Tuesday, November 27, 2018

ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইন – এইটিনথ সেঞ্চুরি বেঙ্গল - সুশীল চৌধুরী৮০

উমিচাঁদ শুধু যে কোম্পানির খাতায়কলমে দাদনি বণিক হিসেবেই প্রখ্যাত ছিলেন একথা বলা ঠিক হবে না, অন্যান্য দাদনি বণিকের মত তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে কোম্পানির সাহায্য ছাড়াই বিপুল ব্যবসাও করতেন। সে সময় বড় ব্যবসায়ীর মতই তিনি যে সব পণ্য নিয়ে ব্যবসা করতেন, সেগুলোর কয়েকটির একচেটিয়াকরণ করে নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ১৭৩১ সালের প্রথম দিকে কাশিমবাজারের কুঠিয়ালেরা লিখল, উমিচাঁদের গোমস্তা বেআইনিভাবে রঙ্গপুরের ফৌজদারের থেকে বেশ কিছু অর্থের বিনিময়ে সেই অঞ্চলের আফিম উৎপাদকেদের উৎপাদন দখল আর তার ব্যবসার একচেটিয়াকরণ করেফেলেছে, তার ভাই দীপচাঁদ, গোমস্তা হিসেবে শ্যামজীকে দরবারে উকিল নিয়োগ করে তাদের ব্যবসায়িক স্বার্থ সুরক্ষার উদ্যম ন্যায় এবং উচ্চপদস্থ আমলাদের বিপুল উপঢৌকন দ্যায়(Ibid., vol. 8, ff. 400-400vo, 21 June 1731; vol. 9, f. 22vo, 3 Aprif 1732)। ১৭৩৪ সালে লন্ডনের কর্তারা লিখল উমিচাঁদ is no longer worthy of our protection(DB., vol. 105, ff. 453-54, para. 124, 11 Feb. 1732)। কে কার নিরাপত্তা নিশ্চিত করে! বিহারের পণ্য কেনার জন্যে আবার উমিচাঁদের সখ্য প্রয়োজন হয়ে পড়ল কোম্পানির। ১৭৩০এর শেষের দিকের থেকে ১৭৪১ পর্যন্ত উমিচাঁদ আলিবর্দি সরকারের পাটনার আমলাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে চলতেন এবং সেখানে একটা টাঁকশালও নিয়ন্ত্রণ করতেন(Ibid., vol. 106, f. 182, para. 39, 29 Jan. 1734)। ভাই দীপচাঁদ সরকার সারণের ফৌজদার ছিলেন। সরকার সারণ ছিল সে সময়ে সোরা উতপাদনের বিহার এবং উপমহাদেশেরও প্রধানতম এলাকা(C & B. Abstr., vol. 4, f.376, 11 Dec. 1741)। উমিচাঁদ, দীপচাঁদ এবং খ্বাজা আহমদের ব্যবসায়িক জোট গোটা বিহারের ব্যবসা পরিবেশে থাকা ছোট ছোট উৎপাদন এবং ব্যবসায়ীদের পরিসরও দখল করেছিল। উমিচাঁদের উৎসাহ ছিল সোরা আর আফিম ব্যবসা, পরের দিকে তিনি সেই ব্যবসার একচেটিয়া দখল নেন(BPC, vol. 17, f. 769, 16 Dec. 1744)। কোম্পানিকে তিনিই অধিকাংশ সোরা সরবরাহ করতেন। বিহার প্রশাসন এবং সোরা উতপাদকেদের ওপর তাদের প্রভূত নিয়ন্ত্রণের জন্যে উমিচাঁদ, দীপচাঁদ বিহার উৎপাদন এবং ব্যবসায় প্রায় একচেটিয়া ব্যবসা কায়েম করে ফেলেছিলেন(Home Misc. Series, vol. 192, f. 64)।

মুর্শিদাবাদের প্রশাসনেও উমিচাঁদের ব্যাপক পকড় ছিল। ১৭৩৫ সালে যখন কোম্পানি দাদনি বণিকদের তালিকা থেকে উমিচাঁদের নাম মুছে দ্যায়, সে সময় আমিবর্দিখাঁইয়ের ভাই হাজি আহমদ, দরবারে দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণতম মানুষ, উমিচাঁদের হয়ে কোম্পানিকে লিখে জানান কোম্পানি উমিচাঁদকে নতুন করে দাদনি ব্যবসায় অন্তর্ভূক্ত করুক এবং তার জন্যে কোম্পানির সিন্দুকে যত টাকা জামিন রাখতে হয়, তিনি সেই পরিমান দেওয়ার জন্যে তৈরি(Fact. Records, Kasimbazar, vol. 5, 21 Jan. 1736)। হাজি আহমদের মত গুরুত্বপূর্ণতম মানুষের উমিচাঁদের প্রতি এই আস্থা এবং সমর্থন থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার যে প্রশাসনে তার পকড় কি ধরণের ছিল।  

No comments: