Saturday, August 5, 2017

হস্তশিল্প তকমার ঔপনিবেশিক রাজনীতি - বিতর্ক

Dinēśa-Ratna Prabhākara আপনার পোস্ট শেয়ার করেছেন৷ — Changma Chikko এবং আরো 3 জন এর সাথে।
Biswendu Nanda
হস্তশিল্প তকমার ঔপনিবেশিক রাজনীতি
আমাদের বক্তব্য। গোটাটা রাজনৈতিক। লোক বা ফোকের বিন্দুমাত্র ছোঁয়া নেই।
---
বহরমপুরের এক শোলা কারিগরকে নিয়ে একটি লেখা বন্ধুদের দেওয়ালে দেওয়ালে ঘুরছে।
আমরা এই লেখাটিকে কি ভাবে দেখছি?
...সোমেনদা গতকাল এই লেখাটা দেখেছি। আমরা সংগঠন করি। অসুখী বিলাসে নেই। আমরা মনে করছি একে শিল্প(আর্ট) হিসেবে দেখেই সমস্যা হয়েছে এত দিন। আমরা এগুলিকে গ্রামীন পরম্পরার উৎপাদন হিসেবে দেখতে চাইছি। ঔপনিবেশিক হস্তশিল্প আভিধা মেরে দিয়ে ১৭৫৭র পর এই গ্রামীন পরম্পরার উতপাদকেদের মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে দিয়েছিল ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র - হয় আমার শর্তে তুমি বাঁচবে জাদুঘরের লোকশিল্পের সামগ্রী হয়ে নয়ত তোমার বাঁচার অধিকার নেই - আজও সেই নীতর বদল তো হয়ি নি - বরং দিন দিন আরও জাঁকিয়ে বসছে। কর্পোরেট জানে বাংলার গ্রামীন উৎপাদন তার থেকে অনেক বেশি পরিমানে উৎপাদন করে। তাই এগুলিকে মৃতপ্রায় বলে লোকশিল্প জাদুঘর তৈরি করা তাঁর রাজনৈতিক পথ। এটা কর্পোরেট আর রাষ্ট্রের হাতে রাজনৈতিক হাতিয়ার - গ্রামীন উতপাদনকে মৃতপ্রায় দেখানোর পথে কয়েকপা হাঁটা।
কিন্ত প্রশ্ন উঠতেই পারে গ্রামীন উতপাদনকে হস্তশিল্প বলা হল কেন? বিদ্যুৎ আর যন্ত্রশক্তিতে গর্বোদ্ধত ঔপনিবেশিক রাষ্ট্র মনে করছে সামগ্রিকভাবে এই গ্রামীন উতপাদকেদের উৎপাদন রাষ্ট্রিয় শিল্প(ইন্ডাস্ট্রি) উৎপাদনের সংখ্যায় তারতম্য আনে না। সেই তাত্ত্বিকতায় ধোঁয়া দিল চাকুরিজিবী ঔপনিবেশিক ইওরোপমন্য ভদ্রলোকেরা। রাষ্ট্রের তাত্ত্বিক প্রণোদনায় ভদ্রলোকেরা দায়িত্ব নিল গ্রামে গ্রামে গিয়ে এই ধরণের "শিল্প" খুঁজে আনতে এবং তাকে শহর ভিত্তি করে বাঁচাবার উপায় নির্ধারন করতে। ১৯২০-৩০ সালে কংগ্রেস এ ধরণের "মহান" দায়িত্ব পালন করেছে - সিউড়ি বোল বা সেরপাই সেগুলোর অন্যতম উদাহরণ। এই কারিগরেরাও ইংরেজি বুলিওয়ালা শিক্ষিত ভদ্রলোকেদের সঙ্গে কাথা বার্তা বলে নিশ্চিত হল তারা সংখ্যায় এতই অল্প যে সত্যি তারা বোধহয় রাষ্ট্রীয় উৎপাদন ব্যবস্থায় নগণ্য।
কিন্তু সামগ্রিকভাবে কি তাই? সারা বাংলার ছোট পরম্পরার উদ্যোগীদের এক করলে উৎপাদনের পরিমান কোথায় দাঁড়ায়, যারা আমাদের লেখা এর আগে পড়েছেন তারা জানেন - তাও বলি এ বাংলার পরম্পরার গ্রামীন উৎপাদনের মোট অঙ্ক অন্তত ১ লক্ষ কোটি টাকা। তাই রাষ্ট্রের কাজ হল প্রত্যেককে আলাদা করে শিল্প তকমা লাগিয়ে দেওয়া যাতে সারা বাংলার গ্রামীন উৎপাদন এক না হতে পারে। পরস্পরের সঙ্গে সমস্যার সমাধানের পথ আদান প্রদান করতে না পারে।
এই যাদববাবু যে এই অর্থনীতির অংশ তাকে কেউ এর আগে বোঝান নি। এদের 'লুপ্তপ্রায়' লোকসংস্কৃতি বা লুপ্তপ্রায় হস্তশিল্প দাগিয়ে দেওয়া ভদ্রলোকিয় গবেষণায় ভদ্রলোক আর এনজিওদের প্রকল্প/চাকরি নিশ্চিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু পলাশীর পরে যে বিশ্ব বাজার তারা হারিয়েছিল, দেশজ বাজার তারা হারিয়েছিল, পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপরার যায়গা তারা হারিয়েছিল তা ফিরে আসে নি, তারা যে সামগ্রিক গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থার অংশ সেটাও কেউ বোঝায় নি।
আর বাংলার গ্রামীণ উৎপাদনের চরিত্রটাই হল কারিগরের বংশপরম্পরার বা সামাজিক পরম্পরার বা গুরু পরম্পরার জ্ঞান, তাঁর দক্ষতা, তাঁর প্রযুক্তি, তাঁর বাড়ির পাশের কাঁচামাল, তাঁর নিজস্ব বাজার। তাঁর চরিত্রটাই হল ঘুরে ঘুরে বিক্রি করা, রাস্তার পাশে বিক্রি করা। এতাই আমার জোর। রাস্তার ধারে বসে আমি বিক্তি করতে পারি। সারা দেশ আমার বাজার। আমায় যদি কেউ দোকান দিয়ে দেন তাহলে আমি এক জায়গায় বসে গেলাম।
আমরা সাঙ্গঠনিকভাবে এই মানসিকতার বদল আনতে চাইছি। ওয়াপাগ সম্মেলন সেই দিশায় এক পা।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্যগুলি
Meyerega Meyerega পূর্বে আমাদের সমাজে(চাকমা) যেভাবে হস্ত শিল্প(বেত, তাঁত উল্লেখযোগ্য) রমরমা উৎপাদন ও ব্যবহার চলত এখন আর হচ্ছে না। কর্পোরেট প্রতিষ্ঠান তথা রাষ্ট্রীয় কারণে আজ সেগুলোর হুমকির মুখে। বলতে গেলে একদম অস্তিত্ব বিলিনের শেষ সীমানায় অবস্থান করছে। আমাদের পূর্বপুরুষরা যেমন আজু, নানুরা যেভাবে ডগা(কচি) বাঁশের বেত দিয়ে কি সুন্দর পরিবেশ বান্ধব কুলো, চালোন, মেজাং, কাল্লোঙ, পুল্যেঙ, তলোই প্রভৃতি বুনতেন এবং দৈনন্দিন জীবনে সেগুলোর ব্যবহার করতেন আজ তার কোন চিহ্নই পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে গ্রামীন সমাজে যারা জুমচাষী, ভুইচাষী তারাই এগুলোর ব্যবহারকারী ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক বিষয় আজ আমাদের কুলোটা আর,এফ,এল কোম্পানির ভাগারে, মেঝাঙটাও আধুনিক প্লাস্টিকের টুলের গঞ্জে হারিয়ে যাচ্ছে। তলোইটারও একি অবস্থা, প্লাস্টিকের রেক্সিন/তেলপারের দৌরাত্ম্যে মৃত প্রায়।
এই সবমূলে দোষটা কিন্তু আমাদের। আমরা অতি আয়েসি, আরাম, সহজসাধ্যের দিকে ঝুঁকে গেছি যার কারণে প্রাচীন ঐতিহ্য গুলোকে ছেড়ে দিচ্ছি। একটি বেতের কুলো বানাতে গেলে কঠিন পরিশ্রম লাগে, আর সেটা বাজারে কিনতে গেলে দাম দিয়ে কিনতে হয়। অন্যদিকে প্লাস্টিকের একটা কিনলে দাম কম, সহজে পাওয়া যায়। তলোইটাও তেমনি, একটি বেতের তলোই বানাতে যে পরিমাণ পরিশ্রম এবং দিন চলে যায় তাতে হাজারটা প্লাস্টিকের রেক্সিন সংগ্রহ করা যায়। তলোইটা ওজনে ভারী অন্যদিকে রেক্সিনটা হাল্কা পাতলা সসজে বহনযোগ্য। আধুনিক চাষীরাও হয়ত সাধারণভাবে ঐসব চিন্তা করছে। কিন্তু ঐতিহ্যের বিষয়টি তাদের মনে নেই, স্বনির্ভরতা, স্বউৎপাদন ব্যবস্থার মূল্যবোধ তাদের নেই আর সে ব্যাপারে অন্য কেউ তাদের জানাচ্ছে না বিধায় আমাদের শিল্প আজ হুমকির মুখে।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
2
গতকাল 06:40 AM-এ
মুছে ফেলুন
Dinēśa-Ratna Prabhākara আশা করি Biswendu Nanda আমাদের পথ দেখাতে পারবেন। তাঁরা আন্তরিকতার সাথে গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে লড়ে যাচ্ছেন এবং Weavers Artisan & Performing Artist's Guild [WAPAG] নামক একটি সংস্থা গড়ে তুলেছেন। আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকবো যদি তিনি তাঁদের অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের পথ বাতলে দেন।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
গতকাল 07:46 AM-এসম্পাদনা করা হয়েছে
মুছে ফেলুন
Biswendu Nanda 'তাঁরা আন্তরিকতার সাথে গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থাকে টিকিয়ে রাখতে লড়ে যাচ্ছেন' এটা আমাদের দিক থেকে খুব সত্য ভাষণ হল না কেননা চরিত্র অনুযায়ী অকেন্দ্রিভূত গ্রামীন উৎপাদন ব্যবস্থা নিজের জোরেই টিকে ছিল আছে থাকবে - আমরা নিমিত্তমাত্র। এই ব্যবস্থা বুঝতে টাকা বাতি...আরও দেখুন
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
3
গতকাল 09:31 AM-এ
পরিচালনা করুন
Dinēśa-Ratna Prabhākara আমাদের এখানে সমস্যাটা অনেক বেশি। তাঁতের কাপড় অধিকাংশ জেলাতেই মৃতপ্রায়, মাটির জিনিসও দিনকে দিন উঠে যাচ্ছে, বাঁশ-বেতের আসবাবপত্রও তেমন মেলে না, গ্রামের প্রান্তিক কৃষক আর ক্ষেতমজুরদের অবস্থা অত্যন্ত শোচনীয়। চোখের সামনে গ্রামকে উজার হতে দেখছি। আগে গ্রামের প্রায় প্রতিটি ছোট ও মাঝারী কৃষকের বাড়িতে গোলাঘর ছিলো, ছিলো গোয়ালঘর, হাঁস-মুরগী। আর একটু অবস্থাসম্পন্ন ঘরে নিদেনপক্ষে একটি পুকুর দেখা যেত। গ্রামগুলো ছিলো গোছালো- কুমোরপাড়া, মালোপাড়া, কামারপাড়া প্রতিটি গ্রামেই চোখে পড়ত। গরু আর মোষের গাড়ি মিলত অহরহ, ঘোড়াও ছিলো। এই তো মাত্র বছর দশেক আগের কথা বলছি। এখন গ্রামে শহরের ছোঁয়া লেগেছে। এমনকি আদিবাসী/জনজাতিদের অবস্থাও একই। 

এর সবচাইতে বড় সমস্যা কৃষিকাজে অনিহা। ক্ষেতে যারা এখন কাজ করছেন তারা সকলেই বাধ্য হয়েই করছেন। অধিকাংশ জমিই বর্গা ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে। এছাড়া গ্রামে বাংলো আর খামারবাড়ি করছেন শহুরে বাবুরা, গ্রামের জমিও এখন আবাসন প্রকল্পের আওতায় আসছে। জমি কেনাবেচার হিড়িক পড়ে গেছে। এসব কারণেই ক্ষেতমজুর আর ক্ষুদ্রচাষীদের চাষাবাদে অনিহা বাড়ছে। 

নগরায়নের নামে গ্রামকে উজার করার এই নোংরা খেলার ফলে চাষযোগ্য জমি কমে যাচ্ছে আর তার অর্থই খাদ্যে পরনির্ভরশীলতা। বাংলাদেশে এখন চাল আমদানি করেই চলতে হয়। এর স্বার্থেই কাজ করে বিজিএমইএ সহ কর্পোরেটদের অন্যান্য সংস্থা। এদিকে এরাই পরোক্ষভাবে সরকার চালায়। 

পার্বত্য চট্টগ্রামে এরা আদিবাসীদের বাস্তুহারা করে পর্যটন স্পট গড়ে তুলছে, কখনো পর্যটনের নামে, কখনো বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কখনোবা ভারী শিল্প অথবা বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি নানা ছুতোয় দখল হচ্ছে জমি। আর তা দিয়েই হচ্ছে জমজমাট ব্যবসায়।

আমদানিকারক এর উপর নির্ভর করার মানেই এই পুরো সিন্ডিকেটকে শক্তি যোগানো। যার পরিণামে এদের দাসত্ব করা ছাড়া আর গতি নেই।

আপনাদের ওখানে গ্রামীণ উৎপাদন ব্যবস্থা যদি আসলেই টিকে থাকে সেটার জন্য আপনারা আসলেই ভাগ্যবান বলবো। আমাদের ক্ষেত্রে লড়াই করাটা শক্ত। তবে অসম্ভব মনে করছি না। আমরা লড়তে চাই, এই মুহুর্তে তাঁত শিল্পকে কী করে বাঁচানো যায় সেই ব্যাপারে নিশ্চয়ই আপনি মার্গদর্শন করবেন বলে মনে করি। আশার কথা আমরা ভারতসেবাশ্রম এর কিছু সাধুকে আমাদের কর্মসূচীর আওতায় আনতে পেরেছি, সেই সাথে আমাদের সাথে কিছু বিহার অধ্যক্ষ সহ একদল তরুণ ভিক্ষু যোগ দিয়েছেন। তাঁরা ধর্ম দেশনা ও প্রবচনের ফাঁকে ফাঁকে গ্রামবাসীকে বোঝাচ্ছেন। আপনাদের সহায়তা ও পরামর্শ পেলে আমাদের এই প্রচেষ্টা সফল হবে বলেই মনে করি।

গ্রামীণ উৎপাদন কাঠামোর ব্যাপারে আমাদের নতুন করে কিছুই শেখাবার নেই, আমরা শুধু গ্রামীণ উৎপাদকদের সংগঠিত করে তাদের বিপণন ও ব্যবস্থাপনায় সাহায্য করতে চাইছি, তাঁদের সব আছে দরকার দিকনির্দেশনা। আমরা যারা এই আন্দোলন এর সাথে যুক্ত, তারা কেউই অভিজ্ঞ নই। আপনাদের অভিজ্ঞতার আলোকে আমাদের পথ চলায় সাহায্য করবেন বলেই মনে করি।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
23 ঘণ্টা
মুছে ফেলুন
Biswendu Nanda এলাকা অনুযায়ী অবস্থা বদলে যায়। আপনার উত্তর মাথায় রইল।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
18 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Dinēśa-Ratna Prabhākara উৎপাদকরা তাঁদের নিজ নিজ ক্ষেত্র সম্পর্কে যা জানেন তার কিছুই আমরা জানি না, আবার বিপণন ও কৌশল আমরা যেটা জানি সেটা তাঁদের নেই। অবশ্য, এখন অব্দি তাঁদের ফিল্ড নিয়া আমরা কাজই করি নি। ফলে আমরা এদিকে একেবারেই অনভিজ্ঞ। সে জন্যই আপনাদের দ্বারস্থ হওয়া। আমরা তাঁদের সাথে কিভাবে কাজ করবো, তাঁদের উৎপাদন ব্যবস্থাকে কিভাবে টিকিয়ে রাখতে শক্তি যোগাবো, এসব ব্যাপারেই মূলত নির্দেশনা দরকার।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর15 ঘণ্টা
মুছে ফেলুন
Biswendu Nanda ভাই, এটার কোন মেড ইজি বই নেই। 
কতগুলো কাজ করি 
(১) আমরা যেহেতু ইতিহাস ঘাঁটি এবং এই মানুষেরাই একদা উদ্বৃত্ত বাংলা তৈরি করেছিল, সেই গর্বটা জাগানো জরুরি। এবং সেই ১৭৫৭র অবস্থা ফিরিয়ে আনতে বাংলাকে বদলের কথা বলি।
(২) পুঁজি যে তার সব কেড়ে নিচ্ছে সেটা বুঝুক। তার লুঠেরা রূপ জানানোর উদ্যম নিতে হবে।
(৩) এটিএম বিশ্বাস প্রায় হারিয়ে গিয়েছে - সামগ্রিকভাবে গ্রামীন উতপাদন যে কত বড় সেই বোধটা চারিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করি। কর্পোরেট আর ভদ্রদের প্রচারের তাদের মনে হয় তাদের আর উতপাদন করে কিস্যু হবে না - এই বোধটা কাটানো সবার আগে দরকার। সারা দেশ যে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে, তারাই একমাত্র দেশে রোজগার আর সম্পদ তৈরি করছে সেটা বলতে হবে।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
13 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda আপনি অভিজ্ঞ মানুষ - কি বলতে চাইছি বুঝবেন। 
আজ পরম্পরার মানুষেরা কিছুটা দিশাহারা - এটা ধারনাটা বরাবরই ছিল - প্রত্যেক প্রজন্ম মনে করেছে তার সময়েই সব থেকে বেশি কর্পোরেটিয় আক্রমণ হচ্ছে এবং পরম্পরার ওপর আঘাত আসছে আর তার টিকে থাকা মুশকিল হচ্ছে। কিন্তু সেই সময়ের কয়েক দশক পরে দেখা যাচ্ছে পরের প্রজন্ম মনে করছে তদের সময়েই সব থেকে বেশি আক্রমণ করেছে কর্পোরেট আর রাষ্ট্র - এবং পরম্পরাকে বাঁচাতে তারা আবার ঝাঁপিয়ে পড়ছে। তাহলে দেখা যাচ্ছে পরম্পরা আছে - ১৭৫৭র পরে তূব্র আক্রমণ আর লুঠ আর খুন আর অত্যাচারের পরেও কয়েক দশক আগেঈ তাঁত ইত্যাদি শিল্প কিন্তু ছিল।
ছোটবেলা থেকেই পড়াশোনার মধ্যেই আমাদের মনে নিজেদের সমাজ সম্বন্ধে বেশ কিছু ঋণাত্মক ধারণা ঢুকিয়ে দেয় কর্পোরেট - এবং প্রায় সারা জীবন সেই অবস্থা আমাদের দিক নির্দেশ করতে থাকে - তাই বামেরা দানেরা তাদের তত্ত্বের পক্ষে সমাজ পাল্টানোর কথা জোর দিয়ে বলতে থাকে - কিন্তু সমাজ পাল্টায় না - অজর অচল থেকে যায়। সেই কন্ডিশনগুলো চিহ্নিত করে সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে আমাদের সক্কলকে। সেই চিহ্নিত করাটা খুব জরুরি। নিজের মধ্যে কর্পোরেত ভাবনাকে, কেন্দ্রিভূত ভাবনাকে চিহ্নিত করতে হবে এবং সেখান থেকে বেরোবার রাস্তা নিজেকেই বার করতে হবে। এটা জীবনের সব থেকে বড় কাজগুলির মধ্যে অন্যতম, তখন আবার বিশ্বটাকে আশেপাশের পরিবেশ মানুষকে অন্যরকম লাগবেই। 
আমি আমার পরিবর্তনটাই দেখি। আট বছর আগে যে নিরাশা দিয়ে শুরু করেছিলাম লুঠ আর ভদ্রদের বিশ্বাস ঘাতকতার লেখাটি, আজকে মনে হচ্ছে মোদ্দা দৃষ্টিভঙ্গী ঠিক থাকলেও বেশ কিছু যায়গার দেখার ভাবনা পালটে গিয়েছে। সে সময় চারিদিকের প্রচারে মনে হত যুবারা আসছে না, কর্পরেট সব খেয়ে যাচ্ছে আর বাঁচার উপায় নেই, হাহাকারে ভরা ছিল লেখাটি। আজ সঙ্গঠন করার সাত বছর পরে মনে হচ্ছে আঘাত আসছে কেন না গ্রামীন উতপাদনে জোর আছে তাই - সব তারা খেয়ে নিতে পারে নি - জাতীয় উৎপাদনের একটা বিপুল অংশ ধরতে বসে আছে গ্রাম - তাকে খেতে চাইছে কর্পোরেট - তাই ভারতে পিঠেপিঠি সময় না দিয়েই নোট বাতিল আর জিএসটি লাগু হল। কেন বারবার কর্পোরেটকে ড্রয়িং রুমে ফিরে গিয়ে আক্রমণের ছক কষতে হচ্ছে? কেন? উত্তরটা খুব সাধারণ। বাজারের রাশটা তার হাতে নেই। 
আর এই রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে আমরা খুব বেশি গুরুত্ব দিই না। এই পৌঁছ খুব বেশি নয়। আজও সমাজ টিকে আছে - অবশ্যই ১০০ বছরের আগের মত নেই - কিন্তু টিকে আছে নিজের মত করে - এই বিশ্বাস্টা না থাকলে কাজের মানেই তো দাঁড়ায় না।
তাই না?
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তরএইমাত্র

No comments: