Saturday, July 14, 2018

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা২ - পশ্চিমিজ্ঞান ও ঔপনিবেশিক ভদ্রলোক

ইংরেজি শিক্ষায় ঔপনিবেশিক স্বচ্ছল অভিজাতদের মনে যে অমিত অর্থরোজগারের প্রণোদনা তৈরি হচ্ছিল, সেটা কিন্তু উপনিবেশের কাঠামোর সঙ্গে খুব একটা সঙ্গতিপূর্ণ ছিল না। এখানে আমরা হাতেগোণা আর্থ দিয়ে তৈরি হিন্দু কলেজের সঙ্গে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের দ্বারা মান্যতাপ্রাপ্ত বিশ্বের ধনীতম জয়েন্ট স্টক কর্পোরেট শাসকের অমিত অর্থে চালিত ফোর্ট উইলিয়ম কলেজের তুলনা করে বলতে পারি। এই নবতম কলেজের উদ্যমের সঙ্গে জড়িয়েছিল বাংলার নব্য অভিজাতদের মধ্যে নবতম পরিচয়, প্রতিষ্ঠা এবং মান্যতা পাওয়ার উদগ্র ইচ্ছা।
বহুবছর ধরে নব্য স্বচ্ছল মধ্যবিত্তের চরিত্র তৈরির চেষ্টা নিয়ে বেশ কিছু কাজ হয়েছে, আমার বক্তব্য, এই বৌদ্ধিক অভিজাতদের পরিচয় তৈরির পদ্ধতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল জ্ঞানের রূপতাত্ত্বিক ধারণা। আমি এই ধারণাকে ইমেজ অব নলেজ দিয়ে চিহ্নিত করি, একটি নির্দিষ্ট সময়ে সামাজিক দলের জ্ঞানচর্চার মধ্যে নৈতিকতার ধারণাটিকে উপস্থাপন করা। কোন এক দলের ইমেজ অব নলেজ বুঝতে আমাদের এই প্রশ্নগুলির উত্তর দরকার, জ্ঞান কি? বস্তুবাদী এবং সামাজিক দিক দিয়ে কিভাবে জ্ঞান অর্জিত বা তৈরি হয়? কিভাবে এবং কার দ্বারা এই জ্ঞান শংসিত হয়? কার কথা মান্যতা পায়? কিভাবে, মৌখিক না লিখত, কোন ভাবে এই জ্ঞান বাহিত হয়? কে এবং কাকে এই জ্ঞান প্রসারিত করছে? কোন দল এই জ্ঞান নিয়ন্ত্রণ করছে? এই জ্ঞান তাদের কি ক্ষমতা দ্যায়? সাধারণভাবে সমাজের পক্ষে এই জ্ঞান কি অঙ্গীকার, প্রতিশ্রুতি দেয়? এই জ্ঞান কি বৃহত্তর সমাজের জন্য ইত্যাদি। এই প্রতিফলন আংশিকভাবে একটি সমাজের সামাজিক-কথোপকথন কাঠামোর একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এবং এই কাঠামোর কোন পরিবর্তন ইমেজ অব নলেজের কাঠামোর পরিবর্তনও সূচিত করে।
এর আগে আমি(কপিল রাজ) দেখাতে চেষ্টা করেছি ভদ্রলোকেরা মূলত ব্রাহ্মণ্যবাদী ধারণার জ্ঞানের প্রতিচ্ছবির ওপর দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছেন – যা উনবিংশ শতকে হয়ে উঠেছে আদতে একটি নিষ্কলুষ কর্ম, মূলত হাতেকলমে ছোটখাট দৈনন্দিনের জীবনের পরীক্ষা নিরীক্ষা নয়, বিমূর্ত ধারনার ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং ইওরোপিয় বৈজ্ঞানিক নীতিবোধের সঙ্গে বেশ মেলে। যদিও বহু শতাব্দের যাত্রায় বৈদিক হিন্দুত্বের বিপুল পরিবর্তন সূচিত হয়েছিল, এবং সেই সঙ্গে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষ রাজারাও, কিন্তু আমার মনে হয় এই ইমেজ অফ নলেজের নিষ্কলুষ কর্মের ধারণাটি ভদ্রলোকেদের নিজেদের পরিচয়ের খোঁজে অপরিবর্তিত থাকে, এবং শেষমেশ এই ধারণাটিই ভদ্রলোকেদের নিজেদের চরিত্র খোঁজার কাজে নতুন করে উঠে আসে। এই বস্তবতা সার্বিকভাবে এবং সঠিকভাবে সমালোচিত হয়ে এমন একটা ধারণা তৈরি হয়েছে যাতে মনে হয় ঐতিহাসিকভাবে সতত পরিবর্তনশীল পশ্চিমিদের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়রা স্থবির, মানসিকভাবে রক্ষণশীল।
কপিল রাজ বলছেন, বাঙালি ভদ্রলোকেদের ইমেজ অব নলেজের ধারনাটি পূর্বপ্রথিত নয়, কলেজের পাঠ্যসূচী নিয়ে বেশ কয়েক বছরের নিজেদের সমাজের সদস্যদের মধ্যে চলতে থাকা বিতর্ক সঞ্জাত ধারণা। এই বিতর্কের একটা বীজ আমরা পাই হ্যারিঙ্গটনের প্রতি ঈস্টের চিঠি থেকে। হ্যারিংটন তাঁর বাড়িতে হওয়া একটি বৈঠকের বর্ণনা দিচ্ছেন কিভাবে জ্ঞান, জ্ঞানের দখলদারি, গোষ্ঠীর আনুগত্য ইত্যাদির বিতর্ক উপস্থাপিত হয় - Talking afterwards with several of the Company, before I proceeded to open the business of the day, I found that one of them in particular, a Brahmin of good caste, and a man of wealth and influence, was mostly set against Ramohun [sic] Roy . . . (who has lately written against the Hindoo idolatry, and upbraids his countrymen pretty sharply). He expressed a hope that no subscription would be received from Ramohun Roy. I asked why not? ‘Because he has chosen to separate himself from us, and to attack our religion.’ ‘I do not know’, I observed, ‘what Ramohun’s religion is’—(I have heard it is a kind of Unitarianism)—‘not being acquainted or having had any communication with him; but I hope that my being a Christian, and a sincere one, to the best of my ability, will be no reason for your refusing my subscription to your undertaking.’ This I said in a tone of gaiety; and he answered readily in the same style, ‘No, not at all; we shall be glad of your money; but it is a different thing with Ramohun Roy, who is a Hindoo, and yet has publicly reviled us, and written against us and our religion; and I hope there is no intention to change our religion.’ . . . This frank mode of dealing with them, I have often before had occasion to remark, is the best method of gaining their personal regard and confidence. Upon another occasion I had asked a very sensible Brahmin what it was that made some of his people so violent against Ramohun. He said, in truth, they did not like a man of his consequence to take open part against them; that he himself had advised Ramohun against it: he had told him, that if he found anything wrong among his countrymen, he should have endeavoured, by private advice and persuasion, to amend it . . . They particularly disliked . . . his . . . being continually surrounded by [Mussulmans], and suspected to partake of meals with them।
কপিল রাজএর রিলোকেটিং মডার্ন সায়েন্স – সার্কুলেশন অব কন্সট্রাকশন অব নলেজ ইন সাউথ এশিয়া ১৬৫০-১৯০০ের অনুবাদ ১৬৮ পৃ

No comments: