Friday, November 9, 2018

ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইন – এইটিনথ সেঞ্চুরি বেঙ্গল - সুশীল চৌধুরী১৬

মুর্শিদকুলির  নিয়োগের আগে পর্যন্ত হুগলির ফৌজদার কিন্তু সরাসরি সম্রাট আওরঙ্গজেবের ফরমানে নিযুক্ত হতেন(এতটাই ছিল হুগলি অঞ্চলের গুরুত্ব - অনুবাদক)। এর সঙ্গে বাংলার সুবাদারির নিয়ন্ত্রণের কোন সম্পর্কই ছিল না। মুর্শিদকুলি বাংলার সুবাদার হয়ে হুগলির ফৌজদারিকে বাংলার নিজামত এবং দেওয়ানির অধীনে নিয়ে এলেন(Riyaz, pp. 30, 262-63) রিয়াজের লেখক বলছেন মুর্শিদকুলির শান্তিপুর্ণ ও খোলামেলা সম্পর্ক বিশ্বের সব এলাকার সব ধরণের বণিকএর সঙ্গে বজায় রাখতেন এবং তিনি কোনো বণিকের প্রতিষ্ঠানের ওপর এক দামও(মুঘল মুদ্রা ব্যবস্থায় তামার সর্বনিম্ন মুদ্রা, আজকে পয়সার সমান) অতিরিক্ত লাগু করতেন না। এই কারণে, তিনি বলছেন, মুর্শিদকুলির সময় হুগলি বন্দর সব থেকে বেশি জনবহুল হয়ে ওঠে(Riyaz, p.30.)সালিমুল্লাহ লিখলেন The encouragement which was given to trade by Jaffer Khan' [M'urshid Qμli], who directed that nothing but the established rate of duties should, be exacted, soon made the port of Hooghly a place of great importance. Many wealthy merchants, who resided. there, had. ships of their own which they traded to Arabia, Persia and other countries(Salimullah, Tarikh-i-Bangala, p.81)

বস্তবিকই মুর্শিদাবাদ বেড়ে ওঠার আগেই, অষ্টাদশ শতকের প্রথম পাদে হুগলিতে বিপুল শিয়া বসতি স্থাপন হয়েছিল। বাংলায় শিয়া রাজত্ব গড়ে ওঠায় বহু পারসি আগন্তুক এই আঞ্চলেই আসতেন কাজের খোঁজে। পরের দিকে এই বহুজাতিক বন্দরের সমান্তরালভাবে মুর্শিদাবাদ শহর, বাংলার রাজধানী গড়ে উঠলকিন্তু ভাগ্যসন্ধানীরা বাংলার রাজনৈতিক রাজধানী মুর্শিদাবাদের থেকেও হুগলি বন্দরকে নিজেদের ভাগ্য ফেরাবার এলাকা হিসেবে বেছে নিয়ে আসতেন(J.N. Sarkar (ed.), History of JJengal, vol.II, p.419,)কিন্তু ক্রমান্বয়ে কলকাতার উত্থান হুগলির ঔজ্জ্বল্য ম্লান করে দিল। এর  একটা বড় কারণ হল, কলকাতা ভিত্তিক ইওরোপিয় ব্যক্তিগত ব্যবসার ধাক্কা। যে প্রতিযোগিতায় হুগলি ভিত্তিক এশিয় বণিকেরা আন্তঃএশিয় ব্যবসায় দাঁড়াতে পারল নাকিন্তু অষ্টাদশ শতকের পারসি ঐতিহাসিকেরা অন্য মত পোষণ করতেন। তাদের মতে ফৌজদারদের নিয়মিত কঠোর বেয়াইনি রূপিয়া আদায়ের বিরক্ত হয়ে বণিকেরা ব্রিটিশ স্থাপিত কলকাতায় কম শুল্কের বন্দর এবং তাদের মুক্ত বাণিজ্য নীতির প্রতি আকর্ষিত হয়(Riyaz, p.30; Salimullah, p.136)তবে ডাচ নথি থেকে উদ্ধার করা জাহাজের তালিকা থেকে একটা কথা স্পষ্ট বলা যায় ১৭১৫র পরে হুগলির পতনের যে তত্ত্ব ছাড়া হয়েছে তা যথেষ্ট সন্দেহজনক(P.J. Marshall, Bengal, p.65; East Indian Fortunes, chapter 3.)১৭২৮ সালে হুগলি থেকে যে ব্যবসা তৈরি হচ্ছিল, তার পরিমান আন্দাজ করা যায় ‘সায়ের বক্সবন্দর’(বিদেশি বণিকদের থেকে আমদানি রপ্তানি শুল্ক আদায়)এর হিসেব থেকে – সে সংখ্যাটা ছিল পণ্যের মূল্যের ওপরে ২.৫% শুল্ক ধরে ২২১৯৭৫ টাকা (O'Mally and M.M. Chakraborty, Hugli District Gazetteer, p.47; J.C. Sinha, Economic Annals, p. 7. However the 'Syer Bakshbandar' in the Fifth Report is given as Rs. 297, 941, W.K. Firniinger (ed.) Fifth Report, vol. II, p.199)এই হিসেবে হুগলির বাৎসরিক ব্যবসা ছিল ৮৯ লক্ষ টাকা। আমরা যদি এটাকে অনেক বেশি হিসেবেও ধরে নিই, তাহলে বলা যায় ৩.৫শতাংশ শুল্কবিভাগের চাপানো কর হিসেব করলে(যদিও বলা হয়েছে এটি ২.৫ শতাংশ) দেখা যাবে হুগলির বাৎসরিক মোট ব্যবসার পরিমান ৬৩ লক্ষ টাকা। এটা যদি সত্য হয় তাহলে তখনও হুগলি কলকাতার তুলনায় অনেক এগিয়ে থাকছে রপ্তানি ক্ষেত্রে। হুগলি কলকাতার কাছে তার গুরুত্ব হারাতে থাকে ১৭৩০এর মাঝামাঝি সময়ে। 

No comments: