Wednesday, April 8, 2020

বেশি লবন ভাল না', এটা খুবই আধুনিক ধারণা

নুন তেল তুলসি মধু আরও কিছু জিনিস ব্যবহার হত প্রক্রিয়াকৃত খাবার বহু কাল জারিয়ে রাখার জন্যে। নুন মধু তেল আর তুলসি বাংলায় প্রচুর পাওয়া যেত আমাদের পূর্বজরা সেগুলো ব্যবহার করতেন। এই চারটেই এন্টিসেপ্টিক, জীবাণু নাশক। এছাড়া জীবাণুনাশ করে কর্পুর আর বেলপাতা। বৈষ্ণবেরা পুজোর নৈবেদ্যতে তুলসি আর শৈব আর শাক্তরা বেলপাতা ব্যবহার করেন, মুসলমানেরা কালোজিরে আর মধু খান। আমার ছোট বেলায় দেখেছি, যখন তথাকথিত মিনারেল ওয়াটার নামক বুজরুকিটা বাজারে আসে নি তখন জলে কর্পুর ব্যবহার হত, বিশেষ করে উৎসব অনুষ্ঠানগুলিতে। এই তত্ত্বগুলো আমাদের মা ঠাকুমা আপা, আম্মারা, বাবা, খালারা খুব ভালভাবেই জানতেন, ফলে খুব সাধারণ রোগ কম হত, বাড়ির পাশে, পাড়ায় একটাদুটো এলোপ্যাথির দোকান হওয়া এই সেদিনের ঘটনা। 'বেশি লবন ভাল না', এটা খুবই আধুনিক ধারণা। আমার ছোটবেলা কেটেছিল উপকূল অঞ্চলে। আমরা টক নুন আর লঙ্কা প্রচুর খেতাম, কলকাতায় আসাতক আজও খেয়ে চলেছি। নুন বেশি খাওয়া ঠিক নয়, এটা ইওরোপিয় চিকতসা শাস্ত্রের নিদান। আমরা যারা গরম দেশের মানুষ, আমাদের যাদের বিপুল প্রচুর ঘাম হয়, তাদের অবশ্যই নুন লাগে। আর আয়োডিন যুক্ত নুন আরও খারাপ ব্যপার - সেটা অন্য বিতর্ক। বাঙালি যে আজ মোটামুটি দুর্বল, তার বড় কারণ পলাশীর পর প্রায় ৩০ বছর নুনের দাম এত বাড়ে যে বাঙালি বছরে দুমাস নুন কিনতে পারে নি তিন দশকেরে বেশি সময় ধরে। । আমার শ্বশুর মশাই ডাক্তারদের নিদানে নুন খাওয়া বন্ধ করে দেওয়ায় তার সোডিয়াম-পটাশিয়াম ডিসব্যালেন্স হয় এবং ব্রেন হ্যামারেজ হয়, সেরে ওঠার পরে তাঁকে রোজ ১৫ গ্রাম, তিন চা চামচ নুন খেতে হত।

No comments: