Saturday, April 7, 2018

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা৪৫ - ঔপনিবেশিকতাবাদ এবং তার জ্ঞানচর্চার আঙ্গিক - সাম্রাজ্যের মন ও মান ।। বারনার্ড কোহন

অধ্যায়
আইন এবং ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র

অরাজক ভারতঃ স্বৈরাচার(ডেসপটিক) তত্ত্ব
ডেসপট শব্দটি এসেছে গ্রিক ভাষা থেকে যার অর্থ গৃহস্বামী, যনি তার বাড়িটিকে ডেসপটিকভাবে চালান। এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকে ডেসপটিক শব্দ বৃহত্তর সমাজে ব্যবহার হল, যেভাবে প্রভু তার দাসেদের ওপর কর্তৃত্ব চালায় ঠিক তেমন করে রাজা তার প্রশাসন চালানো। গ্রিক ভাষায় এই শব্দটির বিস্তৃতি ঘটে হল যথেচ্ছ শাসন। এরিসটটল এই বিস্তৃতিকে সরকার চালানোর একটি প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করলেন, যেখানে বৈধ রাজার শাসন করার ক্ষমতাও যেন দাসেদের মত করে শাসন করে।
কোম্পানির আমলা আলেকজান্ডার ডাও, ১৭৭০-৭২ সালে প্রকাশিত ফরিস্তার হিস্টোরি অব হিন্দোস্তান বইটির অনুবাদের মুখবন্ধ লিখতে গিয়ে বললেন, দ্য হিস্টোরি নাউ গিভন টু দ্য পাবলিক, প্রেজেন্টস আস আ স্ট্রাইকিং পিকচার অব দ্য ডিপ্লোরেবল কন্ডিশন অব আ পিপল সাব্জেক্টেড টু আরবিটারি সোয়ে; এন্ড অব দ্য ইন্সটেবিলিটি অব এম্পায়ার ইটসেলফ, হোয়েন ইট ইজ ফাউন্ডেড অন ল, নর আপন দ্য অপিনিয়নস এন্ড এটাচমেন্টস অব ম্যানকাইন্ড... ইন গভর্নমেন্ট লাইক দ্যাট অব ইন্ডিয়া, পাবলিক স্পিরিট ইজ নেভার সিন, এন্ড লয়ালটি আ থিং আননোন। দ্য পিপল পারমিট দেমসেলভস টু বি ট্রান্সফরমড ফ্রম ওয়ান টিরেন্ট টু এনাদার, উইদাউট মারমারিং; এন্ড ইন্ডিভিজুয়ালস লুক উইথ আননকন্সার্ন আপন দ্য মিজারিজ অব আদার্স, ইফ দে আর ক্যাপেবল টু স্ক্রিন দেমসেলভস ফ্রম দ্য জেনারেল মিসফরচুন। দিস, হাউএভার, আ পিকচার অব হিন্দোস্তান ইন ব্যাড টাইমস, এন্ড আন্ডার দ্য ওয়ার্স্ট কিংস। এজ আর্বিটারি গভর্নমেন্ট ইনফ্লিক্ট দ্য মোস্ট সাডেন মিজারিজ, সো, হোয়েন ইন দ্য হ্যান্ড অব গুড মেন, ইট ক্যান এডমিনিস্টার দ্য মোস্ট এক্সপিডিসাস রিলিফ টু দ্য সাব্জেক্ট। উই একর্ডিংলি ফাইন্ড ইন দিস হিস্টোরি, দ্যাট দ্য মিসফরচুনস অব হাফ এন এজ অব টিরানি, আর রিমুভড ইন আ ফিউ ইয়ার্স, আন্ডার দ্য মাইল্ড এডমিনিস্ট্রেশন অব আ ভেরিয়াস প্রিন্স।
ডাও এবং অন্যান্য ব্রিটিশ ঐতিহাসিক জোর দিয়ে বলছেন রাজনৈতিকভাবে আর্বিটারিনেস ডেস্পটিজিমের জন্ম দেয় এবং সম্পত্তির নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে। ব্রিটিশেরা মনে করত মুঘল সাম্রাজ্য হিন্দুস্থানের সব জমির মালিক ছিল, এবং তারা সেই জমি জায়গির হিসেবে, সেগুলি সেনাবাহিনীর আমীর ওমরার মধ্যে চাকরির মেয়াদের সময় ভাগ করে দিতেন। তারা আরও বিশ্বাস করত সম্রাটের মৃতুর পর অভিজাতদের দেয় জায়গির ফেরত নিয়ে নেওয়া হত(যদিও ডাও স্বীকার করেছেন এরকম বহু উদাহরণ আছে, যেখানে পিতার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকার সূত্রে জায়গির পুত্রে আর্ষিত হচ্ছে)। তারা আরও বিশ্বাস করত কিছু কিছু হিন্দু রাজা যেমন পশ্চিম ভারতের রাজপুত রাজ্যগুলি মুঘলদের অধীনে ছিল এবং তারা বাৎসরিক নজরানা দিত।

সম্পত্তির ক্ষেত্রেও যেমন, তেমনি সম্মানের ক্ষেত্রেও। তারা মনে করত মুঘল সম্রাটেরা রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষমতার উৎস। এই সম্মান ইংলন্ডের মত বংশগতভাবে প্রবাহিত হত না। যাকে সম্মান দেওয়া হচ্ছে তার জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই সম্মানটি চলে যেত। ব্রিটিশদের বিশ্বাস ছিল এই কাজটি করা হত যাতে ইওরোপের মত সম্রাটের ক্ষমতার প্রতিস্পর্ধী কেউ উঠে না আসতে পারে। ব্রিটিশেরা যে মুঘল সাম্রাজ্যের মডেল তৈরিও করল, তাতে বলা হল মুঘল সাম্রাজ্যে জৌষ্ঠাধিকার নেই বলেই প্রত্যেক মুঘল সম্রাট মারা যাওয়ার পরেই সিংহাসন দখলে পারিবারিক যুদ্ধ লাগত। দ্য পাওয়ার অব ডিস্পটিং অব সাক্সেসন ন্যাচুর‍্যালি বিলং টু আ ডেসপট। ডিউরিং হিজ লাইফ, হিজ প্লেজার ইজ দ্য ল। হোয়েন ইট ডায়েজ হিজ অথরিটি সিজেস। মুঘল সম্রাট কোন পুত্রকে, সে তার জৈষ্ঠ পুত্র নাও হতে পারে, তার সিংহাসনের উত্তরাধিকার চিহ্নিত করলেও, তাকে শেষ পর্যন্ত সিংহাসন পাওয়ার জন্য যুদ্ধ করতে হত। আ প্রিন্স মাস্ট ডাই বাই এইলমেন্সি, অর ওয়েড থ্রু দ্য ব্লাড অব হিজ ফ্যামিলি টু সেফটি এন্ড এম্পায়ার।

No comments: