Tuesday, June 20, 2017

না, গোর্খাল্যান্ডকে আমার পূর্ন সমর্থন নয়

Olof Karlssonএর লেখা। Dipankarদা কিছুটা আমাদের, ছোটলোকেদের বেঁচেবর্তে থাকার উদ্বেগের কথা মিশে আছে এই লেখায়। তাই নিলাম। ধন্যবাদ ওলোফ-
না, আমি গোর্খাল্যান্ডকে আমার পূর্ণ সমর্থন দিতে পারছি না। গোর্খাল্যান্ডের দাবি যদি শুধুই দার্জিলিং জেলার পাহাড়াঞ্চলের ব্যাপারে হত, তালে সমর্থন করতাম। গোর্খাদের যে একটা আলাদা রাষ্ট্রের দাবি ন্যায্য, এই ব্যাপার মানছি; কিন্তু গোর্খাদের ডুয়ার্স চাই, শিলিগুড়ি চাই ইত্যাদি, যে এলাকায় গোর্খারা সংখ্যালঘু এবং বাঙ্গালি আর আদিবাসীরা সংখ্যাগুরু।
আজকে দেখি অঞ্জন দত্ত ইত্যাদি কলকাতা এবং দিল্লীর ভদ্রলোক আঁতেল ব্রিগেডের সদস্যরা এই দাবিকে পূর্ন সমর্থন দিচ্ছে। বেশ, কিন্তু তাও প্রশ্ন থাকে।
বঙ্গাল খেদাও বা দহকারে যাদের মারা হয়েছিল, তাদের জন্য কি তোমরা গলা উঠিয়েছো? তাদের নিয়ে সিনেমা বানালে? আচ্ছা, আসাম আর মেঘালয় ছাড়লাম। কতবার তোমরা দন্ডকারণ্য এবং মরিচঝাঁপির কথা ভেবেছো?
এর সাথে গোর্খাল্যান্ড দাবির সম্পর্ক কি? ব্যাপার হলো যে অঞ্জন দত্ত এবং বাকি সব আঁতেলরা যে কথা বলে, যে দার্জিলিং জেলা শুধু গরমের ছুটি কাটাবার জায়গা, তা ঠিক নয়। পাহাড়ের বাইরে, ভর্তি বাঙালি এবং আদিবাসী দার্জিলিং জেলায়। আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ির কথা বাদ দিলাম। এইসব এলাকায় গোর্খারা ২০%এর চেয় বেশি কোথাও নয়। এবার ভেবে নেবেন না এরা সবাই আপনাদের ভদ্রলোক সমাজের সদস্য, একেবারেই নয়।
গোর্খাল্যান্ড হলে কি মনে হয় যে শান্তি আসবে? ২০০৮এ যখন গোর্খা আন্দোলন হয়, তখন কিন্তু গোর্খাদের সাথে আদিবাসী এবং বাঙালিদের মারামারি লেগে গেছিল ডুয়ার্সে। গোর্খাদের সব দাবি মেনে নিলে কি আপনাদের মনে হয় যে ওখানকার বাঙালী এবং আদিবাসীরা চুপ থাকবেন?
আর দাঙ্গা লাগলে আপনারা কাদের দিকে যাবেন? ইতিহাস কিন্তু দেখায় বাঙালিদের যখন খেদানো হয়, সে আসাম হোক, কি মেঘালয় হোক কি পশ্চিমবঙ্গে; আমাদের 'সভ্য সমাজ' কিছুই বলে না। উল্টে তখনো যারা খেদায়, তাদের হয়ে কথা বলে অথবা দন্ডকারন্যে বা মরিচঝাপির মত কেসে, নিজেরাই খেদায় নিচু জাতি এবং গরিব মানুষকে।
আপনারা কি তখন দায়িত্ব নেবেন? নিতে পারবেন না তো? তাহলে চুপ থাকুন। ঠিক যেমন ভাবে পাহাড়ের গোর্খাদের উপর আমাদের মতামত চাপিয়ে দেওয়া ভুল মনে করি, তেমন ভাবেই ডুয়ার্সের মানুষের অস্তিত্ব ভুলে গিয়ে তাদের এই ব্যাপার থেকে বর্জন করাটা একটা বড় অপরাধ। জানি আপনাদের কাছে পুরোটাই একটা তামাশা এবং এইসব বক্তব্য শুধুই ভাঁওতা, যে আপনাদের দক্ষিন কলকাতার আঁতেল সার্কেলে নিজেদের একটু 'woke' প্রমান করার একটা যাত্রা, কিন্তু ভুলে যাবেন না যে অনেক লোকের জীবন এর উপর নির্ভর করে।

No comments: