Saturday, December 29, 2018

বাংলা কখন চাষ নির্ভর হল? - অথবা উর্বর বাংলায় কৃষি শ্রমিক তৈরির প্রক্রিয়া

দক্ষিণ ভারতে চেঙ্গলপেট্টুর রিপোর্ট বলছে কৃষিতে ২৭% মানুষ, কিন্তু অস্বাভাবিক উর্বরতা ছিল, আজকের জাপানের কৃষি উতপাদকতার সমান, হয়তবা একটু বেশি। দক্ষিণ ভারতের চেন্নাইতে যদি এই উতপাদনের হার হয় তাহলে বাংলায় কত ছিল ভাবাই যায়। 
অন্যান্য অঞ্চলের কারিগরেরা শহরে থাকতেন। বিপরীতে বাংলায় কারিগরেরা অধিকাংশই গ্রামে থাকতেন। তারা অমরশুমে চাষ করতেন, চাষীরা অমরশুমে কিছু না কিছুর কারিগর ছিলেন।
১৭৫৭র পর মীরজাফরের আমল থেকেই ব্যবসা দখল হচ্ছিল, মীর কাশিমের একটা প্রখ্যাত চিঠিই আছে এ নিয়ে।পলাশীর পরপরই দিনাজপুরে আর্মেনিয় বণিকের নুন গোলার ৫ লক্ষ মণ নুন দখলের কাণ্ড নিয়ে চণ্ডীচরণও তার নথি-উপন্যাসে লেখেন।
ছিয়াত্তরের পর কয়েক বছর বাংলায় চাষ করার লোক ছিল না। তার আগেই ১৭৬৫র পর শিল্পে প্রথম ধাক্কাটা আসে সুপুরি, নুন আর তামাক উৎপাদন আর ব্যবসা জাতীয়করণ করার পরে।
তারপরের বড় ধাক্কাটা আসে কয়েক দশকজুড়ে তাঁতের আড়ং আর কারখানা ধ্বংস করার পরে যে নথিকরণটা করেছেন চণ্ডীচরণ সেন নন্দকুমার উপন্যাসে। এছাড়াও বাংলা লুঠের অর্থে হাজারো পণ্য তখন বাংলায় ঢুকছে, সেগুলোর এখানকার উতপাদকেদের উচ্ছেদ করা হয় গায়ের জোরে - যাকে তারা আর তাদের অনুচরেরা প্রচুর উতপাদনের বন্যায় কারিগরেরা ভেসে গ্যাল বলছেন।একটামাত্র উদাহরণ জানি ঢাকার তাঁতিদের উচ্ছেদ কাণ্ড। কয়েক বছরেরে মধ্যে ঢাকা শহর জনশূন্য হয়েগেল। দুজন টেলরের লেখা পড়ুন, বুঝবেন। এরা কোথায় গেলেন? সক্কলে মাঠে নামলেন।
আরও বড় ধাক্কা এল চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের পরে ভদ্রদের জমি দখলের পরে। বহু চাষী জমি হারালেন। হয়ে গ্যালেন কৃষিশ্রমিক।
এই হল উর্বর বাংলার কৃষি শ্রমিক তৈরির প্রক্রিয়া।

No comments: