Tuesday, March 6, 2018

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা৪ - উপনিবেশের জ্ঞান চুরি এবং প্রকৃতির ওপর প্রভুত্ব - ভারতের গুটি বসন্তর টিকার জ্ঞান হরণ

যতদূর সম্ভব মেডের উদ্যমের ভারত থেকে প্রথম ভাইরোলেশনের সংবাদ লন্ডনে পৌঁছল। ১৭৩১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, ডক্তার রবার্ট কোল্ট, লন্ডনের অলিভার কোল্টকে চিঠিতে জানালেন, a short and generall account of the most common Distempers this Part of India is most Infested with, including monsoon fever and dysentery, and a description of the practice of inoculation for the smallpox (variolation), called by the Natives Tikah, [which]has been known in the Kingdom of Bengall as near as I can learn about 150 years
অলিভার কোল্ট বহুকাল ভারতে ছিলেন। তিনি বাংলায় আসেন ১৭০৯ সালে। কোম্পানির চিকিৎসক হিসেবে কাজ শুরু করেন ১৭১৩য়। ১৭২৯ পর্যন্ত ছিলেন। তাঁর চিঠি প্রাপক রবার্ট কোল্টও একজন শল্য চিকিৎসক ছিলেন। তিনি শল্য চিকিৎসকের সাহায্যকারী হিসেবে ভারতে আসেন, ১৭৩৮ সালে শল্য চিকিৎসক হিসেবে চাকরি পাওয়ার আগের পাঁচ বছর তিনি শল্যবিদ হিসেবে কাজ করছেন। ১৭৪১এ পদত্যাগ। অলিভারের তিনটে চিঠি পাওয়া গিয়েছে। ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পাঠানো চিঠিতে তিনি লিখেছেন কিভাবে সুমাত্রা, পেগু এবং সিয়ামের মানুষেরা জ্বরকে প্রশমন করে। ধারনা করা হয় যে দুই কোল্টের মাধ্যমে মেড তথ্য সংগ্রহ করতেন। চিঠিগুলো রয়াল সোসাইটির খুচরো কাগজের মধ্যে পাওয়া গিয়েছে এবং সেটি এখন ব্রিটিশ লাইব্রেরিতে আছে। তবে মেড এই তথ্য তাঁর কোন লেখায় ব্যবহার করেন নি, এমনকি ১৭৪৭এ প্রকাশিত হওয়া তাঁর বইতেও।(এই সূত্রটি ধরমপাল উল্লিখিত)
এতসব লেখা পড়ে মনে হতেই পারে যে ব্রিটিশ মুক্তবুদ্ধিরা সারা বিশ্বকে বাংলার টিকাকরণের বিষয়টা জানিয়েছিল। ঘটনাটা ঠিক নয়। প্রথম জানায় ১৭৫৪ সালে প্রোটেস্টান্ট পাদ্রি চার্লসদ চাইস(Rev Charles Chais) টিকাকরণ বিষয়টি সমর্থন করে Essai Apologetique নামে একটি প্রবন্ধ লেখেন। তিনি আমস্টার্ডামে থাকা, বাংলায় কাজ করে যাওয়া এক বন্ধু যার নাম পাওয়া গিয়েছে Mr dAm..d হিসেবে ভারত সম্বন্ধে তাঁর থেকে জানতে নানান বিষয় চান। চাইসের বইটির ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশ পায় নি। এই প্রথম এটি প্রকাশ করেন রাজেশ কোছার তাঁর প্রবন্ধে।
চাইসকে তথ্য দেওয়া বন্ধু জানান যে বাংলায় বহুকাল ধরেই টিকাকরণের কাজ হয় – The variolous matter was preserved in a twisted thread that was inserted into a needle, which in turn was passed between the flesh (chair) and skin (cuir).। তিনি চাইসকে আরও জানান যে ফোর্ট উইলিয়ামে সেক্রেটারির এক বিধবা তাঁর সন্তানদের টিকা দেওয়ান। টিকাকারী, মহিলাকে জানিয়েছেন variolousগুলি তাঁর পিতামহের পিতামহের সময় থেকে রাখা আছে। চাইসের বন্ধু আরও জানান যে খুব তাড়াতাড়ি তিনি হুগলী থেকে তথ্য নিয়ে জানাতে পারবেন, কিন্তু একাজটি যতদূর সম্ভব করে ওঠা যায় নি।
চাইসের বাংলার তথ্য আমেরিকিয় ডাক্তার জেমস কির্কপ্যাট্রিক তাঁর An Analysis of Inoculation বইএর দ্বিতীয় সংস্করণে অন্তর্ভূক্ত করেন। প্রকাশিত হয় ১৭৬১তে। টিকায় তিনি লেখেন বাংলার টিকাকরা সম্বন্ধে, এবং বলেন প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে কিভাবে variolousগুলি কিভাবে সংরক্ষিত হয় তাও লেখেন। তিনি লেখেন, thowe give entire Credit to the English Lady, an equal Credit to her Indian Doctor is not a necessary Consequence। স্বাভাবিকভাবে একজন ইওরোপিয় হয়ে কি করে দেশিয় জ্ঞানের মানুষকে স্বীকার করেন, ব্রিটিশ মহিলার কৃতিত্ব স্বীকার না করে।
ইতোমধ্যে লন্ডনে চিকিৎসা শিক্ষা নিতে পাঠানো যুবা ডাক্তার ডেভিড শুলজ ১৭৫৬ সালে সুইস ভাষায় ডাক্তারি বই লেখেন। শুলজের খ্যাতি ১৭৬৯ সালে রাজার চার সন্তানকে টিকা দেওয়ার। ১৭৫৮তে তাঁর বই অনুদিত হয় লন্ডনে। ব্রিটিশ সমালোচক লেখেন যে সুইডেনে টিকা দেওয়া তখনও শিশুকালে আছে, তাই সুইস বইতে হয়ত সেটির উল্লেখ জরুরি, কিন্তু লন্ডন সংস্করণে এটির উল্লেখ না হলেই হত। এটি ১৭৬৭তে নতুন করে ছাপা হয়। সেখানে তিনি এই তথ্যটি চারিসের বন্ধুর দেওয়া বলে উল্লেখ করেন। সেখানে তিনি কির্কপ্যাট্রিকের উক্তি তুলে দিয়েছেন। এ বিষয়ে শুলজের বক্তব্য ছিল, People will require a Confirmation before they believe that the people in Bengal, preserve the infected Thread, down from their Grandfathers and Great-grandfather। তবে এই তথ্য পাওয়ার যে আর কোন চেষ্টাই করা হয় নি তা বলাই বাহুল্য।



RAJESH KOCHHAR এর Smallpox in the modern scientific and colonial contexts 17211840
এবং
আশিস নন্দী সম্পাদিত SCIENCE, HEGEMONY & VIOLENCE  A REQUIEM FOR MODERNITY থেকে

No comments: