Thursday, August 9, 2018

সর্বাত্মক লুঠ - আধুনিক ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি - তার ভারতীয় দালাল সমূহ

সংগঠিত সরকারি লুঠের একটা ছোট্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন Debabrata Chakrabartyদাদা গত বছর।
মালিয়া নীরব ইত্যাদিরা ক্লাইভ হেস্টিংস ইত্যাদির পথ ধরে উপমহাদেশের অর্থ ইওরোপে পাচার করছে আজও। মানুষ পাল্টেছে। লুঠের ধারা থামে নি। মুখোশটা বদলে গ্যাছে। মেকলের নদান মাথায় রেখে শুধু ভদ্রবিত্তরাই নয় তাদের কত্তা পুঁজিপতিরাও সেই কাজে দড় হয়ে উঠছে।
সরকারি আমলা আর রাজনীতিকেরাও সেই পথে হাঁটছে।
২০১৬ সালের ২রা অগাস্ট রাজ্যসভায় এক প্রশ্ন উত্তর সেসনে সন্তোষ কুমার গাঙ্গয়ার জানান যে কেবলমাত্র ২০১৫-২০১৬ সালে ট্যাক্স ইনসেন্টিভ এবং নানাবিধ 'রেভেনিউ ফরগোণ ‘ ফর্মুলায় মাত্র 6.11 ট্রিলিয়ন টাকা ভারত সরকার বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থাদের মকুব করে দিয়েছেন । রেভেনিউ ফরগোণ স্টেটমেন্ট অনুযায়ী ভারতের বিভিন্ন কর্পোরেট সংস্থা সমূহ প্রতি ঘণ্টায় ৭কোটি টাকা , অথবা প্রতি দিন ১৬৮কোটি টাকা অথবা প্রতি বছর 5.32লাখ কোটি টাকা ট্যাক্স ছুট পান , সরকার খুব মামুলি ভাবে তার হিসাব খাতায় রেভেনিউ ফরগোণ ‘ হেডিংএ এই হিসাব লিখে রাখেন । এই ট্যাক্স মকুবের পরিমান কত ? ২জি স্ক্যামে সম্পদ লুঠের তিনগুনের অধিক , বিভিন্ন তেল কোম্পানি গুলি ২০০৫-০৬ সাল থেকে ২০১৩-১৪ পর্যন্ত তথাকথিত 'আন্ডার রিকভারি’ হিসাবে যে পরিমান ক্ষতির কথা বলে এসেছে তার চার গুনেরও বেশী । বিগত এক দশকে ২০০৫-০৬ থেকে ২০১৫-১৬ পর্যন্ত ‘ কর্জা মাফি ‘ হিসাবে ভারত সরকার মাত্র 36.5 লাখ কোটি টাকা কর্পোরেট ঋণ মকুব করে দিয়েছেন । আর এই ভাবেই মাত্র ১% ভারতবাসী আজকে দেশের 58.4% সম্পদের মালিক ।
এখন দীর্ঘকাল যাবত চলে আসা এই কর্পোরেট ঋণ মকুবের খেলা বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যদিও বিভিন্ন সময়ে রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া কে প্রধান প্রধান ঋণখেলাপি সংস্থাগুলির তালিকা প্রকাশ করতে আদেশ দিয়েছে - কিন্তু ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক এবং সরকার এখনো পর্যন্ত না দিয়েছে তাঁদের তালিকা না প্রকাশ করেছে তাঁদের নাম ।
কিন্তু কোথায় গেল এই সমস্ত টাকা , আমার আপনার সাধারণ মানুষের টাকা ? US Department of Commerce এর এক খসরা অনুমান মোতাবেক প্রত্যেক ১ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতির অর্থ ১৩০০০-১৯০০০মানুষের চাকরী যাওয়া । অন্য অর্থে ভারতের বাজার থেকে ১বিলিওন ডলার চুষে নেওয়ার ফলে আমেরিকার ১৩০০০-১৯০০০ মানুষের চাকুরীর গ্যারান্টি নিশ্চিত করা। এখন এই যে ভারত সরকারের কর্জা মাফি হিসাবে বিগত এক দশকে 36.5 লাখ কোটি টাকা কর্পোরেট ঋণ মকুব করে দেওয়ার দানছত্র তাতে বিদেশে ঠিক কত মানুষের চাকুরী নিশ্চিত হয় ? আনুমানিক ৮০লাখ আমেরিকান নাগরিকের । This is enough to sustain entire US economy with job/ wage guarantee multiplier effects setting in. এখন ২০১১ সালে বলা হয়েছিল ভারতে FDI in Retail এলে ৮০ লাখ চাকুরীর সৃষ্টি হবে - কিন্তু কেউ জিজ্ঞাসা করেনি আচ্ছা এই ইনভেস্টমেন্ট আসবে কোথা থেকে যখন আমেরিকা -ইউরোপের অর্থব্যবস্থাই দেউলিয়ার মুখে দাঁড়িয়ে ।
এই যে 36.5 লাখ কোটি টাকার কর্পোরেট লোণ মকুব আর এই বিপুল পরিমান অর্থ সেই সমস্ত কর্পোরেট মূলত বিদেশী ধুঁকতে থাকা কোম্পানি সমূহের 'বেল আউটের’ স্বার্থে ব্যবহার , কোথাও কেনা কোথাও মার্জ করা , দেশের অর্থ বিদেশে চলে যাওয়া ,তার বিনিময়ে বেঁচে গেছে বিদেশী শ্রমিক,বিদেশের অর্থনীতি । 36.5 লাখ কোটি টাকা ,সাধারণ ভারতবাসীর টাকা ,ব্যবহৃত হয়েছে ধুঁকতে থাকা বিদেশী কোম্পানিগুলিকে বাঁচানোর স্বার্থে । আর এই বিপুল পরিমান অর্থ ব্যাংকের হাত থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ফলে যে লিকিউডিটি ক্রাঞ্চ সেই লিকিউডিটি পূরণের স্বার্থে এক ধাক্কায় ১৫ লাখ কোটি টাকার ৫০০-১০০০ এর নোট বাজার থেকে তুলে নেওয়া ।
উন্নতি নয় লুঠ কেবল সংগঠিত লুঠ ।

No comments: