Wednesday, April 8, 2020

জীবন ফিরে দেখা সূত্রে বই - ওয়ার্লড অব আদার ফেসেস, জীবন পাণি

ছবিতে থাকতে পারে: যে টেক্সটে 'WORLD OF OTHER FACES INDIAN MASKS JIWAN PANI PUBLICATIONS DIVISION' লেখা আছেজীবনকে ফিরে দেখা সূত্রে হাতে উঠে এল জীবন পাণির অসামান্য নথিকরণ ওয়ার্ল্ড অফ আদার ফেসেস - ইন্ডিয়ান মাস্কস। বইটা এক সময়, আজ থেকে এক প্রন্মেরও বেশি সময় ২৫ বছরেরও দূরে, আমাদের কয়েকজনের Bidhan Angira Lalita Bimal জীবনে প্রভূত প্রভাব ফেলেছিল। বইটাকে অবলম্বন করে বেশ কিছু কাজেরও ভাবনা ভেবেছিলাম।
ব্যক্তিগতভাবে আমি যখন এই বিষয়টা বুঝতে আসি, আমার দেহে বামপন্থার সৌরভ ফুটে বেরোচ্ছে, মনে সমাজ পালটানো না হোক, গ্রামীণ অশিক্ষিত মানুষগুলোকে শিক্ষিত করার দৌর্দণ্ড ভাবনা ক্রিয়াশীল ছিল। পৃথিবীকে দেখার ভাবনাটাই ছিল পরস্মৈপদী। বিদ্যালয়ের বাইরের ভদ্রবিত্ত চৌহদ্দির বাইরের শিক্ষকদের সঙ্গে সবে যোগাযোগ হচ্ছে; প্রথমে কলকাতা কৈবর্ত সমিতিতে যাওয়ার কল্যাণে কারিগরদের চিনলাম, ১৯৯৫তে হকার সংগ্রাম সমিতির হাত ধরে দেশের বিক্রেতাদের শিক্ষকরূপে পাওয়া। ঠিক পরের বছর জীবন ওলটপালট করে দেওয়ার ঘটনা ঘটবে কলকাতায় অপারেশন শানসাইন, জীবনের মোড় চিরতরে ঘুরিয়ে দেবে।
সেই জীবন চেনার কাজে আমাদের প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক গুরু ছিলেন রঘুনাথ গোস্বামী মশাই। অসামান্য মানুষ, অসামান্য শিক্ষক, অসামান্য বুঝদার এবং অসামান্য কৃষ্টিশীল, অসামান্য জ্ঞানী। তাঁর উদ্বৃত্ত কাজ নির্ভর করে আমাদের দুএক বন্ধু আজও করে খাচ্ছেন। ১৯৯২-৯৩এর পরের দিকের প্রথম যৌবনে তিনি আমাদের পথ দেখাতে দেখাতে না ফেরার দেশে চলে যান। প্রয়াণের ঠিক যাওয়ার এক মাস আগে যতদূরসম্ভব ১৯৯৫তে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে লোক উৎসব হয় কলকাতা কৈবর্ত সমিতির উদ্যোগে, শিশির মজুমদার মশাইএর পরিকল্পনায়। ছিলেন অসামান্য Kanchanদা, তিনি ফোকথিয়েটারের শিক্ষাক্রমে ক্লাসও নিতেন আবার সেই উৎসবে সক্রিয় অংশগ্রহণও করেছিলেন। সেই উৎসবে মুখোশের একটা প্রদর্শনী হয়, রঘুনাথবাবু নিজের সংগ্রহের প্রচুর মুখোশ দেন -সেগুলির মঞ্জুষা আর ইজেডসিসির জাদুঘরে ঝোলার কথা। মেলা সূত্রে হাতে খড়ি পেশাদারিভাবে প্যাভেলিয়ান করার শিক্ষার, সেই প্রথম ডিটিপি দেখলাম এ৩ প্রিন্ট দেখলাম, মাউন্টিং বুঝলাম।
তারপরে আড়াই দশক কেটে গিয়েছে - অপাররেশন শানসাইন, খালপাড় উচ্ছেদ, হকার সংগ্রাম কমিটি, বহু চেষ্টায় বঙ্গীয় পারম্পরিক কারু ও বস্ত্র শিল্পী সংঘ গড়ে ওঠা - সার্বিকভাবে জীবনকে অন্যরকমভাবে দেখা বা বোঝার চেষ্টা আজও অব্যাহত।
সর্বাঙ্গে লাল মাখা একদা যুবক বহুকাল পরে চুল পাকার বয়সে দেশের ধুলো মেখে জীবনপাণির বইটা ফিরে দেখে, দুটো গোদা রাজনৈতিক তথ্য উঠে আসে
১) যে রাষ্ট্র ২০২০তে ভদ্রবিত্তের চাকরি খাচ্ছে, ৪০ বছর আগে ১৯৮০তে মধ্যবিত্ত তোষণ করার জন্যে এই ধরণের 'অকাজের' বইটই ছাপত।
২) যে বইটাকে আদর্শ করেছিলাম, সে বইটাই আজ মনে হচ্ছে অকাজের। বাংলা বলতে শুধুই ছো, পূর্বঅঞ্চল বলতে শাহীযাত্রা সেরাইকেলা। বাংলায় যে বিপুল বৈচিত্রের মুখোশের অবস্থান, তার কোনও চিত্রই নেই। বিপুলভাবে দক্ষিণ ভারত নির্ভর বইটা। কীভাবে জনমাধ্যম মানুষের ভাবনাচিন্তায় প্রভাব ফেলে জীবনপাণির বইটা তার হাতে গরম উদাহরণ।
তবুও যৌবনের স্মৃতি সতত সুখের, তাই খুব অপটু হাতে বইটার ডিজিটাল নথিকরণ সম্পন্ন করাগেল।

https://drive.google.com/file/d/1uG0xLBxNnQnyaw438UTucDAIaqW45alZ/view?usp=sharing

No comments: