Monday, November 12, 2018

ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইন – এইটিনথ সেঞ্চুরি বেঙ্গল - সুশীল চৌধুরী৫৫

ব্রিটিশদের তুলনায় ডাচেদের অবস্থা খুব বেশি কিছু আলাদা ছিল না। নীতিগতভাবে বাংলার মুঘল টাঁকশালগুলি সকলেরে জন্যে উন্মুক্ত ছিল, যে কেউ নির্দিষ্ট বাটা দিয়ে, টাঁকশালে রূপো নিয়ে গিয়ে বাজার দরে মুদ্রা তৈরি করিয়ে নিতে পারত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, টাঁকশালগুলির একচেটিয়া দখল ছিল জগতশেঠ পরিবারের হাতে। যেহেতু জগতশেঠেরা মুর্শিদাবাদ দরবারে বিপুল প্রভাব বিস্তার করতে পেরেছিল, তাই প্রত্যেক বছর টাঁকশাল চালাবার সহজেই দায়িত্ব পেত। ডাচেরা এই টাঁকশালেই প্রত্যেক বছর মুদ্রা ছাপাত যদিও, কিন্তু মাঝে মাঝে তাদেরও প্রচুর ঝামেলা পোয়াতে হত। ফলে তারাও ব্রিটিশদের মত সরাসরি দামি ধাতু জগতশেঠেদের গদিতে সমর্পন করতে বাধ্য হত। বিদেশি কোম্পানিদের ঝামেলায় ফেলার আরও একটা উপায় ছিল, শেঠেরা টাঁকশালের মুল কারিগরকে একটু ধীরে কাজ করতে বলত। ফলে মুদ্রা তৈরিতে প্রয়োজনের তুলনায় দেরি হয়ে যেত। যে সময় কোম্পানিগুলোর বিপুল পরিমান নগদ মুদ্রা প্রয়োজন, সেই সময়েই যদি টাঁকশাল কর্তা মুদ্রা তৈরি করতে দেরি করে তাহলে কোম্পানিগুলির মাথাব্যথা বাড়ে বৈ কমে না কারণ দাদনি বণিকদের দেয় বকেয়া টাকা, সে বছরের দাদন দেওয়া ইত্যাদির কাজ যতসদম্ভব তাড়াতাড়ি সেরে ফেলা দরকার, অথচ হাতে নগদ মুদ্রা নেই। ডাচ কর্তা সিকটারম্যান(Sichtermann) ১৭৪৪ সালে তার Memorie'তে লিখছেন মুদ্রা ছাপানোতে প্রচুর দেরি হওয়ায় তারা ঠিক করলেন খোলা বাজারে রূপো বেচে দেবেন এবং সে সময় খোলা বাজারে রূপোর দাম ভালই ছিল(Sichtermann's 'Memorie', VOe, 2629, ff. 920, 926-28, 14 March 1744)। পলাশীর কাছাকাছির সময়ে ১৭৫৫ সালে Taillefert লিখছেন টাঁকশালের unheard of delays, জগতশেঠের পরিবারের মধ্যে ঝামেলার জন্যে(Taillefert's 'Memorie', Voe, 2849, ff. 214-15, 27 Oct. 1755)। ফলে ডাচেরাও জগতশেঠের গদিতে রূপো বিক্রি করতে বাধ্য হয়, এমন কি ১৭৫৫ সালে ডাচেরা জগতশেঠের গোমস্তা বৈজনাথকে হুগলিতে রূপো বিক্রি করতে বাধ্য হয়(voe, 2862, ff. 855-56, HB, 14 March 1755)। 

No comments: