Sunday, November 18, 2018

ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইন – এইটিনথ সেঞ্চুরি বেঙ্গল - সুশীল চৌধুরী৭০

বিপরীতে ডাচ ডিরেক্টর Jan Huijghensএর সময় ডাচ কোম্পানি গোমস্তা প্রথায় নিজেদের ব্যবসাকে ঢেলে সাজালেও শেষে তারা দাদনি ব্যবস্থাতেই ফিরে আসে এবং নিজের মেমোয়ারে তিনি লিখতে বাধ্য হন কোম্পানির বস্ত্র ব্যবসা মার খায় তার কারণ total ruin of the principal merchants and bankers [totale ruirre van diverse der principalste koop[lieden] ende banquerouten]। ১৭৪৭ সালে কোম্পানি গোমস্তা ব্যবস্থা মার্ফত মোটা কাপড় কেনার পরিকল্পনা ক’রে ১৭৪৮ সালে সেই ব্যবস্থা সূক্ষ্ম কাপড় কেনার ক্ষেত্রেও প্রয়োগ করে। কিন্তু তিনি এই ব্যবস্থায় থেকে যাওয়া সম্পর্কে লেখেন, তারা এই ব্যবস্থায় ততদিন থাকবেন until they found some merchants with sufficient capital [ten minsten tot dater sufficante koopl[ieden] gevonden werden]( Memorie' of Jan Huijghens, VOC, 2763, ff. 450-51, 20 March 1750)। এই উদাহরণ থেকে আমরা পরিষ্কার হলাম যে ডাচেরা কিছু ব্যবসায়ীর উপযোগিতা/কাজকর্ম ইত্যাদি নিয়ে চিন্তিত ছিল, কিন্তু সার্বিক বাংলার ব্যবসায়ীকুল সম্পর্কে নয়। এটাও এ প্রসঙ্গে মনে রাখা দরকার, ডাচেরা তিন বছর ধরে বণিকদের সঙ্গে বিপুল দরকষাকষি করার পরে আবার দাদনি ব্যবস্থাতেই ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছিল। এর থেকে একটা বিষয় প্রমান হয় যে বাংগালির ব্যবসায় কথিত পতন ঘটে নি।
এই প্রেক্ষিতে একটা কথা অবিশ্যি মনে রাখা দরকার, সে সময়টা ছিল বাংলা ভূমিতে বিপুল হ্যাঙ্গামের সময়, তাই মহাজন বা ব্যবসায়ী বা ব্যাঙ্কারেরা তাদের সম্পদ প্রকাশ্যে তুলে ধরতে বেশ দ্বিধান্বিতই ছিল, এবং তাদের আর্থিক অবস্থা নিয়ে প্রকাশ্যে কোন সদর্থক মন্তব্য করে নি। আমরা যে যুক্তি দিচ্ছি, সে যুক্তি প্রমানিত হবে বাংলার সর্ববৃহত, সব থেকে ধনী ব্যাঙ্কার জগতশেঠের প্রতিক্রিয়া থেকে। ১৭৪৬ সালে ব্রিটিশ কোম্পানির কাশিমবাজারের কাউন্সিলের নথিপত্র থেকে জানছি যে তারা to produce cash for•fear of government .. even though they have money(Fact. Records, Kasimbazar,.vol. 7, 22 June 1746;• BPC, vol. 18, f.265vo, 30 June 1746)। অবশ্যই কোম্পানির খাতায় বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের বেশ কিছু ব্যবসায়ীর দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেলেও তাকে সাধারণভাবে অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধে বাংলার ব্যবসা মহাজনী এবং ব্যাঙ্কিং জগতের সামগ্রিক পতনের ইঙ্গিত হিসেবে ধরে নেওয়া উচিত হবে না। ১৭৩২ সালে ডাচ ডিরেক্টর Sadelijn তার মেমোয়ারে অবশ্যই কিছু ব্যবসায়ীর দেউলিয়া হয়ে যাওয়ার কথা লিখছেন ঠিকই কিন্তু তার সঙ্গে লিখছেন, এদের জায়গা দখল করতে উঠে আসছে অন্যান্য ব্যবসায়ীরা। আরেকটা বিষয় গুরুত্বপূর্ন, তিনি চারজন দেউলিয়া বস্ত্র ব্যবসায়ীর কথা বলছেন যারা ডাচেদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ না হয়ে চন্দননগরের ফরাসী কোম্পানির সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিলেন(Memorie' of Sadelijn, voe, 2196, ff. 422-23, 15 Jan. 1732. The four merchants were Jiban Chaudhury, Goku• Mukund [Khan?], Jangemaat[?] Khan and Radhakrishna Chiudhury.)। এটা আন্দাজ করা হয়ত ভুল হবে না, এক কোম্পানিকে হতচ্ছেদ্দা করে যখন চারজন বণিক অন্য প্রতিযোগী কোম্পানির কবলে চলে যায়, এবং তাদের আটকাতে না পেরে একজন কর্পোরেট হোমরাচমরা নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তাদের নামে স্বাভাবিক ভাবেই কুৎসা রটানোর চেষ্টা করবে। তাই যে চারজন শান্তিপুরী ব্যবসায়ীর দেউলে হয়ে যাওয়ার ‘প্রমান’ দেওয়া হচ্ছে তা ঠিক কিনা আমাদের দেখতে হবে সমালোচকের দৃষ্টিতে।

No comments: