Sunday, September 17, 2017

বাঙালির খাদ্যাভ্যাসকে নিয়ন্ত্রণের পাল আমলের ঐতিহ্য বহন এবং বাস্তবায়িত করছেন নেরেন্দ্র মোদি

আজ নরেন্দ্র মোদি যেভাবে গ্রাম বাংলার মানুষের পাত মারতে চাইছেন ঠিক সেইভাবে আজ থেকে হাজার বছর আগে পাল রাজারা কৈবর্তদের শাস্তি দিয়ে বাংলাকে নিরামিষাশী করতে চেয়েছিল, আর সেইভাবে নুনের ওপর বিপুল শুল্ক চাপিয়ে, বাঙলাকে নুন খেতে না দিয়ে বাঙ্গালি আর তার গবাদীগুলিকে রুগ্ন করে দেয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্য।
--
দিনাজপুরের শ্রীমতী পাল রাজাদের আগে থেকেও পুরোনো নদী। গৌড়ের সমৃদ্ধিতে এর অবদান অবিস্মরণীয়।আজ শ্রীমতির দীর্ঘ মজা খাত ধরে গজিয়ে উঠেছে হাজারো বিশাল বিল হ্রদ। রাজবংশী ভাষায় ইটাহার মানে হ্রদের মালা। অঞ্চলের আত্রাই, পুর্নভবা, ছোট যমুনা, ইছামতি, ব্রাহ্মনী, শ্রীমতী নদী ঘিরে গোটা পুণ্ড্রবর্ধনই নয় ওপরে তিস্তা আর নিচে গঙ্গা, দামোদর, অজয়ের বিস্তৃত নদীমালা জুড়ে জুড়ে গড়ে উঠেছিল মহান শূদ্র-বৈশ্য-পরম্পরার সমাজ।যাদের মূল জীবিকাই ছিল নদীর জল-জাত মাছ।
নদীমাতৃক বাংলায় মাছই ছিল বাঙালির প্রধান খাদ্য - সঙ্গে পরম্পরার সমাজের শূকর আর উচ্চবর্ণের গরু - কিন্তু তবু বাঙালির বাংলার বাইরের পরিচয় হল মেছো বাঙালি। বাংলার এক নৈয়ায়িকের ইলিশ সংক্রান্ত শ্লোক উল্লেখ করেছেন বিনয় ঘোষ(সেটা হাতের কাছে নেই) তার মোদ্দা কথা গঙ্গার ইলিশ পীযুষ তুল্য। সেটি যদি স্বর্গে না পাওয়া যায়, আমি স্বর্গে যেতে রাজি নই। বাঙালি আর মাছ নিয়ে প্রচুর লেখা আছে। কিন্তু বাঙালির জীবনে মাছ ধরার কাজটির শ্রেয় অন্তত এতদিনও বাংলার কৈবর্ত সমাজ পান উচ্নিচবর্ণের ইতিহাসে, বরং তাদের ইতিহাস বিশদে লিখতে বাঙালি ঔপনিবেশিক ঐতিহাসিকদের অসাধারণ অনীহা।
পাল রাজত্বে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল কৈবর্তদের সাথে। কৈবর্তরা বাংলার বাগদী, পোদ, কোচ, মেচ, শবরের মত বরেন্দ্রর আদিমতম পরম্পরা। কৈবর্তরা ধীবর (জালুয়া কৈবর্ত)। পাল রাজারা বৌদ্ধ। ধর্মীয় দিক থেকে তারা মাছ মাংসর বিরোধী। এই পেশাগুলিকে তারা নিরুৎসাহিত এমনকি বাধা দিতেন। ধীরে ধীরে দীর্ঘদিনের পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটলো দ্বিতীয় মহীপালের সময়। শুরু হলো বরেন্দ্র বিদ্রোহ বা কৈর্বত বিদ্রোহ। দুশ বছর ধরে এই লড়াই চলল। কৈবর্তরা বিনা যুদ্ধে আত্মসমর্পন করেন নি। অনেক রক্ত অনেক গ্লানি অনেক বিশ্বাসঘাতকতায় মহান পাল রাজত্বের স্থায়িত্ব আনতে হয়।
---
আজও আপামর গাঁইয়া বাঙালির পাত থেকে মাংস টুকু কেড়ে নেওয়ার চক্রান্ত।
সেদিন ছোটলোকেরা রুখে দাঁড়িয়েছিল।


আজ?

No comments: