Friday, November 29, 2019

পারসিক অভিধান এবং বাংলা সাহিত্যে যবন-দোষ খণ্ডন

বিদ্যাসাগর মশাইয়ের শিক্ষক, জয়গোপাল তর্কালঙ্কারের পারসিক অভিধানের জবানবন্দী এবং প্রথম পাতা।জয়গোপাল অভিধানটা লিখেছিলেন বাংলা থেকে পারসিক শব্দ বাদ দেওয়ার অভিপ্রায়ে। সঙ্গে রইল গুরুর পদাঙ্ক অনুসরণকারী বিদ্যাসাগর মশাইয়ের যতদূরসম্ভব পারসিক বর্জিত গদ্য নমুনা।
বিদ্যাসাগর মশাই তার আগের সময়ের সাহত্যিক প্রকাশভঙ্গী বদলে আধগজি সংস্কৃত অনুপ্রাসওয়ালা বাংলা শব্দ লেখা শুরু করলেন।তাঁর ১০০ বছর আগের রামপ্রসাদ লিখেছেন 'তারা গণ্ডযোগে জন্ম আমার॥ গণ্ডযোগে জন্ম হলে সে হয় যে মা-খেকো ছেলে। এবার তুমি খাও কী আমি খাই মা, দুটার একটা করে যাব॥ ডাকিনী যোগিনী দুটা, তরকারি বানায়ে খাব। তোমার মুণ্ডমালা কেড়ে নিয়ে, অম্বলে সম্ভার চড়াব॥ অসামান্য সহজ সরল অথচ জটিল তাত্ত্বিক প্রকাশভঙ্গীওয়ালা বাংলা সাহিত্যের ভাষা ব্যবহার পালটে তথাকথিত সাধুভাষা চালাতে উদ্যোগী হলেন বিদ্যাসাগর মশাই এবং তাঁর উত্তরাধিকারীরা।
বিদেশি পারসিক ভাষা মুক্ত শুদ্ধ বাংলা তাঁরা চাইলেন। মুখবন্ধ লেখা হল বাংলা এবং শুদ্ধ ইংরেজিতে। ইংরেজি বিদেশি ভাষা হিসেবে পরিগণিত হল না। আজও হয় না।
জয় নবজাগরণের জয়।

No comments: