপনিবেশিকতার
প্রচারের জাল ছড়িয়ে, সমস্ত লুঠ আর নানান অত্যাচারের পদ্ধতি আবিষ্কার করার
নিষ্ঠুরতার দায় এড়ানোর এই ধরণাটি বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার প্রয়োজন তো ছিলই। নইলে অমানবিক নিষ্পেষণ আর
নিষ্ঠুরতার ওপর গড়ে ওঠা, সামগ্রিক ব্রিটিশ সভ্যতার ভিত্তিভূমিটাই ভেঙে পড়ে,
হিটলারের নেতৃত্বে নাজিদের অমানবিক কর্মের সঙ্গে ব্রিটিশ শাসনের বিন্দুমাত্রও পার্থক্য
টানা যায়না।
তবুও আড়াইশো মন্বন্তরে
কোটি কোটি মানুষের মৃতদেহের মিছিল, হাজার হাজার কৃষক-শ্রমিকের জাবিকা উচ্ছেদ,
হাজার হাজার বছর ধরে গড়ে ওঠা ভারতের চিরাচরিত সামাজিক কাঠামো ভাঙা, চুরি যাওয়া
জ্ঞাণ-বিজ্ঞাণের বদলে পাওয়া মহার্ঘ পশ্চিমি আধুনিকতার ওপর গড়ে ওঠা
(কু)শাসনের ভিত্তির অস্বস্তি কাটেনা। তাই মাঝেমাঝে ব্রিটিশ সরকারের সমস্ত ঔপনিবেশিক কুশাসনের
দায় ঝেড়েফেলার প্রক্রিয়া চালানোর প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
জোর কদমে সাম্রাজ্যের উপকারী কর্ম-দর্শন প্রচার
চালানোর পাশাপাশি, উপনিবেশিকদের বক্তব্য, ভারতে একচ্ছত্র বাণিজ্য-শাসন-সাম্রাজ্য
বিস্তারকারী, বিশ্বের নানান অঞ্চলে সরকার আর ব্যবসা চালানো, ইস্ট ইণ্ডিয়া
কোম্পানি, অন্যান্য বাণিজ্যগোষ্ঠীরমতই একটি বেসরকারি সংস্থা, যার সঙ্গে ব্রিটিশ
সরকারের কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিলনা। দুটি সংগঠণই বাস্তবে আলাদা আলাদাভাবেই কাজকর্ম চালাত। সংসদীয় গণতন্ত্রের বাস্তব
নিয়ম মেনে আর অবাধ বাণিজ্যের শর্ত মেনে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ঔপনিবেশিক
দেশগুলির সরকার চালানোর অধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ করেনি সার্বভৌম ব্রিটিশ সরকার। বিশ্বের নানান দেশে
বেসরকারি এই কোম্পানিটি যে কুকর্মগুলি করেছে, তার দায় একান্ত সেই কোম্পানিটিরই ওপর
বর্তায়, সার্বভৌম রাষ্ট্রকে কোনোভাবেই এই দায়ে অভিযুক্ত করা যায়না। এ ধরণের কুকর্মকাণ্ডের
দায়, কোনো সার্বভৌম সরকার নিতেও পারে না। ঔপনিবেশিকদের বক্তব্য, এভাবে প্রত্যকটি ব্যবসায়ী
সংগঠণের কুকীর্তির দায় সরকারের ঘাড়ে এলে দেশে শাসন চালানোই অসম্ভব হয়ে পড়বে।
অথচ ১৮০০তে যখন লন্ডনে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির
নতুন বাড়ি তৈরি হচ্ছে তখন C Northcote Parkinsonএর বর্ণনায় পাই কোম্পানির সস্নেহে মাথায় হাত রাখা রাজার
বর্ণনা- Austere,
classical and built of stone। The pillars crowned by a pediment
containing figures in relief, designed to indicate the nature of the business
transacted within its walls। Commerce, represented by Mercury, attended
by Navigation, and followed by Tritons on Sea Horses, is introducing Asia to
Britannia, at whose feet she pours out her treasures। The King is holding the shield of
protection over the head of Britannia and of Liberty, who is embraced by her -
By the side of His Majesty sits Order, attended by Religion and Justice। In the background is the City Barge etc। near to which stand Industry and Integrity - The
Thames fills the angle to the right-hand, and the Ganges the angle towards the
East.(সূত্র - sites.google.com/site/imperialisminindia/home/british-east-india-company)
বাস্তব হল, বিশ্বজোড়া ন্যুনতম বিনিয়োগে অত্যধিক
লাভের লুঠের ব্যবসার জাল ফাঁদতে গিয়ে, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে স্থানীয় রাজনীতি
নিয়ন্ত্রণে আনতে হয়, তা সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষমদত ছাড়া করা যায় না। তাই প্রথম থেকেই তাকে
সরাসরি সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করতে হত, ব্রিটিশ সরকার তাকে সেই অধিকারও দান করে। আর সেনা নিয়ন্ত্রণের জন্য
এবং সরকারের কাছ থেকে একচেটিয়া সনদ দখলে রাখার জন্য, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বারবার
রাষ্ট্রের অনুগত থেকেছে এই অংশিদারিত্বর সুফল পেয়ে, অন্যদিকে রাষ্ট্রও কোম্পানির
কাছ থেকে নানান সময়ে নানান সুযোগ সুবিধে আদায় করে নিতে পেরেছে। বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী
গবেষক যতই ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে রাষ্ট্রের সামগ্রিক বিভাজ্যতা দেখাবার
চেষ্টা করুন না কেন, কোম্পানির বাস্তব নিয়ন্ত্রণ কিন্তু বরাবরই ব্রিটিশ রাষ্ট্রের
হাতে ছিল- ব্রিটিশ সরকারের নানান আইন তার প্রমান।
১৬০০ থেকে ১৭৫০ পর্যন্ত একইভাবে রাষ্ট্রের
নির্দেশে নানান কুকর্ম করেছে সে। দিবে আর নিবে মেলাবে
মিলিবে
পদ্ধতিতে কোম্পানিকেও ভারতের সঙ্গে একচেটিয়া বাণিজ্যের অধিকার বজায় রাখতে
সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ রাষ্ট্রের একটি বৃহত্তর শক্তি হিসেবে কাজ করতে হয়েছে। ১৭৫৪তে মহারাষ্ট্রে কনৌজি
আংরের নেতৃত্বে ভারতীয়রা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের পক্ষে দুর্দমনীয় হয়ে উঠলে, রাষ্ট্রের
নির্দেশে তাকে ধংস করা হয়। আফিম ষুদ্ধে ব্রিটিশ নৌসেনা আর কোম্পানির সেনা (যারা
প্রাক্তণ ব্রিটিশ সেনা- সরকারি চাকরি ছেড়ে অনেক বেশি বেতনে কোম্পানির চাকরি
নেওয়া) এক যোগে চিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে –সে সময়ও চিন থেকে ব্রিটেন প্রচুর দ্রব্য বিশেষ করে এত
পরিমান চা আর রেশম আমদানি করত যে, চিনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে, ব্রিটিশ
রাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি চলছিল যুগের পর যুগ ধরে। ভারতকে মেরে ধরে বাগে
মানানো গেলেও, চিনেরমত বৃহত্ দেশকে বাগে আনা কঠিন, তাই ব্রিটিশ রাষ্ট্রের মদতে
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের দুই প্রান্তের দুই বন্দর শহর, কলকাতা আর বম্বে হয়ে
চিনে এত আফিম সরবরাহ করত যে, তাতে তার চিন থেকে চা আর রেশম কেনার অর্থেরও বেশি
উদ্বৃত্ত অর্থ সংস্থান করতে পারত। দ্বিতীয় আফিম যুদ্ধের পর ব্রিটিশ-চিন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের
রাশ চলে যায় ব্রিটিশ রাষ্ট্রের পক্ষে। অনেক সময় ব্রিটিশ জাতি, রাষ্ট্র বিশ্বরাজনীতিতে যে কাজ
চক্ষুলজ্জাবলে করতে পারতনা, সেই কাজ সে করাত কোম্পানিকে পরোক্ষে বরাত দিয়ে। এর প্রতিদানে কোম্পানি
সরকারকে অর্থ সাহায্যে করে তার নানান দুষ্কৃতকর্মের জন্য সময়ে সময়ে ব্রিটিশ
সরকারকে ক্ষতিপূরণ করত – অর্থাত দেশ শাসনের জন্য
বিশ্বের প্রথম সরকার-ব্যক্তিমালিকানাধীন
সংস্থার অংশিদারিত্ব(পিপিপি)র ধারণার বিস্তার ঘটল বিশ্ব জুড়ে কোম্পানি আর
ব্রিটিশ রাষ্ট্রের মধ্যে লেনদেনএ।
১৭৫০এর পর থেকে সরাসরি ব্রিটিশ রাষ্ট্রের প্রায়
প্রতিটি নির্দেশ মানতে হয়েছে তাকে। লর্ড চ্যাথাম ক্লাইভকে স্বর্গ থেকে নেমে আসা
সেনারাষ্ট্রপ্রধাণরূপে অভিহিত করছেন। অথচ ক্লাইভের বাংলা দখল আর লুঠের পর কিন্তু তিনিই
সরকারকে প্রস্তাব দিচ্ছেন বাংলার শাসন ক্ষমতা নিদের হাতে তুলে নিতে। ১৭৭৩ এবং পরে ১৭৮৪এর আইনে
দুধেলাগাই ভারতের শাসন ক্ষমতা দেখাশোনার জন্য একজন প্রেসিডেন্টএর অধীণে ৬ সদস্যের
একটি বোর্ড অর কমিশনার্স অন ইন্ডিয়ান এফেয়ার্স তৈরি হল। প্রথমদিকে এই বোর্ডের
অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন ব্রিটিশ প্রধাণমন্ত্রী স্বয়ং নিজেই। ভারতে শাসন ব্যবস্থা
পরিচালনার জন্য কমিশনাররা আইন এবং নীতি প্রণয়ন করতেন। ভারত অথবা ভারতের তিনটি
প্রেসিডেন্সি সংক্রান্ত যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তাদের হাত দিয়ে পাস হতে
হত। এ ধরণের সিদ্ধান্ত
চূড়ান্ত হওয়ার পর তা কোম্পানির কোর্টে যেত। তার পর কোর্টের চেয়ারম্যন ও সদস্যদের স্বাক্ষর নিয়ে
সেটি ভারতে কার্যকর হত। এমনকী বোর্ড অব কমিশনার্স এবং ভারতের প্রধাণ
শাসক গভর্নর জেনারেলের মধ্যে সরাসরি আলাপআলোচনা চলত। এঁরা বহু সময়েই নিজের
কোম্পানির নানান নির্দেশ অমান্য করেছেন, রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য সাধনে। কোম্পানির অনেক
গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরকে সরাসরি নির্দেশ দিত বোর্ড অব কমিশনার্স। শুধুমাত্র আইন বাঁচাতে সেই
নির্দেশগুলিতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির কোম্পানির চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর থাকত বটে,
আদতে কিন্তু সেই নির্দেশগুলি বোর্ডের আপিস থেকে সরাসরি ভারতে পাঠানো হত। এই ধরণের দ্বৈত ব্যবস্থা
সরাসরি চালুছিল সিপাহি বিদ্রোহ পর্যন্ত। ১৮৫৮ থেকে চিন সাগর থেকে সেন্ট হেলেনা পর্যন্ত বিস্তৃত
সাম্রাজ্য চালানো ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির রাষ্ট্রিয়করণ শুধু একটি ধোঁকার টাটিমাত্র। অথচ আজও ভারতে
পাঠ্যপুস্তকে একই গল্প চলছে। অনেক ঐতিহাসিকও এ তথ্য বিশ্বাস করেন যে ব্রিটিশ রাষ্ট্র
আর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি দুটে আলাদা আলাদা শাসন ব্যবস্থা। এ তত্ব-তথ্য বহু পরিশ্রমে
সরাসরি ব্রিটিশ মহাফেজখানাগুলো থেকে উদ্ধারকরেছেন ভারতপথিক ধরমপালজী।
তিনি বলছেন ভারত দখল করে ব্রিটিশেরা কী করবে তা
নিয়েও সে সময়ের ব্রিটিশ সমাজে বিশদে বিতর্ক চলেছে। এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়েরর
মরাল ফিলজফি বিষয়ের অধ্যাপক এবং বেশ কয়েকজন ভারত শাসকের শিক্ষক, এডাম ফার্গুসনের
তত্ব ব্রিটিশ সরকারের ভারতসংক্রান্ত নীতি প্রণয়নে সরাসরি সাহায্য করে। ফার্গুসন বললেন ভারতের
মাটি, জলবায়ু, ঘণজনবসতি ইত্যাদির জন্য ভারত ইওরোপিয় জনসাধারণের বসবাসের অযোগ্য। অথচ ভারতে যথেষ্ট পরিমান
দক্ষ কারিগর রয়েছে, শিল্পউত্পাদন রয়েছে। এবং ব্রিটেনে শিল্প উত্পাদন শূন্য বললেও অত্যুক্তি হবে
না। তাই ভারতে ইওরোপিয়দের বসতি
তৈরি না করে প্রাথমিকভাবে সাম্রাজ্য স্থাপনের পর মাত্র কয়েক হাজার ব্রিটিশের
তত্বাবধানে শাসন চালিয়ে অধিকাংশ শিল্প উত্পাদন প্রয়োজনে লুঠ করেও ব্রিটেনে আনতে
হবে। এবং এই শিল্পগুলির ওপর কর
বসিয়ে তা দিয়ে ব্রিটেনে শিল্পবিপ্লব আয়োজন করা সরকারের আশু কর্তব্য। শিল্প বিপ্লব শুরু হলে
ভারতের শিল্পগুলিকে ক্রমান্বয়ে ভেঙেফেলে ভারতে ব্রিটিশ শিল্পের বাজার তৈরি করতে
হবে। ফার্গুলনের দাওয়াই শুধু
ব্রিটিশ সম্রাজ্যেই নয়, সারা ইওরোপে সোনার ফসল ফলিয়েছে।
ব্রিটিশ সমাজত্ব বিদ্যার জনক ফার্গুসন. ভারতে
ব্রিটিশ শাসনের উদ্যেশ্যের ভিত্তি প্রস্তর তৈরি করেছেন। তার তত্বে, ভারতে
প্রতিষ্ঠিত সাম্রাজ্যের প্রথম এবং শেষ উদ্দেশ্যই হল ভারত থেকে ইওরোপে সম্পদ লুঠ
করে নিয়ে যাওয়া।
ধরমপাল বলছেন, এই কাজ সরাসরি ব্রিটিশ সরকারের নানান সংস্থা অথবা কর্মচারীর পক্ষে
সাধন করা অসম্ভব ছিল। এদের অধিকাংশই ব্রিটিশ আইনে হাত বাঁধা। এছাড়াও সরকারী
কর্মচারীদের অধিকাংশ লুঠ কার্যে অনুপযুক্তও বটে। তত্কালীন ব্রিটিশ আইনে এই
লুঠ কার্য প্রায় অসম্ভব ছিল। ইওরোপে ভারতীয় অমিত সম্পদ লুঠ করে আনার জন্য
প্রাথমিকভাবে প্রয়োজন ছিল ভারতে ব্রিটিশ আইনকে প্রয়োজনমত বাঁকিয়েচুরিয়ে লুঠযোগ্য
করে তোলা। ফলে সরাসরি ভারত শাসন
ব্রিটিশ সরকার হাতে না নিয়ে তার ভার দিয়ে দিয়েছিল ইস্ট ইন্ডিয়া কেম্পানিকে, যেখানে
সরকারি আশির্বাদে কোম্পানির সব ধরণের কর্মচারী (কোম্পানি নথিপত্রে কর্মচারীদের
বিশেষণরূপে সার্ভেন্ট শব্দটি উল্লেখ করা হয়েছে) যেকেনও আইনকে
বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠও দেখাতে পারবে। পেছনে বটগাছ আর বিশাল ছায়ারমত দাঁড়িয়েছিল ব্রিটিশ
রাষ্ট্র। যে রাষ্ট্র সরাসরি নাহলেও
যথেষ্ট আইনবলে আর পদধিকরীর মাধ্যমে কোম্পানির কাজকর্ম পরোক্ষে নিয়ন্ত্রণ করত। ঠিক এই জন্য ১৭৮৪তে
ব্রিটিশ রাষ্ট্র বোর্ড অব কমিশনার্স ফর দ্য এফেয়ার্স ইন ইন্ডিয়া তৈরি করে।
No comments:
Post a Comment