Wednesday, November 22, 2017

বীরভূমের লোহা শিল্প এবং চুয়াড় লড়াই৯ - যোগেশ রাম মিশ্র

বীরভূমের দুটি লোহা শিল্প প্রকল্প
এই ধরণের ঔপনিবেশিক প্রেক্ষাপটে ১৭৭০এর দশকে দুটি বড় লোহা শিল্প গড়ে ওঠার প্রস্তাব আসে - ইন্দ্রনারায়ণের প্রস্তাবে হাটগুছা(আজকের হাটগাছা) এবং অন্যটি ১৭৭৭ সালে ফারকুহরের প্রস্তাবে ডেউচ্যায়। প্রস্তাব হিসেবে এবং সেই সময়ের প্রতিষ্ঠিত ছোট উৎপাদন ব্যবস্থার ওপর প্রতিক্রিয়া হিসেবে দুটি বিপরীত মেরুর। কিন্তু দুটির একটি চরিত্রে মিল ছিল সেটি হল জেলার লোহা শিল্পের কেন্দ্রিভবন এবং নিয়ন্ত্রণ। যারা এতদিন ব্যবসা করছিল, এই দুই প্রকল্প তাদের কাছে হুঁশিয়ারির সামিল। কিন্তু আমরা দেখাব, চুয়াড়েরা এই দুটি প্রকল্পকেই একই (দুঃ)গতি প্রদান করে।
হাটগাছায় ৭৫ কিমি গভীর জঙ্গল লিজ নিয়ে ১৭৭৪ সালে ইন্দ্রনারায়ণ শর্মা লোহা কারখানা করার পরিকল্পনা পেশ করলেন(এই ঘটনা নিয়েসর্ব প্রথম লেখেন এশিয়াটিক সোসাইটি জার্নালে S. G. T. Heatly, ‘Contributions towards a History of the Development of the Resources of India, Memoranda 2: The Working of Iron in Bengal’। সেই প্রবন্ধ ভিত্তি করে পরবর্তী সব লেখা বিশেষ করে হিতেশ রঞ্জন সান্যালের The Indigenous Iron Industry of Birbhum এবং O. P. Jaggi, Technology in Modern India, History of Science, Technology and Medicine in India দশম খণ্ড, তৈরি হয়েছে)। কি, এবং কিভাবে তিনি উৎপাদন করবেন সেটা পরিষ্কার না হলেও দুটো চরিতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে এই প্রস্তাবে। প্রথমত কোম্পানির রাজস্ব এলাকায় নেই, কোম্পানি সার্ভে হয় নি এমন এলাকায় লোহা খুঁজে তিনি ব্রিটিশ পৃষ্ঠপোষকতা আশা কারে বড় লোহা কারখানা তৈরি করার প্রস্তাব দিলেন বর্ধমান কাউন্সিলকে। বীরভূমের রাজা স্বীকার করলেন যে এই জমির অধিকার ব্রিটিশদের। তিনি কোম্পানির ব্যবহৃত শব্দবন্ধ ব্যবহার করে জানালেন এক সময় জঙ্গল ছিল লোহা তৈরির সব থেকে উত্তম এলাকা, কিন্তু চুয়াড়দের ভাঙচুর আর ১৭৭০এর মন্বন্তরের কারণে এটির পতন হয়। তিনি বুঝেছিলেন চুয়াড়দের লুঠেরা হিসেবে তুলে ধরলে, সেটা কোম্পানি সরকারের ঔপনিবেশিকতার পরিকল্পনায় ঠাঁই পাবে। তিনি বলেন বিদ্রোহী চুয়াড়দের তিনি বশে নিয়ে এসে তার প্রকল্পের কাজে নিয়োগ করবেন। তিনি লিখলেন চুয়াড়দের সহযোগিতার আশ্বাস পেয়েছেন লিখলেন, the Choars & Mountaineers who at present infest…will themselves engage in the working of Iron. They gave me assurances of this।
দ্বিতীয়তঃ সেই সময়ের অন্যান্য ইওরোপিয় ফাটকাবাজদের তুলনায় ইন্দ্রনারায়ণের প্রস্তাবটায় চাহিদা খুব বেশি কিছু ছিলই না। অন্যান্যরা ইওরোপিয় শ্রমিক ব্যবহার করা এবং পুঁজি জোগাড়ে কোম্পানির সাহায্য চাওয়া আর শুধুই কোম্পানিকে উৎপাদন বিক্রিতে একচ্ছত্র অধিকার(কোম্পানির রাজত্বে যে কোন একচ্ছত্র পুঁজি বিনিয়োগ ফেরতের অধিকার দেওয়া ছিল Messrs. Rendall and Achisonকে তিন মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট সংখ্যক ইঁট সরবরাহ করার শর্তে, এতার সূত্র জেমস লঙের Unpublished Records of the Government। আর কয়লা সরবরাহের একচ্ছত্র অধিকার দেওয়া ছিল উত্তর দামোদর নদী থেকে কোম্পানিকে ১৮ বছরের জন্য Messrs. Sumner and Heatlyকে) দাবির প্রস্তাব দিলেও ইন্দ্রনারায়ণ নিজের পুঁজি এবং স্থানীয় শ্রম লাগিয়ে কারখানাটা তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন। তার ব্যবসা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার শর্তও খুব সাধারণ ছিল, লিজের সময় শেষ হলে তিনি কারখানা তুলে দিয়ে জমিটাকে চাষের কাজে ব্যবহার করবেন। এছাড়াও কোম্পানি তার শর্তে রাজি না হলে, তার কারখানার বাড়িটা কোম্পানির আমিল দিয়ে মূল্যায়ণ করে সে টাকাটা তাকে দিয়ে দিলেই হবে।
কোম্পানির মনে হল পরিকল্পনাটা কোম্পানির ক্ষেত্র সুখকর, বাংলা সরকার প্রস্তাব পাওয়ার এক মাসের মধ্যেই তাকে আমিলনামা, অনুমতি দিয়ে দেয়। লিজ হবে দশ বছরের, এবং ইন্দ্রনারায়ণকে দিতে হবে ৩৬০০ টাকা, যদিও অন্যান্যরা এই সময়ের জন্য দিত ৭৬৬ টাকা। এই বিষয়টা নিয়ে ১৮৪০এ লিখেছেন S. G. T. Heatly আগেই জানিয়েছি, কিন্তু তিনি আর প্রকল্পটি কি গতি হল জানতে পারেন নি। তার আন্দাজ ছিল ইন্দ্রনারায়ণের প্রকল্প থেকে হয়ত বিনিয়োগকারীরা সরে গিয়েছে। পরের দিকে ঐতিহাসিকেরা সকলেই S. G. T. Heatlyর মতকেই সমর্থন করেছেন। কিন্তু সেই সময়ের অঙ্ক ছিল হাটগাছার উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ১২১০ থেকে ৩৫০০ টন পাকা লোহা প্রতি বছর। এবং সাধারণ অঙ্কে এটা বছরে ২৪ শতাংশ লাভ দেয়। ইন্দ্রনারায়ণের মত মানুষ যিনি নিজের এলাকা চেনেন, তিনি এই লাভের কথা ভাবতে পারেন নি, এটা চিন্তা করা ভুল হবে(অনুবাদ না করেই লেখক পাদটিকায় কি বলছেন তুলে দিচ্ছি - The higher estimate is obtained as follows: (a) full capacity rent agreed by Indranarayan was Rs. 5000 per annum; (b) The rent per smelting furnace per annum reported by Farquhar was Rupees 134/16 (SeeFarquhar’s letter dated October 15, 1778 below); and (c) W. Jackson in 1845 reported a production of 25 maunds per furnace in a 4 days 4 nights smelting exercise, which might not have changed significantly over the course of period (Jackson, ‘Memorandum on the Iron Works’). Iron manufacture season lasted for three months a year, making 15 smelting per annum per furnace a safe guess. Buchanan puts this figure as 45 (Oldham, Journal of Francis Buchanan, p. 33). The total estimated production of Hautgatcha would then become 5600 tons of kucca (the smelted sponge like mass) iron. Major James Franklin in 1829 reported 63% of kucca iron yielded pukka (i.e. comparable to so called European Iron imported in India) iron (BL: MSS EUR D 154). V. Ball however put this refining ratio up to73%. See V. Ball, A Manual of the Geology of India, Part III: Economic Geology, Published by the Order of the Government of India (Calcutta: Government of India, 1881). The lower limit could be worked out like this: (a) Conventional rent extracted by Zemindar on pukka iron was Rupees 2.50 per 25 maunds. Since the Board agreed to the annual rent of Rupees 5000 from Indranarayan, the Hautgatcha fields was capable of producing 1210 tons per annum। এছাড়াও বলছেন The investment estimate is based on (a) Full capacity production of 3500 tons; (b) the cost of production estimated by Major Franklin as 1 Re. 12 Annas. The profit on the other hand was based on (a) the minimum production of 1210 tons; (b) and the contemporary sale price of 4 Rupees per maund as reported in the above mentioned petition by Daomum Chund Serma and others thereby yielding a minimum of 2 Rupees 4 Annas per Md of profit)।
(চলবে)

No comments: