Monday, August 21, 2017

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা ৭ শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার সমাজের উদ্যোগী(ওয়াপাগ)দের দাবি- এমএসএমই নয় আলাদা পারম্পরিক বিশ্ববাংলা মন্ত্রক চাই

{এটা কয়েকটা কিস্তির ধারাবাহিক - এবারে সাততম ও শেষ কিস্তি। Somnath Roy, Rouhin Banerjee চেয়েছিলেন এই ধরণের লেখা। এবং যারা মনে করছেন এই উৎপাদন ব্যবস্থা সম্বন্ধে জানা দরকার তাদের জন্য।
বনেদিয়ানার ঢঙেই বলি, এটা তাত্ত্বিক তাথ্যিক লেখা হবে। সবার জন্য নয়। সুখপাঠ্য তো নয়ই। দাবিটি আপাদমস্তক রাজনৈতিক। বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থার ছাপ অনপনেয়ভাবেই পড়েছে। যাদের এই রাজনৈতিক বক্তব্য অস্বস্তির এবং এই বিশাল লেখাটি ঝামেলাদার মনে হবে স্বচ্ছন্দে এড়িয়ে যেতে পারেন।
এর আগে কয়েকবার এই নিয়ে আলোচনা করেছিলাম - কিন্তু সাঁটে। এবারে বিশদে প্রেক্ষাপট এবং তার ঐতিহাসিক ভূমিকা তৈরি করে দেওয়া গেল।}
---
শেষ কথা
আমরা যাকে হস্তশিল্প বা হ্যান্ডিক্র্যাফট বলছি সেই বলাটা কতটা সামাজিক, বাস্তবসম্মত সেটা ভাবা দরকার। এ বিষয়ে উইভার্স আর্টিজান এন্ড পারফর্মিং আর্টিস্টস গিল্ডের(ওয়াপাগ) একজন হয়ে কিছু কথা বলার অনুমতি চাইছি।
১৮০০ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে ৭০টি শিল্প দ্রব্য(সোরা, লোহা পিণ্ড, দস্তা, জং ছাড়া ইস্পাত মণ্ড ইত্যাদি) আর ১০০টির বেশি কৃষি দ্রব্য(কাপড়, নীল, আফিম, চাল, নুন, মোম, সুপুরি, তামাক, ভোজ্যতেল, অন্যান্য বনজ দ্রব্য, পান, কাঠ, হাতি ইত্যাদি) প্রায় একচেটিয়া রপ্তানি করত বৃহত বাংলা - আজকের পোকায় কাটা বাংলা নয়, সে ছিল পূর্বের মায়ানমারের প্রান্ত থেকে পশ্চিমে উত্তরপ্রদেশের প্রান্ত, উত্তরে তিব্বতের সীমা থেকে দক্ষিণে ওডিসা পর্যন্ত অঞ্চল - কিন্তু এর পশ্চাদভূমি আরও বড় ছিল - পশ্চিমে রাজস্থান পর্যন্ত আর দক্ষিণ পশ্চিমে মহারাষ্ট্র পর্যন্ত - তো ভারতে, এশিয়, আফ্রিকার বাজারে কয়েক হাজার বছর ধরে এই জিনিসগুলি সরবরাহ করেছে গ্রামের ছোট উতপাদকেরা, যাদের আমরা হস্তশিল্পী বলে আসছি উপনিবেশের অনুসরণে।
ঔপনিবেশিক বা বড় পুঁজির অর্থনীতিবিদেরা মনে করত, এবং আজও করে, গ্রামীন এই উতপাদকেরা প্রান্তিক, এরা উতপাদন না করলেও অর্থনীতির ক্ষতিবৃদ্ধি নেই। এরা জাদুঘরের সামগ্রী, এরা যদি না বাঁচে তাহলেও খুব একটা ক্ষতিবৃদ্ধি নেই। এই অর্থনীতি মৃত। এদের রাষ্ট্রীয় সহায়তার বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
এই ভাবনার বেলুনটির গ্যাস নির্গত হতে শুরু হয়েছিল বহু কাল – কিন্তু তাকে শেষ ধাক্কাটা দিয়ে গিয়েছে গিয়েছে ২০০৮-১১ সালের ইওরোপিয় বিষ। আমরা আজও মনে রাখি না যে বৈশ্য শূদ্র মুসলমান এবং অন্যান্য-গ্রামের বংশ পরম্পরার ছোট উদ্যোগীরা এখনও ভারতের অর্থনীতির ৮০%র অংশিদার, এখনও তারা বড় পুঁজির ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার বাইরে, রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণের বাইরে। ফলে ২০০৮ সালের ইওরোপ আমেরিকার অর্থনীতির মন্থনে উদ্ভুত বিষ তাঁদের পেড়ে ফেলতে পারে নি। বরং গ্রামীন উতপাদকেদের স্থিতিশীল অর্থনীতি ভারতীয় অর্থনীতিকে বাঁচতে সাহায্য করেছিল। অথচ নাম কিনেছিল, ভেঙ্গে পড়তে পড়তে বেঁচে ওঠা রাষ্ট্রীয় বড় পুঁজির অর্থনীতি, পিঠ চাপড়ানি পেয়েছিল ব্যাংক ব্যবস্থার অর্থনীতির মৌলিক চলকগুলির (বেসিক ফান্ডামেন্টালস) ভিত্তিগুলি।
আমরা এখনও মনে করি, সেটাই বাস্তব, গ্রামের আর্থব্যবস্থার জোরে টিকে রয়েছে ভারতের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা - ব্যাংক ব্যবস্থা খুব বেশি হলে ১৫-১৭ শতাংশ মানুষকে জড়িয়ে নিয়েছে নিজের ব্যবস্থায় - উচ্চমধ্যবিত্তের বাইরে কত শতাংশ মধ্যবিত্তের জীবনের কতটা ব্যাংক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে তা কিন্তু গবেষণাযোগ্য; তার বাইরে রয়েছে বিশাল বিপুল গ্রামীন অর্থনীতি, যার পরিমাপ আমরা এঁকেছি আগেই - ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি, ফলে এই অঙ্কে রাষ্ট্রীয় অর্থনীতির কঙ্কালসার চেহারাটা উলঙ্গ হয়ে দাঁড়ায়, বড় পুঁজির বাহ্বস্ফোটকে প্রকাশ্যে এনে ফেলে।
এবং সেই গ্রাম্য আর্থব্যবস্থার মূল ভারসাম্য বজায় রাখছে কৃষক আর গ্রামের শূদ্র বৈশ্য মুসলমান এবং অন্যান্য সমাজের বংশপরম্পরার উদ্যমীরা।
যদি আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে স্থিতিশীল বাংলা চাই, তাহলে শহরের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে গ্রামের অর্থিনীতির সবলীকরণ করার দিকে এগোতে হবে, শহরের অর্থ গ্রামে পৌঁছে দিতে হবে, গ্রামের অর্থনীতিকে আঘাত না করে তাকে জোরদার করতে হবে - যে কাজটা আজ বাংলা শুরু করেছে - আর আমরা করতে যাচ্ছি।
একটা প্রশ্ন উঠবে, যদি গ্রামীন অর্থনীতি এতই সবল হয়, তা হলে আমাদের এই অর্থিনীতিকে নতুন করে সবল করার দরকার কি?
আমাদের সহজ উত্তর, আমাদের জন্য, ধ্বংসের মুখোমুখি দাঁড়ানো বিশ্বকে বাঁচাবার জন্য। আজ প্রমাণিত এই দুষণের রাজা, লুঠের সম্রাট শিল্পবিপ্লবীয় উতপাদন ব্যবস্থা বিশ্বকে ধ্বংস করার মুখোমুখি করে ফেলেছে - সেটা অনেকে বুঝলেও অন্তত ভদ্র মধ্যবিত্তর কিস্যু করার নেই - তারা এই লুঠেরা খুনি অত্যাচারী বড় পুঁজির উতপাদন বিতরণ ব্যবস্থার চালকের আসনে। দিনের পর দিন এই উতপাদন বিতরণ ব্যবস্থা বিশ্বকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাবে। আমরা এই গ্রাম্য অর্থনীতির মৌলিক তত্ত্বগুলি আলোচনা করার মাধ্যমে, এই অর্থনীতিকে জোরদার করার মাধ্যমে, ধ্বংস হতে বসা মধ্যবিত্ত, এই অর্থনীতি আর সর্বোপরি এই বিশ্বকে বাঁচাতে চেষ্টা অন্তত করতে পারি।
উইভার্স আর্টিজান এন্ড পারফরমিং আর্টিস্টস গিল্ডের(ওয়াপাগ) পক্ষ থেকে বন্ধুদের বিনীত নিবেদন, যাদের জোরে আজকের ভারত/ইন্ডিয়া দাঁড়িয়ে রয়েছে, তাদের হস্তশিল্পী না বলে গ্রামভিত্তিক ছোট পরম্পরার উতপাদক বলা চালু করি। অন্তত এই নবতম ভাষ্যটা চালু করার আমরা ভগীরথ হওয়ার সম্মান অর্জন করি।
(শেষ)
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
মন্তব্য করুন
15টি মন্তব্য
মন্তব্যগুলি
Tapas Ghoshhajra Dinga bhasao sagore satheere
Dinga bhasao sagore 


Pratul Mukherjee
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
গতকাল 08:44 AM-এ
পরিচালনা করুন
Susovan Maity smart machines are coming to change everything .. and nobody can stop them ..  অনুবাদ দেখুন
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর23 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda শুভেচ্ছা!
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর23 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Susovan Maity nothing depends on anybody's wish ..   ( good or bad ..)অনুবাদ দেখুন
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর23 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Rouhin Banerjee এই সিরিজটার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ Biswenduদা -
খুব ভালোআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
2
23 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda Somnath সে আশা ছেড়ে দিয়েছি।ইপ্সিতার কথায় গুরুতে নোট বাতিল সম্বন্ধে দুটো লেখা দিই দুমাসে অন্তর, তাত্ত্বিক লেখা, কেন নোট বাতিল গাঁয়ে কাজ করবে না। Rouhin আর একজন মহিলা মন্তব্য করেছিলেন। Ipsitaও দুঃখ পেয়েছিলেন। মধ্যবিত্তের এ সবে অনাগ্রহ দেখে খুব একটা হতাশ হই না। এটাকেই বাস্তব ধরে নিয়েছি, আপনাদের আগ্রহ দেখে অবাক হই।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Somnath Roy আগ্রহ থাকলেই সবাই মন্তব্য করেন এরকম তো নয়। তাছাড়া লেখকের কাজ ডকুমেন্ট বানিয়ে যাওয়া।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Ipsita Pal আরে সেত Somnath Roy ও মন্তব্য করেনি। পড়ে অনেকেই কিন্তু।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
2
16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda বলেছি, আর অবাক হই না।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Ipsita Pal এই সিরিজটা পুরো সাইটে থাকলে ভাল হত। শাড়ি নিয়ে যা লিখছিলেন, অনেকেই আগ্রহ নিয়ে পড়েছিলেন তো!
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda শাড়ির পোস্টটার লিঙ্ক আছে? তখন নকল করতে পারতাম না। এখন পারি। সেটাকে রেখে দিতাম। Ipsita?
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Ipsita Pal সাইটে? আছে
। কিন্তু লিখবেন কবে?
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Somnath Roy তবে, আমি একটা জায়গায় একমত, আমাদের অনেকে নেটিভিস্ট বলে, কিন্তু এই চর্চাটা আদতে নেটিভিসম নয়, বরং একটা উন্নততর পন্থা কে দেখানোর চেষ্টা। আর, বাংলার পাশাপাশি পৃথিবীর অন্যত্রও এই পরম্পরার ইতিহাস আছে হয়তো, সেগুলোকে অস্বীকার করা হচ্ছে না এই আলচনায়। একে কখনওই যেন বাংলা-কেন্দ্রিকতা বলে ভুল না করা হয়।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
16 ঘণ্টাসম্পাদনা করা হয়েছে
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda Somnath আমরা বিশ্বাস করি, যে ব্যবস্থা হাজার হাজার বছর ধরে কাউকে চরমতম ধনী না করে কোটিকোটি মানুষষের দার্শনিক অবস্থা নির্নয় করেছে, সে ব্যবস্থাকে নিয়ে চিন্তা করা দরকার গভীর ভাবে - আমিরা গাঁইয়া উতপাদকেদের সংগঠন করি বলে তো বটেই, কিন্তু সাম্যের একটা দার্শনিক যায়গা থেকেও এটাকে আলোচনা করা উচিৎ।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
3
16 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Souvik Ghoshal Biswendu দার এটা ঠিক ধারণা নয় যে লোকে পড়ছে না। বিশ্বেন্দুদার লেখার জোরের জন্যই ওনার লেখা অনেকেই মন দিয়ে পড়েন। প্রভাবিত হন। সেই সূত্রে চিন্তাভাবনা করেন। 
কোনও কোনও বিষয়ে কারো কিছুটা ভিন্নমত থাকে। তাই নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয় যা অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর। আমার সাথে
ই অনেক বিষয়ে হয়ে থাকে। আর সেগুলিকে আমার দিক থেকে আমি অন্তত বেশ লাভজনক বিবেচনা করে এসেছি।
এই বিষয়টি - এই নোট বাতিল এবং ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার বা ক্যাশলেস/লেসক্যাশ ইত্যাদি দিকে যাবার চেষ্টা করা নি:সন্দেহে একটি গ্রান্ড ডিজাইনের অঙ্গ, যা ছোট মাঝারি পুঁজিকে এলবো আউট করে বিগ মনোপলি ক্যাপিটালকে জায়গা করে দিতে চায়। খানিকটা গুঁতিয়ে মার্কেট করে দিতে চায়।
তা এই গুঁতোর জায়গাগুলো আমরা সেই সময়ে খানিক চর্চা করছিলাম। তারপর ইউ পি ইলেকশনের রেজাল্ট ইত্যাদির ফলে সেই আলোচনা কিছুটা পেছনের দিকে চলে যায়।
কিন্তু জিএসটির পর আবারো সেটা নতুনভাবে সামনে আসছে, আসা দরকার। নোট বাতিল, জি এস টি এসব সম্পর্কিত ব্যাপার। যদিও আপাতভাবে জি এস টি প্রকাশ্যে বহু আলোচিত ও একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং নোটবাতিল ছিল প্রায় একটি বোল্ট ফ্রম দ্য ব্লু। কিন্তু তাদের লক্ষ্যবস্তু বা হিডেন (?) অ্যাজেন্ডাগুলির মিলের জন্যই আবার এগুলি নিয়ে জোরেসোরে আলোচনা তোলা দরকার। সেটা চলুক।
খুব ভালোআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
5
15 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Rouhin Banerjee Sanjib Chakraborty সময় পেলে পুরো সিরিজটা পড়িস
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর14 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Arka Saha Ashadharon lekha Biswendu da
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
14 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda আমি আপনার লেখার নিয়মিত পাঠক। চেষ্টা করবেন সাতটা কিস্তি চোখ বোলাতে।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর14 ঘণ্টাসম্পাদনা করা হয়েছে
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda Souvik Rouhin Somnath Ipsita, আমাদের প্রশ্নটা পড়া নিয়ে নয়, প্রশ্নটা হল প্রশ্ন করা নিয়ে - মার্ক্স বলেছিলেন ঠিকই, কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হল না। 
একটা বিমূর্ত ধারনাকে আমরা গাঁইয়ারা তাত্ত্বিক অবস্থানে তুলতে চাইছি, যেটা তাত্ত্বিক অবস্থায় আজও গ্রামের নাটক, গ
ান, গল্প, কথকতায়, বাদ্যে, পুজোয়, আচারে, জীবনযাত্রায় ভুরি ভুরি আছে। গানে, নাটকে, বাদ্যতে, সাধারণ কথাবার্তায়, চিকিৎসায় তাত্ত্বিক আলোচনা হামেসাই হয় - খেউড়, কবিগান, তুখ্যা, বন্ধুপুছা, বন্ধুআলা, বাউল এবং হাজারো প্রকাশভঙ্গীতে মানুষেরা আজও পরস্পরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেন, তত্ত্ব আর তথ্যকে দিনরাত জাগিয়ে রাখেন - এই করে গ্রাম সভ্যতা জেগে থাকে - নিজের পায়ে, নিজের তত্ত্বে, কোন রকম ভনিতা ছাড়া, নিজের মেধার, সামাজিকতার জোরে - যে সামাজিকতায় ভোজে সমাজের প্রত্যেকের অংশগ্রহণ জরুরি - এবং যে যত বেশি বাস্তব সম্পদ-রিক্ত, সেই যেন বড় তাত্ত্বিক। 
আমরা শহুরেরা অপটুত্বের পটুত্ব বা স্বভাব কবি বা স্বভাব গায়ক বলি - স্বভাবে কিস্যু হয় কি না জানি না - দীর্ঘকাল ধরে গ্রামে গঞ্জে যে বিপুল জ্ঞানচর্চা চলে, সেই চর্চার পরিবেশে মানুষ হতে হতে একজন আধজন লালন, হাউড়ে গোঁসাই, মধুমঙ্গল মালাকার, হরকুমার গুপ্ত, করুণাকান্ত হাজারা, বাদল ঢুলি, নেপাল সূত্রধর বা হরিপদ বসাক হয়ে বেরোন। আর প্রত্যেকই গাঁইয়াই যেন দার্শনিক - কিরকম সান্ধ্যভাষায় কথা বলেন একটু ঘনিষ্ঠ হলে। বয়স জিজ্ঞেস করায় লেটোর সংদার হরকুমার গুপ্ত বলেছিলেন ২০০ বছর, আমি আবাল যৌবনে অবুঝের মত হেসে দিয়েছিলাম, বুঝেছিলেন বুঝিনি - বললেন বাবু বয়স কি দেহে হয়, বয়স হয় মনে, আমি আমার পাঁচ পুরুষের গান এই দেহভাণ্ডে বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছি - এটাই ত আমার বয়েস। সেই যে পৃথিবীটা হেঁটমুণ্ডউর্ধ্বপদ হয়ে গিয়েছিল ব্যক্তি আমি'র, তারপরে আর সোজা হয় নি।
মনের মানুষ উপন্যাস লেখার সময় লেখক এবং ছবি করার সময় পরিচালকবাবু বুঝতেই পারছেন না যে লালন বিদ্যালয়ে যান নি, পড়াশোনা করেননি বিধিবদ্ধভাবে, তিনি কি করে এত দার্শনিকস্তরের কথা বলেন, যা তিনি তো বটেই, ব্রিটিশেরাও বলতে পারে নি? এটা যে ছোটবেলা থেকেই পথে ঘাটে শুধু লালন নন, প্রত্যেক গাঁইয়া নদীর পাড়ে চণ্ডীমণ্ডপে, পালাগানে দেখে শুনে আত্মস্থ করতে করতে বড় হচ্ছেন এবং তার প্রকাশ ঘটছে কারোর কাজে, কারোর গানে, কারোর নাট্যে, কারোর বাদ্যে - কিন্তু পুরোটাই আপনারা বিশ্লেষন করুন দেখবেন গাঁইয়া বিকেন্দ্রিভূত তত্ত্ব ভুরভুর করছে। কারোর প্রকাশ ঘটে কারোর ঘটে না।
ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের কথা আমরা জানি না, কিন্তু বাংলার গাঁইয়ারা অসাধারণ ঔদার্যে ঠাঁই দিয়েছেন তাদের সঙ্গ করার কাজে, বুঝতে পারছি আবছা আবছা, এটা তাত্ত্বিকতার অসাধারণ বৌদ্ধিক প্রকাশভঙ্গী যা আমরা ভদ্ররা ভাবতেও পারি না। এটার অভাব খুব টেরপাই শহরে। খুব হোঁচট খেয়ে খেয়ে এগোতে হয়।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
4
14 ঘণ্টাসম্পাদনা করা হয়েছে
পরিচালনা করুন
Souvik Ghoshal লেখাটা কথাগুলো বুকের মধ্যে ভালোবেসে রেখে দিলাম। ছুঁয়ে যাওয়া একটা অনুভব হরকুমার গুপ্তর কথাটা। বহন করে চলা একটা পরম্পরা। সেটা ধারণ করে থাকা শরীরে মনে স্মৃতিতে। নিবিড় এক অনুভব থেকে বলা।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
3
14 ঘণ্টাসম্পাদনা করা হয়েছে
পরিচালনা করুন
Bikram Aash "বয়স জিজ্ঞেস করায় লেটোর সংদার হরকুমার গুপ্ত বলেছিলেন ২০০ বছর"..... এইভাবেই বোধহয় পরম্পরা ধমনীতে বাহিত হয়।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
2
13 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda পরম্পরাকে সম্মান দেওয়া তো বটেই কিন্তু দার্শনিকতা দেখুন। একটা মানুষ তার ঐতিহ্যকে কতটা গুরুত্ব দিলে এই কথা বলতে পারেন, সেই দার্শনিকতাটা বোঝা জরুরি - না ইনি রবীন্দ্রনাথ পড়েন নি, মার্ক্স পড়েন নি, কিয়ের্কাগার্ড পড়েন নি - লিখতেও জানেন না, কিন্তু কি যে দার্শনিকতা তার মধ্যে রয়েছে - তখন অবাক হয়েছিলাম আজ হই না - তিনি হয়ত লিখতে পড়তে জানেন না কিন্তু অসাধারণ জ্ঞানী।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
4
13 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Rouhin Banerjee আমরা যাকে "শিক্ষা" বলি, তার সাথে সত্যিকারের জ্ঞানের বহু যোজন ফারাক। এ কথাটা নিজের জীবনে এখনো শিখে চলেছি।
খুব ভালোআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
3
13 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda Rouhin অসাধারণ বলেছেন।
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
13 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Bikram Aash এঁদের কথা আরও লিখুন। কারণ ভদ্রসমাজ এঁদেরকে করুণার পাত্র মনে করে। তাই এঁদের দর্শনকে বোঝার জন্য আপনাদের মতো মানুষকে আরও বেশি করে লিখতে হবে!!
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
1
13 ঘণ্টাসম্পাদনা করা হয়েছে
পরিচালনা করুন
Somnath Roy শিক্ষা তো চাকরি পেতে লাগে
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর
3
12 ঘণ্টা
পরিচালনা করুন
Biswendu Nanda এই গানটা প্রথমে পড়ুন, তার পরে শুনুন। এটা শিক্ষা নয়, জ্ঞান-
কালু শাহ ফকির (১৮১০-১৯০৫, ঢাকা) - নিরিখ বান্ধো রে দুই নয়নে ( শিল্পী আব্দুল আলীম )
নিরিখ বান্ধোরে দুই নয়নে

নিরিখ বান্ধোরে দুই নয়নে
ভুইলো না মন তাহারে।
ওরে ভুল করিলে যাবি রে মারা
পড়বি রে ভীষন ফেরে...
ভুইলো না মন তাহারে
আগে আপনাকে চেনো
পরে, গুরু কে মানো
দেহ ,পাশ করে আনো।
ওরে সইমোহরের নকল গুরু
দেবেন তোমায় দয়া করে ওরে
দেবেন তোমায় দয়া করে
ভুইলো না মন তাহারে
প্রেমের গাছে একটি ফল
রসে, করে টলোমল
তাতে ভ্রমর হয় পাগল
সে ফল, গুরু কে দিয়ে শিষ্য খাইলে
অমর হয় সে সংসারে, ওরে
অমর হয় সে সংসারে
ভুইলো না মন তাহারে
নিরিখ বান্ধোরে দুই নয়নে
নিরিখ বান্ধোরে দুই নয়নে
ভুইলো না মন তাহারে।
ওরে ভুল করিলে যাবি রে মারা
পড়বি রে ভীষন ফেরে...
ভুইলো না মন তাহারে

https://www.youtube.com/watch?v=IYflJLNq_8Y&feature=youtu.be
লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তরপূর্বরূপ মুছে ফেলুন
3
11 ঘণ্টা

No comments: