Sunday, June 30, 2013

Report Submitted to Expert Committee Appointed by National Green Tribunal

চিত্রদুরগ জেলার চাল্লাকেরে তালুকের অমৃত মহল কাবাল ধংস করে পরিবেশঘাতী শিল্প করার বিপক্ষে জাতীয় পরিবেশ ট্রাইবুনালে একটি সমীক্ষা পেশ। সেই বিষইয়টি প্রচারের উদ্যেশ্যে আগের পোস্টের প্রবন্ধটির ভাবানুবাদ করে দেওয়া গেল।

২০০৯-২০১০ সালে কর্ণাটকএর কয়েক হাজার বছর ধরে টিকে থাকা, চিত্রদুরগ জেলার চাল্লাকেরে তালুকের অমৃত মহল কাবাল(কানাড়ি ভাষায়, বিস্তীর্ণ ঘাসজমি)এর ১০,০০০ একরের বিশাল, জীব-বৈচিত্রময়, তৃণভুমির বাস্তুতন্ত্রকে সেই জেলার ডেপুটি কমিশনার, অম্লান আদিত্য বিশ্বাস, বিভিন্ন বড় শিল্প, প্রতিরক্ষা, পরিকাঠামো তৈরি শিল্পকে ব্যবসা করার জন্য হাত বদল করেছেন। এই পরিকল্পনায় কর্ণাটকের মন্ত্রিসভার বিধিবদ্ধ সম্মতি রয়েছে। তবুও এই ধংস পরিকল্পনা তৈরি হয়েছে বিভিন্ন আইন উল্লঙ্ঘন করে, স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থা, বিভিন্ন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জঙ্গল, হ্রদ, কৃষি, পশুপালন, উদ্যানপালন, জনসাধারনের জমিদপ্তরের মত রাজ্য সরকারের নানান দপ্তরকে না সামিল করে। খুব গোপনে, এবং কয়েকজনেরমাত্র বুদ্ধি সম্বল করে এই প্রকল্পটি রচিত হয়েছে। সেহেতু, এই পরিকল্পনা রূপায়নে সমাজ এবং পরিবেশের কি ধরণের ক্ষতি হতে পারে, সে বিষয়টি জানার বিন্দুমাত্র কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয় নি এবং যে ধরণের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নির্দেশে এই পরিকল্পনা করতে হয়, সে ধরণের নানান সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ করে এগোনোর কাজটি সযত্নে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। যে ধরণের বিশাল পুঁজি নির্ভর উন্নয়ন পরিকল্পনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এই অমৃত মহলএর ৭০টির বেশি গ্রাম এলাকায়, তার ফলে শুধু যে অসম্ভব পরিমানে পরিবেশ দূষণ হবে তাই নয়, যে বিস্তীর্ণ কাবালের কথা উল্লেখ করা হল, সেই ঘাস জমি পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে এবং এই গ্রামগুলিতে বসবাসকারী মানুষেরা জীবন জীবিকা থেকে উচ্ছন্ন হবেন।

সর্বসাধারণের এই সম্পত্তি, কাবাল তৃণজমিটি আসলে জেলার জঙ্গলও বটে। এই বিস্তীর্ণ জমিতে ভাবা পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র এখানে দৈত্যসম নিউক্লিয়ার এনরিচ কেন্দ্র তৈরি করবে, প্রতিরক্ষা গবেষণা উন্নয়ন কেন্দ্র(ডিআরডিও) কীভাবে আকাশ থেকে বোমা ফেলে মানুষ মারা(ড্রোন) যায় তাঁর জন্য সফটওয়্যার এবং যন্ত্রপাতি তৈরি করবে এবং এই এলাকায় সেই বিষয়টির পরীক্ষা হবে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রের আর্থিক সহায়তায় ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স একটি সঙ্কোট্রণ এবং উপগ্রহ প্রয়োগ কেন্দ্র তৈরি করবে। এই কাজগুলি করতে, সংস্থাগুলোকে প্রতি একর মাত্র ৩০-৩৫,০০০ টাকায় জমিগুলো প্রায় দান করে দেওয়া হয়েছে। এরই সঙ্গে একটি বেসরকারি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা সাগিটেউর ভেঞ্চারস প্রা.লি.কে ৭৫,০০০ ডলারে ১০০০ একর জমি দেওয়া হয়েছে যাতে তারা একটি বিদ্যুৎ উতপাদনের জন্য নোনা সৌর পুকুর তৈরি করতে পারে, কর্ণাটক হাউসিং বোর্ড অবৈধভাবে ঘাস জমিতে বাড়ি তৈরি করা শুরু করেছে এবং তাদের কাছে আরও বড় এলাকায় ক্যাম্প করার জন্য প্রতিরক্ষা বিভাগ আরও বড় জমি দাবি করেছে এ রকম খবর হাওয়ায় ভাসছে। রাজ্য সরকারের যে কটি দপ্তরের(আগের স্তবকে বলা হয়েছে) ছাড়পত্র নিয়ে আইন মেনে এই প্রকল্পগুলো করা দরকার ছিল, সেই মূল কাজটিই করা হয় নি। এছাড়াও এধরনের বিশাল জীব-বৈচিত্রময় তৃণভুমির বাস্তুতন্ত্রকে উচ্চ এবং প্রধান আদালতের সম্মতিছাড়া বাস্তবায়িত করা যাবে না, এ ধরণের রায় থাকা সত্তেও এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।

এনভায়রনমেন্টাল সাপোর্ট গ্রুপ এই প্রস্তাবএর বিরোধিতা করে এই এলাকার একটি বিশদ সমীক্ষা দক্ষিণ অঞ্চলের (চেন্নাইএর) জাতীয় পরিবেশ ট্রাইবুনাল-এ পেশ করেছে। এটি পাওয়া যাবে  http://tinyurl.com/qhxh8p3 এই লিঙ্কে। এই আবেদনের পরে ট্রাইবুনালের নির্দেশে ২১ মার্চ ২০১৩,  ড. কে ভি অনন্তরমন এবং ড. এস রবীচন্দ্রণ যৌথভাবে এই এলাকা ঘুরে দেখবেন একটি সমীক্ষা পেশ করবেন। ২৩ মে, ২০১৩, দুই সদস্যের এই বিশেষজ্ঞ কমিটি এই এলাকা ঘুরে দেখেন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে অবস্থা বোঝার চেষ্টা করেন।

এনভায়রনমেন্টাল সাপোর্ট গ্রুপের পক্ষে - লিও সালদানা, ভারগবি এস রাও, অভয়াত্রি নায়েক, মল্লেশ কে আর, শাশিকলা আইয়ার, ডেভিড জি থমাস

এক্সপারট কমিটির সমীক্ষা এই লিঙ্কে পাওয়া যাবে-


“Forfeiting our Commons” (185 pages) is a comprehensive critique and expose' of the gross illegalities that have formed the basis of decisions resulting in the diversions of these ecologically sensitive and heritage Kavals.  The report provides a deep understanding of the extensive environmental and social impacts the projects have caused even as preliminary project activities are being initiated illegally.  The report makes a very strong case for the conservation of these biodiversity rich Kavals as it is a crucial habitat to support the revival of the critically endangered Great Indian Bustard, Lesser Florican, a variety of endemic flora found only here, and also the highly threatened Blackbuck, Deccan Wolf, etc.  The report demonstrates that the high degree of care for and wise use of these commons by local pastoral and agrarian communities over centuries is the reason why these grassland ecosystems have survived.  Diversion of these commons to defence, institutional, infrastructure and urban developments would not only amount to violation of directions of the Courts which has cast a duty on the Government to protect such ecologically sensitive areas, but would also result in the destruction of one of the last remaining large and contiguous grassland ecosystems of Karnataka.  The report demonstrates that the Government is promoting water intensive developments in a water starved region even though fully aware that such decisions is fraught with very high risks of causing social unrest and ecological disaster.

“Forfeiting Our Commons: A Case for Protecting and Conserving Challakere’s Amrit Mahal Kavals as Livelihoods-Supporting, Biodiversity-Rich and Ecologically-Sensitive Grassland Ecosystems”

বন্ধুরা, এই লেখাটি এক্ষুনি পেলাম। আপনাদের জন্য তুলে দিলাম। খুব জরুরি। পরের পোস্টে বাংলা লিখব।
Report Submitted to Expert Committee Appointed by National Green Tribunal

During the years 2009-2010, at least 10,000 acres of precious, biodiversity-rich, grassland ecosystems, protected for centuries as Amrit Mahal Kavals - grazing pastures in Challakere Taluk of Chitradurga District, were diverted by then Deputy Commissioner of Chitradurga, Mr. Amlan Aditya Biswas, IAS, for various defence, industrial, infrastructure, institutional and commercial purposes.  Though these decisions may have had the approval of the Karnataka Cabinet, the entire exercise was undertaken in comprehensive violation of various laws and without involving any of the local elected governments, local MLAs, and relevant departments dealing with forests, lakes, agriculture, animal husbandry, horticulture, commons lands, planning, etc.  As a consequence of the secretive and unilateral decision-making that was engaged with in diverting the said Kavals, the true nature of the environmental and social impacts of the project has been hidden from directly and indirectly impacted communities, relevant regulatory authorities, and the public at large. The proposed investments are all highly sensitive, hazardous and will destroy the grasslands, its rare biodiversity and livelihoods of thousands in over 70 villages. 

This massive illegal diversion of the Kaval commons, also designated “District Forests”, has been undertaken to allow Bhabha Atomic Research Centre to establish a massive nuclear enrichment centre, Defence Research Development Organisation to test its drones for civilian and military surveillance, Indian Institute of Science to establish a Synchrotron and a satellite application centre of Indian Space Research Organisation, all for a paltry payment of Rs. 30-35,000/acre.  In addition, Sagitaur Ventures Pvt. Ltd., a IT real estate developer has been provided 1000 acres of this biodiversity rich grasslands to site a solar pond and at a ridiculously low lease rent of Rs. 45 lakhs (USD 75000/-).  In anticipation of these developments, Karnataka Housing Board has already constructed villas and neighbourhoods illegally in the grasslands and it is speculated that the Indian Army may demand another 10,000 acres to establish its camp.  None of these developments have complied with any of the statutory clearance requirements required under laws protecting grazing pastures, forests, environment, biodiversity, forest rights, etc.  Besides, land for the projects has been promoted in patent disregard of specific directions of the High Court of Karnataka and Supreme Court of India that such ecologically sensitive grassland ecosystems should not be diverted for any purpose without judicial approval.

Environment Support Group challenged these decisions before the National Green Tribunal (Southern Zone, Chennai), and a copy of the applications and the objections of respondents is accessible here: http://tinyurl.com/qhxh8p3.  In response to the Applications, the Tribunal directed by its order of 21st March 2013 that a fact finding Expert Committee constituted by Dr. S. Ravichandra Reddy and Dr. K. V. Anantharaman would visit the impacted areas, interact with communities and provide a report on the scales of the projects and their impacts on communities and sensitive ecosystems, about the nature of the controversial decisions, as also any other matter the committee felt fit to address.   In conformance with this direction, the Committee visited Challakere on 23rd May 2013 to study the impacts and also held public interactions on subsequent days.

“Forfeiting our Commons” (185 pages) is a comprehensive critique and expose' of the gross illegalities that have formed the basis of decisions resulting in the diversions of these ecologically sensitive and heritage Kavals.  The report provides a deep understanding of the extensive environmental and social impacts the projects have caused even as preliminary project activities are being initiated illegally.  The report makes a very strong case for the conservation of these biodiversity rich Kavals as it is a crucial habitat to support the revival of the critically endangered Great Indian Bustard, Lesser Florican, a variety of endemic flora found only here, and also the highly threatened Blackbuck, Deccan Wolf, etc.  The report demonstrates that the high degree of care for and wise use of these commons by local pastoral and agrarian communities over centuries is the reason why these grassland ecosystems have survived.  Diversion of these commons to defence, institutional, infrastructure and urban developments would not only amount to violation of directions of the Courts which has cast a duty on the Government to protect such ecologically sensitive areas, but would also result in the destruction of one of the last remaining large and contiguous grassland ecosystems of Karnataka.  The report demonstrates that the Government is promoting water intensive developments in a water starved region even though fully aware that such decisions is fraught with very high risks of causing social unrest and ecological disaster.

A copy of this report submitted by ESG to the Expert Committee is accessible here: 

Leo F. Saldanha, Bhargavi S. Rao, Abhayraj Naik, Mallesh K. R., Shashikala Iyer and Davis G. Thomas

Environment Support Group

টাটাদের আদি ব্যবসা - চিনে আফিম সরবরাহ - Opium Trade of the Tatas

ভারতের ব্যবসা জগতে টাটা পরিবারের নাম বিগত একশতক ধরে শ্রদ্ধায় উচ্চারিত হয়। টাটারাওযে খুব গভীরভাবে আফিম ব্যবসায়ের সঙ্গে যুক্ত ছিল, এই তথ্য আজকে খুব একটা উচ্চারিত নয়। অন্যান্য পার্সি ভাই বেরাদারের আফিম ব্যবসায় অমিত পরিমাণ লাভএর অঙ্ক দেখে টাটারাও এগিয়ে আসেন। তথ্য বলছে, অন্যান্যদের থেকে অনেক পরে টাটা পরিবার এই ব্যবসায় ঢোকে। জনসাধরণের প্রচলিত বিশ্বাস, টাটারা অনেক রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে তবে আজকের ভারতের প্রধাণতম শিল্পপরিবারএ পরিনণত হয়েছে, পুঁজি জোগাড় করেছে এদের ওয়েবসাইটেও আফিম ব্যবসায়ের বিন্দুমাত্র উল্লেখ নেই। অনেক পরিমান রক্ত-ঘাম তাঁরা ঝরিয়েছিলেন, তবে চিনের সাধারণকে আফিম সেবন করাতে অপারসি জগতে নাম মাহাত্ম্যে, টাটারা, সম্প্রদায়ের অন্যান্য উদ্যগপতির তুলনায় এই সময়ে অনেক এগিয়ে রয়েছেন। সেদিন কিন্তু তা ছিল না। করপোরেট সংস্থাতো ছিলেনই, কিন্তু ঔপনিবেশিক ব্যবসা জগতে তাঁরা  ততটা প্রভাবশালী ছিলেন না। কিন্তু কয়েকটি ঐতিহাসিক তথ্য পরিস্কারের জন্য এই রচনা।

গুজরাটের অধিবাসী জামশেদজী টাটার বাবা যোরাথ্রুষ্টবাদী পার্সি পুরোহিত নাসিরনজী টাটা এই পরিবারের স্রষ্টা নাসিরনজী তার পুত্র জামশেদজী এবং অন্যান্য ভাইদেরকে হংকং, সাংহাই এবং ইংলন্ডে আফিম ব্যবসার দপ্তর খুলে দিলেন। আগেই বলা হয়েছে বম্বে শহরটি গড়ে উঠেছে বাঙালি-বিহারি, সিন্ধ্রি রক্ত জলকরা আফিম চাষী, পার্সি আফিম ব্যবসায়ী আর চৈনিক আফিমখোরদের তৈরিকরা অর্থিক লাভের বনিয়াদের ওপর বসে ঐতিহাসিকেরা সাধারণতঃ নতুন বম্বের সঙ্গে আফিমের সম্পর্ক দেখাতে গিয়ে প্রায় প্রত্যেক পার্সি পরিবারের নামোল্লেখ করলেও সাধারণতঃ তারা টাটা পরিবারের নাম উল্লেখ করতে ভুলে যান, অথবা নমঃনম করে সেরে তাদের ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালন করেন। তাঁদের আদত ব্যবসার কথা উল্লেখ করতে অনেকেই ভুলে যান এটি উদ্দেশ্যপূর্ণ কীনা বলা মুশকিল 
এমনকী বামপন্থীরাও এই পথের পথিক অনেক বামপন্থীই টাটা পরিবারকে আদতে ভারতের পুঁজিপতিদের মধ্যে প্রহ্লাদরূপে দেখতে চান বাঙলার তদানীন্তন বামপন্থী সরকারের ন্যানো মোটর গাড়ির কারখানা করার উদ্যমেই তা স্পষ্ট ভারতীয় টাটাদের কর্পোরেট পরিবারের সঙ্গে ব্রিটিশ বামপন্থার যোগাযোগ অনেক দিনেরই বড় পুঁজিপতি জামশেদজী টাটার ছোট পুত্র স্যর রতন টাটা গোপাল কৃষ্ণ গোখলের সঙ্গে মিলে সোসালিস্ট সার্ভেন্টস অব ইন্ডিয়া সোসাইটি গঠন করেন জামশেদজীর পুত্র বামপন্থীদের দুর্গ, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্সএর একটি চেয়ারেরও স্রষ্টা আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হল রতন এবং দোরাবজী টাটার কাজিন শাপুরজি সাকলতওয়ালা (১৮৭৪-১৯৩৬), যিনি টিসকোর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের প্রথম কমিউনিস্ট সদস্য তিনি একাদিক্রমে ১৯১৪ থেকে ১৯২৯ পর্যন্ত ব্যাটারসি(লন্ডনের একটি বরো) থেকে পার্লামেন্টে নির্বাচিত হন জামশেদজী টাটাই ব্রিটিশ আমলে চিনের সঙ্গে আফিম ব্যবসার একচ্ছত্র অধিপতি ছিলেন এমন নয়, বম্বের কম করে পঞ্চাশটি পার্সি পরিবার এই চোরাচালানের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল এরা প্রায় সকলেই ম্যানিয়ার এন্ড কোংএর আফিমব্যবসার সঙ্গী কয়েকজন যুক্ত ছিলেন রাসেল এন্ড কোম্পানির সঙ্গে
মেরি এল কিয়েনহোলজ ওপিয়াম ট্রেডার্স এন্ড দেয়ার ওয়ার্ল্ডস ভলিউম টু-  আ রিভিসনিস্ট এক্সপোজার অব দ্য ওয়ার্ল্ডস গ্রেটেস্ট ওপিয়াম ট্রেডার পুস্তকে ভারতীয় যেসব ভারতীয় ব্যাবসায়ীর আফিম ব্যবসা নিয়ে আলোচনা করেছেন, তাদের মধ্যে টাটাদের আফিম ব্যবসারও উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু এর সপক্ষে তিনি কোনও নির্দিষ্ট তথ্য অথবা দলিল দিতে পারেন নি। এছাড়াও  http://www.independent.co.uk/news/world/asia/from-parsee-priests-to-profits-say-hello-to-tata-434575.html আলোচনা হয়েছে টাটাদের আফিম ব্যাবসায় জড়িত থাকার কথা। কিন্তু এক ব্রিটিশ ইন্ডিপেন্ডেন্ট পত্রিকায় টাটাদের সম্বন্ধে লেখাটি লিখেছেন। সেহেতু একজন ভারতীয় ইয়োরোপীয় ব্যবসা কেড়ে নিচ্ছে, সেটিও তিনি সহ্য করতে পারছেন না। লগে লগে আফিম ব্যবসার কথাও এসে যায়। সেখানে  লেখক কোনও প্রমান দিতে পারছেন না। 
ফোরবস পত্রিকাও সরাসরি বলছে, (in)the 1860s, Nussurwanji Tata and his cousin and brother-in-law Dadabhoy Tata were just entering ‘the China trade’, a euphemism for the ships that ran from India to China, carrying opium on the way in and tea, silks and pearls on the way out (http://forbesindia.com/printcontent/31052).
ওয়াছা, জে এন টাটার জীবনী লিখতে গিয়ে বলছেন, টাটাদের আফিম ব্যবসায়ের কথা- Opium and cotton were the two staple commodities in which it traded, and young MI'. Jamsetji's attention was soon engaged on them (The Life and Life Work of J N. Tata BY D. E. WACHA,  http://203.200.22.249:8080/jspui/bitstream/123456789/500/1/Life_and_the_life_work_of_JN_Tata.pdf). কিন্তু কোনও প্রমান নেই।
অথচ কলাবতী মুদ্রা, হংকংএর ১৮৮৭ সালের LEGISLATIVE COUNCILএর ওয়েবসাইট সূত্রে একটি স্মারকলিপির হদিশ পাচ্ছে((সূত্রঃ http://www.legco.gov.hk/1886-87/h870325.pdf)  যে স্মারকলিপি দিয়ে ব্রিটিশ আমলে আফিম ব্যবসায় টাটাদের জড়িত থাকার প্রমান হয়। দেখা যাচ্ছে হংকংএ ৭ জন পাইকারী আফিম ব্যবসায়ী হংকং সরকারকে স্মারকলিপি দিচ্ছেন সেই স্মারকলিপির তৃতীয় স্বাক্ষরটি হল রতনজি দাদাভাই টাটার, প্রথম দুটিই আফিম ব্যবসায়ে পার্সিদের অন্যতম প্রখ্যাত প্রতিদ্বন্দ্বী, ইহুদি সাসুন(সাম্প্রতিক সাহিত্যে সাসুনদের থিফ অব বাগদাদ বলা হত। ভারতে পরিবারএর প্রতিষ্ঠাতা সালেহ সাসুন ছিলেন ইরাকের পাশার খাজাঞ্চি। পাশার রোষ থেকে বাঁচার জন্য পারস্য হয়ে বম্বেতে আশ্রয় নেন। বহুকাল ধরে তিনি ভারত-পারস্য ব্যবসা চালিয়েছেন। সালেহর পর পরিবারের হাল ধরেন ডেভিড সাসুন। সালেহ বেঁচে থাকতেই তিনি ক্যান্টনে আফিম ব্যবসা ধরেন।
ডেভিড সাসুন, প্রথম ইহুদি আফিম ব্যবসায়ি
ডেভিড ক্যান্টনের প্রথম ইহুদি ব্যাবসায়ী। ২৪ জন পার্সি ব্যাবসায়ীর সঙ্গে লড়ে তিনি আফিম আর তুলোর ব্যবসা দাঁড় করান।) পরিবারের প্রতিনিধির (আধুনিক মুম্বাইএর গড়নে শুধু পারসিরাই নয়, ইহুদি সাসুনদের বিনিয়োগ অপরিসীম)
প্রেক্ষিতটি হল, হংকং সরকার আফিম ব্যবসা নিয়ন্ত্রের জন্য একটি বিল আনছিল। বিলটির নাম, the prevention of Opium smuggling into China আবেদনকারী ৭ পাইকারী আফিম ব্যবসায়ী জানাচ্ছে, এটি পাইকারী অথবা খুচরো ব্যবসায় প্রভাব ফেলবে। এই বিলটি আইনে পরিণত হলে সেটি দেশের বিকাশ আর ব্যবসা বাণিজ্যেও প্রভাব ফেলবে(বিশ্বায়নের প্রবক্তারা আজও এই যুক্তি দেন) এই ব্যবসায়ীদের সংঘ কাউন্সিলকে আবেদন করছে, বিলটি আনার আগে দ্বিতীয়বার ভেবে দেখা হোক তারা চায় সরকার, বিলটি আনার আগে, আফিম ব্যবসায়ীদের মতামতটিও শুনুক প্রয়োজনে বিলটির আপত্তিজনক অংশ বাদ দিয়ে আইনে পরিণত হোক আমাদের এই আলোচনায় বিলের ভেতরের কোন অংশে, কিভাবে বিরোধিতা করছে, সেই পর্যায়টি যতটা না গুরুত্বপূর্ণ, তার থেকে বেশি গুরুত্বের এই ব্যবসায় টাটাদের অংশিদারি। এই আবেদন পত্রে স্বাক্ষর, টাটাদের আফিম ব্যবসায়ে অংশগ্রহণের অকাট্য প্রমাণ টাটাদের ব্যবসার প্রথম সম্পদ আহরণের ইতিহাস ধোঁয়াশায় ভরা ভারতীয় মধ্যবিত্তর ধারণা স্বাভাবিক ব্যবসা করেই টাটাদের উত্থান কিন্তু সত্যিটা লুকিয়ে রয়েছে আবেদনটিতে টাটা পরিবারের ওয়েবসাইটএর ঠিকানা হল, (http://www.tata.com.htm.heritage.HeritageOption1.html)। এই ওয়েবসাইটে টাটাদের কাপড়ের কল, তাদের অন্য ব্যবসা, দানধ্যান ইত্যাদি নিয়ে বিশদে সগর্ব আলোচনা রয়েছে কিন্তু আফিম ব্যাবসায় নিয়ে উল্লেখ নেই টাটা পরিবার হয়ত জানে যেসব ব্যবসায়ী ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে আফিম ব্যবসা করে অতুল ঐশ্বর্য লাভ করেছে, জনমানসে তাদের খুব একটা স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নেই, বা এই তথ্য প্রকাশ করলে তাদের সামাজিক লাভের সম্ভাবনা শূন্য ব্রিটিশ আমলে ভারত সরকার, বাঙালি, পারসিদের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে চিনাদের আফিমে বুঁদ করিয়ে রেখে দেশে অযুত অর্থ লুঠে নিয়ে গিয়েছে 
সেই লুঠ ব্যবসায় ভারতীয় পার্সি সমাজের অন্যতম প্রধাণ উদ্যমী, টাটাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ, যেমন ছিল, দ্বারকানাথের উদ্যম এই দলিলে পরিষ্কার, টাটারা পরবর্তীকালে কাপড়ের কল অথবা স্টিল কোম্পানির বিনিয়েগের  প্রাথমিক অর্থ কোন সূত্র থেকে অর্জন করেছিল ধাঁধার কথা হল, বম্বের টাটাদের কাপড়ের কল তৈরির বহু পরের ঘটনা এই স্মারকলিপিটি। কলকাতায় ১৮৩০এর দিকে পার্সি ব্যবসায়ী, রুস্তমজী কাওয়াসজী, দ্বারকানাথের সঙ্গে মিলে আফিম ব্যাবসায় অংশ নিচ্ছেন। আমরা ভুলে যাই, বম্বেতে পার্সিরা ১৮২০ থেকে ১৮৪০এর মধ্যে নতুন বম্বের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করছেন, Opium city: the making of early Victorian Bombayতে উল্লেখ করছেন পার্সি সমাজের অন্যতম ভাবুক, অমর ফারুকি, তাঁর অন্যতম অংশিদার টাটা পরিবার। 


LEGISLATIVE COUNCIL No. 21.
———————
FRIDAY, 25TH  MARCH, 1887.
———————
PRESENT: HIS EXCELLENCY WILLIAM HENRY MARSH, C.M.G.,
Administering the Government in the absence of His Excellency SIR GEORGE FERGUSON BOWEN, G.C.M.G.
His Honour the Chief Justice,           (SIR GEORGE PHILLIPPO, Knt.)
The Honourable the Acting Colonial Secretary,         (FREDERICK STEWART.)
,,                                               the Acting Attorney General, (EDWARD JAMES ACKROYD.)
,,                                               the Colonial Treasurer, (ALFRED LISTER.)
,,                                              the Surveyor General, (JOHN MACNEILE PRICE.)
,,                                               HENRY GEORGE THOMSETT, R.N.
,,                                              PHINEAS RYRIE.
,,                                               WONG SHING.
,,                                               JOHN BELL-IRVING, (vice the Honourable WILLIAM KESWICK, on leave).
,,                                               ALEXANDER PALMER MACEWEN, (vice the Honourable THOMAS JACKSON, on leave).
,,                                               CATCHICK PAUL CHATER, (vice the Honourable FREDERICK DAVID SASSOON, on leave).
The Council met pursuant to adjournment.
The Minutes of the last Meeting, held on the 18th instant, were read and confirmed.
VOTE OF  MONEY REFERRED TO THE  FINANCE  COMMITTEE.―Read the following Minute by His Excellency the Officer Administering the Government:―
W. H. MARSH
Chinese correspondence having increased very much of late, especially registered letters from America, the duties of the Senior Postman, who has to distribute all registered letters and obtain signatures to receipts, are now more than one man can accomplish in the course of a day.
The Officer Administering the Government, on the representation of the Postmaster General, recommends the Council to vote a sum of $80 to meet the salary of another Postman at the rate of $10 per month from 1st of April next.
Government House, Hongkong, 22nd March, 1887.
The Acting Colonial Secretary moved that this vote be referred to the Finance Committee.
The Treasurer seconded.
Question―put and passed.
PAPER.―The Acting Colonial Secretary, by direction of His Excellency the Officer Administering the Government, laid upon the table the following paper:―
Correspondence in connection with the proposed Loan. (No. 17/87).
PETITIONS.―The Acting Colonial Secretary said that the Clerk of Councils had received two Petitions, and moved that they
be read.
The following Petitions were then read by the Clerk of Councils:―
(1.)
TO HIS EXCELLENCY THE PRESIDENT, AND THE HONOURABLE MEMBERS OF THE LEGISLATIVE COUNCIL OF HONGKONG.
The humble petition of Shellim Ezekiel Shellim, of the firm of David Sassoon, Sons & Co., Jacob Silas Moses, of the firm of E. D. Sassoon & Co., Ruttonjee Dadabhoy Tata, of the firm of Tata & Co., Marcus David Ezekiel, of the firm of Abraham, Ezekiel & Co., Mahomedbhoy Khetsey, of the firm of Tharia Topan, Jafferbhoy Khetsey, of the firm of Jairazbhoy Peerbhoy & Co., and Hormusjee Meherwanjee Mehta, of the firm of Framjee Hormusjee & Co., all of Victoria in the Colony of Hongkong, for and on behalf of the Opium Importers and wholesale Opium Merchants of the said Colony.
SHEWETH,―That at a recent Meeting of the Opium Importers and wholesale Opium Merchants of this Colony, held for the purpose of considering the Bill now before your Honourable Council, entitled An Ordinance for the better regulating of the trade in Opium, it was inter alia resolved that the said Bill, if passed in its present form, would prejudicially affect their trade, and that your petitioners should be appointed a Committee to take such measures as they might consider advisable to bring their complaints before your Honourable Council.
That while fully recognizing the necessity of carrying out the object aimed at by the said Bill, namely, the prevention of Opium smuggling into China, and while sympathizing with its spirit, your petitioners submit that the means by which it is proposed to effectuate such object would inflict serious injury upon the Opium trade, and especially on the aforesaid Opium Importers and wholesale and retail Opium dealers, and prove a blow to the general commerce and prosperity of this Colony.
That your petitioners believe that the ends intended to be accomplished by the said Bill could be attained by other and less objectionable means, and that your petitioners are prepared to co-operate with your Honourable Council and the Executive in attaining the desired object.
That inasmuch as the Bill affects private interests, and was only brought in and read a first time on Friday, the 18th instant, it is desirable to postpone the second reading thereof so as to enable the persons who are more immediately interested, as well as the general public, to acquaint themselves with its scope and object.
Your petitioners therefore humbly pray
1.― That the second reading of the said Bill may be postponed until such day as your Honourable Council may under the circumstances deem meet.
2.― That your petitioners may be heard by Counsel at the bar of your Honourable Council as to their objections to the said Bill in its present form.
3.― That the said Bill may be so amended or modified as to remove the objections of your petitioners, or that it may be withdrawn and a fresh Bill introduced such as the necessity of the case requires.
And your petitioners will ever pray, &c.
S E. SHELLIM.
J. S. MOSES.
R. D. TATA.
M. D. EZEKIEL.
M. KHETSEY.
J. KHETSEY.
H. M. MEHTA.
Hongkong, 22nd March, 1887

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আফিম ব্যবসা - বেম্বাইএর আফিম বোম্বেটে, Opium Trade of Colonial British Government - The Parsi Opium Traders of Bombay

পার্সিদের আফিম ব্যবসা এবং এই ব্যবসার লাভের গুড়ে যে বম্বে শহর গড়ে উঠেছে, এই বিষয়ে একটি বই সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে(ওপিয়াম সিটি - অমর ফারুকি) আজকের বোম্বাই বা মুম্বই নামে যে শহরটিকে ভারতের আর্থিক সম্পদের রাজধানী, সেটি গড়ে উঠেছিল মালব(মালওয়া) অঞ্চলের উত্পাদিত আফিম, মুম্বই হয়ে চিনে পাঠাবার উদ্বৃত্তের গুড়ে ১৮২০ নাগাদ কলকাতার বাঙালি ভদ্রলোকেদের আফিম ব্যবসার পথ ধরে, ভারতের পশ্চিমাঞ্চলের পার্সি, গুজরাটি বানিয়া, কোঙ্কনি মুসনমানেদের এক বিশাল গোষ্ঠী মালব আফিম ব্যবসার পরতে পরতে জুড়ে ছিলেন ১৮৩০, এই দশকটিতে ৪২টি বিদেশি কোম্পানি চিনে আফিম সরবরাহের ব্যবসাটি চালাত, তার মধ্যে ২০টির সরাসরি নিয়ন্ত্রণ ছিল পার্সিদের হাতে তত্কালীন ভারতের সমুদ্র পরিবহন আর আফিম ব্যবসা ছিল একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠমাত্র 
আজকে যে বম্বের ইতিহাস-ভূগোল আমরা দেখি, তার সুচনা হয়েছিল ব্রিটিশদের অনুগত পার্সিদের আফিম ব্যাবসার লাভের এক অংশ বিনিয়োগের সূত্র ধরে। শহুরে ইংরেজি শিক্ষিত বাঙ্গালীদের মত পার্সিরাও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের খুব অনুগত ছিল, Industrialisation in India, 1850-1947: Three Variations in the Emergence of Indigenous Industrialists প্রবন্ধে Gijsbert Oonk বলছেন, the Parsees had a proven loyalty towards the British. They partly financed the military defense of the Bombay fort; they were loyal to the British during the Mutiny (1857), financing the British military apparatus.(http://repub.eur.nl/res/pub/1820/Industrialization%2520in%2520India%2520voor%2520Dare.pdf). ব্রিটিশরা পার্সিদের কোন দৃষ্টিতে দেখত, সে বিষয় বলতে গিয়ে তিনি তৎকালীন বম্বের গভর্নরের উদ্ধৃতি তুলে দিচ্ছেন, Throughout the Rebellion [1857] in the East, the Parsees have maintained an unshaken loyalty to the British whom they are proud to call their fellow sub-jects, and while preserving their own independence of religion and customs, their chief desire is that British rule in India should be consolidated upon a basis of strict justice and mutual interest(G. Aungier, Gouvernor of Bombay in a letter in 1673, printed in S. Playne, Bombay, The United Provinces, Punjab, Kashmir, Sindh, Rajputana and Central India. Their History, People, Commerce and Industrial Resources. Bombay 1917-1920, pp26-7). এই অদম্য নিবেদনের   বিনিময়ে ১৮০০ শতকের শুরুর আগে থেকেই উপনিবেশ সরকারের হাত ধরে মালব আফিমের ব্যবসা, বম্বে বন্দর দিয়ে শুরু করে পার্সিরা।


সব থেকে বড় জাল ছড়ানো ছিল জামসেদজী জিজিবয়ের(১৭৮৩-১৮৫৯) তিনি ছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সব থেকে বড় এজেন্সি হাউস, জার্ডিন ম্যাথিসনের অন্যতম অংশিদার ব্রিটিনের সর্বোচ্চ নাইট(১৮৪২), ব্যারণ (১৮৫৭) উপাধি পাওয়া প্রথম ভারতীয় আফিম পরিবহনের জন্য তাঁর অনেকগুলি জাহাজও ছিল, আর তিনি ছিলেন ব্যাঙ্ক অব বোম্বের ছজন নির্দেশকের মধ্যে অন্যতম
দশকের পর দশক জুড়ে অবৈধ আফিম ব্যবসার লাভ থেকেই আজকের দক্ষিণ বম্বের বিশাল বিশাল প্রাসাদোপম হর্ম্যগুলি গড়ে ওঠে আজকের ধণতান্ত্রিক ভারতের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র বম্বে শহরটির ভ্রুণ তৈরি হচ্ছিল ১৭৯০ থেকে ১৮৪০এর মধ্যে অবৈধ আফিম ব্যবসার অপরিমিত লাভের পাহাড়ের ওপর বসে মনে রাখতে হবে ১৮২০ থেকে ১৮৪০ সালের মধ্যে, বম্বেতে অবৈধ আফিম ব্যবসা থেকে যে রূপো আসত তার পরিমান দ্বারকানাথেরমত কলকাতার ইংরেজ-বাঙালি ব্যবসায়ীদের লাভ্যাংশের থেকে অনেক অনেক বেশি কলকাতা থেকে যে সরকারি আফিম চিনে অবৈধভাবে সরাসরি রপ্তানি হত, তার লাভের হকদার ছিল সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ কোম্পানি সরকার, ছিটেফোঁটা লাভের গুড়ের অংশিদার হতেন সেই ব্যবসা সাজনোগোজানের প্রক্তিয়াতে জুড়ে থাকা দালালেরা এদের একাংশমাত্র ছিলেন বাঙালি, পার্সিরাও ছিলেন প্রথমের দিকে
কিন্তু বম্বের বিষয়টা ঠিক উল্টো সরাকারকে নির্দিষ্ট একটা অংশ কর দিয়ে এই লাভের গুড়ের পুরো অংশটাই যেত এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পার্সি অংশিদারদের সিন্দুকে বেচারা চিনেদের আফিমের মৌতাতে রেখে পার্সিদের সেই লাভের অর্থে গড়ে উঠেছে মালাবার হিল, কাম্বালা হিল, ব্রিচ ক্যান্ডি, আঙ্ক্লেশ্বরেরমত জনপদসমূহ পরে সেই অঞ্চলের বিলাসবহুল পার্সি বাংলোগুলো লিজে দেওয়া হয়েছে ইওরোপিয়দের ১৮৩০-১৮৪০এর মধ্যে এই পার্সিরাই গড়ে তুলেছিলেন বম্বের শহরতলী অঞ্চলগুলো যেমন কার্সেটজী মানকজীর অধিকারে ছিল অনিকের, ঢাকজী দাদাজীর ভারাসাভি(আজকের ভারসোভা), ফারমজী কাওয়াসজীর পোয়াই লেন, জামসেদজী বোমানজীর ভিলে পার্লে, জুহু, কারসেটজী কাওয়াসজীর জর্জগাঁও, রতনজী এদুলজীর ঘাটকোপর, কৃষণরাও রঘুনাথের বোরবিদে এবং লক্ষ্ণণ হরিচাঁজদীর চিনচোলি
সে যুগের আফিম চোরাচালানে সরাসরি যুক্ত ছিলেন বোম্বের প্রায় প্রত্যেক প্রখ্যাত পার্সি পরিবার আফিম ব্যবসার এক প্রবাদপুরুষ, এক সময়ে কলকাতায় ব্যবসায়ী, জামশেদজী জিজিবয়(১৭৮৩-১৮৫৯) নিজে, জামশেদজী টাটাদের থেকে অনেক বেশিভাবে ডেভিড সাসুনের বন্ধুত্বের বন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন জিজিবয় শিশুকাল থেকেই অনাথ কৈশোরের আগেই চিনের পথে পাড়ি দেন নানান ঝড়ঝঞ্ঝা সয়ে তিনি এক ডেনিস ব্যবসায়ীর নজরে পড়েন এবং ১৮৩৬এই অমিতপরিমান সম্পদের উত্তরাধিকারী হন অমিত অর্থের অধিকারী তাই, তাঁর জাবনীকারদের দাবি, তিনি কোম্ব্রিজে পাঠগ্রহণ করেছেন কিন্তু এর সত্যতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে(আমরা মনেকরিনা, কেম্ব্রিজে পাঠগ্রহণ মানেই উচ্চস্তরীয় কোন সম্মানিত ব্যক্তি। আমাদের উৎসাহ তাঁর আফিম ব্যবসায়)  তিনি প্রথম নাইট উপাধি পাওয়া ভারতীয় জামশেদজী জিজিবয় গুড সাকসেসএরমত অনেকগুলি জাহাজের মালিক ছিলেন এই ব্যবসায় এত লাভ করেন যে বম্বে এবং পার্সি সমাজের উন্নতির জন্য ২,৩০,০০০ পাউন্ড(সে যুগে ২৩ লক্ষ টাকা) দান করেন সে সময় দু লাখ তিরিশ হাজার পাউন্ড বেশ ভাল পরিমাণ অর্থ
জামসেদজীর সঙ্গে মোতিচাঁদ আমিরচাঁদ, হরমুসজী দোরাবজীকে বম্বের আফিম ব্যবসার তিন বড় মাথা হিসেবে ধরা হয় দাদাভাই রুস্তমজীর রুস্তমজী এন্ড কোম্পানি ১৮২০ থেকেই চিনে আফিম ব্যবসা করত তিনি নিজে চিনে যান ১৮২৭এ মারিওয়ানজী মানকজী এবং জোহাঙ্গী ফ্রেমজী ১৮২১ থেকেই চিনে আফিমের ব্যবসায় লেগে পড়েন মানকজীর পুত্র করসেটজী মানকজী পরে বম্বের বিচারক হন করসেটজী বম্বের গভর্ণর এন্ড্রু রামসের রাইটার হিসেবে জীবন শুরু করে বাঙলা আর আরবের সঙ্গে ব্যবসার সূত্রে বিশাল অর্ণব পোতের মালিক হন দাদাভাই রুস্তমজী, জোহাঙ্গী ফ্রেমজীর আত্মীয় ফ্রেমজীর বাবা রুস্তমজা কাওয়াসজী বানাজীর অনেকগুলি আফিম পরিবহনের জাহাজ ছিল এরমধ্যে বিখ্যাততম হল দাদাভোই, বাঙলার দেশি নৌকো
২৫০ টনের আফিম ক্লিপার মেরি গর্ডন মাজগাঁও ডকে তৈরি করান ফুরডনজী লিমজী, ১৭জুলাই, ১৮৩৯এ চিনের দিকে রওনা হয় খিদিরপুর ডকে এর কিছুদিন আগে তৈরি হয় রুস্তমজী কাওয়াসজী ১২ জুলাই ১৮৩৯এ চিনে রওনা হয় প্রথম আফিম যুদ্ধে স্যর রবার্ট সেপিংস এই জাহাজটি ভাড়া করেন সিল্ফ জাহাজটি অনেকে বলেন বানাজী পরিবারের সম্পত্তি তবে এই জাহাজটি জার্ডিন-ম্যাথিসন কোম্পানি তাদের চিনে আফিম ব্যবসায় ভাড়া খাটাত অনেকে বলেন এটি নাকি জার্ডিন-ম্যাথিসনরই সম্পত্তি

ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের আফিম ব্যবসা - মুখ লুকেনো বাঙালি নেতারা, Opium Trade of Colonial British Government - Those Supporter Congressmen

ইংরেজ প্রণোদনায় কলকাতায় বাঙালি আর বম্বেতে পার্সিদের আফিম ব্যবসার পাশাপাশি চলছিল অমানবিক এই ব্যবসার বিরোধিতাও ১৮৯৩তে গ্ল্যাডস্টোন সরকার একটি রাজকীয় আফিম কমিশন (রয়েল কমিশন অন ওপিয়াম) গঠন করে কমিশন তার সমীক্ষা প্রকাশ করে সরাসরি জানাল, As the result of a searching inquiry, and upon a deliberate review of the copious evidence submitted to us, we feel bound to express our conviction that the movement in England in favour of active in terference on the part of the Imperial Parliament for the suppression of the opium habit in India, has proceeded from an exaggerated impression as to the nature and extent of the evil to be controlled The gloomy descriptions presented to British audiences of extensive moral and physical degradation by opium, have not been accepted by the witnesses representing the people of India, nor by those most responsible for the government of the country.(John F. Richards, Opium and the British Indian Empire: The Royal Commission of 1895, http://www.drugpolicy.org/docUploads/opium_india.pdf পরের  তথ্য গুলিও একই সূত্র থেকে নেওয়া।)
আফিমবাদীদের আতঙ্ক জাগিয়ে পার্লামেন্টারি কমিটিটির সমীক্ষা ধরে পার্লামেন্ট জনগণকে জানিয়ে দিল আফিম বেচতে সরকার আর বলপ্রয়োগের দ্বারস্থ হবে না কিন্তু আফিম ব্যবসায় যাঁদের প্রত্যক্ষ্য বা পরোক্ষ স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে তারা কী ছেড়ে কথা বলবেন আফিম থেকে তখন কোটি কোটি ডলার লুঠ করা ভারত সরকার, সেসময়ের আবসৃত উচ্চপদস্থ এক রাজকর্মচারী জেমস লায়ালকে ব্রিটেনে নিযুক্ত করল তাদের স্বার্থ দেখার জন্য ভারতেও লড়াই করার জন্য সরকার মাদ্রাজের দ্য হিন্দু সংবাদপত্রকে নিয়েগ করল ১৮৯৫তে দ্য হিন্দুতে লেখাহল, “Opium may be a great evil, but national bankruptcy is a greater evil” তত্কালীন কংগ্রেস সদস্যদের সসোমিরা আবস্থা তারা যেকোনও  আফিম ব্যবসা বিরেধী আন্দোলনের পক্ষে নন, এ কথা সরাসরি জানাতেও যেমন পারছেন না, তেমনি আবার জনগণের ইচ্ছেও অমান্য করতে পারছেন না এ বড় আজব কুদরতি
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এই কমিশনে সদস্যতা মোট নয় সদস্যের মধ্যে ভারতীয় সদস্য থাকার কথা দুজনের ভারত সচিবকে দুজন সদস্য মনোনীত করতে বলা হল তত্কালীন বাঙলার লেফটেনেন্ট গভর্ণর ম্যাকডোনেল জানালেন, ভারতীয় নেতারা আফিম ব্যবসা বিরোধিতা পছন্দ করেন না, তবে তাঁরা পার্লামেন্টের রাডিক্যাল সদস্যদের ভারতবন্ধু বলে মান্য করেন There is no Bengali whom I would recommend to your Excellency for nomination to the Opium Commission. There are several who are of the standing requisite, and whose views on the question are reasonable, such as Sir Jotendro Mohun Tagore and Sir Romesh Chunder Mitter.  But they will not themselves, or run the risk of putting themselves, into opposition to the anti-opiumists, who are at the same time, like Mr. Caine, M. P. Congress men.  They condemn the antiopium agitation, but will not oppose it at the risk of alienating their English supporters in “Congress” matters.
সে সময়ের আগে প্রায় এক শতক ধরে সত্যি সত্যিই কলকাতা এবং মুম্বাইএর শহরের কোনো না কোনও  উদ্যমী ধনী পরিবার হয় আফিম, নয় নীল অথবা নুনের ব্যবসা অথবা রপ্তানির কাজে সরাসরি জড়িয়ে ছিলেন সমাজে তাঁদের মতামত এতই গুরুত্বপেত যে, সে সময় ব্রিটিশ ভারতের রাজধানী কলকাতাতে কোনও  বাঙালিই সেই লবির বিরুদ্ধাচরণ করতে রাজি হননি এটাই বাস্তব যে, ভারতীয় সমাজ-রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা যতীন্দ্র মোহন ঠাকুর অথবা রমেশ মিত্ররমত গুরুত্বপূর্ণ সদস্যও আফিমপন্থীদের প্রতীকী বিরুদ্ধাচরণ করতে পারেন নি তাঁদের কাছে প্রস্তাব গেলে তাঁরা সরাসরি না করে দিয়েছেন রামমোহন, দ্বারকানাথের আগেও কলকাতার নামী পরিবারগুলি জমিদারি, গোমস্তাগিরি, দেওয়ানি, বেনিয়ানি আর মুতসুদ্দিগিরি করে, যে সনাতন ভারত মারার ব্যবসার মুখপাত করে গিয়েছেন, সেই ট্রাডিশন বজার রেখে ভারতের জমিদারদের একতা, ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশনের সদস্যরা নীলকরদের কৃতকর্মের সমালোচনা করলেও, আফিমবিরোধী কমিশনের সদস্য হতে পারেন নি তাঁরা সরাসরি মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন

এর সঙ্গে শুধু কয়েকটি শুকনো তথ্যের জন্য বলা যাক, দুর্জয় বাঙালিদের মুখলুকোনও  প্রত্যাখ্যানে ভারতের ভাইসরয় তখন দ্বারভাঙার মহারাজা লক্ষ্মীশ্বর সিংএর দ্বারস্থ হলেন তবে দ্বারভাঙার মহারাজের কোনও  প্রজাই আফিম উত্পাদনে যুক্ত ছিলেন না লক্ষ্মীশ্বর নিজে জমিদারদের সংঘ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য এবং বিদেশে যথেষ্ট পরিচিত মুখ তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের অন্যতম পৃষ্ঠপোষকও বটে রয়েল কমিশনে সদস্য হওয়ার সময় তিনি ভাইসরয়কে এডাভাইসারি গ্রুপ সুপ্রিম লেজিসলেটিভ কাউন্সিলেরও সদস্য ছিলেন ম্যকডোনেল তাঁর পক্ষ থেকে মহারাজার নাম গুরুত্বসহকারে সুপারিশ করলেন, The only man of sufficient standing and strength of character whom I know to be willing to take a nomination to the Opium Commission is the Maharajah of Durbhungah. His views are in favour of the maintenance of the opium revenue; and I think he would assert these views on the Commission, though I am not prepared to say that the anti-opiumists and pro-Congress people, such as Mr. Caine, may not influence him. But I should be disposed to run that risk, and I should be very glad to see Durbhungah get some mark of your Excellency’s confidence… [H]e is a man of wide influence here, and I think he can be, if he likes, of great help to us. He and I are personally good friends and I find him very reasonable,… সুপারিশপত্র থেকে পরিস্কার তত্কালীন রাজনীতিতে মহারাজার গুরুত্ব কতখানি তবে সরকারিভাবে বলা হচ্ছে রয়েল কমিশন ভারতে ভ্রমণ কালে মহারাজার বুকের অসুখ বেড়ে যাওয়ায় তাদের সঙ্গে ঘুরতে পারেন নি। না কংগ্রেসিদের নানান চাপে তিনি তাদের সঙ্গে ভ্রমণ করতে চাননি তা আজ বলা মুশকিল দ্বিতীয় মনোনীত সদস্য ছিলেন গুজরাটের জুনাগড় রাজত্বের প্রাক্তণ প্রধাণমন্ত্রী হরিদাস বিহারিদাস ব্রিটিশ সরকার তাঁকে এই কমিশনে নিয়েছিল মালব আফিম এলাকার উত্পাদক-ব্যবসায়ীদের খুশি করতে, তবুও হরিদাসের রাজত্বও কিন্তু আফিম উত্পাদনে যুক্ত ছিল না