Sunday, December 24, 2017

ব্রিটিশপূর্ব বাংলা পলাশীতে ইংরেজদের ভূমিকা ব্যবসা, দামিধাতু এবং ক্ষমতায় আরোহণ১ সুশীল চৌধুরী -ফ্রম প্রসপারিটি টু ডিক্লাইন, দশম অধ্যায়

২৩ জুন ১৭৫৭র পলাশীর পরে ব্রিটিশের বাংলা দখল পুরোপুরি আকস্মিক ছিল না। এটাও বলা যাবে না যে, পলাশীতে সিরাজের পতন আর ব্রিটিশদের শাসন ক্ষমতার কেন্দ্রে চলে আসার ঘটনাগুলোয় তাদের কোন সক্রিয় ভূমিকা ছিল না। একদিকে লন্ডনের কোর্ট অব ডিরেক্টর্স অন্যদিকে ভারতে ব্রিটিশদের আমলাদের মনোভাব ছিল ভারত দখলের। তবে এটাও উল্লেখ্য, পুরোদস্তুর সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে হয়ত তারা এগোয় নি, কিন্তু ব্যবসা আরও বেশি করে করার জন্য সচেতনভাবে ভারতে ডোমিনিয়ন স্থাপন করার পরিকল্পনা তাদের ছিল। এখানে ব্যবসা মানেই যে শুধুই কর্পোরেট ব্যবসা তা বলা যাবে না বরং ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির একচেটিয়া ব্যবসার পাশাপাশি তাদের কর্মচারী আমলা(সঙ্গে প্রাক্তন কর্মচারী আর অন্যান্য ব্রিটিশার - অনুবাদক)দের বিপুল ব্যবসার স্বার্থ জড়িয়ে ছিল। আমার যুক্তি হল কোমপানির বাইরে ব্যক্তিগত ব্যবসার স্বার্থই ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যর ভিত তৈরি করেছিল।

সাম্প্রতিক কালে বেশ কিছু ঐতিহাসিক বলেছেন ব্রিটিশ-নবাবি বিবাদের(যার ফলে পলাশীর বিপ্লব এবং তার ফলে বাংলা জয়) কারণ হিসেবে নবাবি সামরিক অভিজাত, সওদাগর আর জমিদারদের মধ্যে গণ্ডগোল যা মুর্শিদকুলি খাঁর সময় থেকে আলিবর্দি খাঁয়ের আমল পর্যন্ত চলছিল(সুশীল বাবু বলছেন, যাদের মধ্যে বিখ্যাত গবেষণাগুলি হল পি জে মার্শালের বেঙ্গল, সি এ বেইলি ইন্ডিয়ান সোসাইটি, রজত কান্ত রায়ের কলোনিয়াল পেনিট্রেশন অ্যান্ড ইন্ডিয়ান রেজিস্ট্যান্স। সুশীলবাবু লিখছেন I have tried to refute the above thesis in details in 'Sirajuddaullah and the battle of Palashi' in the History of Bangladesh, vol. 1, Dhaka, 1992)। কাছাকাছির সময়ে ব্রিটিশ শাসকদের প্ররোচনায় লিখিত পারসি নানান বর্ণনায় এই তত্ত্ব প্রমান করা সহজ হয়। এছাড়াও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বেছে নেওয়া হাতে গোনা ইওরোপিয় সূত্র ব্যবহার করে, কিভাবে সিরাজের সিংহাসনে আরোহনের ফলে দীর্ঘকাল ধরে যে শ্রেণী সমঝোতা চলছিল জোড়াতালি দিয়ে, সেটা চরমে উঠে সব কিছু ভেঙ্গে দিতে থাকে, এই তত্ত্বের দিকে আমাদের যেন ঠেলে দেয়। বাংলা রাষ্ট্রের মধ্যে যে সঙ্কট চলছিল(এবং বাংলার অর্থনীতিতেও - সুশীলবাবু পাদটিকায় লিখছেন ১৯৮৯ সালে কলকাতায় এসে পি জে মার্শাল অর্থনৈতিক ‘সঙ্কট’ বিষয়ে নির্দিষ্টভাবে বলে গিয়েছেন), সেটা সামলাতে যেন অন্যমনস্কভাবে ব্রিটিশেরা হস্তক্ষেপ করতে থাকে। স্বতঃসিদ্ধভাবে প্রমানিত হয়ে গেল যে নবাবের সঙ্গে অভিজাত শ্রেণীর মধ্যে দূরত্ব বাড়ায় যে আভ্যন্তরতীণ দূরত্ব তৈরি হয় তার সহজ এবং সাধারণ ফল হল পলাশীর ঘটনায় ব্রিটিশদের অনুপ্রবেশ। নবাবের বিরুদ্ধে ব্রিটিশদের সুগঠিত চক্রান্তে ব্রিটিশদের আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে থাকার তাত্ত্বিক অবস্থানে হারিয়ে যায়, এবং সবে যৌবন আসা অবনভিজ্ঞ নবাব এই ঘটনার খলচরিত্র হয়ে ওঠে। এই সাধারণীকরণে একটা ঘটনা প্রমান হয়, সেই বস্তাপচা এস সি হিলের(১৯০৫) তথ্য-তথ্য সরবরাহের ভুত আজও ভীষণভাবে জীবিত(পাদটীকায় সুশীলবাবু আবার বলছেন যেকটা কাজের নাম সেগুলির মধ্যে রয়েছে মার্শাল আর রজত রায়ের আগে উল্লিখিত বই আর প্রবন্ধ। একই সঙ্গে তিনি লিখছেন It should not be misconstrued .that I am against any :theorization' but my point is while doing so, one should not lose sight of the, specific issues involved. Further, a recent study has pointed out (Munshi Mazibor Rahman, 'Nizamat in Bengal: A Study of its Rise, Growth and Decline, 1700-17 57', unpublished M. Phil. thesis, J.N. U ., 1988) that the new class alliance or 'compact' was m!)re of a personal character to serve vested interest without any institutional basis and hence bound to be short-lived. For: Hill's views, see S.C. Hill, Bengal in 1756-57, vol. 1, p. Iii.)।

No comments: