Saturday, February 24, 2018

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা - ১৮৯০এর ভারতজোড়া প্লেগ মহামারী২ - কলকাতা চিকিৎসাবিদ্যার ঔপনিবেশিক বাধ্যবাধকতা - যেপথের প্রভাব পড়বে উপনিবেশপরবর্তী প্রশাসনে

কলকাতার পশ্চিম প্রদত্ত যুক্তিবুদ্ধি সম্পন্ন ভদ্রলোকেরা সমস্যা হল, তারা পুণের প্রতিবাদীদের মত সরাসরি প্লেগ বিরোধী সরকারি উদ্যমের কোন বিরোধিতা করতে পারছে না। কারণ উপনিবেশ তাদের ক্ষমতার কেন্দ্রে টেনে নিয়েছে – বহুকাল ধরে তারা ক্ষমতার অংশিদার। যদিও পলাশীর পরে গোলাম হুসেন তবাতবাই বলছেন বাংলার অভিজাতরা মুন্সির বেশি ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে চাকরি পেত না, এখন কিন্তু তারা বেশ কিছু উচ্চপদে আরোহন করছেন – সত্যেন ঠাকুর আইসিএস হয়েছেন, বঙ্কিমচন্দ্র ডেপুটি হয়েছেন। কলকাতায় সরকারি মদতে এলোপ্যাথিক চিকিতসা শিক্ষণ কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। এখান থেকে পড়াশোনা করে বহু বাঙালি সারা ভারতে চিকিৎসক হিসেবে ছড়িয়ে গিয়েছে। তামিজ খান নিজে লাহোরে চিকিৎসকের চাকরি করেছেন।
অন্যদিকে বম্বে বা দিল্লি বা লাহোরে বহু পরে ঔপনিবেশিক প্রশাসন প্রকল্প হয়ে ঢুকছে। বহু এলাকা তখনও ঔপনিবেশিক নিগড়ের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। মানুষ অন্যরকমকরে ভাবতে পারছে। দিল্লীতে অনেক পরে উপনিবেশ পৌঁছবে। তখনও কিন্তু দিল্লির পুরাতনি মহল্লার ইউনানি চিকিৎসক পরিবার, তাদের জ্ঞান নিশ্চিহ্ন হয়ে যান নি।
কিন্তু কলকাতার শিক্ষিত চিকিৎসকেরা এলোপ্যাথিক ওষুধকে রাষ্ট্রীয় চিকিতসা হিসেবে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন, তাদের রাষ্ট্রীয় নিদানের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা নেই। ফলে ভদ্রলোক বাঙালি ডাক্তারদের প্রয়োজন হল দুটি রাস্তা বের করা, প্রথমটি আধুনিক পশ্চিমি চিকিৎসাবিদ্যা বিজ্ঞানের আওতার মধ্যে দাঁড়িয়ে কিভাবে প্লেগের সমস্যাকে সমাধান করা যায় সে পথ বার করা, এবং দ্বিতীয়টি ক্ষমতাকে না চটিয়ে প্লেগ নিয়ে সরকারি আয়োজনের যতটা পারা যায় অন্যপথ নির্ণিয় করা। তারপরে কি ভাবে কলকাতার বাঙালি এলোপ্যাথি চিকিৎসকেরা এই অবস্থাটা সামাল দিলেন সেটা এই লেখার অংশ নয়, কিন্তু সে সময়ের ঔপনিবেশিকতায় পশ্চিমি মুক্তবুদ্ধিতে প্রভাবিত শিক্ষিত বাঙালির রাজনৈতিক অবস্থাটা বুঝে ওঠা জরুরি।
ঠিক এই জন্যেই ১৯৪৭এর বাংলা ভাগের পরে যে সব ঔপনিবেশিক, আধা ঔপনিবেশিক ক্ষমতাচর্চা কেন্দ্র তৈরি হল নেহরুর জামানায় নানান বাঙালি প্রশাসক যেমন মেঘনাদ সাহা, প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ, অশোক মিত্র(আইসিএস) নেতৃত্ব, তারা ঔপনিবেশিক ইওরোপিয় বিজ্ঞানকেই নিজেদের পথ ধরলেন এবং রাষ্ট্রীয় পথ তাইই নির্দিষ্ট হল।
(প্রবন্ধের সিদ্ধান্ত আমাদের, কারিগরদের সংগঠনের, প্রজিতবিহারীর নয়)

উপনিবেশ বিরোধী চর্চা - ১৮৯০এর ভারতজোড়া প্লেগ মহামারী১ - কলকাতা চিকিৎসাবিদ্যার ঔপনিবেশিক বাধ্যবাধকতা - যেপথের প্রভাব পড়বে উপনিবেশপরবর্তী প্রশাসনে

গোটা ১৮৯০এর দশক জুড়ে বম্বেতে শুরু হয়ে পুণে, কলকাতা, করাচি, দিল্লীতে বিপুলাকারে প্লেগ মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়ে। প্রজিতবিহারী মুখার্জী, ন্যাশনালাইজিং দ্য বডি, দ্য মেডিক্যাল মার্কেট, প্রিন্ট এন্ড ডাক্তারি মেডিসিন বইতে খুব গুরুত্বপূর্ন কিছু দৃষ্টভঙ্গী তুলে ধরছেন, কিভাবে বিভিন্ন শহর প্লেগ মহামারী প্রতিরোধ করতে কোমর বাঁধছে। কিভাবে উপনিবেশ ‘বৈজ্ঞানিক’ভাবে মানুষের দেহকে আধিকার করে প্লেগ মহামারীকে মোকাবিলার চেষ্টা করে সেই বর্ণনা দিয়েছেন প্রজিত তাঁর বইতে। পুণের জনগণের একটি অংশ, চাপেকর ভায়েরা প্লেগ বিরোধী সরকারি টিকা করণের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে, ঔপনিবেশিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে স্যানিটারি কমিশনার ওয়াল্টার চার্লস র্যা ন্ডকে হত্যা করে, সাম্রাজ্য বাল গঙ্গাধর তিলককে ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে লেখার জন্যে ১৮ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করে। স্থানীয়দের একাংশ মনে করতে শুরু করে প্লেগ মহামারী নিরাময়ের নাম করে ঔপনিবেশিক সরকার তাদের ওপরে ঔপনিবেশিক নিগড় চাপিয়ে দিচ্ছে। যদিও এর বাইরেও ভাবার মানুষ ছিল। কিন্তু উপনিবেশি বিরোধিতার একটা সচেতন সূত্র কিন্তু পাওয়া যাচ্ছে বম্বে আর পুণায়।
অন্যদিকে গাই এটিওয়েল জানাচ্ছেন ইউনানি টিবেরা দিল্লি এবং পাঞ্জাবে মহামারী রুখতে ঔপনিবেশিক এলোপ্যাথিক চিকিৎসার বিকল্প হিসেবে পারম্পরিক জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে কিকরে এই মহামারী থেকে উদ্ধার পাওয়া যায়, সে বিষয়ে গবেষণা করতে শুরু করেন। এবং তার ফলও ফলতে শুরু করে।
উল্টো দিকে ক্ষমতা কেন্দ্র কলকাতা, দিল্লি না বম্বে বা পুণের থেকে আলাদাভাবে দাঁড়িয়ে প্লেগ রোখার চেষ্টা করে। তারা দিল্লির ইউনানি চিকিতসকেদের মত প্লেগের আলাদা নিদান খোঁজে নি, চাপেকরদের বা তিলকের মত ঔপনিবেশিক হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় নি। কারণ ততদিনে বাংলায় নবজাগরণের মত একটি সাম্রাজ্যবাদী প্রকল্প সফল হয়ে গিয়েছে। পশ্চিমি যুক্তিবাদ মোটামুটি বাংলার, বলাভাল কলকাতার ইংরেজি শিক্ষিত ভদ্রলোকেদের মধ্যে থানা গেড়ে বসেছে। আমরা মৌলভি তামিজ খানের উদাহরণে দেখেছি, কিভাবে তিনি নানান ঔপনিবেশিক প্রকল্পে আগ্রহভরে যুক্ত হয়েছেন তাঁর মত করে। মেয়েদেরে বিয়ের বয়স নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন পশ্চিমি ঔপনিবেশিক বৈজ্ঞানিক, যুক্তিবাদীতার সূত্র ধরে। ইওরোপের চোখে সামাজিক প্রগতি বলতে যা বোঝায় সেই আন্দোলন সফল করতে ন্যাশনাল এসোসিয়েশন ফর সোসাল প্রোগ্রেস ইন ইন্ডিয়া মত দলের সক্রিয় কর্মী হয়ে যুক্ত থেকেছেন।

চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস২ - খান মৌলভি তামিজ খান বাহাদুর

স্নাতক হওয়ার পরে প্রথম কুমায়ুন তার পরে লাহোরে চাকরি পান তামিজ খান। ১৮৪৫-৪৬ সালে প্রথম ব্রিটিশ-শিখ যুদ্ধজে হার্ডিঞ্জ শিখ প্রতিরোধ চূর্ণ করেন এবং এক দশকের মধ্যেই শিখ সাম্রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু মহারাজা রঞ্জিত সিংএর প্রাক্তণ রাজধানী লাহোর তখনও কিছুটা হলেও প্রতিরোধ খাড়া করছিল। ফলে যুবক তামিজের কাছে লাহোর বাস বিপজ্জনক সময় হিসেবে চিহ্নিত হয়। কিন্তু এখানেও তামিজ বিপুল সফলতা অর্জন করেন। দ্য ইংলিশম্যান তার মৃত্যুর খবরে লিখছে, তিনি লাহোরে একটি দাতব্য চিকিতসালয় স্থাপন করেন এবং made European medicine highly popular among the Sikhs
১৮৫২ সালে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের হাউস ফিজিশিয়ান হিসেবে ফিরে আসেন। দেশিয় ভাষায় শারীরবিদ্যা আর দেহব্যবচ্ছেদের চিকিৎসক-শিক্ষক মধুসূদন গুপ্তের মৃত্যুতে তিনি সেই পাঠ পড়ানো শুরু করেন। তার কাছাকাছি সময়ে শিব চরণ কর্মকারের দীর্ঘ অসুস্থতার জন্যেও তাকে অতিরিক্তভাবে মেটিরিয়া মেডিকার পাঠ দিতে হয়। প্রসন্ন কুমার মিত্রের মৃত্যুতে তামিজ খানকে চেয়ার অব মেডিসিনে মনোনীত করা হয়। মেডিক্যাল কলেজ থেকে দেশিয় ভাষায় পাঠ আলাদা করে শিয়ালদায় ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুল হিসেবে চালু করা গেলে সেখানকার প্রথম চিকিৎসক হিসেবে যোগ দেন তামিজ খান।
তাঁর বন্ধুর মতই তিনি তার চিকিৎসাবিদ্যার কাজ ছাড়াও বিজ্ঞানের অন্যান্য বিষয়ে উৎসাহ দেখিয়েছেন। ১৮৬৭ সালে তিনি নিউ সিড্যানহ্যাম সোসাইটির করেস্পন্ডিং মেম্বার হন। এছাড়াও লন্ডনের এপিডেমিওলজিক্যাল সোসাইটি এবং অস্ট্রেলিয়ান মেডিক্যাল জার্নালের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন। কলকাতায় কনসেন্ট বিলে মেয়েদের বিবাহের বয়স নিয়ে বিতর্ক উঠলে যে সব ভারতীয় ডাক্তার মেয়েদের বিবাহযোগ্য হয়ে ওঠার জন্যে বয়স বাড়াবার সুপারিশ করেন তামিজ খান তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন। ন্যাশনাল এসোসিয়েশন ফর সোসাল প্রোগ্রেস ইন ইন্ডিয়া নামক সমিতির সদস্যও ছিলেন। ক্যালকাটা মেডিক্যাল সোসাইটির পত্রিকায় নিয়মিত ডাক্তারি বিষয়ে লিখতেন। কানাইলাল যেমন ছাত্রদের সচিত্র এবং হাতে কলমে দানের জন্যে ওষধি গাছের বাগান করেন, তামিজ খান তেমনি ক্যাম্পেল মেডিক্যাল তার ছাত্রদের জন্যে স্কুলে দেহব্যবচ্ছেদ এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গএর একটা জাদুঘর তৈরি করেন।
তবে তামিজ খানের প্রখ্যাতি ছাত্র তৈরি এবং তাদের ওপর প্রভাব ফেলার জন্যে। প্রখ্যাত ডাক্তার-লেখক  দুর্গাদাস করের পুত্র, রাধাগোবিন্দ কর তার জনপ্রিয়তম বইএর মুখবন্ধে লিখেছেন তিনি তার প্রখ্যাত পিতার বই লেখা সূত্রে বই লিখতে উৎসাহিত হন নি, তাকে উৎসাহ দিয়েছে তাঁর দুই শিক্ষক, কানাইলাল দে এবং তামিজ খান। মৃত্যুর কিছু পূর্বে ছাত্ররা চাঁদা তুলে ক্যাম্পবেল মেডিক্যাল স্কুলের এসেম্বলি হলে তাঁর একটি পুর্ণাবয়ব তৈলচিত্র স্থাপন করেন। খান বাহাদুর ছাড়াও সরকারি প্রচুর খেতাব পান।
দুমাসের ঘুষঘুষে জ্বরে তাঁর মৃত্যু হয়। অসুস্থতার সময় তার ছাত্র সূর্য কুমার সর্বাধিকারী চিকিৎসা করতেন। ঠিক যেমন করে সূর্য কুমার প্রখ্যাত ডাক্তার গুডিভের নামে চিহ্নিত হন, ঠিক তেমনি তামিজ খানের ছাত্র ১৮৭৯-৯৯ পর্যন্ত দেহব্যবচ্ছেদের শিক্ষক এবং পরে ভাইসরয়ের সাম্মানিক সহচিকিতসক, মৌলভি জাহিরুদ্দিন আহমেদ তার গুরুর স্মৃতিতে একটি জনপ্রিয় চিকিৎসা বিষয়ক পত্রিকা চালু করেন।
চিকিতসাবিদ্যা, ঔপনিবেশিক চিকিৎসা, তামিজ খান, গুডিভ চক্রবর্তী,

(প্রজিতবিহারী মুখার্জীর ন্যাশনালাইজিং দ্য বডি, দ্য মেডিক্যাল মার্কেট, প্রিন্ট এন্ড ডাক্তারি মেডিসিন থেকে)

চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাস১ - খান মৌলভি তামিজ খান বাহাদুর

ঔপনিবেশিক সময়ের ডাক্তারি চিকিতসাবিদ্যা(পশ্চিমি চিকিতসাবিদ্যা বোঝাতে ব্যবহৃত) প্রখ্যাততম চিকিৎসক-শিক্ষক ছিলেন খান মৌলভি তামিজ খান বাহাদুর(এখন থেকে তামিজ খান, (মৃ ১৮৮২)), কিন্তু চিকিৎসাবিদ্যার ঐতিহাসিকেরা তাঁকে উপেক্ষা করে গিয়েছেন। তাঁর সময়ের প্রখ্যাততম মধুসূদন গুপ্ত বা সূর্য কুমার গুডিভ চক্রবর্তীর মত তিনি বিখ্যাত হন নি।
তামিজ খানের জীবন সম্বন্ধে আমরা একমাত্র জানতে পারি তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু, কর্মসঙ্গী এবং বিজ্ঞানের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব রায় কানাই লাল দে বাহাদুরের বক্তৃতায়। তিনি কলকাতা মেডিক্যাল সোসাইটিতে তার সম্বন্ধে বলেন। এটি পরে ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল গেজেটে তাঁর স্মৃতি তর্পণ রূপে ১৮৮২ সালে ছাপা হয়। এই বক্তৃতায় তামিজ খানের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনের ছবি প্রায় অনুপস্থিত বলা চলে। এ প্রসঙ্গে বক্তৃতা থেকে একটা স্তবক তুলে দেওয়া যেতেই পারে, a man of vast reading and very valuable professional knowledge, he was simple and unassuming as a child।
তাঁর প্রথম জীবন সম্বন্ধে রায়বাহাদুরের ছোট্ট মন্তব্য তিনি প্রথিতযশা পরিবারের বড় হন এবং ক্রমশঃ স্থানীয় মুসলমান সমাজে বিখ্যাত হন। প্রবন্ধটি সূত্র মনে হওয়া স্বাভাবিক তিনি কলকাতা বা তার আশেপাশে জন্মান এবং কলকাতার কলিঙ্গ ব্রাঞ্চ স্কুলে পড়াশোনা করেন। তার পরিবার পরম্পরাগতভাবে মুন্সির কাজ করতেন বলে পরবর্তী জীবনে তিনি পারিবারিক উপাধি নিয়ে মুন্সী তামিজ খান হিসেবেও চিহ্নিত হয়েছেন (কয়েকদিন আগে আমরা পাঞ্জাবের অমুসলমান মুন্সি চন্দ্র ভান ব্রাহ্মণ আর তার সময় নিয়ে আলোচনায় দেখেছি কিভাবে মুসলমান এবং অমুসলমান মুন্সি মুঘল দরবারে/প্রশাসনে যৌথভাবে কাজ করেছেন)। হয়ত পরম্পরা মেনে তামিজ খানের প্রথম জীবনে কিছুটা ফারসি, কিছুটা বাংলা, হয়ত সংস্কৃত পাঠ করতে হয়েছে, মনে হয় না ইংরেজি ছিল তার পাঠতালিকায়। গুডিভ চক্রবর্তী সূত্রেও জানতে পারছি তের বছর আগে তিনি ইংরেজির ধারেপাশে ছিলেন না।
বিদ্যালয় ছাড়ার পরে কলকাতার একটি ওষুধের দোকানে কাজ নিলেন। দোকানে ওষুধ তৈরির কাজের অভিজ্ঞতার সূত্রে, তিনি সরকারি ওষুধ দোকানে কম্পাউন্ডার হিসেবে কাজ জুটিয়ে নিলেন। দোকানের ব্যবস্থাপক ড গ্রান্ট তামিজ খানের উৎসাহ এবং দক্ষতা দেখে ড এফ জে ময়াটের কাছে সুপারিশ পত্র লিখে দিলেন। ময়াটের সুপারিশে তিনি কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইংরেজি শ্রেণীতে ভর্তি হন। কলকাতার দ্য ইংলিশম্যান তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য রূপে লিখল, by diligence and perseverance, the young Tamiz mastered the difficult science of medicine and acquired a mastery over the English language। প্রশাসক হেনরি হার্ডিঞ্জের চোখে পড়লেন তিনি। শ্রেণীতে প্রথম হওয়ায় তিনি হার্ডিঞ্জ পুরষ্কারও পান। ধাত্রীবিদ্যায়ও পর পর দুবছর তিনি গুডিভ জলপানি পান।

(প্রজিতবিহারী মুখার্জীর ন্যাশনালাইজিং দ্য বডি, দ্য মেডিক্যাল মার্কেট, প্রিন্ট এন্ড ডাক্তারি মেডিসিন থেকে)

চিকিৎসা শাস্ত্রের ইতিহাস৩ - ইলাজাতইদারাশিকো - নুরআলদিন শিরাজি

ইলাজাত...র সে যুগের জ্ঞানচর্চার অন্যতম সংশ্লেষী উদাহরণ। এটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিল সে সময় ভারতীয় চিকিতসাশাস্ত্রলোকের যে ইন্দো-পারসি জ্ঞানভাণ্ডারগুলি (বর্তমান ও অতীতের) ছিল, সেইগুলি পুঁথিতে সঙ্কলিত হয়েছে। মুঘল শাহজাদা দারাশুকো ভারতীয় সুফি পরম্পরার অন্যতম কারিগর এবং উৎসাহী মানুষ ছিলেন, এবং তাঁর উদ্দেশ্যেই এই পুঁথিটি উতসর্গিত হয়েছে। দারাশুকো উপনিষদের পার্সি অনুবাদ, শীররইয়াকবর-এ উৎসাহ দিয়েছিলেন। এছাড়াও তিনি পার্সি ভাষায় লিখত সুফি সাধনার মুসলমান এবং হিন্দু তত্ত্ব পরম্পরার তুলনামূলক আলোচনার পুঁথি, মাজমঅল বাহারাঁ(১৬৫৫) লেখেন।
শিরাজির পরিবারও ভারতীয় জ্ঞানচর্চার অন্যতম ধারক-বাহক ছিলেন। তাঁর শ্বশুরবাড়ির আত্মীয় ফৈজী ১৫৮৭ সালে, ভাষ্করের লীলাবতী অনুবাদ করেন আকবরের উতসাহে। এছাড়াও বেদান্ত দর্শন বিষয়ে সারিকঅলমারিফাত লেখেন ইশরাকি ধর্মতত্ত্ব ভিত্তি করে। আকবরের নির্দেশে অথর্ববেদ অনুবাদের যে প্রকল্প নেওয়া হয় ফৈজী সেটির সঙ্গেও জড়িয়েছিলেন, কিন্তু সে কাজ যতদূর সম্ভব শেষ হয় নি। আকবরের নির্দেশে মহাভারতের ফারসি অনুবাদের ভূমিকা লেখেন আবুলফজল এবং আইনিআকবরিতে ভারতীয় নানান পরম্পরার পরিচয় দেন তিনি।
মুঘল ভারতে ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্র নিয়ে বিপুল পারসি পুঁথি রচিত হয়। সুলতানি সময় থেকে এই কাজটি উর্দু ভাষায় শুরু হয় এবং ধারাবাহিকভাবে চলে ব্রিটিশ আমলের আগে পর্যন্ত। উর্দু আর ফারসি ভাষায় ইসলাম-পূর্ব সময়ের চিকিৎসা শাস্ত্র এবং বিজ্ঞান বিষয়ক শাস্ত্র অনুবাদ মুঘল আমলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্ম বলে আজও বিবেচিত হয়। বিশেষ করে চিকিৎসা শাস্ত্র/জ্ঞান অনুবাদের অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য ছিল স্থানীয় ভাষায় বিদেশি ওষুধ, গাছগাছড়ার প্রতিস্থাপনের দেশিয় জ্ঞান অর্জন। ভারতীয় চিকিৎসাশাস্ত্র বিষয়ে পারসি পুঁথি লেখেন শিরাজীর সমসাময়িক চিকিৎসক আমন আল্লা হান। তিনি মদনবিনোদএর অনুবাদ করেন। কয়েকটিতে ঔরঙ্গজেবের নাম জোড়া হয়, যেমন দারউইস মহম্মদের চিকিতসাশাস্ত্র বিষয়ে কাজ টিবইআউরঙ্গশাহী।

ইলাজাত...এর আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র ছিল ইসলামের ধার্মিক ও অধার্মিক পরম্পরার জ্ঞান ঐতিহ্যের পারস্পরিক সহাবস্থান। নুরয়ালদিন তার পুঁথিতে, নবি উল্লিখিত হাদিত(একটি শারীর বিজ্ঞান অন্যটি ধর্ম সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান) এবং ইসলামপূর্ব ইমাম এবং ধর্মতাত্ত্বিকদের বক্তব্য উল্লেখ করেছেন। এই পুস্তকে তিনি অষ্টম শিয়াপন্থী ইমাম আলিঅলরিদার সময়ে লিখিত রিসালাঅলদাহাবিয়া থেকেও উদ্ধৃতি তুলেছেন। যোগীরা কিভাবে নিঃশ্বাসের কাজকর্ম করেন, সে উল্লেখও শিরাজী করেছেন তার পুঁথিতে। সুফির কোন পন্থে তিনি বিশ্বাসী ছিলেন তার উল্লেখ নেই যদিও, এটা পরিষ্কার তিনি দারার অনুগামী ছিলেন। 

চিকিৎসা শাস্ত্রের ইতিহাস২ - ইলাজাতইদারাশিকো - নুরআলদিন শিরাজি

শিরাজির কাজ ইওরোপিয়দের নজর এড়ায় নি, বিশেষ করে যখন ইওরোপিয় মেটিরিয়া মেডিকা তৈরি হচ্ছে, সেই সময়টিতে। শিরাজির কাজের বহু সংস্করণ ছাপা হয়। শিরাজির পুস্তক আলফাজ... প্রথম ইংরেজিতে অনুবাদ করেন ফ্রান্সিস গ্ল্যাডউইন ১৭৯৩ সনে কলকাতায়, বাজারে এটির প্রথম মূল পার্সি সংস্করণ ছাপা হয়ে আসার বহু আগে। তিনি মুখবন্ধে লেখেন, ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের মেডিক্যাল বোর্ডের নির্দেশে, ‘কোম্পানির ব্যবহারের জন্যে’ এই কাজটি করেন।
১৮৩১ সালে মেজর ডেভিড প্রাইস ইলাজাতইদারাশুকো থেকে নাসিরই হুসরোর সম্পাদিত অংশ মানবদেহের সেন্স, সময় ও বস্তু নিয়ে কাজ অনুবাদ করেন। মুখবন্ধে তিনি লেখেন, a work of no common magnitude or importance […] and contains treatises, or discourses, not only on all the diseases […] but also on almost every subject within the compass of the human understanding. এই মুখবন্ধে বলা হয় সুরাটের ফরাসি কুঠিয়াল এম M. Bruys ফ্রান্সের রাজার গ্রন্থাগারের জন্যে জন্যেও এটি নকল করেন। যে পুঁথিটি কুঠিয়ালের ব্যক্তিগত সংগ্রহে ছিল, সেটি ১৮০২ সালে বিবলিওথেক ন্যাশিওনাল দা পারিতে নিয়ে নেওয়া হয়।
শিরাজির ইলায়াজা... মুঘল আমলের সব থেকে ব্যাপ্ত চিকিতসাশাস্ত্র বিষয়ক কাজ। পারস্যের চিকিৎসাবিদ্যার ইতিহাসে এলগুড লেখেন, a gigantic work which rivals in quantity, if not in quality, the Canon of Avicenna or the Thesaurus of al-Jurjani। তার আকারের তুলনায় এই কাজটি খুব কম সময়ে লেখেন সিরাজি। শিরাজি ইলায়াজা... লেখা শুরু করেন ১৬৪২-৪৩ সনে এবং এটি চার বছরের মধ্যে ১৬৪৬ সনে শেষ হয়। এই বইতে তার চিকিৎসা জীবভনের নানান অভিজ্ঞতাও লেখেন। সঙ্গে তার সময়ের আগের সময়ের জ্ঞানীদের কিছু জ্ঞানও তিনি লিপিবদ্ধ করেন। Fabrizio Spezialeর প্রবন্ধ The Encounter of Medical Traditions in Nūr al-Dīn Šīrāzī’s ’Ilājāt-i Dārā Šikōhī তে বলছেন, এই প্রবন্ধটি লেখার সময় তাঁর ইলায়াজা...র একটি সংস্করণ দেখেন তেহরানের মজলিস গ্রন্থাগারে। এই বইতে বেশ কিছু ছবি আঁকা আছে, বিশেষ করে representations of the human body indicating the spots for cupping, phlebotomy and cauterization। 

চিকিৎসা শাস্ত্রের ইতিহাস১ - ইলাজাতইদারাশিকো - নুরআলদিন শিরাজি

মুঘল শাহজাদা দারাশিকোর প্রতি উদ্দেশ্য করে চিকিতসাবিদ্যা বিষয়ক এই বইটি উতসর্গ করেন মুঘল আমলের প্রখ্যাত চিকিৎসক নুরআলদিন শিরাজি। বইটির অন্য দুটি নাম টিবইদারাশিকো, দাহরাই দারাশিকো। বইটিতে সে সময় মুঘল রাজত্বে ইস্লামি চিকিতসাশাস্ত্রীদের জ্ঞান সংকলন করা হয়েছে।
নুরআলদিন মহম্মদ আবদ আল্লা সিরাজি সপ্তদশ শতকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসক। জন্ম ভারতেই। যতদূর সম্ভব তাঁর পিতা ছিলেন ইরাণী হাকিম আয়ন অল মুলক শিরাজি(মৃ ১৫৯৫)। মায়ের দিকটাও ছিল ইরাণের প্রখ্যাত দার্শনিক, ধর্মতাত্ত্বিক জালালঅলদিন(মৃ১৫০২)এর পরিবার। আয়ন অল মুলক শিরাজি ছিলেন আকবরের দরবারের হেকিম এবং চক্ষুবিশারদ (অপথ্যালমোলজিস্ট)। নুরআলদিন শিরাজির মা আয়ন অল মুলক শিরাজি'র স্ত্রী ছিলেন আকবরের দরবারের দুজন গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক আবুলফজল আল্লামি এবং কবি ফৈজির বোন।
নুরয়ালদিন শাহজাহানের সময়ে দরবারে প্রবেশ করেন। সেখানে আবার তাঁর পিতার উপাধি আয়ানঅলমুলক আর্ষানো হয়। পরে আওরঙ্গজেবের সময় তিনি আগরার দেওয়ানইবুউতাত, রাজ প্রাসাদগুলির কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচিত হন।
চিকিৎসা শাস্ত্রের নানান বই লেখা ছাড়াও তিনি রুকাওয়াতই আবুলফজল এবং ফৈজির চিঠিপত্রের সকলন প্রকাশ করেন। এছাড়াও একেশ্বরবাদের তত্ত্ব তৌহিদ বিষয়ে পুস্তক মীরাটিব অল উজুদ লেখেন।
ইলাজাতই দারাশিকো ছাড়াও তিনি ফারসিতে শাহজাহানকে উতসর্গ করে লেখেন আলফাজঅলাদওয়িয়া - সে সময়ের প্রচলিত ওষুধের বিশদ বিবরণ।বইটির হাতিমা অধ্যায়ে চা, কফি এবং চিনাশেকড়বাকড় নিয়ে যা জ্ঞান, সে সবও লিখিত হয়। উনবিংশ শতক পর্যন্ত এর অনেকগুলি সংকলন প্রকাশিত হয়। সিরাজির অন্য একটি বইএর নাম আনিসআলমুয়ালিজান চিকিৎস বিষয়ক বিষয়ক সকলন। এ ছাড়াও আরবি আর পারসি চিকিতসাবিষয়ক লব্জগুলি নিয়ে একটি সংকলন লেখেন কোয়াস্তাসঅল আটিব্বা, এটি তিনি আমন আল্লা হানকে উতসর্গ করেন।
পরের কিস্তিতে আমরা দেখব, ইওরোপিয়রা কিভাবে শিরাজির কাজগুলি অনুবাদ করছেন বারংবার।

Friday, February 23, 2018

শ্রীরামকৃষ্ণের যৌনতা - সোমনাথ রায়ের লেখা

আমরা গুরুচণ্ডালিতে নেই।
Somnath অসাধারণ একটা লেখা লিখেছেন, রামকৃষ্ণর যৌনতা নিয়ে। যেহতু শেয়ার করতে পারছি না, তাই নকল করে দিলাম। অনুরোধ রইল এটিকে আরও বিস্তৃতি ঘটানোর।

গ্রাম বাংলাকে তার প্রযুক্তি, তার দর্শন, তার উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থা, তার ভাষা, কৃষ্টি সব বুঝতে গেলে তান্ত্রিক যৌনতা আর তার দর্র্শনকে বুঝতে হবে। ৭০ বছর আগে ভিক্টোরিয় পুরষতান্ত্রিক শুচিবায়ুতায় নবদ্বীপে রাধা ভাবে এক লোমশ গুরুদেবকে উদ্বাহু হয়ে নাচতে দেখে ওডিবিএলএর প্রণেতা আঁতকে উঠেছিলেন এবং তাঁকে নির্বিচারে সমর্থন করছেন চরম বাম বিনয় ঘোষ, সেই ঔপনিবেশিকতা আদতে পুরুষতান্ত্রিক ব্রাহ্মাচারের উদ্গার বই আর কিছু নয় - এই বোধটা না এলে গ্রাম-বাংলার আত্মার সঙ্গে মিল সম্ভব নয়।
বাংলার পরাজিত কৃষিসমাজ(লগে লগে গ্রামীন পরম্পরার শূদ্র-বৈশ্য উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থা যা প্রতিভূ) নিয়ে একমাত্র দ্বিমত রইল।
---
শ্রীরামকৃষ্ণের যৌনতা
শাক্যর একটা পুরোনো আলপটকা কমেন্ট নিয়ে অনেক ঝড় বইছে। কিন্তু সেগুলো বাদ দিয়ে এই টপিক অ্যাকাডেমিক দুনিয়ায় কিছু গুরুত্ব দাবি করে।
উইকি-তে একটা ইন্টারেস্টিং আলোচনা পাওয়া যায়- "রামচন্দ্র দত্তের শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ পরমহংসদেবের জীবনবৃত্তান্ত (১৮৮০) হল রামকৃষ্ণ পরমহংসের সর্বপ্রথম রচিত জীবনী গ্রন্থগুলির একটি। ধর্ম-বিশেষজ্ঞ নরসিংহ শীল [৬] ও জেফরি কৃপালের মতে,[৭] রামচন্দ্র দত্ত রচিত বইটি রামকৃষ্ণ পরমহংসের সবচেয়ে কলঙ্কিত জীবনী। তাঁরা লিখেছেন, "containing the lurid details of his sadhana as well as his quite suggestive encounters with his patron Mathur." তাঁরা ১৮৮৪ সালে স্বামী বিবেকানন্দের লেখা একটি চিঠির উল্লেখ করেছেন, যেখানে বিবেকানন্দ লিখেছেন, “যৌনতা ইত্যাদি সম্পর্কে সব অসংলগ্ন অমার্জিত ধারণাগুলি এড়িয়ে যাবে... কারণ অন্যান্য দেশের লোকেরা এগুলিকে অমার্জিত মনে করে। ইংরেজি ভাষায় তাঁর (রামকৃষ্ণ) জীবনী সারা পৃথিবী পড়বে।” [৮] বিবেকানন্দ রামচন্দ্র দত্তের রচিত জীবনীর অনুবাদকে অমার্জিত বলেছেন।[৮] তাঁরা বলেছেন যে, স্বামী বিবেকানন্দ সম্ভবত রামচন্দ্র দত্তের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন এবং রামকৃষ্ণ মিশন বইটির প্রকাশ বন্ধ করে দিয়েছে। যদিও এই ধরনের মামলার কোনো প্রমাণ নেই এবং স্বামী আত্মজ্ঞানানন্দ ও প্রব্রাজিকা ব্রজপ্রাণা ১৯৯৫ সালে লিখেছেন, রামচন্দ্র দত্তের লেখা বইটির ৯টি বাংলা সংস্করণ প্রকাশিত হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশন থেকে।[৯][১০] কৃপাল পরে অবশ্য রামকৃষ্ণ মিশন কর্তৃক বইটির প্রকাশ বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ তুলে নিয়েছিলেন।[১১]"
নরসিংহ শীল এই প্রথম রামকৃষ্ণ জীবনী থেকে লিখছেন-Ramchandra Datta one of the early biographers of Ramakrishna is reported to have said, "We have heard many tales of the Brahmani but we hesitate to divulge them to the public."
এক্ষেত্রে রামকৃষ্ণের যৌনতা নিয়ে আলোচনার বিশেষ দরকার আছে মনে করি। বিশেষতঃ তাঁর সাধনায় যৌনতার প্রভাব ইত্যাদির। দক্ষিণবঙ্গের এক সাধক বিপরীত রতির সাধনা না করে দুম করে যত মত তত পথ বলে দিতে পারেন, এ বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। বিশেষতঃ তিনি যখন সুফিমত বা নানকপন্থাতেও সাধনা করেছেন। আর ভৈরবীর সঙ্গে এপিসোডটা নরেন্দ্রনাথের চ্যালাচামুন্ডারা সেন্সর করেছিল সে কথা ইতিহাসে ডকুমেন্টেড। ভাবলে দেখি নরেন্দ্রনাথের বেসিক স্কুলিং তো ব্রাহ্মদের হাতে। ফলে রোমা-রোল্যাঁ হয়ে ফ্রয়েডের পড়াশুনোয় ঢুকে আলোকপ্রাপ্ত জ্ঞানচর্চার চোখে ঝিলমিল লাগিয়ে দিয়েছিলেন যে ভদ্রলোক, তার প্যাকেজিংটা হয়ে যায় ব্রাহ্ম ঔপনিষদিক প্র্যাকটিকাল বেদান্তের মুখোশে। অথচ যে যৌন সাধনার ঈংগিত রামচন্দ্র দিচ্ছেন, যে যৌন অনুষঙ্গ ও ব্যাখ্যা ঠাকুর স্বয়ং করছেন, তা বাংলার প্রাচীন নিজস্ব ধারা। নারীভাবকে জেফ্রি কৃপাল ক্লোসেট হোমোসেক্সুয়ালিটি বা যৌন নিপীড়নের ফল ভাবছেন, কিন্তু আমরা জন্মে থেকে জানি রাধাভাব কী, বাৎসল্য কী? আউল বাউল সহজিয়ার বাংলায় যৌনতান্ত্রিক সাধককে গুরুর আসনে বসায় গৃহস্থ। আর এখানে তার উল্টোদিকে দাঁড়ায় আলোকপ্রাপ্ত শহর কলকাতা। যেখানে এগুলি স্ক্যান্ডাল। যেখানে কবিগানের নিম্নরুচি নিয়ে ফোর্ট উইলিয়াম শিক্ষিত বাবু নাক সিঁটকোন। আর, এই কলকাতা, এই সাহেবিপনা গৌরব অর্জন করে মন্বন্তরে মৃত বাংলার কৃষকসমাজের লাশের ওপর দাঁড়িয়ে।
ঐ কেরেস্তানি আর ব্রাহ্ময়ানির মুখের ওপর খোড কলকাতার ভৌগোলিক খণ্ডে বসে গ্রামসমাজের হয়ে যিনি জবাব ছুঁড়ে দিতে পেরেছিলেন তিনিই শ্রীরামকৃষ্ণ। রেভারেন্ড থেকে ব্রাহ্ম আচার্য সবাই থ মেরে গেছিল তাঁর সামনে। জার্মান বা ফরাসি ভারত বিশেষজ্ঞ বুঝভুম্বুল হয়ে যাচ্ছিল। ইংরেজ অধ্যাপককে কবিতা বোঝাতে উদাহরণ দিতে হচ্ছিল এই প্রায় নিরক্ষর চাষীসমাজের অমার্জিত সাধকের।
রামকৃষ্ণকে আধুনিকতা জীবদ্দশায় ট্যাকেল করতে পারেনি, তাঁর মৃত্যুর পর বিবেকানন্দের দিগ্বিজয়ী প্যাকেজিং ঠাকুরের সব পরিকর মেনে নিতে পারেন নি। কেউ চেয়েছেন বিবেকানন্দকে রামকৃষ্ণ অর্ডার থেকে বিচ্ছিন্ন করতে, কেউ নিজেই বিচ্ছিন্ন হয়ে গ্যাছেন আর কেউ বিবেকানন্দের বিশাল মেধার সামনে পরাভব মেনে মিশনারি হয়ে উঠেছেন।
তাই বাংলার পরাজিত কৃষিসমাজের পক্ষে দাঁড়িয়ে ইউরোপকে চ্যালেঞ্জ করতে গেলে রামকৃষ্ণ ভাবধারার উপর থেকে এই ব্রাহ্ম-ক্রিশ্চানি পর্দাটা সরিয়ে ফ্যালা ভীষণ দরকার। সে জন্যে, ঠাকুর মাপ করবেন, তাঁর যৌনতা বোঝা প্রচণ্ড প্রাসঙ্গিক এখন।

লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
মন্তব্য করুন
মন্তব্যগুলি
Jayanta Mitra রামকৃষ্ণের যৌনতা.....ইন্টারেস্টিং বিষয় !!!
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Saikat Bhattacharyya Vivekananda was a Freemason agent of Rothschild
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তরঅনুবাদ দেখুন52সপ্তাহ
Saikat Bhattacharyya Naren was named Vivekananda by a rajputana baniya king, he was paid to go to USA by Tata, he was rewarded by Jew bankstars to devastate Bengal
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তরঅনুবাদ দেখুন52সপ্তাহ
Somnath Roy বাংলার পরাজিত কৃষিসমাজ(লগে লগে গ্রামীন পরম্পরার পূদ্র-বৈশ্য উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থা যা প্রতিভূ) নিয়ে একমাত্র দ্বিমত রইল। -- কী দ্বিমত?
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Biswendu Nanda বাংলার কৃষি সমাজ পরাজিত, এই সিদ্ধান্তে এলেন কেন? ফকির-সন্ন্যাসীরা যে লড়াই শুরু করেছিল সেই লড়াই আজও চলছে। বাংলার গ্রামের অর্থনীতি-প্রযুক্তি-কৃষ্টি যতটা সম্ভব ধরে রেখেছে তারা। কৃষি সমাজ কিছুটা পিছু হঠেছে রাসায়নিক চাষে, সেটা থেকে তারা যথা সময়ে বেরিয়ে যে আসবে তার প্রবনতা দেখা যাচ্ছে দেশি(জৈব নয়) চাষে ফিরে যাওয়ার তাগিদে। তাদের উতপাদনের ওপর নির্ভর করে আজও দাঁড়িয়ে আছে গ্রামীন শূদ্র-বৈশ্য উতপাদন-বিতরণ। আমরা কোথাও পিছিয়ে পড়া দেখছি না, লড়াই আছে করছি, এ এক চলমান লড়াই। 
আমরা হিসেবে দেখিয়েছি কৃষি, অপরম্পরার উতপাদন ছাড়া পরম্পরার উতপাদন অন্তত বছরে ১ লক্ষ কোটি টাকা। অপরম্পরা আর কৃষি অর্থনীতি তার সঙ্গে জুড়লে তার সীমানা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে জানি না। তবে কর্পোরেটরা জানে।
আমরা মনে করি কর্পোরেট সর্বশক্তিমান নয়। তার অজুত সম্পদ আছে ঠিকই কিন্তু প্রচুর সীমাবদ্ধতাও রয়েছে। এখন ২০০৮এর পরে আপাতত তার মাজা ভেঙ্গে গিয়েছে। এখন লড়াই আরও মজাদার পর্যায়ে পৌঁছবে।

পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহসম্পাদনা করা হয়েছে
Somnath Roy হয়ত পরাজিত নয়। আক্রান্ত, প্রবলভাবে আক্রান্ত
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Biswendu Nanda অবশ্যি। ভীষণভাবে আক্রান্ত তো বটেই। 
কর্পোরেট জানে তারা অর্থনীতিতে গ্রামীন অর্থনীতির ব্যপ্তির কাছে সংখ্যালঘু। এই অর্থনীতি দখল করতে না পারলে টিকে থাকা মুশকিল। জনধন যোজনা, আধার, বন্ধন ব্যাঙ্ক, ডিমনিটাইজেশন, ল্যাব টু ফিল্ড ইত্যাদি দিয়ে আক্রমন সমানে চলছে সে
ই ১৭৫৭ থেকেই মির্জাফর, ক্লাইভ, রায়দুর্লভ, রাণী ভবানী, কৃষ্ণচন্দ্র, মার্ফত।
ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে দিয়ে যে লুঠ, ধ্বংসক্রিয়া শুরু হয়েছিল, সেই যুদ্ধের হাতিয়ার বার বার গ্রামীনদের প্রতিরোধের দেওয়ালে ধাক্কা লেগে ফিরে আসে আর কর্পোরেটরা মধ্যবিত্ত ভদ্রলোকেদের নিয়ে নতুন করে চক্রান্ত করতে বোর্ড রুমে প্রবেশ করে - ডিমনিটাইজেশন যার শেষতম প্রতিক্রিয়া। 
যত তাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকেছে, তত তারা মুখোশ খুলে মরিয়া হয়ে উঠছে দখলদারির জন্য। 
হয়ত আহত, কিন্তু দুর্গ দাঁড়িয়ে রয়েছে। দুপা ভেঙ্গেছে, আবার সেরে উঠে লড়াই হবে। যুদ্ধ থেকে রণে ভঙ্গ দিয়ে পালায় নি তারা।

পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Sankha Subhra Ganguly আমার মনে হয়, এক্ষেত্রে কৃষিসমাজের পরাজয় বোধহয় কেবল মাত্র প্রযুক্তিগত বা অর্থনৈতিক পরাজয় নয়, বরং ঔপনিবেশিক নগর কেন্দ্রিকতার (ও সেই সংলগ্ন ভাবাদর্শ গুলোর) ক্রমশ মেনস্ট্রীম হয়ে ওঠা এবং ফল স্বরূপ বাঙলার গ্রাম সমাজের লোকায়ত দর্শনের দীর্ঘ ঐতিহ্যেরও একটা ওভারঅল আইডিয়লজিকাল ডিফিট ও ক্রমশ প্রান্তিক হয়ে পড়া, এটাও একটা দিক। আর ভাবধারার মৃত্যু হলে তার সঙ্গে আস্টেপিস্টে জড়িয়ে থাকা বিভিন্ন শিল্পধারা গুলোও ধীরে ধীরে মরতে শুরু করবে, যে কারণে আজ বিভিন্ন গ্রামীন আর্ট ফর্ম গুলোর শ্বাস উঠছে ও অনেকেরই চিরতরে গঙ্গাপ্রাপ্তিও ঘটেছে।
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Biswendu Nanda Sankha Subhra Ganguly এটাও মানলাম না। মধ্যবিত্তের জীবন, জীবিকা, চর্যা সব কিছুতেই কর্পোরেট এবং ঔপনিবেশিকতা এত জড়িয়ে আছে, সে তার বাইরে ভাবতে পারে না
১) লোকায়ত দর্শন কোন একদেহী নয়, এর বহু শাখাপ্রশাখা রয়েছে, এর সামগ্রিক তাত্ত্বিক পরাজয় কোথায় হল। কারকাছে হল
, কিভাবে হল? তার ব্যাখ্যা দরকার।
২) মেন্সট্রিম নগরকেন্দ্রিকতার জন্য গ্রামীন দর্শনের পরাজয়, এই ধরণের বক্তব্য প্রবাসীর সময় এবং স্বদেশী(যার সঙ্গে স্বদেশী উতপাদন ব্যবস্থার কোন সম্পর্ক নেই) আমল থেকেই চলে আসছে, এটা কোণঠাসা ঔপনিবেশিক মধ্যবিত্তের বক্তব্য, 
৩) এ সবগুলি যদি প্রমান না হয়।তাহলে প্রমান হয় না গ্রাম-বাংলার দার্শনিকতা প্রান্তিক হচ্ছে। 
৪) গ্রামীন আর্টফর্মগুলির নাভিশ্বাস উঠছে এটাও মধ্যবিত্ত অতিকথন, যে সব সাহিত্যপ্রচারলোভী অধাপক গবেষক বাংলা সাহিত্য অঙ্গনে নাম করতে ব্যর্থ হয়ে লোকসংস্কৃতি আঁঁকড়ে ধরে বেঁচে আছেন, তাদের লব্জে লুপ্তপ্রায়, লুপ্ত ইত্যাদি খুব প্রিয় শব্দ। তার সঙ্গে বাংলার গ্রামীন কৃষ্টির অন্তত বাস্তবের মিল নেই। 
৫) গ্রাম বাংলার বহু আর্ট ফর্ম আদতে আর্টফর্ম নয়, সেগুলি আচারের অংশ, ফলে সেগুলির লয়-বিলয় কর্পোরেট মধ্যবিত্ত সংস্কৃতির আক্রমনের জন্য হয়েছে তারও প্রমান নেই
একটা ছোট্ট উদাহরণ দিই, পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোকসংস্কৃতি আদিবাসী দপ্তর ২০১২ সালে দিনাজপুরে খন পালা প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে একতার বেশি দল খুঁজে পায় নি, অথচ তখনই আমাদের সঙ্গে দুই দিনাজপুরের ১৭টির বেশি দল যারা নিয়মিত অভিনয় করছে।
শেষে বলি কর্পোরেট মধ্যবিত্তকে দিয়ে বারবার আক্রমনের চেষ্টা করেছে করছে, আগামী দিনে করবে। গ্রাম বাংলা তার মত করে প্রতিরোধ করবে।

পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Subrata Majumdar করপোরেট ছাড়া আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা চলে না। কৃষি ও পরম্পরা উতপাদন ছাড়া মানুষের চলে না। ভোটে না জিতলে পার্টির চলে না। ছোট গামছা কে কখন বেশি টেনে নেয়!
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহসম্পাদনা করা হয়েছে
Biswendu Nanda Subrata Majumdar দারুণ! বরাবরের মতই মিত প্রকাশ কিন্তু অসাধারণ তাতপর্যপূর্ণ
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Subrata Majumdar যাক। আমরা একমত হতে পেরেছি। হুর রে!
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Biswendu Nanda তোমার পথে আমি পথিক...
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Saikat Bhattacharyya Vivekananda was popular for something 
That no other country ever heard of 
Chicago religion congregation???? 

Was it important in determining religious theories or determining course of religious history? 
No
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তরঅনুবাদ দেখুন52সপ্তাহ
Somnath Roy শিকাগো ধর্মসভা একটা হেভি ব্যাপার ছিল। পাড়ার ছেলে যেমন টিয়ার টু ইউ এস ইউনিভার্সিটি থেকে স্কলারশিপ ছাড়া পড়ে এলেও বিদেশে পড়াশুনো করা পণ্ডিত হিসেবে রেফার্ড হয় 
পরিচালনা করুন

Saikat Bhattacharyya Vai kono American kono religious historian ei sobhatar kotha janena 
Sotyi bolte srabonti ba pori moni ke or che beshi bideshi chene

পরিচালনা করুন

Biswendu Nanda না না গালি কেন হবে, তাকে ঘিরে যে ঔপনিবেশিক প্রায়-ব্রাহ্মগোছের মধ্যবিত্তের গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে, তা যে তার মাটিতে থাকা গুরুর দেখানো পথের বহুদূরে সেটা প্রমান করতে পারে নি খুব বেশি বাঙালি। সেটা করা জরুরি, বিবেকানন্দ মিথ ভাঙতে। তিনি যে উপদেশ দিয়েছিলেন তা অনেক বেশি ক্ষমতা কেন্দ্রিক, ঔপনিবেশিক, যা তার গুরুর থেকে আলাদা। এটা বলতে হবে। তার গুরু অনেক বেশি দেশজ, তিনি অনেক বেশি অপরম্পরার
পরিচালনা করুন

Saikat Bhattacharyya Ramkrishner kothay kichu jibon dragon, kichu protyutponnomotitto, kichu prolap ache
Bibek er kothay sudhui copy paste dalali ache
পরিচালনা করুন

Biswendu Nanda দুজনের তুলনা টানলে আমি পুরোপুরি হেলে যাব রামকৃষর দিকে, গুরুবাদের নানান টানাপোড়েন নিয়ে অসাধারণ মানুষ। আমায় খুব টানে ঘণ কালো মেঘে সাদা বকের পাঁতি দেখে বালক গদাধরের অজ্ঞান হয়ে যাওয়া। অসাধারণ কোমল, সংবেদী মনের অধিকারী ছিলেন তিনি আর নিজেকে বারবার কেটেছেন, ক...আরও দেখুন
পরিচালনা করুন

Biswendu Nanda এর উত্তর আমার কাছে নেই। আর তুই রথসচাইল্ড সংযোগ নিয়ে যেটা বলেছিস, তা যদি হয় তাহলে তোর সঙ্গে একমত হতে বাধা নেই।
পরিচালনা করুন

Saikat Bhattacharyya Kintu Vivekananda jogot Joy korlo ki babe? 
Keu janlo na
Kivabe jeno rote gelo jogot bijeta
...আরও দেখুন
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Paramita Datta সিকিকে আমি দিয়েছি পড়ার জন্য
পরিচালনা করুন

Minko Dasgupta · Somnath Roy এবং অন্যান্য 8টি জনের বন্ধু
jouno maanei porn? 
ki awporadhbodh dichchen mairi 

পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Ritwik Kumar Layek kothamrite to bhoirobi phase ta detail ei ache...
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ

লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Saikat Ganguly · Anupam Ghosh এবং অন্য 1 জন জনের বন্ধু
আচ্ছা লেখক রতি সাধনার কি জানেন??রতি সাধনার মাহাত্ম্য বলুন,তাছাড়া রামকৃষ্ণ এর ভাবসমাধি কোন মারগের ছিল??

পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর52সপ্তাহ
Animitra Chakraborty · 22 জন পারস্পরিক বন্ধু
আচ্ছা, ধর্ম কাকে বলে। লেখক নিশ্চয়ই জানেন। আমি জানিনা তাই জানতে চাই। সেটি বোঝাতে বা ধর্ম র অসারতা বোঝাতে লেখককে কিন্তু ঋকবেদ থেকেই শুরু করতে হবে। কোন কৃপাল বা ফ্রয়েড বা রোঁমা রোলা র নিজস্ব assessment র ওপর ভিত্তি করে নয়। তন্ত্র মানে কি শুধু পঞ্চ "ম" কার কেই বোঝায়? তা, এটি পরের অর্ধে আসুক। প্রথম অর্ধে বেদ থেকেই আরম্ভ হোক।
পরিচালনা করুন


লাইকআরও প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করুন
প্রত্যুত্তর51সপ্তাহ
Somnath Roy ধর্মের অসারতা কেন বোঝাবো? আর ধর্মর সংজ্ঞা কি বেদ থেকে শুরু করতে হবে? আমার তো মনে হয় যে অর্থে ধর্মের কথা আমরা বলি আজকাল, তার শুরু পিটকগুলি থেকে, ধম্মোপাদ-এ যে ধর্মের কথা বলে। অফ কোর্স, আমরা বায়ুর ধর্ম, জলের ধর্ম আলোচনার্থে ভৌতবিজ্ঞানের বই খুলে বসিনি।
দ্বিতীয়তঃ, আমি এখানে ধর্ম আলোচনাও করিনি। কথা হয়েছে সাধনা নিয়ে, সাধনতত্ত্ব নিয়ে। নেহাৎ আব্রহামিক না হলে কেউ সাধনা ও ধর্মকে একার্থক করে ফেলে না।

পরিচালনা করুন

Somnath Roy তন্ত্র মানে পঞ্চ ম কার শুধু নয়। কিন্তু পঞ্চ ম কার-ই এখানে আলোচ্য
পরিচালনা করুন