Sunday, May 28, 2017

Kuloda Royকে গাঁইয়াদের উত্তর

Kuloda Roy আপনিও আমাদের চেনেন না, তেমনি আমরাও। উপযাচক হয়ে যখন বিদেশে বসেও আমাদের উপদেশ দিচ্ছেন, তখন বুঝছি আপনি ভাল চান। গাঁইয়াদের বড় সুবিধে তারা কোন বিখ্যাতকে চেনে না। আমিও যেহেতু গাঁইয়া তাই জানি না আপনি বিখ্যাত কি না। আমাদের একটা প্রশ্ন ওপরে আমাদের উত্তরগুলো পড়েছেন? 

আমরা তো ছোটলোকেদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তাই কাউকে ভদ্র শিক্ষিত বাম্পন্থীদের মত দাগিয়ে দিই না। ফারহাদ মজহার বা হেফাজতকে যেমন বুঝতে চাইছি তেমনি বাম-উদারপন্থীদেরও বুঝতে চাইছি। আমরা যে সঙ্গঠনের সঙ্গে যুক্ত, সেটা মূলত এ বাংলার শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানেদের নিয়ে যা অন্য যে কোন এনজিও, বা ভদ্র, মধ্যবিত্ত সঙ্গঠনের থেকে চরিত্রে আলাদা, সদস্যদের থেকে চাঁদা তুলি, ছোটলোক সদস্যরাই দোকান চালিয়ে সাঙ্গঠনিক কাজের রাহা খরচ জোগাড় করে। এই গাঁইয়ারা যারা সংগঠন তৈরি করেছে, তারা গ্রামের পরম্পরার ছোট উদ্যোগী যারা বংশ পরম্পরায় নিজেদের পরিবারের, সমাজের জ্ঞান, দক্ষতা, প্রজ্ঞা, নিজেদের ছোট্ট হাট বাজার সম্বল করে কর্পোরেট লোভ ঘৃণা আর খুনের বিরুদ্ধে নিজেদের মত করে নিশ্চুপে লড়ে যাচ্ছেন। এদের সক্কলের জীবনযাত্রা, ভাবনা, দর্শন, উতপাদন ব্যবস্থা অন্তত ভদ্রেদের তুলনায় কম কর্পোরেটপন্থী। ইসলাম মৌলগতভাবে তাই, এবং দেশিয় অমুসলমান পরম্পরার আচার, পথও তাই। তাই হেফাজতকে বুঝতে চাওয়া। 


একটা বিষয় পরিষ্কার যতদূর সম্ভব আমাদের লেখাগুলি আপনি পড়েন নি, সেখানে হেফাজত বা ফরহাদ সম্পর্কে আমরা কি বলেছি তা আপনি অবশ্যই দেখেন নি - নাহলে পোস্টের পর পোস্ট দিয়ে আমাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন না। 


গত বিশ বছর গাঁইয়াদের আর শহরের ছোটোলোকেদের সঙ্গে থেকে থেকে ব্যক্তি আমিও চেষ্টা করছি ছোটলোক হওয়ার - খুব কঠিন কাজ - নিজের জীবন থেকে সর্বগ্রাসী কর্পোরেটকে সরিয়ে ফেলা। ছোটলোকেদের শহরের শিক্ষিতরা পাখিপড়া করে যেমন কোনকিছু বোঝাতে চায় আমাকে তাই চাইছেন। নাহ আমি খুশি হয়েছি, অন্তত ভদ্রলোকত্বটুক্লু ছাড়ার পথে হাঁটতে পারছি।

আবারও বলি আপনি আমাদের হেফাজতের বিষয়ে মূল্যায়ন পড়েন নি। আমাদের সংগঠন এবং আমাদের সক্কলের দায়বদ্ধতা গ্রামীন পরম্পরার শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার সমাজের উতপাদন বিতরণ ব্যবস্থার প্রতি যা আদতে চরিত্রগতভাবে কর্পোরেট বিরোধী। 

হেফাজত কি পথ নেবে নিচ্ছে তার মাথা ব্যথা। হেফাজত যদি কর্পোরেট বিরোধী রাষ্ট্র পক্ষীয় কোন পথ নেয় তাহলে সে উপে যাবে, শুধু আরএসএসএর মত ভদ্র হিন্দ্যত্ববাদীদের সঙ্গঠন হয়ে দাঁড়াবে। আর যার লেখা আমরা দিয়েছি তিনি যে বিপুল পরিমানে দান নেন, সে বিষয়ে আমাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই - এবং জানি সব দেশি এনজিওরা কি করে, কি ভাবে চলে, চালায় - শুধু ফরহাদ নয় বামেদেরও বহু এনজিও আছে, তারাও কিভাবে চলেন অন্তত আমাদের দেশে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমাদের। তাই শুধু ফরহাদ নিয়ে বিন্দুমাত্র কোন স্বপ্ন দেখা নেই। 

কিন্তু একটা কথা স্পষ্টভাবে বলা দরকার সেই পলাশীর সময় থেকে সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল ভদ্ররা - ছোটলোকেদের তৈরি এই উতপাদন ব্যবস্থা ভাঙতে, লুঠতে, ধ্বং করতে, নবজাগরণের সময়েও তারাই সেই পলাশী লুঠেরাদের উত্তরপুরুষ নবজাগরিত হয়ে ব্রিটিশ লুঠে সহায়তা করেছে এবং স্বাধীনতার পরে সেই নবজাগরিত পুরুষদের বামউত্তরপুরুষেরা নব্য সাম্রাজ্যবাদের সহায়ক হয়ে দেশিয় গ্রামীন উতপাদন ব্যবস্থা ভাঙতে সহায়ক হয়েছে।

হেফাজত নিয়ে বিন্দুমাত্র আমাদের মাথা ব্যথা নেই, কিন্তু নব্যসাম্রাজ্যবাদীদের সঙ্গী বামমুক্তপুরুষদের খুব সন্দেহের চোখে দেখি।
ফরহাদের লেখা মন্তব্য ছাড়া নিজেদের দেওয়ালে নিলেই তার সঙ্গী হওয়া বোঝায় না - ভদ্রদের ছাড়া গাঁইয়ারা সংগঠন চালাতে পারে, সিদ্ধান্তও নিতে পারে, রাষ্ট্র নয় সমাজটা চালিয়েছে কয়েক হাজার বছর - এই নির্ভরতা গাঁইয়াদের ওপর রাখুন।

No comments: