Saturday, October 14, 2017

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা - কেন আমরা মিলেনিয়াম ডেভেলাপমেন্ট গোলের বিরোধী

আবার Sayan, আমার আমাদের খোঁচা দিয়েছেনঃ What is even more terrible is that people like Biswendu Nanda defend open defecation in the name of tradition, and dismiss studies like the above Johns Hopkins study as studies made by "imperialists"
আমাদের উত্তর বরাবরের মত একটু বড়ই হল-
হ্যাঁ, এগুলি নিশ্চিতভাবে ছদ্মসাম্রাজ্যবাদী কাজ।
১) আমরা বাংলার কারিগরেরা, 'গরীব' ছাপেরই কড়া বিরোধিতা করি, এ সব ইওরোপকেন্দ্রিক নতুন বিশ্ব তৈরির ফন্দিফিকির, যা এখন 'মিলেনিয়াম ডেভেলাপমেন্ট গোল'এর চড়া নির্দেশিকা তৈরির এজেন্ডায় এসে ঠেকেছে।
২) পরম্পরার সমাজের মাথায় উড়ে এসে জুড়ে বসেছে বহুপাক্ষিক সঙ্গঠনগুলোর তাত্ত্বিক নির্দেশে চলা, দায়দায়িত্ব বিহীন সমাজ বিচ্ছিন্ন কর্পোরেটদের ধামা ধরা স্বেচ্ছাব্রতীরা। সামাজিকো বৈষম্য তৈরি করছে কর্পোরেটদের লুঠ, খুন, উচ্ছেদ আর অত্যাচার, অথচ তাদের ফাণ্ডিঙ্গেই এনজিওদের কাজের ফন্দিফিকির।
খুনি বিচারকের আসনে বসে খুনের বিচার করছে।
রাষ্ট্র যে কাজ করতে পারে না সে কাজ অধিকাংশ এনজিওদের দিয়ে আপাতত করিয়ে নিচ্ছে কর্পোরেটেরা, যারা আদতে এই বহুপাক্ষিক সঙ্গঠনগুলোর পিছনের মুখ এবং সিএসআর এই আন্দোলন সফল করার অন্যতম বাহন। এই কর্পোরেটেরাই গ্রাম উৎপাদন ধ্বংসের অন্যতম কাণ্ডারী এবং কর্পোরেটদের এজেন্ডাগুলি সফল করার কাজে লেগে রয়েছে স্বেচ্ছাব্রতীরা। গত দুদশকে রাশিয়া ধ্বংস এবং চিনের পথবিকারে হতোদ্যম বামেরা আপাতত এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
৩) আমাদের এবং পরম্পরার গ্রাম সমাজের সুবিধে, এনজিওগুলি কর্পোরেট/সরকারি (আদতে বহুপাক্ষিকদের সরকারগুলোকে দেওয়া ঋণ, যা গাঁইয়াদের গলায় ফাঁস হয়ে চেপে বসছে দিনের পর দিন) ফান্ড পেতে ব্যবহার করতে যতটা উৎসুক, মানুষ সংগঠনে ততটাই অক্ষম এবং নিরুৎসাহী হয়ত অদক্ষও - আর যদিও বা প্রাক্তন বামেদের সংগঠনের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তারা কিছুটা হলেও সংগঠিত করার কাজ করে, সেই সংগঠনে জুড়ে থাকা মানুষের মাথা গোণার পরিমানটা এতই ছোট, কর্পোরেটরা দানের/ঋণের বিনিময়ে তাদের থেকে যে কাজ আশা করে তার গুণগত এবং পরিমানগত কাজের ধারেপাশে পৌঁছতে পারছে না এনজিওরা।
৪) এরা সমাজে কিছুটা ছাপ ফেলে ঠিকই, গ্রামে গ্রামে কিছু ইওরোপমন্য যুবকযুবতী তৈরি হয়, যাদের চাকরির/কাজের শর্তই হল এই মানুষদের পরম্পরায় অশ্রদ্ধা তৈরি করা - যে জন্য এওয়ারনেস প্রকল্পগুলোর এত রমরমা, ডোলদেওয়া আপাতত বন্ধ করে দিয়েছে কর্পোরেটরা - শুধু তাত্ত্বিক মধ্যবিত্ত ভদ্র পোষা, যাদের কাজ গ্রামীনদের কর্পোরেট এজেন্ডায় নিয়ে আসা।
৫) ফান্ডিং এজেন্সিগুলো পরম্পরার সমাজ ধ্বংসকরে ইওরোপ শেকড়পন্থী সমাজ তৈরির দায় অর্পণ করেছেন এনজিওদের ওপর। মশকরার বিষয় হল, সমাজ ব্যবস্থা(আপনারা যাকে পরিকাঠামো বলেন) ধ্বংসের গুরুত্বপূর্ণ কাজের হাতিয়ার যেমন ডিমনিটাইজেশন বা জিএসটি বা ল্যাবটুফিন্ড ইত্যাদি প্রকল্প ঠিকঠাক প্রয়োগ করতেব্যর্থ কর্পোরেটরা।
এনজিওদের উচিৎ কর্পোরেটদের কাছে জবাব্দিহি চাওয়া, কেন তারা রাষ্ট্রীয় সুযোগ সুবিধে নিয়েও, বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেও সমাজে সেই প্রয়োজনীয় প্রভাব ফেলতে ব্যর্থ - অথচ তারা সেই কাজ সম্পন্ন করতে এনজিওদের ওপর ক্রমশঃ চাপ তৈরি করে। ১৭৫৭র পর কর্পোরেটরা যে ব্রতে ব্রতী হয়ে পরম্পরার সমাজ, তার উৎপাদন ব্যবস্থা ধ্বংস করে কর্পোরেট কেন্দ্রিক সমাজ তৈরির দুরুহ কাজটি সম্পন্ন করছে, সে কাজের একাংশ গত চার পাঁচ দশক ধরে করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কিছু দায়দায়িত্বহীন মধ্যসত্ত্বভোগিকে।
যতই করুণ, এটা সম্পন্ন হতে আরও একটা মিলেনিয়াম এসে যাবে, তখন আর একটা মিলেনিয়াম গোল তৈরি করতে হবে।।
এটাই কঠোর বাস্তব।
এটা এশিয়া/বাংলা দাদা!

No comments: