Friday, May 25, 2018

গাঁজা-ই-সাওয়াই বা গাঙ্‌-ই-সাওয়াই - আওরঙ্গজেবের বাণিজ্য জাহাজ

গাঁজা-ই-সাওয়াই বা গাঙ্‌-ই-সাওয়াই
বিপুল অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের বাণিজ্য জাহাজ। জাহাজটি ৭ই সেপ্টেম্বর, ১৬৯৫ সালে ইংরেজ জলদস্যু হেনরি এভরি দখল করেন। এটিকে হেনরি এভরি ভারত মহাসাগরের ইয়েমেন-সুরাত-এর (বর্তমান মুচা) পথে আটক ও লুঠ খুন আর ধ্বংস করে।
১৬৯৫ সালে এভরি ফেঞ্চি জাহাজ মান্দাব স্ট্রেইটে পৌঁছয়। সেখানে এভরি, থমাস টিউ আর আরও চারজ জলদস্যু নিয়ে একটি দল তৈরি করে। তাদের কাছে খবর ছিল ২৫টি মুঘল জাহাজ ভারত মহাসাগরে ভারতের দিকে ফিরছিল। ৭ই সেপ্টেম্বর রাতে গঞ্জ-ই-সাওয়াই ও ফাহাত মুহাম্মদ নামে আরো একটি এসকর্ট জাহাজ পথভ্রস্ট হয়ে সুরাতের দিয়ে চলে যায়।
এভরি ও তার দলের লোকেরা প্রথমে ফাহাত মুহাম্মদে আক্রমণ চালায় এবং ক্যাপ্টেনকে হত্যা করে। জাহাজটির ৫০,০০০ পাউন্ড মূল্যের রত্নভান্ডার দখল করে। পরবর্তীতে এভরি গঞ্জ-ই-সাওয়াই আক্রমণের জন্যে যায়। এটিতে ৬২টি কামান ও ৪ থেকে ৫শত সেনা বাহিনী ছিল। এছাড়াও এতে ছয়শর মত যাত্রীো ছিল। জাহাজটি দখলের সময় ছোট যুদ্ধ হলেও শেষ পর্যন্ত হেনরি এভরি জাহাজটি দখল করে। বাকীদের বন্দি করে।
জলদস্যুরা কয়েকদিন ধরে বন্দিদের হত্যা ও নারীদের ধর্ষণকরতে থাকে। এছাড়াও জাহাজের গুপ্তধন কোথায় রাখা হয়েছে এটা জানার জন্যও তারা বন্দিদের উপর নির্যাতন করে। কয়েকজন ধর্ষিতা সমুদ্রে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করে। বাকী জীবিত বন্দিদের পরবর্তীকালে জলদস্যুরা মুক্ত করে।
গঞ্জ-ই-সাওয়াইতে ৫০০,০০০ মূল্যের নগদ সোনা আর রূপোর টাকা ছিল। আর ছিল ৩২৫,০০০ ও ৬০০,০০০ পাউন্ড মূল্যের সম্পদ। জলদস্যুরা প্রত্যেকে ১,০০০ পাউন্ড ও সোনার আর রূপোর বাট নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়।
ছবি
১। গাঞ্জিসওয়ারি আর ক্যাপ্টেন এভরি
২। গাঞ্জিসওয়ারিকে রাটা করেছে দস্যু জাহাজ
৩। মুঘল মিনিয়েচারে গাঞ্জি সওয়ারি
৪। ঐ মানচিত্রে গাঞ্জিসওয়ারি
৫। ড্যানিয়েল ডিফোর আঁকা আওরঙ্গজেবের নাতনি আর অন্যান্য মুঘল মহিলাদের ঘরে জলদস্যু

No comments: