Friday, December 27, 2019

৩য় মধ্যমাস আলোচনা

"এম্পায়ার অব কটন - বাংলার তাঁতের ইতিহাস চাই"
৭ কিরণ শঙ্কর রায় রোড।। হেস্টিংস চেম্বার। ৬তলা।। ১৮ জানু, শণি।।বিকেল ৪টেয়

বইটার নামানোর সূত্র দিলাম। তার সঙ্গে মূল ভাবনাগুলি তুলে দেওয়া গেল।প্রায় ৬০০ পাতার বই পড়া সম্ভব নয়। তাই মূল আলোচ্য বিষয় তুলে দিলাম।

'নিউ হিট্রি অব ক্যাপিট্যালিজম' শীর্ষকে গত এক দশকে পুঁজি এবং পুঁজিবাদ বিষয়ে প্রকাশিত শ্রেষ্ঠতম গবেষণা মহাগ্রন্থ স্বেন বেকার্টের এম্পা্যার অব কটন আগামী কলকাতা বই মেলায় প্রকাশ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। বইটিতে স্বেন দেখিয়েছেন, কীভাবে একটি তুচ্ছ কৃষি দ্রব্য, তুলো অবলম্বন করে পুঁজিবাদের বিকাশ ঘটল এবং ইওরোপ আর আমেরিকায় বিশালাকারে পুঁজি সংহত হল এবং এশিয়া আফ্রিকা আমেরিকায় সাম্রাজ্যবাদ ডানা মেলে সমাজগুলোয় উথালপাথাল ঘটাল। তিনি বলছেন,পুঁজিবাদ বিকাশে লোহাইস্পা্ত বা তুলো ছাড়া অন্যান্য শিল্পেরও অবদান ছিল ঠিকই কিন্তু সুতো আর বস্ত্র মিলের অবদান থেকে বেশি, কারণ আমদানি এবং রপ্তানির অংশিদারিত্ব এই শিল্পে্র সব থেকে বেশি ছিল, সব থেকে বেশি শ্রমিক খাটত বস্ত্র কারখানায়।

এই বইটা আলোচনা করতে চাইছি তার কারণ হল তুলোর বিও ইতিহাস তৈরি হলেও বাংলায় এটা নেই এবং বাংলার উল্লেখে ওয়েন অনেক জায়গায় ঔপনিবেশিক তথ্য ভাবনা আলোচনা করেছেন যেমন তীর্থঙ্কর রায় কেম্ব্রিজ ঘরানার ইতিহাসবিদ, ইনি মনে করেন না লুঠ হয়েছে।

তিনি বিস্তৃততমভাবে এ সব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন
১ তুলো নির্ভর বস্ত্র শিল্পে্র গুরুত্ব,
২ এশিয়া(অবশ্যই বাংলা), আফ্রিকা, আমেরিকার সুপ্রাচীন বস্ত্র শিল্পে্র বিবর্তনের ইতিহাস,
৩ ইওরোপিয়দের উদ্যমে মার্কেন্টালিজম স্বেনের ভাষায় যুদ্ধপুঁজিবাদের বিশ্বজোড়া ভূমি, বাজার, কাঁচামালের দখলদারি, এবং স্বাধীনতা হরণ
৪ বিশ্বজোড়া প্রাচীন কাপড় শিল্পে্র বিশিল্পা্যন ঘটল(ইওরোপেও), বাজার দখল হল, প্রাচীন ব্যবসায়ীদের ধাক্কা মেরে বাজারের বাইরে বের করে দেওয়া হল,
৫ একইসঙ্গে ইওরোপে শিল্পায়ন(যাকে আপনারা শিল্প বিপ্লব বলতে গর্ব বোধ করেন) হল, শুরুতে জলের বলে পরে বাষ্প তারপর বিদ্যুতে চলা তুলো কারখানা নির্ভর করে
৬ মিল গড়ে তুলতে অর্থ চাই, শুরুতে জোগাল বাংলা এবং বিশ্বের সম্পদ বাজার লুঠ(তিনি বাংলা লুঠের কথা বলেন নি, এটা আমাদের গবেষণা), আর শস্তাতম শ্রম, বিনামূল্যে হলে ভালই হয়
৭ অথচ ইওরোপে তুলো উতপাদন হয় না বা কিন্তু মিল চালাবার জন্যে নিরবিচ্ছিন্ন এবং শস্তার তুলো চাই আর চাই শস্তাতম শ্রমিক, তুলো চাষের জন্যে আফ্রিকার শ্রম আমদানি করে দেশিয় আমেরিকিয়দের উচ্ছেদ করে, ইওরোপিয়দের দিয়ে হাজার হাজার হেক্টর জমিতে দাস শ্রমিক কাজে লাগিয়ে তুলো বাগিচা করা হল, এরা ইওরোপে শস্তাতম তুলো জোগাত কারণ জমি আর শ্রমের দাম শুন্য ছিল
৮ ইওরোপের পুঁজিবাদীরা শুরুতে কারিগর, চাষী, পশুপালক পরে তাঁতি উচ্ছেদ করে মিলগুলোয় জুতে দেয়, বিশাল অঙ্কের, কোথাও ৩০ শতাংশ শিশুরা কাজ করত মিলে, মহিলারাও
৯ ইওরোপ মূলত নির্ভর করত আমেরিকার দাস ব্যবস্থাজাত তুলোর ওপরে
১০ আমেরিকায় দ্বিতীয়বার গৃহযুদ্ধ ঘটলে দাস ব্যবস্থার সমাপ্তি ঘটল, তুলোর বিশাল দাম বাড়ে
১১ বলপ্রয়োগে বিশ্বজোড়া প্রাচীন তুলো উতপাদক সমাজে উথালপাথাল ঘটিয়ে তাদের স্বাধীনতা হরণ করা হল এবং তুলোর মনোকালচারে বাধ্য করা হলে তুলো চাষীদের খাদ্য নিরাপত্তা ব্যহত হল, আইনি বাধ্যবাধকতায় বিশ্ববাজারে পুঁজির দাসত্ব করতে শুরু করল দেশিয় শিল্প বঞ্চিত করেই
১২ বিশিল্পা্যিত দেশগুলির কাঁচামাল ইওরোপিয় মিলে পণ্যে রূপান্তরিত হয়ে পুনর্গঠিত এশিয় আফ্রিকিয় আমেরিকিয় বাজারে যেতে শুরু করল
১৩ আজকের তথ্য সরবরাহ, ফরোয়ার্ড ট্রেডিং, বিল ল্যান্ডিং বড় ধার ব্যবস্থা, পুঁজি রপ্তানির আইন প্রথার বিকাশ হল এই শিল্পকে ছড়াতে আর বাঁচাতে
১৪ ১০০ বছরের মধ্যেই ইওরোপ আমেরিকায় কাপড়ের মিল বন্ধ হয়ে গেল, এবারে আফ্রিকার এশিয়ায় বিশাল মিল তৈরি হল, কিন্তু ভিত্তি ইওরোপিয় মডেলের শিল্পা্যন -- জাতীয়তাবাদীদের প্রতিশ্রুতি ছিল উপনিবেশ থেকে মুক্তির পর চাষী, শ্রমিকেরা সুবিচার পাবে, সেটা ঘটল না,
১৫ সোভিয়েতে কাপড়ের মিল চলত সাম্রাজ্যবাদী ঔপনিবেশিক কায়দায়, সোভিয়েত তুলো পেতে মধ্য এশিয়ার খানাতগুলোয় উপনিবেশ তৈরি করল

শেষ অবদি সাম্রাজ্যবাদের অবসান ঘটল না।
ইওরোপিয় শিল্পা্যণের মডেলই হল লুঠ, দখলদারি আর ধংস। ভদ্রবিত্ত তার চালক।
https://drive.google.com/file/d/1TsdBUu0ru7yKOWoPOCic3wk32JJuUeSa/view?usp=sharing

No comments: