Friday, May 25, 2018

ধরমপাল, উপনিবেশপূর্ব কৃষি, চেঙ্গলপট্টু সমীক্ষা

বন্ধুরা পুরোনো বাঙলা বা ভারতের কথা জানতে চাইছেন।
ধরমপালজী এই কাজ করে গিয়েছেন তার সারাজীবন ধরে। তাঁর জীবদ্দশায় প্রকাশিত চেঙ্গলপেট্টু(আজকের মাদ্রাজ অঞ্চল) সমীক্ষা আমাদের ব্রিটিশ পূর্ব ভারতের গ্রামকে নতুনভাবে দেখতে শেখায়।
মাদ্রাজের মত মধ্যউর্বর অঞ্চলে যদি এই চোখ কপালে তোলা তথ্য আবিষ্কৃত হয়, তাহলে হাজারে হাজারে নদীর পলিমাটি সমৃদ্ধ এই সুবায় কি ধরণের সম্পদ ছিল তা অনুমেয়।
তো আসুন সেই সমীক্ষাটি দেখি-
ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির করা চেঙ্গলপট্টু সমীক্ষার নানান তথ্য
সূত্রঃ http://ppstbulletins।blogspot।in/2011/10/europe-and-non-european-world-since।html
দক্ষিণ ভারতের বেশ কিছু মন্দির তৈরি হয়েছিল ষষ্ঠ শতকে। মাদ্রাজের কাছে দশম শতকেরর উত্তিরামেরয়ুর (Uttiramerur) মন্দির লিপির পাঠোদ্ধারে সেই এলাকার সামাজিক জীবনের এক বিস্তৃত ছবি উঠে আসে।
সাধারণভাবে ভারতবর্ষ ৪০০টি ছোট ভৌগোলিক এলাকায় বিভক্ত ছিল যার মধ্যে ১৫-২০টি প্রধাণ ভাষা এলাকা। এই ৪০০টির প্রত্যেকটি জেলায় কাপড় বোনা হত। মাদ্রাজ প্রেসিডেন্সিতে ১৮১০ সাল পর্যন্ত Moturpha আর Veesabuddy কর আদায়ের ব্রিটিশ তথ্য বলছে প্রত্যেক জেলায় ১০,০০০ থেকে ২০,০০০ হাতে চালানো তাঁত ছিল। সারা ভারতে ৩০,০০০ ধাতু গলানো চুল্লিতে লোহা আর মর্চেছাড়া ধাতু(ক্রুসিবল স্টিল)র জিনিস তৈরি হত। সারা বছরে ৪০-৪২ সপ্তাহ ধরে মোট ২০ টন উচ্চমানের লোহা তৈরি করতে পারত। এছাড়াও অন্যান্য ধাতু শিল্পীও ছিল। খনিতে কাজ করার দক্ষ মানুষ ছিল। পাথর তক্ষণ শিল্পী, ছবি আঁকার শিল্পী, বাড়ি তৈরির কারিগর ছিল। চিনি, নুন আর জনসংখ্যার অনুপাতে তেল তৈরির কারিগরের সংখ্যা ছিল ১ শতাংশ। যাকে আমরা আজ পশ্চিমি প্রভাবে হস্তশিল্প বলছি, এবং কারখানায় নিযুক্ত ছিলেন ১৫ থেকে ২৫ শতাংশ মানুষ। এছাড়াও সুতো কাটারও অনিয়মিত প্রচুর কারিগর ছিল। আট ঘন্টা তাঁত চালাতে প্রয়োজন অন্ততঃ ২৫ ঘন্টার সুতো কাটার কাজ করা। মোট গৃহস্থদের তুলনায় ৫ শতাংশ যদি তাঁতি হয়, তাহলে আন্দাজ করা যেতেই পারে, ভারতের প্রায় প্রত্যেকটি বাড়িতে সারা বছর সুতো কাটা হত।
মূল স্বাস্থ্যবিধান গ্রামেই হত। ১৮০০ সাল পর্যন্ত চোখের বা নাকের শল্য চিকিৎসা - প্লাসটিক সার্জারি সাধারণ জলভাত ছিল। টিকা দেওয়াও খুব সাধারণ রেওয়াজ ছিল। এলাহাবাদেরমত গরমতম স্থানেও বরফ তৈরি করার চলতি প্রযুক্তি সাধারণের মধ্যে ছিল। দক্ষিণ আর পূর্ব ভারত থেকে সিড ড্রিল ব্রিটেনে পাঠানো হয় গবেষণার জন্য। মাদ্রাজের এগমোরে এন্ড্রু বেলের নথি করা বেল পদ্ধতি বিশ্ব শিক্ষাব্যবস্থায় প্রভূত প্রভাব ফেলেছে। ১৮০০ পর্যন্ত ব্রিটেনে শিশুদের পড়ানোর সার্বজনীক ব্যবস্থা ছিল না। অনেকেই কৃষি, পশুপালনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কৃষির অনুষঙ্গ প্রচুর শিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে ছিলেন বহু মানুষ। সে সময়ের সেচ, বীজ বোনা, হাল দেওয়া, ঝাড়াই মাড়াই, বীজের সংরক্ষণ আর সংকর করা ইত্যাদি নানান বিষয়ে প্রচুর আলেচনা নথিকরণ হয়েছে(কৃষি পরাশর একটি উল্লেখযোগ্য সঙ্কলন)। ১৮০৩ সালে এলাহাবাদ বারানসী এলাকার কৃষি উত্পাদনে সঙ্গে ব্রিটেনের তুলনা করা হয়। ভারতের উত্পাদন দেখা যায় অন্ততঃ দুই থেকে আড়াই গুণ বেশি। বেলারি আর কুডাপ্পার জেলার ১৮০৬টি এলাকার বিশদ বিবরণে পাই, সমগ্র জনগণকে তিনভাগে ভাগ করা হয়, উচ্চ(২৫৯৫৬৮ জন) মধ্য(৩৭২৮৮৭) ও নিম্ন শ্রেণীর(২১৮৬৮৪)। অর্থ মূল্যে সারা বছরের consumption expenditure অনুপাত ছিল ৬৯, ৩৭, ৩০। ঘি আর তেলের অনুপাত ছিল ৩, ১, ১ আর তণ্ডুল বা পালসেস ছিল ৪, ৪, ৩।
চেঙ্গলপট্টু জেলা সমীক্ষা
১৭৬৭ থেকে ১৭৮৪ পর্যন্ত চেঙ্গলপট্টুতে সমীক্ষা করে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। সমীক্ষায় গন্ডগোল রয়েছে, যেমন ১০০ কিমি সমুদ্র উপকূলে মাত্র ৩৯জন লবন কারিগর দেখানো হয়েছে(অথচ মাদ্রাজ ভারতের লবণ তৈরির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ছিল)। এমনও হতে পারে এটি শুধু সুপারভাইজারদের সংখ্যা।
১৯১০টি এলাকা, কানিতে জমির পরিমান, এক কানি সমান ০.৫ হেক্টরের একটু বেশি,
মোট জমি ৭৭৯১৩২
পাহাড় আর নদীর জমি ৩৬০৯৯
পতিত ৮৪৯৭৩
সল্ট প্যান ৪১৯০
সেচের উত্স- হ্রদ, পুকুর ১,০০,৮০৬
কাঠ ১৩০৭৯০
টোক(গ্রুভস বা প্ল্যান্টেশন) ১৪০৫৫
বসবাসের জমি ২৪০৮৮
সেচের জমি কিন্ত অকর্ষিত(Uncultivated irrigated land) ৫৮৬৬৭
অকর্ষিত, অসেচ(Uncultivated unirrigated land) ৫০৬৬২
সেচ, কর্ষিত(Cultivated irrigated) ১৮২১৭২
চাষের জমি কিন্তু অসেচ ৮৮০৬৯
মোট চাষযোগ্য জমির এক বড় অংশের নাম ছিল মান্যম(বাঙলায় চকেরান অথবা বাজি বা বাজে(কোনটা ঠিক উচ্চারণ! Bazeeর উচ্চারণ বাজি হওয়াই সম্ভব) জমিন সম্বন্ধে ইন্ডিয়া অর ফ্যাক্টস সাবমিটেড টু ইলাস্ট্রেট দ্যা ক্যারেক্টার এন্ড কনডিশন অব দ্য নেটিভ ইনহ্যাবিট্যান্টস, দ্বিতীয় খন্ডে রিচার্ড রিকার্ডস এস্কোয়ার বলছেন, সানড্রি অর মিসলেনিয়াস ল্যান্ড, দ্য টার্ম এজ পার্টিকুলারলি এপ্লায়েড টু সাজ ল্যান্ডস এজ আর এক্সেম্পট ফ্রম পেমেন্ট অব পাবলিক রেভিনিউ, অর ভেরি লাইটলি রেন্টেড, নট অনলি সাচ এজ আর হেল্ড বাই ব্রাহ্মিনস অব এপয়েন্টেড টু দ্য সাপোর্ট অব প্লেসেস অব ওয়ারশিপ এন্ড বাট অলসো টু দ্য ল্যান্ডস হেল্ড বাই দ্য অফিসার্স অব গভর্মেন্ট, সাচ এজ জমিনদারস, কানুনগোজ, পাটওয়ারিজ। চকেরান জমি বিষয়ে তিনি লিখছেন, ল্যান্ডস এলটেড ফর দ্য মেনটেনেন্স অব পাবলিক সার্ভেন্টস অব অল ডমিনেশনস, ফ্রম জমিনদার ডাউন টু দোজ অব ভিলেজ এসটাবলিশমেন্টস।
এই মান্যম জমির করের মাধ্যমে, বিশিষ্ট ব্যক্তি, সঙ্ঘের ব্যয়সহ প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানসব আয়জন হত। ১৭৭০ সালে চেঙ্গলপট্টুতে ৪৪০৫৭ সেচযুক্ত জমি আর ২২৬৮৪ অসেচ জমি ছিল। শুধু দক্ষিণেই নয়, উত্তরভারতেও ১০-১২ শতাব্দে কৃষি জমির অর্ধেক মান্যমের জন্য বরাদ্দ ছিল। এক জেলাতেই অন্ততঃ কয়েক হাজার সংঘ আর ব্যক্তি এই মান্যম জমির অধিকারী ছিলেন। ১৭০০এ বাঙলার শুধু একটি জেলায় ৭০,০০০ মান্যম জমি বরাদ্দ ছিল ব্যক্তি অথবা সঙ্ঘের জন্য।
ছাগল, গরু আর ভেড়ার মোট সংখ্যা
গরু ৯৪৬৮৫
মহিষ ৫৪১৭
ছাগল ১৪৯৩১
ভেড়া ১৪৯৭০
বকনা(বুলক) ৫৯৫৫০
১৭৪৮ থেকে ১৭৭০ পর্যন্ত দক্ষিণ ভারত জুড়ে ব্রিটিশরা যুদ্ধ, লুঠ আর অবাধে হত্যাকান্ড চালিয়েছে(ঠিক যেন ১৭৫৭র পরের বাঙলা)। এর বছর কুড়ি আগে হয়ত উল্লিখিত এই সংখ্যাগুলি অনেক বেশি ছিল।
১৫৪৪টি এলাকায় মোট গৃহস্থের(হাউসহোল্ড) সংখ্যা
মোট গৃহস্থ ৬২৫২৯
কৃষক আর পশুপালক ৩৩৯৬৩
ভেলালা ৭৪১১
পলি ৯৬৯৩
পারিয়ার ১১০৫২
রেড্ডি ১৪১৭
কাম্মাওয়ার ১০০৫
কাউকিপার্স ২৫৭৩
শানার ৮১২
তাঁতি ৪০১১
!! ৮৫
কটন রিফাইনার্স ৫৩৬
কার্পেন্টার্স ৩৯৪
কামার ৪৫
!! ২০৯
আর্টিফিসার্স(দক্ষ শ্রমিক, দক্ষ সেনানীও হয়) ৬৩৭
সোনা রূপোর গয়না তৈরির স্যাকরা ৩৮৯
কাঠুরে ৫৯৬
নুন তৈরি করেন যারা ৩৯
জেলে ৫৯০
মুচি ৭৮
পাথর কাটাই ৮৯
অন্যান্য(প্রায়) ৫০০
মোট ৪৩১২
ব্যবসায়ী, শ্রফ
চেট্টি ২০৫১
অন্য ব্যবসায়ী ১৮৩৯
শ্রফ ৪২২
আপতকালীন সেবা ১৬৮৫
নাপিত ৬৬৪
ধোপা ৮৬২
বৈদ্য Medicalmen ১৫৯
পন্ডিত, উচ্চ পাঠদানেরত, অভিকর শিল্পী, সংস্কৃতি
ব্রাহ্মণ ৬৬৪৬
পান্ডারাম ১০৫৪
দেবদাসী ৬২২
ভাল্লুভন Valluvans ১৩৭
Wochuns ১৭৩
বাদ্যকর ২৭
কুটাডি(অভিকর শিল্পী, মঞ্চে অভিনয়কারী) ২৫
প্রশাসন, পুলিস ২৬৮১
কলক্কাপিল্লাই(নথিরক্ষক, হিসাবরক্ষক) ১৬৬০
Panisevans ৩১৪
Taliars ৭০৭
সেনা Militia System ১৪৭৯
মুসলমান ৭৩৩
মুর ৬৭১
ফকির ৬২
অন্যান্য ৭৪৮
মান্যম থেকে যা কর আদায়হত, তার বাইরেও মোট কৃষি জমি থেকে যে কর উঠত তারও এক অংশ বিভিন্ন সংঘ(সংঘের নিজের সদস্য সংঘ অথবা ব্যক্তির মধ্যে), ব্যক্তিতে বন্টিত হত এমনকী যারা কৃষির সঙ্গে যুক্ত নন যেমন ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী অথবা শিল্পও পেত হয়ত। মোট কৃষি উত্পাদনের ২৫ শতাংশ প্রথম চাষ করা চাষী থেকে স্থানীয় মন্দির পর্যন্ত পেত। চেঙ্গলপট্টুতে এই অংশ ছিল মোট জেলার কৃষি উত্পাদনের ২৭ শতাংশের আশেপাশে। নিচের তালিকা তৈরি হয়েছে ১৪৫৮টি এলাকার কালামের হিসেবে। এক কালাম সমান আজকের হিসেবে ১২৫ কিলোরমত।
মোট কৃষি উত্পাদন ১৪৭৯৬৪৬
মোট বরাদ্দ ৩৯৪৯৫০
সংঘ আর Occupations ২৬৪৮২৪
স্থানীয় কোভিল- মন্দির, স্রাইন ১৩৮৮২
পান্ডারাম, দেবদাসী, জ্যোতির্বিদ ১৮৫০৩
চাষী, ভৃত্য ৮৭৫০৩
এদের মধ্যে অধিকাংশ পারিয়ার
সেচের বরাদ্দ ১৯৮০৬
ছুতোর আর কামার ১৯৪৭০
কুমোর ২৭৪৯
নাপিত ৬১৬৯
ধোপা ৬০৫৮
সবজি মাপক Corn measurers ১১৫৬১
শ্রফ(বিনিয়োগকারী) ৯৩৩২
কনক্কাপিলহিস ৩১৬২৪
পানিসেবন ৩১১০
টোট্টি ১৩৭১
Chief Inhabitants ৩১১৯৭
অন্যান্য ২৪৮৮
For outside Institutions and Persons ১৩০১২৬
মঠম বা প্রধান কোভিব(উচ্চশিক্ষার জন্য)
স্কলার্স ২৫৩২১
প্রশাসন ৫৩৫৭২
পালায়াক্করন বা মিলিশিয়া ৪৫৯৩৬
ফকির, মসজিদ, দরগা ২৫১৮
অন্যান্য ২৭৭৯
নানান পাদটীকার মধ্যে ২২ নম্বরটিতে ধরমপালজী লিখছেন
The information in this section, and the information on agricultural yields given above, is based on material written in English pertaining to a survey of around 2,200 localities in the District of Chengalpattu during the period 1767-1774. This material is held in the Tamil Nadu State Archives in Madras. Many more details relating to a number of these localities are still available on palm leaf manuscripts now kept at the Tamil University at Tanjore in Tamil Nadu. A detailed analysis of this data is presently being carried on under the auspices of the PPST Foundation and the Centre for Policy Studies, Madras.

No comments: