Monday, November 27, 2017

বাংলার জাহাজ শিল্প ধ্বংসঃ ঔপনিবেশিক বৈষম্যের নিকষ খতিয়ান১১ - ইন্দ্রজিত রায়

বেঙ্গল ইন্ডাস্ট্রিজ এন্ড দ্য ব্রিটিশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল রেভলিউশন(১৭৬৭-১৮৫৭) থেকে

যে আর্থ-প্রাযুক্তিক সুযোগ নিয়ে কলকাতায় যে নৌশিল্প তৈরি হল তার বেঁচে থাকার সময়ের ব্যপ্তি খুব কম ছিল। সেই সময়কার তথ্য বলছে, এই শিল্প ১৮৪০ নাগাদ ধ্বংস হয়ে গেল - of the commercial navy which adorns our port [Calcutta], every vessel of any rank and distinction has been build in England .... The efforts of our
dockyards are now confined to the construction of vessels employed in the coasting or China trade, and an occasional steamer. But the increase of shipping in the port has given our docks more lucrative employment in the repairs of ships than they could have expected from building them.
তবে তথ্য থেকে পরিষ্কার নৌশিল্পের ঢালের দিকে যাত্রা শুরু হয়েছিল ১৮২০ সাল নাগাদ। ১৮৪৭ সালে ম্যাকগ্রেগর লিখছেন, 'Ship-building in port of Calcutta has declined during the last quarter of a centuryএই মন্তব্য অনুসারে পতনের ইঙ্গিত লক্ষ্য করা গিয়েছিল ১৮২২ সালে। ফিপস বলছেন এটা ১৮২১ সালে শুরু হয়েছে, Since the last mentioned period [ 1801-21], shipbuilding has greatly declined in Bengal; the annual average of the last twelve years including Steam Vessels, from 1827 to 1839 both inclusive, being only five ships, 1,340 tons; no ship was on the stock at Calcutta, at the latter end of 1839.
সমালোচকেরা পতনের যেহেতু নির্দিষ্ট সময় দিয়ে দিচ্ছেন, তাই এই সময়টা নিয়ে বেইটেন বাংলার নৌশিল্প নিয়ে তুল্যমূল্য আলোচনা করা যাক। তালিকা ৬.১এর টনেজের বাৎসরিক হিসেব থেকে পরিষ্কার, ১৮২০র দশকের শুরুর থেকেই বাংলার নৌশিল্পের অধোগতি দ্যাখা যাচ্ছিল। ১৮১৬ সালের পর থেকে মোট নিয়োগ আর এবং ওয়ার্কিং ক্যাপিট্যালেও ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। এর পরে সে আর কোন দিন আগের অবস্থায় ফিরে যেতে পারে নি। ফিপস বলছেন কলকাতা বন্দর থেকে ১৫০৯২টনের ২৬টা বাংলায় তৈরি জাহাজ  ১৮১৪ সালে গিয়েছে কিন্তু তার পরের বছর ১৮১৫ সালে গিয়েছিল ৯৬৪৭ টনের ১৯টা জাহাজ। এই পতন চলতেই থাকে ১৮২১ সালে ১২টা জাহাজ ৭৭১৪ টনের জাহাজের বরাত ছিল, এরপর থেকে since which, very few ships, belonging to Bengal have proceeded to England
নেপোলিয়নের সঙ্গে যুদ্ধের পরে বাংলার ব্যবসাবাণিজ্যে ব্রিটেনের মতই ব্যাপক স্থিতিশীলতার পরিবেশ তৈরি হয়। আমরা টনেজের হিসেবে পাচ্ছি, ১৮১৫ সালে ১০২৯৪০ থেকে ১৮১৫তে ৫৮০৮০ টনে নেমে আসে। শান্তির পরে কিছুটা সেনার হাত থেকে জাহাজ ছাড়া পেলেও সমস্যা দাঁড়ায় আমেরিকা ব্রিটেনের পণ্য পরিবহনে ভাগ বসানোয়।
বাংলা বাণিজ্যে এ ধরণের ঘটনা দ্যাখা যায় নি। কলকাতা বন্দর থেকে বরাত পাওয়া এবং কলকাতা ছাড়া জাহাজের সংখ্যা ছিল ১৮০১-১৪ পর্যন্ত ৬৩৬টা, মোট ২৬৭২১৮ টন। এই সময়ে পণ্য পরিবহন বাড়ে ৬২.২৩ মিলিয়ন টাকা থেকে ৯৪.৭৭ মিলিয়ন টাকায়। কলকাতায় আসা এবং কলকাতা থেকে বার হওয়া টনেজ ১৮৫ টন থেকে ৩৫৭০০০ টন। ১৮১৪-২১ সময়ে এই সমস্তটা বৃদ্ধি পায় ৩.৯ শতাংশ থেকে ৪ শতাংশে। অন্য দিকে লন্ডনের বন্দরগুলিথেকে পাওয়া তথ্যে দ্যাখা যাচ্ছে, এই সংখ্যাটা কমতির দিকে।
সাধারণত বাংলার শিল্পের অবনতির একটা প্রচলিত যুক্তি শোনা যায়, প্রতিযোগিতায় পেরে না ওঠা, যেমন The gradual declension of ship-building in the last quarter of a century has been so palpable, and apparently so irremediable, that we must attribute it to some permanent cause which is likely to prevent its revival in Calcutta. We
ascribe it to our inability to construct vessels of such superior architecture, or with such superior economy as to compete with those which are constructed in England .... The dearer but more productive labour of English
workmen gives the ship-builders of England an advantage over their Eastern rivals, in spite of the low wages they pay.। কিন্তু এর আগে আমরা যে সংখ্যাতত্ত্ব নিয়ে আলোচনা করেছি, তা কিন্তু এই বক্তব্যকে সমর্থন করে না।
শিল্পের অবনমনের একটা আরও কারণ দেখানো হয় যে সে সময়ের প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারা, যে যুক্তি সাধারণত বাংলার শিল্প বিষয়ে দেখানো হয়। এই তত্ত্বের তার্কিকেরা বলেন, The period of transition from the sailing ships to the steam vessels was unfortunately for our country coincident with foreign political and economic dominance. The result was that Indians could not adapt themselves to the changed condition in the trade ... and shipbuilding industry was checked at the critical period of transition.।  

কিন্তু আমরা যে সব উদাহরণ নিলাম সেটাতেও এই ধরণের তত্ত্বকে মেলানো যাচ্ছে না। যদিও ১৭৪০ সালে আবিষ্কার হয়েছে কিন্তু সামুদ্রিক বাষ্পীয় ইঞ্জিন কার্যকর ভাবে চলতে পেরেছে ১৮০৭ সালে লন্ডনে। দুটো মাত্র ব্রিটিশ পণ্যপরিবাহী জাহাজ তৈরি হয় ৪৫৯ টনের ১৮১৪ সালে। বাংলা ১৮২৩ সালে যখন বাষ্পপোত বানাচ্ছে তখন গোটা ইংলন্ডে ১১১টা এই ধরণের জাহাজ ছিল যার মোট বহন ক্ষমতা ছিল ১৪১৫৩ টন, যা ব্রিটেনে মোট পঞ্জীকৃত টনেজের মাত্র ১ শতাংশ। সেগুলি কিন্তু ব্যবহার হচ্ছে উপকূলীয় বাণিজ্য সম্পাদনে, দীর্ঘ ব্রিটিশ ভারত বাণিজ্যের সম্ভাবনা তখনও দূরঅস্ত। ফলে যদি ব্রিটিশ প্রযুক্তির আত্তীকরণই কোন শিল্পের সাফল্যের শেষ কথা হয়, তাহলে সে সময় বাংলার নৌশিল্প ব্রিটিশদের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে বেড়ে উঠেছিল। ফলে এর ধ্বংসের কারণ আমাদের অন্য কোন কিছুর মধ্যে খুঁজতে হবে।   

No comments: