গুরুচণ্ডালীতে প্রকাশিত সোমনাথের এই লেখাটা পড়ুন। হাতে গোনা যে কজনকে আমরা অনুসরণ করি, তার মধ্যে সোমনাথ অন্যতম।ওর লেখাটা পড়ার আগে আমাদের ভূমিকাটা পড়ে নিন।
---
১) সোমনাথের তত্ত্বে দাঁত ফোটানো আমার কম্ম নয়। আমি, আমার বিষয়ের বাইরে যাব না।
২) আমরা লুঠেরা বিশ্বায়নের বিরোধী।
৩) আমার শিক্ষক কারিগর হকারেরা একসময় বিশ্বজুড়ে ব্যবসা করতেন, এশিয়ায় ডাচ ব্যবসা নিয়ে কাজ করা কোনও কোনও ঐতিহাসিক জানিয়েছেন ব্রিটিশ-ডাচ উপনিবেশ পূর্ব এশিয়া ছিল মূলত হকারদের বাণিজ্য নির্ভর, যদিও তা সম্পূর্ণভাবে ঠিক নয়, তাই আমরা লুঠেরা খুনি অত্যাচারী বিশ্বায়নের বিরোধী কিন্তু বিশ্ববাণিজ্যের বিরোধী নই,
৪) কারণ সেই উপনিবেশপূর্ব এশিয় আফ্রিকিয় এবং আমেরিকিয় অর্থনীতি বিশ্ববাণিজ্য নির্ভর ছিল না।
৫) ইওরোপের সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়া বাণিজ্য করত মোট উতপাদনের ১০%(তাতেই এই ঢক্কা নিনাদ, লক্ষ লক্ষ রজতমুদ্রার গ্রান্টওয়ালা গবেষণা )
৬) বাকি কিছুটা সেট দক্ষিণপূব এশিয়ায়, আরব মধ্য এশিয়ায়, আফ্রিকায় এব থেকে বেড় দেশিয় বাজার।
৭) ফলে মসলিন ইত্যাদি কয়েকটা হাতে গোণা পণ্য বাদ দিলে মূলত উতপাদন হত স্থানীয় অর্থনীতির জন্যে, কিছু উদ্বৃত্ত যেত বিদেশের বাজারে
৮) পলাশীর আগে যে কারিগর তার উতপাদিত পণ্যের দামের ৩৩ শতাংশ পেত মজুরি, সেটা ১৭৭০এ গণহত্যার বছরে দাঁঁড়াল ৬%
৯) শাঁক, সুতো আর ধাতু ছাড়া কারিগরদের মূল কাঁচামাল নিজেদের ছিল
১০) শাহজাহানের ব্যক্তিগত সচিব চন্দ্র ভান ব্রাহ্মণের লেখা থেকে দেখেছি তার দরবারে বিশ্বজোড়া কারিগরদের ঠাঁই ছিল, অর্থাৎ মুঘল আর নবাবি আমল তাক্র পৃষ্ঠপোষনা করেছে
১১) সে দাদন অগ্রিম নিলেও চুক্তি থেকে যে বেরিয়ে যেতে পারত তার বেশ কিছু উদাহরণ সুশীল চৌধুরী, ওমপ্রকাশ কীর্তি নারায়ণ চৌধুরী দিয়েছেন, অর্থাৎ তার সামাজিক গুরুত্ব অনেক বেশি ছিল
১২) মুঘল এবং নবাবি আমলে বিশ্ববাণিজ্য তুঙ্গ অবস্থানে পৌঁছেছিল, সাফাভি, উস্মানিয় সাম্রাজ্য থেকে অভিজাতরা মুঘল আমলের মনসবদার হতে পালিয়ে আসতেন।
১৩) এইটুকু বিশ্ব বাজার করেও আমরা বিপুল উদ্বৃত্ত তৈরি করতে পেরেছিলাম।
১৪) ওপরের আলোচনা থেকে পরিষ্কার কারিগর হকারেরা বিশ্ব বাণিজ্যে ছিলেন
১৫) মেলিন্দের উপকূলে যখন ভাস্কো ভারত ভারত করে হাতড়াচ্ছেন, ইওরোপিয়রা আমেরিকাকে ভারত হিসেবে গণ্য করছেন, অন্যান্য দেশকে ভারত দাগাচ্ছেন, ইওরোপে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরি হচ্ছে(ইস্ট শব্দটা গুরুত্বপূর্ণ) তখন তাকে ভারতে নিয়ে এসেছিলেন মালামো কানা নামক এক গুজরাটি মুসলমান নাবিক।
১৬) বিশ্বের অন্যতম দুটো পুরোনো মসজিদ একটা কেরলে নবীর জামাইএর তৈরি আরেকটা পূব বাংলায় লালমণিরহাটে। গেনিজায় ভারতের সঙ্গে মিশরের বিপুল বাণিজ্যের তথ্য পাওয়া গিয়েছে
১৭) পলাশীর পর কারিগর হকারদের যতটুকু বিশ্ববাণিজ্যে অংশিদার ছিল, সেটা থেকে তাকে ধাক্কা দিয়ে বার করে দেওয়া হল।
১৮) এইসব অপ্রাসঙ্গিক বিষয় আলোচনা করলাম কারণ আমরা বিশ্ববাণিজ্যে ছিলাম, অর্থনীতি নিয়ন্ত্রণ করতাম, কিন্তু বিশ্বজোড়া দখলদারি, উপনিবেশ তৈরির রাজনীতি-অর্থনীতিতে ছিলাম না, কয়েকটা ব্যতিক্রম নিয়ম হতে পারে না।
https://l.facebook.com/l.php?u=https%3A%2F%2Fwww.guruchandali.com%2Fcomment.php%3Ftopic%3D17365%26fbclid%3DIwAR1qo3zt7511nZuuL_7Ri9UReScZaaS8HztrQn-uYgqwKGCY8EhlSJq-7LE&h=AT35bsf4Z2xpYZcmhvucamngNlz_HX1uBgNSkUTq-C5Q4p1Qra4ZTA4WNcOua9ecJaZqR-6my1DUM7Goo1D1JErvE4PubrwT-wWaukV_eFwWClR3LEloIvbeE56GfURedw
No comments:
Post a Comment