Saturday, July 14, 2018

কার্ল মার্ক্সএর মত সংবেদী মানুষের কর্পোরেট বিরোধী হওয়া ছাড়া অন্য কিছু হওয়া সম্ভব ছিল না

ঠিক উল্টো দিকে তার আরেক দেশিয় জাতভাই ম্যাক্স মূলার সাম্রাজ্যের বন্ধু হয়ে উঠছেন।
কার্ল মার্ক্স যখন লন্ডনে বসে সাম্যবাদের চর্চা করছেন তখন সারা বিশ্ব জুড়ে সব থেকে বড় লুঠের কাজ চলছে - যে লুঠের সুদে আজও ইওরোপ চলছে, মূলেই হাত পড়েনি।
সে সময় লুঠেরা ইস্ট ইন্ডিয়া কর্পোরেট নাম দেওয়া ইওরোপিয় কোম্পানিগুলোর আড়াইশ বছর বয়েস হয়ে গ্যাছে। শিল্পবিপ্লবীয় কেন্দ্রিয় নিয়ন্ত্রিত লুঠ খুন আর অত্যাচার করার জন্যে যে ইয়োরোপীয় সামরিক প্রযুক্তি বিকশিত হয়েছে কয়েকশ বছরের চেষ্টায়, তা দিয়ে সারা বিশ্ব লুঠ করে আনা সম্পদে উৎপাদন হয়ে চলেছে অগুনতি পণ্য সারা ইওরোপে। সারা বিশ্ব লুঠ করে আসছে জ্ঞান প্রযুক্তির যত ফুটোফাটা সব সারছে সম্পদ লুঠের অর্থে। বিশাল বিশাল গবেষণাগার চলছে সারা বিশ্ব লুঠের সম্পদে এবং সেখানে গবেষিত হচ্ছে কিভাবে শ্রম প্রতিস্থাপনকারী যন্ত্র তৈরি করা যায়।
বিশ্বে অমানবিক দাস প্রথা, খুন লুঠ আর অত্যাচার করে রয়্যাল আফ্রিকান কোম্পানি আর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নিজের দেশের চাষী আর পশুচারকদের দাস বানিয়ে গড়ে তুলছে অমানবিক বিদ্যুৎ নির্ভর বিশাল বিশাল কারখানা। এশিয় সামাজিক শিল্প অস্তমিত - ১ কোটি বাঙালি মারা গিয়েছে ছিয়াত্তরে। গোটা লন্ডন তখন কোক শহর নামে খ্যাত - কয়লা পুড়িয়ে চলছে পণ্যউতসব। মানুষের ওপর অত্যাচার,মহামারী মানব সভ্যতার লজ্জার চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছচ্ছে - আইনি ভাবে দাস ব্যবসা বেআইনি হলেও তাও চলবে বহুদিন। সারা বিশ্বের সম্পদ এনে জড়ো করেও রক্ষা করা যাচ্ছে না লন্ডনের এক্কেবারে সাধারণ থেকে অভিজাতর মানুষের জীবন। এক একটা মহামারীতে লন্ডনের এক একটা বস্তি উজাড় হয়ে যাচ্ছে। এক দিকে কয়েকশ কোম্পানির কর্তারা ফুলে ফেঁপে উঠছে আর লন্ডনের রাস্তায় মরে পড়ে থাকছে; মহামারীতে মরা মানুষ, কারখানা, জাহাজের চিমনি পরিষ্কার করতে গিয়ে চুল্লিতে পড়ে মরছে হাজারে হাজারে বাচ্চা।
অমানবিক সেই অমানবিক অবস্থা লন্ডনে বসে দেখছেন কার্ল মার্ক্স। তার পক্ষে কোনোভাবেই কর্পরেট-বন্ধু হওয়া সম্ভব ছিল না। তাঁর ঔপনিবেশিক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও তিনি অসাধারণ ব্যতিক্রমী তাত্ত্বিক।
---
তবুও তিনি যে ভারতের গাঁইয়াদের মানুষ মনে করতেন না, এটা কিন্তু আজও দিনের আলোর মত পরিষ্কার।

No comments: