Saturday, December 1, 2018

ফ্রম প্রস্পারিটি টু ডিক্লাইন – এইটিনথ সেঞ্চুরি বেঙ্গল - সুশীল চৌধুরী৮৯

পুঁজি/ধারের আর মুদ্রা বিনিময়ের বাজারের যে বিপুল বিকাশ ঘটেছিল বাংলায়, সেই কাজ ঘটিয়ে তোলার কাজে মুল ঘটকের নাম ছিল জগতশেঠ আর তার গদি এবং তার সঙ্গে বিশেষ বিশেষ কাজের দক্ষতাওয়ালা বিপুল সংখ্যক ব্যবসায়ী। এদের বাংলায় উপস্থিতি এই তথ্য প্রমান করে, অষ্টাদশ শতকের প্রথমপাদে পুঁজি আর ধারের বাজার বিপুলভাবে বিকশিত হয়েছিল। ব্যবসায়ী সমাজ এবং ব্যবসায়িক সঙ্গঠনের সাধারণ যে ছবিটি আমরা ইওরোপিয় তথ্যসূত্রে পাচ্ছি তার থেকে এই ওপরের সিদ্ধান্তটাই প্রমান হয় যে বাংলায় এই পরম্পরা ব্যবসার বিপুল ভিত্তি আর দক্ষ বিস্তৃতি ছিল। সঙ্গে সঙ্গে এটাও বলা যায় যে হয়ত ব্যবসা কিছুটা নির্দিষ্ট জাতের ব্যবসায়ীদের মধ্যে যেমন আবদ্ধ ছিল, তেমনি নির্দিষ্ট জাত আর ধর্মের বাইরেও জড়িয়ে থাকত। মুসলমান ব্যবসায়ীর হিন্দু বানিয়া খুব সাধারণ ঘটনা যেমন ছিল, তেমনি হিন্দু বা আর্মিনিয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বাইরের জাতের ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর অংশিদার হওয়া খুব ব্যতিক্রমী ব্যাপার ছিল না। শহরে ব্যবসায়ী সমাজ ভূমিস্তরে প্রাথমিকভাবে জাতবন্ধনে বিভক্ত ছিল, সাধারণত সজাতিবদ্ধ, কিন্তু প্রয়োজনে অঞ্চল আর জাতকুলমানের গণ্ডী ভেঙ্গে একসঙ্গে লড়াই দিত। ফলে কলকাতার দাদনি বণিকদের মধ্যে যেমন উঁচু জাতের সেন, বোস, মিত্র, রায়, চৌধুরী, ঘোষ, দে, তাঁতি জাতি ছিল, যেমন শেঠ, বসাক, নন্দী, মল্লিক ছিল, সে সঙ্গে ছিল তথাকথিত ছোটজাতের শীল, তেলি ইত্যাদিরাও; আর ছিল গুজরাট, রাজস্থান, পাঞ্জাব, সামগ্রিক উত্তরভারত এবং আর্মেনিয় বণিকেরা – এরা ১৭৫৩ সালে সামগ্রিক বাংলার দাদনি বণিকদের ওপর কোম্পানির পক্ষ থেকে একচেটিয়া শর্ত চাপিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে একদেহী হয়ে দাঁড়িয়েছিল – যা যে কোন সময়ের লড়ায়ের অন্যতম আদর্শ আন্দোলনের আঙ্গিক/উদাহরণ হতে পারে। কোম্পানি জানত ব্যবসায়ীরা তাদের একতরফা চাপিয়ে দেওয়া শর্তের বিরুদ্ধে একজোট হয়েছে এবং তাদের আশংকা ছিল তারা হয়ত as a collusive body হয়ে may have power to give us much interruption in the execution of this plan। ফলে তারা কাশিমবাজারের উইলিয়াম ওয়াটসকে নির্দেশ দিল to be upon watch to learn if there is any disturbance given to it at the Durbar by our late Merchants and to put an immediate stop to it (BPC, vol. 26, ff. 163, 165-166, 7 June 1753, Annex. to Consult 7June 1753)। যে ঘটনার কথা বলা হচ্ছে সেটা হল, শেঠেরা ১৭৪৮ সালে কোম্পানির সঙ্গে নতুন করে দাদনি চুক্তি নবীকরণ করতে অস্বীকার করে এই যুক্তিতে যে, যে তিনজন দাদনি বণিককে কোম্পানি সে বছর নতুন ঢুকিয়েছে, তারা ‘অন্য জাতের’; আদতে এটা হওয়া সম্ভব যে তিনজনের কথা বলা হচ্ছে তারা এর আগে ডাচেদের কোম্পানিতে দাদনি বণিক হিসেবে কাজ করত এবং তাদের ব্রিটিশ কোম্পানি থেকে আলাদা করার জন্যে শেঠেরা এই যুক্তিটা দিয়েছিল। জাতপাতের পার্থক্য করার বিষয়ে ১৭৪৮ সালের এই ঘটনাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার নয়। মুল ব্যাপারটা ছিল সম্ভাব্য নতুন প্রতিযোগীকে ব্যবসা ক্ষেত্র থেকে যতটা পারা যায় বার করে দেওয়ার চেষ্টা। শেঠেদের এই দাবিটা যদি সত্যিকারের জাতের জন্যে হত, তাহলে তারা এই শর্ত থেকেই নড়ত না বরং উলটে ১৭৫০ সালে শেঠেরা এই দাদনি বণিকদের সঙ্গে নিয়ে কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়(Ibid., vol. 23, ff. 188-90', Annex to Consult. '29 June \ 750)।

No comments: