Thursday, November 14, 2019

মুঘল আমলে জায়গির আবেদনের উদাহরণ

সূত্র উইলিয়াম আর্ভিন - আর্মি অব দ্য ইন্ডিয়ান মুঘলস
জনৈক খ্বাজা রহমতুল্লাকে কোনও সুবা থেকে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তিনি নতুন জায়গিরের দাবিতে দরবারের হাজির হলেন। দুটি রাজস্ব দপ্তরের একটির উচ্চতম আধিকারিক দেওয়ানিতন, হকিকত বা তথ্য বিবরণ (Statement of Facts) জারি করলেন নিম্নরূপে(B.M. No 6599, foil. 156a to 157b)
Statement (Haqiqat)
Khwajah Rahmatullah, son of Khwajah Ahmad, a native of Balkh, who was attached to the standards in Province So-and-so, having come to the Presence in pursuance of the exalted orders, and the jagu which, up to such-and-such a harvest, was held by him in the said Province, having been granted to So-and-so, in this matter what is the order as to the tankhwah jagir of the above-named.
Presentation (মুলাজামাত)
Day so-and-so, month so-and-so
Offering (নজর)
৯ মোহর এবং ১৮ টাকা
এই ধরণের হকিকত/আবেদন প্রাথমিকভাবে দেওয়ানিতন স্বীকার করলে এটি দেওয়ানিআলার(প্রধান উজির) কাছে প্রেরণ করা হয়। তারপর হকিকতটি সম্রাটের সম্মুখে উপস্থিত করা হয়। যদি এই ধরণের জায়গিরের অনুরোধ মান্য করা হত তাহলে উজির এই আবেদনের ওপর লিখতেন 'তনখোয়ার মাধ্যমে পবিত্র এবং মহৎ এই জায়গিরটি অমুক ফসলি সাল থেকে বরাদ্দ করা হল'। এই আবেদনপত্রটি প্রামাণিক দলিল হিসেবে দেওয়ানিতনের প্রধান মুন্সির কাছে যেত, যিনি এর ওপরে লিখতেন সিয়াহা দাউল বা স্থূল অনুমান(Rough Estimate) যা নিম্নে বর্ণিত হল
স্থূল অনুমান
বলখ অঞ্চলের খ্বাজা আহমেদের পুত্র খ্বাজা রহমতুল্লা। তিনি দরবারের আশীর্বাদ নিয়ে অমুক সুবার কর্মসূত্রে পাবেন
১০০০ জাট
২০০ সওয়ারি, সওয়ার
দাম মাধ্যমে প্রাপ্তি ৩৪ লক্ষ(পদাতিকদের জন্যে ১৮ লক্ষ এবং বাহিনীর জন্যে ১৬ লক্ষ মোট ৩৪ লক্ষ)
চতুস্পদ পশুর খাদ্য(খুরাকিদুয়াব) তাকে দেওয়া হবে।
অমুক সুবার অমুক পরগণার বরাদ্দ ২০ লক্ষ দাম
অমুক সুবার অমুক পরগণা্র বরাদ্দ ১৪ লক্ষ দাম
যে জায়গিরদার ১০০০ পদাতিক পাচ্ছেন, তার বরাদ্দ মাত্র ২০০ ঘোড়া। ফলে এটা পরিষ্কার তিনি তৃতীয়স্তরের হাজারি। মনসবদারির বেতন তালিকা অনুযায়ী তাকে ১৮ লক্ষ দেওয়া হল এবং সওয়ারের জন্যে দেওয়া হল ৮০০০ দাম করে ১৬ লক্ষ মোট ৩৪ লক্ষ।
এই ধরণের আবেদনেরTop of FormBottom of Form দাউল বা হিসেব নথিবদ্ধ করতেন পঞ্জিকা-লেখক(ওয়াকিয়া-নবিশ)। তিনি এই আবেদনটি পঞ্জিকায়(ওয়াকিয়া) লিপিবদ্ধ করে একটা স্মারকলিপি(ইয়াদদাস্ত) তৈরি করতেন। এই আবেদন অনুমোদনের জন্যে আরেকটি নির্দেশনা(আর্জিওমুকরর, দ্বিতীয় আবেদন) তৈরি হত। হকিকত আর দাউলে লিখিত তথ্যগুলি ইয়াদদাস্তে নতুন করে লিখিত হত। এর ওপরে উজির লিখবেন, ‘এটির সঙ্গে পঞ্জিকার (ওয়াকিয়া) তুলনা করা হোক এবং তারপরে অনুমোদন দপ্তরে(আর্জিমুকরর)এ পাঠানো হোক’। এইটির মার্জিনের পাশে ওয়াকিয়ানবিশ লিখবেন ‘এই ইয়াদদাস্তটি মূল ওয়াকিয়ার সঙ্গে মেলানো হল’। এরপরে অনুমোদন দপ্তরের দারোগা লিখবেন, ‘অমুক তারিখে ওমুক মাসে ওমুক বছরে এটি অনুমোদন দপ্তরে পৌঁছলে এই নির্দেশটি মঞ্জুর হল।’ দরবার থেকে বের হয়ে সুবায় গিয়ে এই নির্দেশের ভাগ্য কী হয় সেটা আর এখানে আলোচনা করলাম না।

No comments: