Tuesday, November 20, 2018

ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইন – এইটিনথ সেঞ্চুরি বেঙ্গল - সুশীল চৌধুরী৭৪

৫.২ বড় ব্যবসায়ী(MERCHANT PRINCES)দের ভূমিকা
বাংলার ব্যবসা জগতের অষ্টাদশ শতকের প্রথমার্ধের শেষ তিন দশকের অর্থনীতির একটা বড় অংশের ভিত্তি ছিল তিন বড় ব্যবসায়ী(merchant princes) জগতশেঠ, প্রখ্যাত উমিচাঁদ এবং আর্মেনিয় ব্যবসায়ী খ্বাজা ওয়াজিদদের ব্যবসার অর্থনীতি। সেই শতকের প্রথম থেকে জগতশেঠের গদি বাংলার অর্থজগতে গুরুত্বপুর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। সেই শতকের তৃতীয় দশকে উমিচাঁদ এবং ওয়াজেদ চতুর্থ দশক থেকে বাংলার ব্যবসা-অর্থনীতিতে প্রাধান্য বিস্তার করেন। এই তিন মহাজন ব্যবসায়ী বাংলার আর্থ-প্রশাসনিক এবং ব্যবসা জগতে মুল ভূমিকা পালন করতেন। বাংলার যে পুঁজির বাজার সরকার এবং ব্যবসায়ীদের পুঁজির সরবরাহ করত, সেটি মোটামুটি নিয়ন্ত্রণ করত এই তিন ব্যক্তি। তারা পণ্য ব্যবসা এবং ব্যবসায়িক সুযোগসুবিধে দেওয়া মার্ফত বাংলার ব্যবসা এবং শিল্প জগতের নিয়ন্তা ছিলেন। মহাজন ব্যবসায়ী এবং প্রশাসক হিসেবেও তাদের কোম্পানিগুলির অন্দরমহলে অবাধ গতি ও নিয়ন্ত্রণ ছিল। পুঁজির/ধারের বাজারে নিয়ন্ত্রণ, মুদ্রা ছাপায় নিয়ন্ত্রণ এবং রপ্তানি পণ্য দ্রব্য আর আমদানি পণ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণের ফলে ইওরোপিয় কোম্পানিগুলি তাদের আশেপাশে থাকতে বাধ্য হত। এতদসত্ত্বেও বলা দরকার সামগ্রিকভাবে তাদের মোটের ওপর ব্যবসা, সামাজিক সম্মান-গুরুত্ব ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হত নবাবের দরবারে তাদের প্রভাবের ওপর। অষ্টাদশ শতকের চার আর পাঁচ দশক জুড়ে তাদের ব্যবসায়িক গদির চরিত্র অনেকটা রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করে।
তবে জগতশেঠ ইওরোপিয় কোম্পানির ওপর খুব বেশি নির্ভর করত না। তাদের গদির সঙ্গে ইওরপিয় কোম্পানিগুলির সরাসরি যোগাযোগ গড়ে ওঠে টাঁকশালে তাদের একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণের এবং একই সঙ্গে ইওরোপিয় কোম্পানিগুলির ব্যবসা চালাবার জন্যে নগদ পুঁজির চাহিদার উদ্দেশ্যে। ইওরোপিয় কোম্পানিগুলি বাংলায় যে বিপুল পরিমান দামি ধাতু আর মশলা আমদানি করত সেই ধাতুগুলি মুদ্রায় রূপান্তরিত করে আর মশলা একচেটিয়াভাবে বাজার জাত করে বিপুল সম্পদ তৈরি করতে পেরেছিল। তাদের আরেকটি বড় রোজগার ছিল ইওরপিয় কোম্পানিদের পুঁজি অপ্রতুলতায়, নির্দিষ্ট পরিমান পুঁজি ধার দিয়ে তার থেকে পাওয়া সুদ। বাংলায় কলকাতা, কাশিমবাজার, ঢাকা, হুগলী পাটনা ইত্যাদি শহরে অবস্থিত জগতশেঠের কুঠিগুলি থেকে ইওরোপিয় কোম্পানিগুলি নিরবিচ্ছিন্নভাবে নিয়মিত পুঁজি ধার করত। পাঁচের দশকে বাংলায় কোম্পানি আমলা রবার্ট ওরমে(Robert Orme) জগতশেঠকে বর্ণনা করছেন তার জানা জগতের শ্রেষ্ঠ স্রফ এবং মহাজন (ব্যাঙ্কার) হিসেবে the greatest shroff and banker• in the known world( Orme Mss., India, VI, f.1455)। ক্যাপ্টেন ফেনউইক তার affairs of Bengal in 1747-48এ জগতশেঠ মহতাব রাই সম্বন্ধে লিখছেন favourite of the Nabob and a greater Banker than all in Lombard Street joined together(Ibid., f. 1525)। ক্লাইভকে ১৭৫৭ সালে লুক স্ক্রাফটন লিখছেন, Juggutseat is in a manner the government's banker: ab.out two-thirds -of the revenues are paid into his house, and the gove!n'ment give the draught [draft] on him in the same manner as a Merchant on the Bank(Orme Mss., India XVIII, f. 5041)। বাংলার তিন বড় ব্যবসায়ীর সম্বন্ধে, বিশেষ করে জগতশেঠ সম্বন্ধে লিখতে গিয়ে ক্লাইভ লিখছেন, The city of Murshidabad is as extensive, populous and rich, as the city of London, with this difference that there are individuals in the first possessing infinitely greater property than any of the last city (Quoted in J.H. Little, The House of Jagatseth, p. 2)।

No comments: