আবুল হাসান শিশুকাল থেকেই আঁকায় অবর্ণনীয় দক্ষতা উপস্থাপন করেছেন। সম্রাটও তাঁর কাজে প্রায় হতবাক হয়ে যান। ১৫৬০ সালে আগা খানএর পুত্র বাল্যাবস্থায় ইরাণ থেকে উপমহাদেশে চলে আসেন। মুঘল চিত্রশালায় কাজ নেন। বাল্যকাল থেকেই থেকেই তাঁর বিস্ময়কর প্রতিভা সক্কলের নজরে আসে। সে সময় জেসুইট পাদ্রি আর রাজদূতদের সঙ্গে আসা প্রচুর ইওরোপিয় শিল্পী উপমহাদেশে কাজ করছেন বিশেষ করে এনগ্রেভিংএর কাজে তারা বিশেষভাবে দক্ষ ছিলেন। ১৫১১ সালের একটা এনগ্রেভিংএ দেখা যাচ্ছে ক্রুশবিদ্ধ যিশুর পায়ের কাছে সাধু জন বসে আছেন। আবুল হাসান এটিকে কাগজে অবর্ণনীয় দক্ষতায় রূপান্তরিত করেন। এটি এখন অক্সফোর্ডে আছে। সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল ছবির তলায় খুদে অক্ষরে ফার্সি অক্ষরে লেখা আছে, mashq-i Abu’l Hasan ibn-i Riza, murid-i Shah Salim, dar sinn-i sizadah salagi sakhta অর্থাৎ রিজা পুত্র আবুলহাসান, শাহ সেলিমের (জাহাঙ্গিরের) অনুগামী এটি এঁকেছে ১৩ বছর বয়সে।
ছবিটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ বি এন গোস্বামী লিখছেন There, in this very lightly drawn study, he stands — St. John — body mildly flexed, hands clasped in front at waist level, head somewhat tilted and an expression of ineffable sadness on the face. Nothing that is there in the figure Abu’l Hasan could have observed from life or been familiar with personally: the European features of the face, the curly hair, the costume with its palpable weight and folds. Nor could he have had any instruction in European technique: modelling, shading, sense of volume, and all. And yet, basing himself simply on the engraving which must have come his way, he turned out this remarkably sensitive study।
এর ঠিক দুবছর পরে আবুল হাসান তখন মাত্র ১৫ বছরের। ইওরোপিয় ছবি আঙ্গিক ভিত্তি করে আরও একটা অসাধারণ ছবি আঁকলেন, যা তাঁর কৃষ্টি, আঙ্গিক থেকে অনেক দূরের। সমুদ্রের দেবতা নেপুচুনএর। আবারও গোস্বামীর ভাষা ধার করে বলা যাক There is wild grandeur in the naked, muscular, trident-bearing figure of the Roman god, astride a mythical, horse-bodied, fish-tailed, lobster-legged mount, wading through the rough seas astir with creatures gazing at the sea-lord with fear and astonishment। Nothing seems to have escaped Abu’l Hasan’s eye in this, from the angry mane alike of the rider and horse to the tiny swooping pelican close to the god's head। যে মানুষটা মুঘল ফার্সি আঙ্গিকে বেড়ে উঠছেন, তিনি ল্যাটিনে লিখিত চারটে স্তবকটি অসাধারণ দক্ষতায় নকল করলেন। এবং সবার শেষে লিখলেন নিজের সম্বন্ধে সেই আগে লেখা বাক্যটি।
কিন্তু ইওরোপিয় ছবি নকল করা তো তাঁর কাজের উতকর্ষ নয়। তিনি জাহাঙ্গিরনামার ঝরোখা দর্শন পাটাচিত্র অর্থাৎ প্রথম পাতার ছবিটা আঁকলেন যে ছবির বিষয়ে জাহাঙ্গিরের উক্তি উল্লেখ করেছি।
--
এখানে তাঁর নিজের ছবিও আছে।