Sunday, May 28, 2017

Kuloda Royকে গাঁইয়াদের উত্তর

Kuloda Roy আপনিও আমাদের চেনেন না, তেমনি আমরাও। উপযাচক হয়ে যখন বিদেশে বসেও আমাদের উপদেশ দিচ্ছেন, তখন বুঝছি আপনি ভাল চান। গাঁইয়াদের বড় সুবিধে তারা কোন বিখ্যাতকে চেনে না। আমিও যেহেতু গাঁইয়া তাই জানি না আপনি বিখ্যাত কি না। আমাদের একটা প্রশ্ন ওপরে আমাদের উত্তরগুলো পড়েছেন? 

আমরা তো ছোটলোকেদের সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তাই কাউকে ভদ্র শিক্ষিত বাম্পন্থীদের মত দাগিয়ে দিই না। ফারহাদ মজহার বা হেফাজতকে যেমন বুঝতে চাইছি তেমনি বাম-উদারপন্থীদেরও বুঝতে চাইছি। আমরা যে সঙ্গঠনের সঙ্গে যুক্ত, সেটা মূলত এ বাংলার শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানেদের নিয়ে যা অন্য যে কোন এনজিও, বা ভদ্র, মধ্যবিত্ত সঙ্গঠনের থেকে চরিত্রে আলাদা, সদস্যদের থেকে চাঁদা তুলি, ছোটলোক সদস্যরাই দোকান চালিয়ে সাঙ্গঠনিক কাজের রাহা খরচ জোগাড় করে। এই গাঁইয়ারা যারা সংগঠন তৈরি করেছে, তারা গ্রামের পরম্পরার ছোট উদ্যোগী যারা বংশ পরম্পরায় নিজেদের পরিবারের, সমাজের জ্ঞান, দক্ষতা, প্রজ্ঞা, নিজেদের ছোট্ট হাট বাজার সম্বল করে কর্পোরেট লোভ ঘৃণা আর খুনের বিরুদ্ধে নিজেদের মত করে নিশ্চুপে লড়ে যাচ্ছেন। এদের সক্কলের জীবনযাত্রা, ভাবনা, দর্শন, উতপাদন ব্যবস্থা অন্তত ভদ্রেদের তুলনায় কম কর্পোরেটপন্থী। ইসলাম মৌলগতভাবে তাই, এবং দেশিয় অমুসলমান পরম্পরার আচার, পথও তাই। তাই হেফাজতকে বুঝতে চাওয়া। 


একটা বিষয় পরিষ্কার যতদূর সম্ভব আমাদের লেখাগুলি আপনি পড়েন নি, সেখানে হেফাজত বা ফরহাদ সম্পর্কে আমরা কি বলেছি তা আপনি অবশ্যই দেখেন নি - নাহলে পোস্টের পর পোস্ট দিয়ে আমাদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করতেন না। 


গত বিশ বছর গাঁইয়াদের আর শহরের ছোটোলোকেদের সঙ্গে থেকে থেকে ব্যক্তি আমিও চেষ্টা করছি ছোটলোক হওয়ার - খুব কঠিন কাজ - নিজের জীবন থেকে সর্বগ্রাসী কর্পোরেটকে সরিয়ে ফেলা। ছোটলোকেদের শহরের শিক্ষিতরা পাখিপড়া করে যেমন কোনকিছু বোঝাতে চায় আমাকে তাই চাইছেন। নাহ আমি খুশি হয়েছি, অন্তত ভদ্রলোকত্বটুক্লু ছাড়ার পথে হাঁটতে পারছি।

আবারও বলি আপনি আমাদের হেফাজতের বিষয়ে মূল্যায়ন পড়েন নি। আমাদের সংগঠন এবং আমাদের সক্কলের দায়বদ্ধতা গ্রামীন পরম্পরার শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার সমাজের উতপাদন বিতরণ ব্যবস্থার প্রতি যা আদতে চরিত্রগতভাবে কর্পোরেট বিরোধী। 

হেফাজত কি পথ নেবে নিচ্ছে তার মাথা ব্যথা। হেফাজত যদি কর্পোরেট বিরোধী রাষ্ট্র পক্ষীয় কোন পথ নেয় তাহলে সে উপে যাবে, শুধু আরএসএসএর মত ভদ্র হিন্দ্যত্ববাদীদের সঙ্গঠন হয়ে দাঁড়াবে। আর যার লেখা আমরা দিয়েছি তিনি যে বিপুল পরিমানে দান নেন, সে বিষয়ে আমাদের বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই - এবং জানি সব দেশি এনজিওরা কি করে, কি ভাবে চলে, চালায় - শুধু ফরহাদ নয় বামেদেরও বহু এনজিও আছে, তারাও কিভাবে চলেন অন্তত আমাদের দেশে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে আমাদের। তাই শুধু ফরহাদ নিয়ে বিন্দুমাত্র কোন স্বপ্ন দেখা নেই। 

কিন্তু একটা কথা স্পষ্টভাবে বলা দরকার সেই পলাশীর সময় থেকে সাম্রাজ্যবাদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিল ভদ্ররা - ছোটলোকেদের তৈরি এই উতপাদন ব্যবস্থা ভাঙতে, লুঠতে, ধ্বং করতে, নবজাগরণের সময়েও তারাই সেই পলাশী লুঠেরাদের উত্তরপুরুষ নবজাগরিত হয়ে ব্রিটিশ লুঠে সহায়তা করেছে এবং স্বাধীনতার পরে সেই নবজাগরিত পুরুষদের বামউত্তরপুরুষেরা নব্য সাম্রাজ্যবাদের সহায়ক হয়ে দেশিয় গ্রামীন উতপাদন ব্যবস্থা ভাঙতে সহায়ক হয়েছে।

হেফাজত নিয়ে বিন্দুমাত্র আমাদের মাথা ব্যথা নেই, কিন্তু নব্যসাম্রাজ্যবাদীদের সঙ্গী বামমুক্তপুরুষদের খুব সন্দেহের চোখে দেখি।
ফরহাদের লেখা মন্তব্য ছাড়া নিজেদের দেওয়ালে নিলেই তার সঙ্গী হওয়া বোঝায় না - ভদ্রদের ছাড়া গাঁইয়ারা সংগঠন চালাতে পারে, সিদ্ধান্তও নিতে পারে, রাষ্ট্র নয় সমাজটা চালিয়েছে কয়েক হাজার বছর - এই নির্ভরতা গাঁইয়াদের ওপর রাখুন।

ভদ্রচৈতন্য দীর্ঘজীবি হোক ।। "ফাক নিওলিবালেজিম"!

"খুব খারাপ লাগে যখন দেখি বিপ্লবীরা বনে গেছে শেয়াল, হুক্কাহুয়া করে যাওয়াই তাদের খেয়াল। যারা নতুন কিছু আনছি বলে গলা ফাটায় , ও মা তারাও দেখি খুব খুশী মৌলবাদের গু চাটায়। আহা, এ লীলাখেলা কী অনবদ্য।"
শুনলাম এটা কবিতা। আমরা গাঁইয়া। কবিতারই কিই বা বুঝি! আমরা একে অভিজাত ভদ্রদের উপদেশ হিসেবে ধরে নিয়েছি - কেউ কেউ বলেন গালাগালি। এগুলি শোনার দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে আমাদের পূর্বজদের - আমাদেরও - দীর্ঘ আড়াইশ বছরের পরম্পরা! অভ্যেস যাবে কোথা!
এবারে আমাদের ছোটলোকেদের কথা-
১। উদ্বৃতির চরণগুলি শ্রদ্ধেয় বামপন্থী Shyamalবাবুর লেখা। আমাদের নাম নেন নি। ফরহাদ মজহারএর মূর্তি সংক্রান্ত লেখা আমাদের দেওয়ালে প্রকাশ করায় কথাগুলি বলেছেন। এর আগেও আমরা তাঁর লেখা প্রকাশ করেছি। ওপরের চরণগুলিকে গালি দেওয়া বোঝায় কিনা ভদ্ররা ঠিক বুঝবেন - এটা তাদের উত্তরাধিকার কিনা।
২। গতকাল আমাদের দেওয়ালে যে প্রশ্নগুলি তুলেছিলেন, গাঁইয়াদের মত করে সশ্রদ্ধ উত্তর দিয়েছি। প্রত্যুত্তর পাই নি।
৩। আমরা বিপ্লবী? এমন দাবি করেছি? প্রমান দেখান। বিপ্লব ভদ্রলোকের জন্মগত একচেটিয়া - ভ্যানগার্ড অব দ্য প্রলেতারিয়েরত। গাঁইয়াদের? খ্যা খ্যা খ্যা...
৪। "যারা নতুন কিছু আনছি বলে গলা ফাটায়" - তাঁরা বিদ্যাসাগর-বঙ্কিম প্রণীত ঔপনিবেশিক বাঙলা ভাল বোঝেন আর আমরা ছোটলোকিয় গাঁইয়া। এটাও বামপন্থীসুলভ হয়ে গেল না! আমরা ছোটলোকেরা বলেছি গাঁয়ে শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার সমাজের যে উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থা রয়েছে তার পাশে আছি আর যা ভেঙ্গে গেছে তাকে পুরোনো রূপে পাওয়ার চেষ্টা করছি। "নতুন কিছু আনছি" এই দাবি করেছি দেখান।
৫। আমরা যারা গাঁইয়া তাঁর শব্দ চয়নে বিন্দুমাত্র অবাক হই নি। জানি মার্ক্স আমাদের কি ভাষায় সম্বোধন করেছেন, নবজাগরণের সময় আমাদের কি কি বলা হয়েছে। বরং তাঁর বর্ণিল উত্তরাধিকারীদের তুলনায় তিনি বোধহয় একটু কমই দিলেন - শুধুমাত্র "মৌলবাদীদের গু চাটা", "শেয়ালের হুক্কাহুয়া", "বিপ্লবীরা বনে গেছে শেয়াল" বলেই খান্ত দিয়েছেন - আমরা তাঁদের কুলীন পূর্বজদের ধারায় আরও কিছু অতিরিক্ত আশা করছিলাম - বেশি বেশি খেয়ে অভ্যেস হয়ে গিয়েছে না!। বড্ড ফাঁকা ফাঁকা লাগছে!
৬। এই সংক্রান্ত তাঁর আরেকটি প্রকাশনায় ভদ্র অভিজাতরাও কপাল কুঁচকেছেন - আমাদের বক্তব্য তারা পড়েছেন তার কোন নিদর্শন পাই নি। তারা কারা? তাঁরা কেউ প্রাক্তণ কর্পোরেটজীবি কেউ বা বর্তমানেও কর্পোরেট সেবাদাস। আমরা নিশ্চিত তাঁরা আমাদের ভাল চাইছেন। কিন্তু আমাদের বক্তব্য পড়েন নি - পড়লে আমাদের লেখা থেকে একটা একটা করে বিষয় তুলে প্রতিবাদ বা সমর্থন জানাতেন - যেমন করে Rouhin বা Dhrubajyoti করেছেন। আমাদের বা ফরহাদএর আলাদা আলাদা উত্তরও পেয়েছেন।
৭। হেফাজতের বিষয়েও আমাদের অবস্থান লুকোই নি। সে মন্তব্য এখানে তুলে দেব না। যদি কারোর মনে হয় জানা দরকার ছোটলোকেদের সেই প্রকাশনা কষ্ট করে দেখে নিতে হবে। এটা এমসিকিউ প্রশ্ন নয়। হ্যাঁ বা নায়ে উত্তর হয় না। সেগুলি না পড়ে যদি তাঁদের মনে হয় এই বাংলায় আমরা ফরহাদ মজহারএর প্রচার দিচ্ছি, বা হেফাজতের কথা বলছি তাহলে উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে ভদ্রলোকিয় কর্পোরেট রাজনীতির ভাবনা ছড়িয়ে দেবার দায় আপনারই।
৮। একটাই প্রশ্ন কর্পোরেট রাজনীতির বিরোধিতা। সেটা করতে গিয়ে ভদ্র বাঙ্গালির বিরাগভাজন হতে হয়েছে, হবে - ফরহাদ মজহার বা হেফাহত উপলক্ষ্য মাত্র। ব্যাপারটা স্বাভাবিকই। হয়ত ভবিষ্যতে হেফাজতিরাও চাপাতির নিদান দেবেন।
৯। তবুও এবাংলায় শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার ছোটলোক সমাজ নিজেদের সংগঠন তৈরি করেছে এবং নিজেদের যোগ্যতায় চালাচ্ছে। শূদ্র-বৈশ্য সভ্যতা কয়েক হাজার বছরের। তারা ছিল আছে থাকবে।
১০। বাংলায় অভিজাত ভদ্রপ্রযোজিত কর্পোরেট খুন অত্যাচার লুঠের মোটামুটি আড়াইশ বছর পূর্ণ হল। তাদের কর্পোরেট করণ পদ্ধতিও মোটামুটি জানা। কোম্পানি আমল থেকেই তাঁরা মুক্ত বাণিজ্যের ধ্বজাধারী, আজকে নিওলিবারেলেজিম নামক নব্যসাম্রাজ্যবাদেরও।
১১। গাঁইয়ারা আর কি করে। তারা তো সর্বংসহা। ভদ্রদের উপদেশগুলি বেমালুম গিলে খেয়ে নিতে হয়। সেটাই তো ছোটলোকেদের ধর্ম।
ভদ্রচৈতন্য দীর্ঘজীবি হোক!
"ফাক নিওলিবালেজিম!"
জয় বাঙলা!
বাঙলা আমার মা!
জয় কর্পোরেট দর্শন বিরোধী শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার সমাজ!

Thursday, May 25, 2017

উপনিবেশবাদ বিরোধী চর্চা - অরাজকতার রাজনীতি

জনৈক বামপন্থী হেরোর ব্যবহার করা হাহুতাশের ছবি জুড়ে লেখাটা শুরু করলাম...
তিনুদের রাজত্বে বাংলায় 'অরাজক' অবস্থা ফিরে আসছে এমন একটা ধারণা ফেবুতে অন্তত ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছেন হেরো বামপন্থীরা - কেন, তাঁর উত্তর নিশ্চই অনেকের জানা।
তাই অরাজক শব্দটা নিয়ে কিছু বৃথা কালক্ষেপ করা যাক...
বাঙালি (ইংরেজি)শিক্ষিত মধ্যবিত্তের ভাষায় অরাজক বলতে বোঝায় পাল রাজাদের পূর্বের মাৎস্যন্যায় অবস্থা - বড় মাছ যেভাবে ছোট মাছকে গিলে খায়। এই শব্দটি সন্ধ্যাকর নন্দীর লেখায় পাই, রামচরিতএ ব্যবহার করেছেন। বৌদ্ধ আমলের খালিমপুর তাম্র শাসনেও এই শব্দটি একই অবস্থা বোঝাতে ব্যবহার করা হয়েছে।ঐতিহাসিকেরা বলছেন ২৫ বঙ্গপূর্বাব্দে(ঔপনিবেশিকদের লব্জে ৬২৫ খৃ) শশাঙ্কের মৃত্যুর পর আর পালেদের রাজত্বের আগে, বাংলায় কেন্দ্রিয় ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে ওঠেনি। বৌদ্ধ ঐতিহাসিক তারানাথও বহু পরে বৌদ্ধ ধর্মের ইতিহাসে সে সময়ের বাংলা নিয়ে একই মন্তব্য করেছেন।
অথচ জানি সে সময় ছিল বৌদ্ধ-তান্ত্রিক বাংলা - ঘোষ, পোদ, বিশ্বাস, বাউরি, বাগদি, মালোসহ হাজারো নমঃ সমাজের সময় - সেই অরাজক অবস্থা থেকে বাংলাকে 'উদ্ধার' করতে পালেদের সিংহাসনে আরোহন। সে পালেদের বিরুদ্ধে পরের দিকে লড়াই করেছিলেন কৈবর্ত প্রধান দিব্যোক-ভীম(এখনও বাংলাদেশে দিব্যোকের ভাইপো ভীমের সময়ের তৈরি জাঙ্গাল রয়েছে)। তাঁর মানে সেই 'অরাজক' অবস্থায় ভীম -দিব্যোকেরা ভাল ছিলেন - তাই পালেদের ''স্থিতিশীল' রাজত্বে তাঁরা লড়াই দিয়েছিলেন। যে কৈবর্তদের মত 'নমঃ' সমাজ বাংলায় অরাজক অবস্থা তৈরি করেছিল - অর্থাত বাংলায় মাৎস্যন্যায় অবস্থার সৃষ্টি করেছিল তাদের পালেরা সমূলে উৎপাটন করেন। অর্থাৎ কৈবর্তদের মত সমাজের 'রাজত্ব' আদতে বাংলার অরাজক অবস্থাই।
আজ যেন আমরা সেই 'অরাজক'তার ধারণার প্রতিধ্বনি শুনছি বামপন্থীদের লেখায়। শব্দগুলোর মানে যদি ভেঙে লেখা যায় তা হলে হবে তিনুদের রাজত্বে বাংলার ঘোষ, পোদ, মালো, মুণ্ডা, বাউরি, বাগদিরা জেগে উঠছে...
তাঁরা বলছেন সাধু(মধ্যবিত্ত) সাবধান...
কে সাধু আর কেইবা চোরচামার... আর চামারেরা তো চোরেরই স্যাঙ্গাৎ... অন্তত ভদ্রলোকিয় ভাষায়।

Wednesday, May 24, 2017

দার্শনিকভাবে পূর্বের প্রযুক্তি বিষয়ে কয়েক স্তবকে আমাদের ভাবনা

মাননীয়রা যারা আলোচনায় আসবেন প্রাথমিকভাবে এই দার্শনিক বিষয়টা মাথায় রেখে আলোচনা করবেন।
উৎপাদনগতভাবে, দার্শনিকগতভাবে পশ্চিমি যুদ্ধবিদ্যা সংক্রান্ত বড় পুঁজির প্রযুক্তি(আদতে বিজ্ঞান নয়), আর পূর্বের ভারত-আরব-পারসিক জ্ঞানচর্চা দুটো দু মেরুর।
গ্যালিলিও লিওনার্দোদাভিঞ্চি সক্কলে ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদী সামরিক প্রযুক্তি বিকাশ ঘটিয়েছিলেন। লুঠেরা ঔপনিবেশিক প্রচারে আমরা এদের মাথায় তুলে রাখি।
পশ্চিমি প্রযুক্তি মূলতঃ পেটেন্ট -মেধা সংরক্ষণ ভিত্তিক। এই প্রযুক্তি মানুষ খুন লুঠ আর সাম্রাজ্য স্থাপনের জন্য তৈরি হয়। এই প্রযুক্তিকে কেন্দ্রিয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ করে কিছু মানুষ বিশ্ব সম্পদ লুঠের আর সাম্রাজ্য স্থাপনের জন্য। তাই এই প্রযুক্তি বিকাশ করার জন্য বিপুল বিনিয়োগের গবেষণাগার লাগে। সাম্রাজ্যের কাজে মাথা মোড়ানো বৈজ্ঞানিক, বলা ভাল প্রযুক্তিবিদ প্রয়োজন হয়। লুঠেরা সাম্রাজ্য বা সাম্রাজ্যের স্তম্ভ কর্পোরেটদের বিপুল বিনিয়োগ প্রয়োজন হয়। যন্ত্র কাজে লাগাতে প্রচুর অপচয়ী বিদ্যুতের প্রয়োজন হয়।
অথচ পূর্বের প্রযুক্তি সামাজিক, উতপাদক বা সমাজের নিয়ন্ত্রণে থাকে। স্থানীয় প্রয়োজনে বিকশিত হয়। কোন আন্তর্জাতিক মডেল নেই। প্রযুক্তির ব্যবহার সীমিত - পুঁজি প্রয়োজন হয় না - হলেও নগণ্য। এই প্রযুক্তি হাজারো বিতরক হাজারো উৎপাদক স্থানীয় কাঁচামাল আর জ্ঞান নির্ভর করে চাহিদামত পণ্য উতপাদন করে।
পূর্বের প্রযুক্তি প্রয়োগে বিশ্ব হাজার হাজার বছর বেঁচে এসেছে। আজ আড়াই শত বছরের শিল্পবিপ্লবীয় প্রযুক্তি বিশ্বকে ধ্বংস আর মানুষকে দাস বানিয়ে ফেলছে।
দুটিকে আলাদা আলাদা প্রেক্ষিতে দেখা দরকার।

দ্বারকানাথ ঠাকুরের বেশ্যাখানা

দ্বারকানাথ ঠাকুরের বেশ্যাখানা চালানোর প্রকাশনাটা বাংলাদেশের Pinakiদা নিজের সময়ে প্রকাশ করায় বাংলাদেশের ফেবুকেগেল গেল রব...
উনি আমাদের মত চেয়েছিলেন।
আমরা লিখেছি...
...
Pinakiদা, কেন রক্ষণাত্মক হচ্ছেন বুঝছি না। দ্বারকানাথ লুঠেরা ব্রিটিশ সাম্রাজ্য-সঙ্গী। তিনি বেশ্যাখানা না চালালেও লুঠেরা অহিফেন ঠাকুর নামক শিল্পপতি আর চরম অত্যাচারী জমিদার, আর নাচালালেও তিনি তাইই থেকে যান। লুঠের সাম্রাজ্য কলকাতার বৌবাজারে বেশ্যাখানা চালানো তার লুঠের শৌর্যে নতুন পালক। এ তথ্যকে বিন্দুমাত্রও অস্বীকার করা যাবে না যতই রবীন্দ্রনাথ তার ঠাকুর্দার কাগজপত্র পুড়িয়ে ফেলুন।
---
এবারে আমাদের কথা।
আমরা এই বাংলায় ছোটলোক অর্থে বৈশ্য-শূদ্র-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার উতপাদকেদের সঙ্গঠন করি যারা এই বাংলাকে পলাশীর আগে বিশ্বের গন্তব্য বানিয়েছিলেন। বাংলায় আমদানি ছিল নগণ্য, বিদেশিদের দামি ধাতু আর রত্নের বিনিময়ে বাংলায় ব্যবসা করতে হত।
তো এই শূদ্য-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার তৈরি উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থা ধ্বংস করল ব্রিটিশ বাংলার ভদ্র-ধনীদের সহায়তায় যারা তার কয়েকশ বছর আগে শ্রীচৈতন্যের ডাকে নেমে এসেছিল রাজপথে, রাজপদ হেলায় ছুঁড়ে ফেলে।
১১৬৪ সালে হেস্টিংস আর আর বশংবদ তাঁবেদারদের তাণ্ডবে ধরাশায়ী হয়ে গেল এই উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থা। ইওরোপের শিল্পবিপ্লবের পালে হাওয়া লাগল বাংলায় তখন ফকির সন্ন্যাসীরা, পাইকেরা, গারোরা স্বাধীনতার ধ্বজা তুলেছেন - ছোটলোকেরা বাঙলা জুড়ে মহাযুদ্ধ প্রায় শুরুই করে দিয়েছেন।
ঠিক সেই প্রেক্ষিতে দ্বারকানাথ যখন শিল্প তৈরিতে বাংলায় উদ্যমী হচ্ছে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অভয় হাত মাথায় নিয়ে বাঙলা তখন শুধুই ব্রিটিশ শিল্পের কাঁচামাল রপ্তানির ভৌগোলিক এলাকা মাত্র। ছোটলোকেদের তৈরি হাজার হাজার বছরের সভ্যতার ধ্বংসস্তূপের আর দর্শনের মাথায় পা দিয়ে ব্রিটিশ লুঠেরা দর্শনে ভারতকে গড়েতুলতে চাইছেন ভদ্রলোক রামমোহন-দ্বারকানাথ-বিদ্যাসাগর। ১ লক্ষ ৫৬ হাজার গ্রামের ১ লক্ষ পাঠশালা ধ্বংস করে গড়ে উঠল লুঠেরা কর্পোরেটের দপ্তরে চাকরিযোগ্য দাস বাঙালি। রামমোহন-দ্বারকানাথ-বিদ্যাসাগর ত্রয়ী তাঁদের উপহার জীবদ্দশায় পেয়েগিয়েছেন।
বাংলার ধ্বংস আর লুঠের দায় তো ভদ্রলোকেদের নিতেই হবে।
দ্বারকানাথ যে লুঠের সঙ্গী, সে লুঠের দার্শনিক পথের পদধুলি ভদ্রবাঙ্গালি মাথায় রাখতে পারে কেননা তার উচ্ছিষ্ট সেবন করেই আজ সে কর্পোরেট সেবক।
শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানদের উত্তরাধিকারের রাজনীতি করা আমাদের দায় সেই ধ্বংসক্রিয়ায় বারংবার অঙ্গুলি নির্দেশ করে বাঙলা মায়ের গায়ে যারা আজও ক্ষত তৈরি করছে তাদের মুখোশ খুলে দেওয়া।
বহু ভদ্র ইওরোপ সর্বস্ব-মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগবে কিন্তু শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমানদের ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ পড়বে।
বাংলার শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান এবং অন্যান্য পরম্পরার উতপাদন-বিতরণ ব্যবস্থার জয় হোক!
জয় বাঙলা।

Let their be a formal schooling (board) and higher education system (university) dedicated to the knowledge creation and dissemination by the people hailing from "শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান ও অন্যান্য পরম্পরা".

উদ্দীপন নাথ, WATWeavers Artisans & Traditional Artists' Guild - WATAG, WATAGএর সম্মানিত অছি সদস্য - ভাবনা চিন্তায় অন্য মানুষদের থেকে আলাদা - WATAG Dipankarদার কাছে কৃতজ্ঞ যে তাঁর মত গুণী মানুষ এই মানুষদের সঙ্গঠনে জুড়েছেন।
উদ্দীপন একটি দারুণ প্রস্তাব দিয়েছেন - সেটি নিচে তুলে দেওয়া গেল।
এই শিক্ষা প্রস্তাবটির সঙ্গে জুড়ুক গ্রামীন পরম বাঙলা প্রাকৃত চিকিতসা ব্যবস্থা নিয়ে একটা শিক্ষাক্রম।
নতুন করে চিন্তা করা দরকার কিভাবে আমরা আমদের নিজেদের ব্যবস্থাগুলোকে দেখতে চাইছি।
মেকলে বা ট্রেভলিয়ন বা বিদ্যাসাগর দেশিয় শিক্ষা ব্যবস্থার মূলে কুঠারাঘাত করেছেন বলে কান্নাকাটির সময় গিয়েছে।
নতুন উদ্যমে জেগে উঠক নতুন জ্ঞানচর্চার পরিবেশ।
ধন্যবাদ উদ্দীপন। বুদ্ধিজ্ঞাপক প্রকাশনার জন্য।
what we need is a completely fresh approach to how we are educated. Let Macaulay remain where it has prospered, but let people from the "শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান ও অন্যান্য পরম্পরা" have a chance at reviving their way of education and training. Let their be a formal schooling (board) and higher education system (university) dedicated to the knowledge creation and dissemination by the people hailing from "শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান ও অন্যান্য পরম্পরা". Like we have a CBSE or ICSE, we could have a higher education board on 'Traditional and Indigenous Knowledge' systems - Board of Secondary & Higher Secondary Education on Traditional and Indigenous Knowledge. Let the State of the day recognize this board as a formal way of educating the South Asians. Let the State subsidize the education to be pursued in this system. Let people from the "শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান ও অন্যান্য পরম্পরা" not be forced to pursue education in only CBSE/ICSE/Traditional State Boards based on Macaulay. Let them proudly and formally pursue education in their chosen system - that could be either through a education board dedicated to 'Traditional and Indigenous Knowledge' systems or the usual CBSE/ICSE/Traditional State Boards. But at least let us give a fair chance to 'Traditional and Indigenous Knowledge' systems to thrive. We can't keep on crying over the spilt milk, nor can we expect the Brits and Macaulay to return and erase all the wrong doings. It's now up to us to ensure our people's survival. And our people's survival cannot be sustainable on borrowed European & western technologies. Its time to fall back on 'Traditional and Indigenous Knowledge' systems.

দেশিয় উতপাদন চর্চা - শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান ও অন্যান্য পরম্পরার উতপাদন ও জীবনযাত্রা আর পণ্য ব্যবহার অভ্যেস আত্তীকরণ

শুধুই WATGএর বন্ধুদের জন্যে
গত কাল বন্ধু Samik বলছিলেন তাঁরা সমমনষ্কদের এক বৈঠকে স্থানীয় উতপাদন কেনার জন্য ডাক দিয়েছিলেন। এবং সক্কলে সাম্প্রদায়িকতা রুখতে যতটা উতসাহী, কর্পোরেট পন্য বাদ দিয়ে স্থানীয় পণ্য কিনতে ততটাই নিরুতসাহ। ব্যাপারটা স্বাভাবিক - বিশেষ করে বামপন্থীদের পক্ষে - তাঁরা তো তাঁদের নেতৃত্বে গ্রামের কারিগর উচ্ছেদ করে শহর তৈরি করে গ্রামের মূঢতা অজ্ঞান অশিক্ষা কুসংস্কার ধ্বংস করে সর্বহারা শ্রমিক শ্রেণীর একনায়ক রাষ্ট্র ব্যবস্থা বানাতে চান - সেই রাজনীতিতে কর্পোরেটদের বাদ দিলে আর কিই বা থাকে!
তাঁদের পথকে দূর থেকে সম্মান জানিয়ে এই ডাক।
কিন্তু ওয়াটাগের বন্ধুরা একটু আলাদা। এই লেখাটা তাঁদের জন্যে-
আমরা সারা জীবনধরে অম্লান বদনে বড় পুঁজির উপহার বিষ খেয়ে-পান করে আসছি। কোন বিকার নেই। কোকাকোলা কোম্পানির নানান পণ্যের বিজ্ঞাপনে খুব ছোট অক্ষরে লেখা থাকে শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। গোট বড় পুঁজির উতপাদন ব্যবস্থাটাই জীবকুলের স্থায়িত্বের পক্ষে চরম বিনাশক।
মানুষের বিরুদ্ধে লড়ায়ে যে উতপাদন ব্যবস্থা রণনৈতিকভাবে প্রযুক্ত হচ্ছে, তার সক্রিয় বিরোধিতা করতেই হবে।
পুঁজিহীন পরম্পরার উতপাদনের জ্ঞানের সঙ্গে জুড়ে থাকা ওয়াটাগ এবং বঙ্গীয় পারম্পরিক কারু ও বস্ত্র শিল্পী সঙ্ঘ আগামী দিনে বেশ কিছু পণ্য তৈরি এবং বিক্রি করবে। ঠিক করেছে এটা ওয়াটাগের বন্ধুরা ব্যবহার করবেন। গণউতপাদন হবে না। উতপাদনেরে প্রযুক্তি শিখে যে কেউ তৈরি করে নিতে পারেন - সমষ্টিগতভাবে এবং ব্যক্তিগতভাবেও - শূদ্র-বৈশ্য-মুসলমান গাঁইয়া উতপাদন পদ্ধতির এটাই বৈশিষ্ট্য -
১) কাপড় কাচার কলার আর হলুদের ক্ষার - বাদ দিন কড়া রাসায়নিক ক্ষারের গুড়ো বা সাবান বা তরল - সুতির কাপড় নরম, টেঁকসই সবে আর রঙ্গ বজায় থাকবে বহু দিন - তাতে কর্পোরেটরা ক্ষেপে যেতে পারে
২) দাঁত মাজার গুঁড়ো - আর কোন হাড়গুঁড়োর সংগে রাসায়নিক মেশানো নয়
৩) নিম সাবান - প্রাণীজ(গরু বা শুয়োর) চর্বিতে না ডুবে, প্রাকৃতিক ভাবে পাওয়া নিম ফল থেকে তৈরি সাবান মাখুন - ফেনা হয়ত হবে না কিন্তু ত্বক উজ্জ্বল আর সুস্থ থাকবে
৪) মহুয়া ফুল, চালভাজা, ছোলা ভাজা, বাদাম, ক্ষীর, কিসমিস ইত্যাদি দিয়ে শক্তি বাড়ানোর নাড়ু
৫) সাধারণ রোগভোগ থেকে উদ্ধার পাওয়ার জন্য নানান ধরণের মা-দিদিমা- পরম্পরার সম্প্রদায়ের টোটকা
৬) ঢেঁকি ছাঁটা চাল
৭) দেশি পদ্ধতিতে উতপাদিত সাধারণ বা গন্ধ চাল
৮) বাড়িতে রাভা বাথৌ এবং বাংলার বৈষ্ণব সম্প্রদারের অনুকরণে একটা পোড়ামাটির তুলসি মঞ্চ রাখুন। সেখানে পাঁচটা গাছ লাগান, ব্যবহার করুণ সারা জীবন সুস্থ থাকুন।
এই পণ্য তৈরি প্রযুক্তি শেখানোর জন্য উতসাহী আমরা।
কেউ চাইলে স্বাগত।